অদ্ভুত অভিজ্ঞতা

অদ্ভুত অভিজ্ঞতা

একদিন একটা বড় গাছের নিচে বসে আছি বিশ্রাম নেওয়ার জন্য। ইতিমধ্যে কোথা থেকে যেন একটা আগুন্তক লোক এসে পাশে বসলো।মানুষ হলেও চেহারাটা কেমন জানি অদ্ভুত মনে হলো আমার।তাই তাকে কিছু বুঝতে না দিয়ে নিজেই একটু সরে বসলাম।কিন্তু কিভাবে যেন লোকটা বুঝে ফেলল, আর বলল…………।

ভাইজান আপনি আমাকে পছন্দ করবেন না এটাই স্বাভাবিক ।আমি কুৎসিত দেখতে বাহ্যিক দৃষ্টিতে কিন্তু আমার ভিতরটা অনেক সুন্দর ।যা আপনি কিছুক্ষণ পরে বুঝতে পারবেন ।

আমি কথাটা শুনে একটু অবাক হলাম।কেননা তারকথায় অনেক আত্মবিশ্বাস ছিল।তাই আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না আসলে আমি তার ভিতরের ব্যপারটা কিভাবে বুঝবো…।

আমাকে সে বললঃ আপনি এখন কি পেলে সবথেকে বেশি খুশি হবেন????

আমিঃ আমি কি পেলে খুশি হবো সেটা শুনে আপনি কি করবেন?

সে বললঃ আমার খুশি হওয়ার প্রয়োজন হয়না। আমি নিজেই মানুষের খুশি বহণ করি।

আমিঃ আপনি কে? আপনার পরিচয় কি? (মনে মনে ভাবছি লোকটা পাগল নাকি?)

সে বললঃ আপনি ভাবছেন আমি পাগল তাই না?

(আমি তো পুরাই থ………)

আমাকে অবাক করে দিয়ে সে বলল,’’আমি হলাম (এমটিএস) আমার নির্দিষ্ট কোনো বাড়ি নেই।প্রায় সকল জীবন্ত গ্রহেই আমার বিচরণ ,তবে আমার বিশেষত্ব হচ্ছে আমি সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টা করি। এই যেমন ধরেন আপনি এখানে মনের দুঃখে বসে আছেন,আপনার বাড়ি থেকে সবাই অনেক গালাগালি করেছে যে সাড়াদিন শুধু শুয়ে বসে থাকে পড়াশুনা নাই ।এভাবে কি দিন যাবে……?

এবার তার কথাগুলো আমার বিশ্বাস হতে লাগলো ।আমাকে যখন বাড়ি থেকে বকা দেয় তখন তো অন্য কেও ছিল না।তাহলে এই লোক জানলো কিভাবে…।।

আমাকে ও বললো আমি ভাবছেন আমি কিভাবে জানলাম।আমার আপনার বিষয় জানার কারণ হলো আপনি নিজেই…।

এইবার আমি একটু বেশিই অবাক হলাম ।

বললাম কেন?

সে বললঃ আমি যে গতরাতে বাড়ির বাইরে গিয়ে আকাশের দিকে লক্ষ্য করে মাটির ওপর একটা চিহ্ন একেছিলেন মনে আছে?

আমি বললামঃ মনে থাকবে না কেন আমি তো গতরাতে (M,TএবংS)এই তিনটা বর্ণকে সংক্ষিপ্ত করে এক চিহ্নের ভিতরে দিয়ে একটা লোগো একেছিলাম।

সে বললঃ তোমাকে তো বললাম আমার নাম (এমটিএস) আর আমার এই নামের চিহ্ন সম্বিলিত লোগো কেও যদি অঙ্গন করে তাহলে তারকাছে আমাদের বিধান অনুযায়ী ঋণি হয়ে যাই…।আর তাই আমি তার ইচ্ছে মতো দুটো উপহার তাকে দিতে পারি। এখন বলো তাহলে তোমার কি উপহার প্রয়োজন?…………

আমি এতক্ষণে তার আশার উদ্দেশ্য বুঝতে পারলাম।তাই দেরি না করে ভাবতে শুরু করলাম কি চাওয়া যায়?

ভাবা শেষ হতে না হতেই সে বলল তুমি যা চাও তা আমি দিয়ে দিলাম……।

এই বলে সে একটা ঝাকি দিয়ে উঠে মাঠের ভিতর দিয়ে হাটা দিল কিন্তু কিন্তু কিছুদূর যেতে না যেতেই হারিয়ে গেল।

আমার একটু কষ্ট হলো আমি কি চাইবো সেটা না শুনেই উনি চলে গেল।

যাইহোক আমি মনে মনে ভেবেছিলাম যে উনার নিকট বলব যে আমি এমন একটা ম্যান সফটওয়্যার চাই যেন মানুষের মনের কথা বুঝতে পারি আর সেই কথাটাকে পালটিয়ে ফেলতে পারি…।।

উনি যখন বলেছেন দিয়ে দিলাম তাহলে হয়তো দিয়েছেন ,এটা ভাবতে ভাবতেই উঠে পড়লাম। গাছের নিচ থেকে উঠে সোজা বাড়ির দিকে হাটতে লাগলাম ।

রাস্তায় আমাদের এলাকার সবথেকে বাজে লোক মুকিমের সাথে দেখা।মুকিম  আমার পাশ দিয়ে যেতেই আমি থমকে গেলাম আমার মাথার ভিতর মুকিমের কুমতলবের কথা ভেসে উঠলো…।আমি এতক্ষণে বুঝলাম যে ওই আগন্তুক মনে হয় আসলেই ম্যান সফটওয়্যার দিয়েছে। কিন্তু আরো কিছুটা শিওর হওয়ার জন্য আমি মুকুমের পিছু নিলাম।আসলে মুকিম একটা লোকের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার নিতে যাচ্ছে,কিন্তু মুকিমের ইচ্ছে যে যদি লোকটা টাকা না দেয়।তাহলে ওকে মেরে টাকা নিবে। তাই আমিও দেখতে চাই যে ব্যাপারটা আসলেই ঘটে কিনা…।আমি মুকিমের চোখের আড়ালেই  পিছু নিয়েছি।কিছুক্ষণ পর  দেখি সুত্যিই মুকিম একটা লোকের কাছে টাকা চাইছে।এখন লোকটাও যানে যে মুকিম ভালো না।

ওই লোকের মনের মধ্যে ছিল কিছু টাকা দিয়ে বিদায় করবো।তাই সে কিছু টাকা দিল তখন মুকিম রেগে গিয়ে কয়েকটা ঘুশি মেরে দিল লোকটার গালে এবং হাতিয়ে নিল টাকা গুলো।লোকটা খুবই দূর্বল প্রকৃতির তাই সে পালটা আঘাত না করে ভাবলালো যে মিছে মিছে ফোনের অভিনয় দেখিয়ে মুকিমকে ভয় দেখিয়ে টাকা উদ্ধার করবে।আমি তো সবই বুঝতেছি যে কে কি ভাবছে……

তখন লোকটা কানের কাছে একটা মোবাইল ধরে কল না করে বলছে যে, এ আক্কাস কয়েকজনকে সাথে নিয়ে আয়তো এই মুকিম আমাকে মেরে টাকা নিয়ে যাচ্ছে। আমি তো লোকটার কাজ দেখে মিটিমিটি হাসছি……লোকটা কল করা ছাড়াই অভিনয় তো ভালোই জানে…।

হঠাৎ আমার হাসি থেমে গেল,আমি বুঝতে পারলাম মুকিম এবার আরো বেশি আঘাত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।ও তো লোকটাকে আধা মারা করে ফেলতে চায়।

তারাতারি করে আমি মুকিমের মনের কথাটাকে পালটে দিলাম।এবং পালটে তাকে দিয়ে লোকটার কাছে ক্ষমা চাইতে বললাম এবং টাকা গুলো ফেরত দিতে বললাম।আমি আমার মন দিয়ে ওকে করতে বললাম আর ও সেগুলো করতে থাকলো…।।

মাত্রই আমি একজন মানুষকে অনেক দুঃখ থেকে শান্তি পাওয়ানোর ব্যাবস্থা করলাম ভেবে আমার খুব ভালো লাগছে।আরো ভালো লাগছে যে আমার কাছে এমন একটা ম্যান সফটওয়্যার আছে…।মনের খুশিতে বাড়ি ফিরলাম। বাড়ি ফিরে দেখি আমাকে সবাই আবার বকবে বলে ধারণা করছে।আমি পালটিয়ে দিলাম।তাই তারা আমাকে খুব আদর করে ঘরে বসিয়ে খেতে দিল। আমি তো মহাখুশি আমি কি পেয়ে গেলাম। দিনের বেলা গড়িয়ে রাত নেমে এল আমি মনের আনন্দ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।

কারোর উচ্চস্বরে বকার ঝকার আওয়াজ শুনে ঘুম ভাংলো উঠে দেখি মা চিৎকার করে বলছে এখন কত বাজে?ঘুম শেষ হবে কখন ? তাকিয়ে দেখি ৯ টা বাজে। আমি তখন ভাবলাম যে আমি এই রাগি মেজাজ পালটে দেই কিন্তু একি আমি তো মাকে খাবার দিতে বললাম ,কিন্তু মা আমাকে বললো অফিসারের ব্যাটা গিয়ে নিজেই খেয়ে নাও…।খেয়ে আমাকে উদ্ধার করো…………

আমি আবার থ……………

তার মানে আমার ম্যান সফটওয়্যার আর কাজ করছে না? আমার মনটা আবার কষ্টে ভরে গেল……

তারাতারি করে আকাশের দিকে লক্ষ্য করে আবার সেই লোগো আঁকলাম, কিন্তু কাজ হলো না।এর পরে আরো যে কত শতবার সেই লোগো এঁকেছি তার হিসাব নাই।তবুও সেই আগুন্তুকের দেখা মিলল না।

সেই দিনের ব্যাপারটা আদও ঘটেছিল কিনা নাকি আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম তা আমি আজ পর্যন্ত ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না…………………………………বিষয়টা একটা অদ্ভুব জীবন্ত স্বপ্ন বলেই আমার মনে হতে লাগলো। Mts Tasrif Hossen

গল্পের বিষয়:
সাইন্স-ফিকশন
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত