৫. শেষ পর্ব (বারো বছর পর)
বাইভার্বাল থেকে নেমে ত্রাতিনা মেঠো পথ দিয়ে হেঁটে ছোট বাসাটার দিকে এগিয়ে যায়। গাছপালা ঢাকা মেঠো পথ, গাছগুলোতে পাখি কিচির মিচির করছে।
ত্রাতিনা সিঁড়ি বেয়ে উঠে বাসার দরজায় শব্দ করল। কয়েক মুহূর্ত পরে দরজাটি খুলে পঁচিশ-ছাব্বিশ বছরের একটি মেয়ে বের হয়ে এলো। মেয়েটি সপ্রশ্ন দৃষ্টিতে ত্রাতিনার দিকে তাকায়। ত্রাতিনা নরম গলায় বলে, “আমার নাম ত্রাতিনা। তুমি নিশ্চয়ই ক্লিয়া?”।
মেয়েটি মাথা নাড়ল। বলল, “হ্যাঁ।”
ত্রাতিনা বলল, “তোমার বাবা গ্রাহা একজন খুব দুঃসাহসী মহাকাশচারী ছিল।”
ক্লিয়া একটু অবাক হয়ে বলল, “তুমি কেমন করে জান?”
“আমি জানি, কারণ আমিও একজন মহাকাশচারী। তোমার বাবার সাথে আমার একটি মহাকাশযানে সময় কাটানোর সৌভাগ্য হয়েছিল।”
ক্লিয়া ত্রাতিনার হাত ধরে বলল, “তুমি কী একটু ভেতরে আসবে? আমার বাবার কথা একটু বলবে?”
“হ্যাঁ বলব। আমি সেজন্যেই এসেছি। তার আগে আমি কী তোমাকে একবার আলিঙ্গন করতে পারি? তোমার বাবা তার জীবনের শেষ মুহূর্তটিতে আমাকে বলেছিল, আমি যেন তোমাকে তার হয়ে একবার আলিঙ্গন করি।”
ক্লিয়া কোনো কথা না বলে ত্রাতিনাকে জড়িয়ে ধরল। ত্রাতিনা ফিসফিস করে বলল, “আমি যেন পৃথিবীতে ফিরে আসতে পারি, সেজন্যে তোমার বাবা তার জীবন দিয়েছিল। তুমি যেরকম তোমার বাবার সন্তান, আমিও ঠিক সেরকম তার আরেকজন সন্তান।”
ঘরের দরজায় দুইটি তরুণী একে অপরকে আলিঙ্গন করে দাঁড়িয়ে থাকে। দুইজন এর আগে কখনো একজন আরেকজনকে দেখেনি। কিন্তু দুইজনই হঠাৎ করে বুঝতে পারে, তারা একজন আরেকজনের খুব আপনজন।