গন্ধগোকুল আর খাটাশ একই জিনিস

গন্ধগোকুল আর খাটাশ একই জিনিস

গ্রীষ্ম কাল। আমরা চলছি ৬ জন। আমি, মিনা, মাহি, রাজু, সাজু আর রবি। ৬ জনই সাইকেলে করে যাচ্ছি।এই গরমে গা ঘেমে একদম গোসল হয়ে যাচ্ছে। তবুও থামতে পারছি না কেউ অনেক দূরের পথ তো।

এতখন যেখানে যাবার জন্য এত ব্যাস্ততা সেই গন্তব্য হল আমাদের গ্রাম থেকে ৫ মাইল দূরে শীতলপুর গ্রামের মনু মিয়ার বাড়ি। আর তার বাড়ি যাবার কারন হচ্ছে গন্ধগোকুল।তারা নাকি দূর গা থেকে গন্ধগোকুল ধরে এনেছে। আমাদের গ্রামের অনেক মানুষ তা দেখতে গেছে। আমরা আর বাদ যাবো কেনো? তাই আমরাও চলছি গন্ধগোকুল দেখতে।

বাড়িথেকে তো আসতেই দেবে না। এতদূরের পথ। কিন্তু কে শোনে কার কথা।আমাদের গ্রাম বা আমাদের আশেপাশের গ্রামে নতুন কোনো জিনিস আসবে আর আমরা দেখতে পাবো না তা তো কখনোই সম্ভব নয়। তাই জোর করে হলেও আমরা ৫ মাইল পথ পেরিয়ে গন্ধগোকুল দেখতে যাচ্ছি।

গ্রামের পথ সে তো যেনতেন কথা নয়। একেবারে বাজে রাস্তা। তারপর আবার বিল পেরিয়ে, ভাঙা সাকো পেরিয়ে খেয়া নদী পোরোলাম। আমাদের সবার অবস্থা তো কাহিল। আগেই বলেছিলাম। একসাথে সাইকেলসহ সবার খেয়া পার সম্ভব নয়। তাই প্রথমে গেলাম আমি, মিনা আর মাহি আর পরে এল রাজু, সাজু আর রবি।

তারপর আবার কিছুদূর সরু পায়ে হিটার পথ। সেই পথ পার হয়ে আমরা শীতলপুর গ্রামে পৌছে গেলাম। এবার মনু মিয়ার বাড়িটাও খুজে নিয়ে তার বাড়ি হাজির হলাম। মনে যে সবাই কি আনন্দ পেলাম!!

মনু মিয়াকে গন্ধগোকুলের কথাটে বললে উনি আমাদেরকে একটা খাচার কাছে নিয়ে গেলেন। তা দেখে আমাদেরতো পুরো চক্ষু চড়কগাছ। এত খাটাশ!!!তার মানে গন্ধগোকুল আর খাটাশ তার মানে এক জিনিস??? আমাদের সবার তো প্রান যায় যায় অবস্থা। এই খাটাশের যন্ত্রনায় আমাদের হাসমুরগিগুলো অস্থির ছিল এতদিন আর আজ এর যন্ত্রনায় আমরা অস্থির।

আমাদের বাগানে তো এই গন্ধগোকুল ভুরি ভুরি আছে। গন্ধগোকুল আর খাটাশ একই কথা জানলে কে আসত এই দূরদেশে গন্ধগোকুল দেখতে। আমরা বাড়ির দিকে রওনা দিলাম বিষাদময় মনে। কিন্তু বাড়িতে জানতে পারলেতো মহাবিপদ। চলতে চলতেই বাড়ি ম্যানেজ করার বুদ্ধি আটল সাজু। আমরা সবাই একমত হলাম।

গল্পের বিষয়:
ছোট গল্প
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত