ক্রশ্চিয়ান

ক্রশ্চিয়ান

আমি আর নিশি যখন প্রথম বার পৃথিবীর মহাকাশ গবেষণার জন্য একাডেমীতে এসে ছিলাম তখন আমাদের সাহায্য করার জন্য কয়েকটি কয়েকটি দ্বিতীয় মাত্রার এনরয়েড² দেয়া হয়ে ছিল। এগুলো একএকটা আস্ত গাধার হাড্ডি। সারাদিন শুধু বোকার মত ফ্যালফ্যাল করে ফটোসেলের চোখ দিয়ে তাকিয়ে থাকতো। আমার একদমই রোবট সহ্য হয়না।শুনেছি আজ সারা পৃথিবীর বুকে কয়েকটি মানুষ আছে তাদের আবার শীতল ঘরে ঘুম পড়িয়ে রাথা হয়েছে। বাকি পৃথিবীর বুকে আজ চতুর্থ মাত্রার রয়েডে¹² ছেয়ে গেছে।
পৃথিবী অনেক আগেই বসবাসের অনুপযোগী হয়ে গেছে।

আজ 12 বছর পরে আমি আর নিশি আবার পৃথিবীতে ফিরে আসছি সেটা ভাবতেই নিজের মধ্যে কেমন করছে সেটা অনুভব করতে পারছি না। নিজের মধ্যে একটা কঠিন উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছে কিন্তু পর মুহুর্তে মনে একটা কথা মনে পড়ে সেটা হলো আজ সারা পৃথিবীর বুকে একটাও জীবিত মানুষ নেই গুটি কয়েক শিশু বাদে । আজ তাদের ক্রস্চিয়ান গ্রহাণুতে আনার জন্য পৃথিবীতে যেতে হবে। পৃথিবী ধংসের দ্বারপ্রান্তে এসে গেলে অনেকেই জিনেটিক ইন্জিনিয়ারিং করে ফুসফুস পরিবর্তন করে পানিতে নেমে গেছে, বাকিরা চলে গিয়েছিল ক্রস্চিয়ান গ্রহাণুপুন্জে। অল্প কিছু মানুষ থেকে গিয়েছিল পৃথিবীতে।আজ তাদের সন্তানদের আনতে যাচ্ছি। আমাকে আর নিশিকে দীর্ঘ তিনমাসে বহু পথ পাড়ি দিতে হবে। তাই যাত্রা শুরুর তিনদিন পরে আমাদের শীতল ঘরে ঘুম পড়িয়ে দেয়া হল।

এই তিনদিন নিশি রোবট গুলোর সাথে সারা দিন দুস্টুমি করতো। এই রোবট গুলো তৃতীয় মাত্রার এনড্রয়েড এদের মধ্যে সকল মানবিক গুন আছে। এরা মানুষের মত করে হাসতে পারে আবার কাদতেও পারে। আমাদের ঘুমের পরে এরাই মহাকাশ যানটি নিয়ে যাবে পৃথিবীর দিকে। এদের মাথার কপোট্রোনে একটা মাএ প্রোগ্রাম করা সেটি হল সঠিক ভাবে মহাকাশ যানটিকে পৃথিবীর দিকে নিয়ে যাওয়া।এটি একটি সপ্তম মাত্রার মহাকাশ যান।

পৃথিবীতে পৌছানোর 72ঘন্টা আগে আমার ঘুম ভাঙল শীতল ক্যাপসুলের মধ্যে বসে অনুভব করতে পারছি না আমি এখন কোথায় আছি।

পুরো ব্যাপার নিয়ে নিয়ে চিন্তা করছি এমন সময় একটা এন্ড্রয়েডের ডাকে সম্ভিত ফিরে পেলাম।

মহামান্য কিরি আপনাকে স্বাগতম।
আমরা আর মাএ ৭২ ঘণ্টা পর পৃথিবীর বুকে অবতরন করতে যাচ্ছি। এর মধ্যে আমরা গ্রহটার অনেক তথ্য পেয়েছি চলুন আপনি সেগুলো দেখবেন।

আমি কনট্রোল প্যানেলের উপর একটা নীলাভ গ্রহের অস্তিত্ব দেখতে পাচ্ছি। পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা নানা কাজে চলে গেল। আমার ইতিমধ্যে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করতে যাচ্ছি।

স্ক্রিনে বায়ু মন্ডলের শতকরা পরি মাপ করা হচ্ছে একটা তথ্য দেখে অনেকটাই অবাক হলাম।
বায়ু মন্ডলের শতকরা ০.০৩ ভাগ অক্সিজেন,কার্বনের পরিমান ৭৬ এর উপরে, আর নানা জায়গায় তেজস্ক্রিয়তা সম্ভবত এটা সপ্তম বিশ্বযুদ্ধের নিদর্শন। একমাত্র এই যুদ্ধের ফলে পৃথিবী আজ নরকে রূপান্তরিত হয়েছে।
অবশেষে মহাকাশ যানটাকে পৃথিবীর কক্ষ পথে রেখে একটা স্কাউটশিপে করে পৃথিবীর রবোনগরীতে প্রবেশ করলাম।

কাউন্সিলের প্রধান একটা চতুর্থ মাত্রার রোবট, নাম ক্যাপটেন জুক। সে এসে আমাদের স্বাগতম জানালো। রোবট হলেও এটি নিনীষ স্কেলে মানুষের থেকে দুই মাত্রার উপরের। আমি আর নিশি মুখে মাস্ক পরে বের হলাম। ,,,

পৃথিবীতে তিনদিন কাটানোর পরে আজ আমাদের ক্রস্চিয়ানে ফিরে যেতে হবে। যাবার সময় জুক আমাদের ডেকে বললেন তোমাদের যাত্রা শুভ হোক।

একমাত্র তোমরা মানুষেরা পৃথিবীটাকে তোমাদের বসবাস করার অনুপযোগী করেছো।তোমাদের নিজেদের হানাহানিতে তোমাদের পূর্ব পুরুষদের পৃথিবীর এই করুন অবস্হা।

পরিশেষেঃ পৃথিবী থেকে আনা ৪৭ টা মানব শিশু গুলোকে আজ আট বছর হল ক্রস্চিয়ানে আনা হয়েছে। আর এই আট বছরে পৃথিবীকে পুনরায় বসবাসের উপযোগী করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যানিনা সেটা সফল হবে কিনা।

গল্পের বিষয়:
সাইন্স-ফিকশন
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত