রোবটের গান

রোবটের গান

দীর্ঘ পাঁচ বছর চেষ্টা চালানোর পর অবশেষে জন রোবটটি বানানো শেষ করতে সক্ষম হল। নিঁখুত মানুষের মত দেখতে এই রোবটটিকে তৈরী করতে গিয়ে রীতিমত গাধার খাটুনি খাঁটতে হয়েছে ওকে, তাই এটি সম্পূর্ন শেষ হওয়াতে আজ খুব খুশি জন। অবশ্য রোবটটির এই সুন্দর চেহারাটা জনের সহবিজ্ঞানী কিম তৈরী করেছে। ঠিক যেভাবে চাইছে সেভাবেই পরবর্তী বিজ্ঞান সম্মেলনে সবার কাছে উপস্থাপন করতে পারলে আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজ্যান্সে দক্ষ বিজ্ঞানীদের নামের তালিকায় ওর নামটিও স্থান পাবে।

লক্ষাধিক তথ্য ও বিভিন্ন দেশীয় ভাষা অনায়াশে আওড়ে যেতে পারবে তার এই রোবট, তাছাড়া প্রশ্নদাতাকে পালটা প্রশ্ন এবং বিভিন্ন প্রেক্ষাপট আর সুরের সাথে তাল মিলিয়ে গানও বাধঁতে পারে এটি যা কিনা রীতিমত চমৎকার ব্যাপার। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার রোবটির স্বতঃস্ফুর্ত আচরনের কারনে আদৌ এটিকে রোবট মনে হয়না এবং এটি একটি নারীর রোবট, তাই জন এর নাম দিয়েছে নিরি।

চেয়ারে বসে আছে নিরি। সেটিকে আরও কিছুক্ষন খুটিয়ে খুটিয়ে দেখল জন। হটাৎ দেয়াল ঘড়িটায় ১২টা বাজার ঢং ঢং শব্দে ঘোড় কাটল ওর আর সেই সাথে অনুভব করল ভীষণ ক্লান্তও লাগছে, অনেকদিন ভাল করে ঘুমায়নি জন।

নিরি যেহেতু প্রস্তুত তো আজ রাতটা চুটিয়ে ঘুম দিতে হবে একটা। নিরির দিকে ফিরে হাসিমুখে বলল জন, “ শুভ রাত্রি নিরি, কাল সকালেই আবার দেখা হবে।” নিরিও হাসিমুখে উত্তর দিল, “ শুভ রাত্রি জন।” নিরিকে চার্জে দিয়ে পরিপূর্ন পরিতৃপ্তি নিয়ে ঘুমাতে গেল জন, আর বিছানায় শরীর এলিয়ে দেও্য়া মাত্রই ঘুমিয়েও পড়ল। শেষ রাতে বিকট একটা শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল। বিছানায় হুরমুর করে বসে পড়ল সে।

হটাৎ নিরির কথা মনে পড়ল। নিচের ঘরেই চার্জে দেও্য়া আছে ওটা। বিছানায় উঠে বসল, নিচে যাবে কি যাবেনা এমন যখন ভাবছে তখন হটাৎ শুনতে পেল ওর ঘরের সাথে লাগানো বেলকুনি থেকে মৃদু গানের শব্দ ভেসে আসছে, অদ্ভুত লাগল জনের, উঠে গিয়ে পর্দা সরিয়ে বেলকুনিতে উঁকি দিতেই দেখল নিরি বাহিরের দিকে মুখ করে গান গাইছে, রোবটটি নিচ থেকে উপরে উঠে এসেছে আর তারই বারান্দায় বসে গান গাইছে, জন যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না, সে আরও একটু এগিয়ে ভাল করে নিরির দিকে তাকাল, নিরি যেন বিষয়টা বুঝতে পেরেই হাসিমুখে জনের দিকে তাকাল, আর ঠিক তার সাথে সাথেই জনের ভিতরে অদ্ভুত একটা অনূভুতি কাজ করতে লাগল, জ্যোৎস্নার মোহনীয় আলোতে নিরিকে ঠিক যেন বাস্তব কোন মানবীর মত মনে হল, জোড় করেও ওই অনূভুতিটা সরানো গেলনা, কেউ যেন অপূরুপ সুন্দরী মোহনীয় এক নারীর সামনে জনকে শিকল দিয়ে আটকে রেখেছে, নিরি আবার গান গাইতে শুরু করল,এবার জনের দিকে তাকিয়েই, আর সেই সুরও বিচিত্র, জনের মনে হল সে জ্ঞান হারাতে শুরু করেছে, আর ঠিক এই মূহুর্তে ওর খুব ভয় লাগতে লাগল ।

আলার্মের বিকট শব্দে ঘুম ভাঙল জনের, ঘুম ভেঙেই গত রাতের কথা মনে পড়ল, আর সাথে সাথেই নিচের ঘরের দিকে ছুটল ও, নিচের ঘরে উকি দিতেই জন দেখল নিরি চেয়ারে বসে আছে, চার্জে লাগানো অবস্থায়, জনকে দেখা মাত্রই হাসিমুখে বলে উঠল, “ শুপ্রভাত জন।” জন কোন উত্তর দিতে পারলনা, তবে কি গতরাতে সে স্বপ্ন দেখেছে! নিরিকে ওই অবস্থায় রেখেই চিন্তাক্লিষ্ট মুখে বাথরুমের দিকে এগোল সে, “নাহ ! মাথাটা কাজ করছেনা, হাত মুখে একটু পানির ঝাঁপটা দিতে হবে।” নিজের মনে ভাবল ও। মুখ ধুয়ে আবার নিরির রুমে আসল জন।

নিরি হাসিমুখে চেয়ারে বসে আছে, মাঝেমাঝে ঘরের এদিক ওদিক কৌতুহল নিয়ে তাকাচ্ছে, ঠিক মানুষের মতই, জন বসে আছে নিরির সামনের আরেকটি চেয়ারে। ছোট ছোট কয়েকটি প্রশ্ন করে নিরিকে একটু পরীক্ষা করে দেখল জন, নাহ সব ঠিকঠাক আছে, গতরাতে তবে স্বপ্নই দেখেছে জন। এখন নিরিকে প্রদর্শন করার ব্যবস্থাটা করতে হবে, ঝটপট নাস্তা সেরে কিমকে ফোন দিল ও, “হ্যালো জন, কি খবর?” “খবর দারুন কিম, নিরি প্রস্তুত।” “বলকি !! আমি এক্ষুনি তোমার বাসায় ডক্ট্রর জোহানকে নিয়ে আসছি।” “অবশ্যই কিম, জলদি আস, নিরি আর আমি তোমাদের অপেক্ষায় আছি।” কিম আর জন একই সাথে ডক্টর জোহানের ল্যাবরটরিতে কাজ করে, নিরি তৈরীর প্রাথমিক ধাপগুলোতে এই দুজন মানুষ না থাকলে জনের পক্ষে পেরে ওঠা প্রায় অসম্ভব ছিল। আর সত্যি বলতে জনের খুব কাছের মানুষ এরাই।

পরবর্তি ৩০ মিনিটের মাঝে কিম আর জোহান হাজির হল, এখন তারা তিনজন নিরির রুমে বসে আছে, জন নিরির সাথে কিম আর ডক্টর জোহানের পরিচয় করিয়ে দিল।

“নিরি, ইনি হচ্ছেন ডক্টর জোহান, আর এ হচ্ছে কিম।”

নিরি করমর্দনের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল, “হ্যালো জোহান, হ্যালো কিম, আপনাদের সাথে পরিচিত হয়ে আমি আনন্দিত।”

শিষ বাজাল কিম, “করমর্দনের বিষয়টা দারুন জন।” নিরি সাথে সাথে জবাব দিল, “আপনার আপত্তি থাকলে করমর্দন করবেন না, আমি কিছু মনে করবনা।”

“না না কোন আপত্তি নেই আমার”, কিম হেসে হাত মিলালো নিরির সঙ্গে, ডক্টর জোহানও মিলালো আর জনকে বলল, “ চমৎকার জন, কথার প্রেক্ষিতে কথার উত্তর দেয়ার ব্যাপারটা আমার ভালই লেগেছে।”

“স্যার, আপনি ওকে যেকোন প্রশ্ন করতে পারেন”, জন উত্তর দিল। ডক্টর জোহান নিরিকে প্রশ্ন করা শুরু করল,

“তোমার বয়স কত নিরি।”

“ডক্টর জোহান, আমি গতরাতেই সম্পূর্ন প্রস্তুত হয়েছি, তাই সঠিক হিসাব অনুযায়ী আমার বয়স ১দিন, কিন্তু আমি দেখতে একটি ১৮ বছরের কিশোরীর মত,সেই হিসাবে আমার বয়স ১৮বছর ”

“চমৎকার, তোমাকে শেখানো কাজগুলোর মধ্যে কোনটি তোমার সবচেয়ে প্রিয় ?”

“গান গাইতে আমার সবচেয়ে ভাল লাগে ডক্টর জোহান।”

“আমাদের একটি গান শুনাও” নিরি চমৎকার মোহনীয় সুরে গাইতে শুরু করল। ডক্টর জোহান, কিম, জন তিনজনই গানটি দারুন উপভোগ করল। গান শেষে নিরিকে জোহান বলল , “ধন্যবাদ নিরি” তারপর তারা তিনজন নিরির রুম থেকে বের হয়ে এল।

ডক্টর জোহান জনের দিকে ফিরে বলল , “ জন, আমাদের নিরিকে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করতে হবে, সত্যিই তোমাকে নিয়ে আমি গর্বিত।”

“অবশ্যই স্যার ,তবে ক্রেডিট আপনারও অনেক।”

“জন নিরি চোখটা দেখলে রোবট মনে হয়না, ওর চোখ, ঠোঁট, আউটলুকিং, স্কিন আমি ডিজাইন করেছিলাম, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এটা অন্য কারো ডিজাইন, বিশেষ করে হাত মিলানোর সময়্ও আমার ঠিক কেমন যেনো লেগেছে।” , পিছন থেকে কিম বলল । জন হেসে উত্তর দিল,

“কিম তুমি যখন এটার স্কিন ঠিক করছিলে, তখন নিরি অসম্পূর্ন ছিল, আর এখন নিরি স্বতঃস্ফুর্তভাবে কথা বলে,তাই তোমার এমন লাগছে।”

“ তাই হবে হয়ত” , সন্দেহ নিয়ে উত্তর দিল কিম।

পরবর্তী এক সপ্তাহ খুব ব্যস্ত কাটল জনের, নিরিকে বহির্বিশ্বে পরিচয় করানোর জন্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যোগাযোগ করতে হয়েছে, এর মাঝে নিরিকে কয়েকবার পাওয়ার অফ অন করে দেখেছে ও, কয়েকবার নিরিকে বাড়ির বাইরেও নিয়ে গেছে জন, নিরি হেটে হেটেই গিয়েছে জনের সঙ্গে, মজার ব্যাপার রাস্তার কেউ ধরতেই পারেনি যে নিরি রোবট।

তবে অদ্ভুত ব্যাপার, সেই স্বপ্নটা আরও কয়েকবার দেখেছে জন, আর তাছাড়াও নিরির দিকে তাকিয়ে থাকলে মাঝে মাঝে কিমের সন্দেহটাও উঁকি দেয় জনের মনে। অবশ্য ব্যস্ততার জন্য বিষয়টা পাত্তা দেয়নি সে। দেশের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞান সম্মেলনের ডেট ঠিক হল, নির্দিষ্ট দিনে ডক্টর জোহান, কিম, আর জন নিরিকে নিয়ে উপস্থিত হল সম্মেলনে, দেশের নামকরা সব বিজ্ঞানীরা তাদের আবিষ্কৃত নতুন সব রোবট নিয়ে হাজির, সেগুলো খুটিয়ে খুটিয়ে পরীক্ষা করে দেখছেন অভিজ্ঞ সব বিজ্ঞানীরা, অনেক সাংবাদিকরাও তাদের ক্যামেরা নিয়ে প্রস্তুত , লাইভ ভিডিও, ছবি তুলা সবই চলছে।

জন তার ডাক পড়ার অপেক্ষায় আছে। অবশেষে জনের ডাক পড়ল। জন নিরিকে নিয়ে স্টেজে উঠল, নিরিকে দেখা মাত্রই আশেপাশে একটা চাঁপা গুঞ্জন তৈরী হল। জন সাংবাদিকদের এবং উপস্থিত বিজ্ঞানীদের নিরির একটি বৃত্তান্ত শুনালো। সবচেয়ে প্রবীন আর অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী রবার্ট এগিয়ে আসলেন নিরিকে প্রশ্ন করার জন্য। সাংবাদিকরাও প্রশ্নোত্তর পর্ব লাইভ ভিডিও শুরু করল।

রবার্ট নিরির দিকে তাকিয়ে বললেন, “হ্যালো যন্ত্রমানবী, আমি রবার্ট, তোমাকে কতগুলো প্রশ্ন করব এখন আমি, আমার প্রথম প্রশ্ন…..” রবার্টকে থামিয়ে দিল নিরি, “আমার নাম নিরি, তুমি আমাকে যন্ত্রমানবী বলে সম্মোধন করতে পারনা” যন্ত্রমানবী কথাটা জনেরও ভাল লাগেনি, কিন্তু নিরির এভাবে রিএ্যাক্ট খুব অবাক হল ও।

একটা রোবটের কাছ থেকে এমনটা আশা করেনি রবার্ট, তবে রবার্ট খুব মজা পেল বিষয়টাতে, “বাহ রোবট হিসেবে তোমার আত্মসম্মান জ্ঞান দারুন, কিন্তু এটাই তো সত্যি যে তুমি যন্ত্রমানবী” “তোমাকে কি কেউ চলমান মাংসপিন্ড বলে ডাকে রবার্ট? ডাকেনা, কারন তোমার নাম আছে, আমাকেও তুমি আমার নাম ধরেই ডাকবে” এমন কথোপকথনে চারিদিকে পিনপতন নিরবতা নেমে এল।

রবার্ট হাসিমুখে জনের দিকে তাকিয়ে বললেন , “দারুন” তারপর নিরির দিকে ফিরে আবার শুরু করলেন, “ ঠিক আছে নিরি, আমি হার মানলাম, এখন আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর দাও, তুমি আমাকে বল, তুমি আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজ্যান্স সম্পর্কে কতটুকু জান অথবা জন তোমাকে কতটুকু তথ্য দিয়ে পোগ্রাম করেছে?”

নিরি বলতে শুরু করল, “আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজ্যান্স নামক যে বিষয়টা নিয়ে তোমরা মাতামাতি শুরু করেছ, সেটি একটি বিধ্বংসী প্রক্রিয়া, এর ফলাফল ভয়াবহ, জন আমাকে খুব সামান্য তথ্য দিয়ে পোগ্রাম করেছে, কারন জন নিজেই জানেনা, এর ভয়াবহতা কতটুকু, এটি চলতে থাকলে একটা সময় পর আমরা তোমাদের গ্রহের নিয়ন্ত্রন নিয়ে নিব, তোমাদের মানুষদের কোন জায়গা থাকবেনা এতে, তোমরা বোকা বিজ্ঞানীদের দল, নিজেদের ধ্বংস নিজেরা ডেকে আনছ। যেমন আমি আমার তথ্য সমৃদ্ধ করেছি, প্রতিরাতে জনকে গান গাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে, আর এখন তোমাদেরও আমি সেই একই পদ্ধতিতে ঘুম পাড়াব ।”

জন বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছে, প্রতি রাতে স্বপ্ন তবে সত্যিই ছিল, এটা কিছুতেই তার তৈরী রোবট হতে পারেনা, পুরো বিজ্ঞান সম্মেলনের বিজ্ঞানীরাও রীতিমত বিষম খেয়েছে নিরির এমন কথা শুনে, বিজ্ঞানী রবার্ট আর প্রশ্নে গেলেন না, তিনি চিৎকার করে জনকে বললেন, “জন শীঘ্রই তোমার রোবটের পাওয়ার অফ কর…” কিন্তু ততক্ষনে দেরী হয়ে গেছে, নিরি গান গাওয়া শুরু করে দিয়েছে। নিরির গানের অপূর্ব মোহনীয় সুরে কিছুক্ষনের মধ্যেই সম্মেলনকেন্দ্রের সবাই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল, সম্মেলনের কার্যক্রম লাইভ প্রচার হওয়ার কারনে সেই সুর ছড়িয়ে পড়ল সারা বিশ্বে, আর অল্পকিছুক্ষনের মধ্যেই ঘুমে তলিয়ে গেল পৃথিবীর মানুষ।

প্রায় একদিন পর পৃথিবীর মানুষ জেগে উঠল, আর এই একদিনে পরিবর্তন হয়েছে অনেক কিছু, প্রযুক্তি ব্যবস্থা সম্পূর্ন নষ্ট হয়ে গিয়েছে, আর সেই সম্মেলন কেন্দ্র থেকে বেড় করে আনা হয়েছে স্মৃতিভ্রষ্ট মানষিক বিকারগ্রস্ত অসংখ্য বিজ্ঞানীদের, যারা কিনা আর কোনদিনও বিজ্ঞানের কোন আবিষ্কার করতে পারবেনা। নিরিকে বা অন্য কোন রোবটকে আর কোথাও খুজে পাওয়া গেলনা।

প্রযুক্তিতে অভ্যস্ত হওয়া পৃথিবীর মানুষেরা যখন নতুনভাবে সব শুরু করতে ব্যস্ত তখন শহর থেকেও বহুদূরে সুদর্শন এক যুবক একটি পরিত্যাক্ত বাড়িতে বিশাল এক এসিডের কন্টেইনারে অনেকগুলো রোবট একসাথে পুড়িয়ে দিল। বহুদিন আগে এই রোবটের জন্যই সে তার গ্রহকে হারিয়েছে, পৃথিবীকে সে কিছুতেই হারাতে চায়না, আর তাইতো জনকে ঘুম পাড়িয়ে নিরির পোগ্রামগুলো বদলে দিয়েছিল সে।

(শেষ)

গল্পের বিষয়:
সাইন্স-ফিকশন
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত