গল্পটা ৪ বছর আগের। ক্যালেনডার এর পাতায় তখন 3018 সাল!
আমি থাকি চাঁদের জিরো পয়েন্ট এ। চাঁদের প্রধান রাষ্ট্রাংশ বলতে পারেন। চাঁদ ও পৃথীবির রাষ্ট্রাংশ এর সমষ্টিতে গঠিত হয় একটি রাষ্ট্র । যেমন পৃথীবিতে এবং চাঁদ উভয় স্থানেই বাংলাদেশ আছে। একই রাষ্ট্রের দুই অংশ। পৃথীবির অংশে বাংলাদেশ এর নাম পৃ:বাংলাদেশ ও চাঁদে চাঁ:বাংলাদেশ। চাঁ:বাংলাদেশ অনেক পরিচিত কারন এটির জিরো পয়েন্ট আর চাঁদের জিরো পয়েন্ট একই ।
তো চাঁ:বাংলাদেশ ও পৃ:ভারত এর দুই বিজ্ঞানী জনাব জাফর এবং জনাব সাধীন মঙ্গল গ্রহের একটি অফিসে চাকুরিরত। তারা পরানের দোস্ত। ব্রাদার ফ্রম এনাদার মাদার। তাদের নিয়েই এই ঘটনা
জাফর: সাধীন, ওই সাধীন । ওই ওঠ । সারাদিন খালি ঘুম।
সাধীন: (চোখ ডলতে ডলতে) কিচ্চে?!? আমার শরীর আমার জীবন, আমার যখন ইচ্ছা তখন ঘুমাবো। তোর সমস্যা??
জাফর: আরে ভাই বুঝি তো কালকেও ভাবির সাথে ঝগরা করছস। তাই ভাবি তোরে বের করে দিয়েছে। রাত্রে ঢুকতে দেয় নাই, তোর ঘুমও চাঙ্গে।
সাধীন: বুঝলে এতো চিল্লাস কেন? *াল!
জাফর: আরে একটা গাড়ি অর্ডার দিয়েছিলাম। দেখ কি করছে!
সাধীন: কোন গ্রহের?
জাফর: চাঁদ ।
সাধীন: কোন রাষ্ট্রাংশ?
জাফর: চাঁ:বাংলাদেশ ।
সাধীন: তুই একটা গাধা। ঐ দেশের গাড়ি কেউ কিনে! আ*াল। কি করছে? গাড়ির চাবি দেয় নায়? নাকি ঠিক মতো ডেলিভারি না দেওয়ার কারনে স্ক্রেচ পড়ছে? ওরা ভালো সার্ভিস কোনোদিন দিতেই পারে না ।
জাফর: ঐসব কিছু না। কি একটা বাক্স পাঠাইসে কিছুই বুঝি না।
সাধীন: বাক্স? আগেই বলসি ওরা ভালো সার্ভিস কোনোদিন দেয় না।
জাফর: আরে গারির জিনিষই দিছে তুই আয় নাইলে বুঝবি না।
সাধীন: চল। (চোখে বিরক্তি) ওরা গিয়ে দেখল একটা বাক্সে গাড়ির ছবি আঁকা। বিষয়টা বুঝতে পারলনা। জাফর: দোস্ত তুই ছবি তুলে গুগল করতো।
সাধীন : আমার ওয়াই-ফাই পাস মনে নাই।
জাফর : আ**। (জাফর নিজেই গুগল করল) ওরা জানতে পারলো এটা নতুন ব্যবস্থা। গুগলের মতে-” আন্তঃগ্রহ ডেলিভারি সংস্থা (InterPlanet Delivery Corporation, IPDC) এর নতুন ডিসিশন। একগ্রহ থেকে অন্য গ্রহে কিছু পাঠালে তার পার্টস আলাদা করে একটি বক্সে ভরে পাঠাতে হবে। বক্সে আরো থাকবে একটি ক্যাটালগ। যাতে বিস্তারিত বলা থাকবে কিভাবে পার্টস গুলো জোরা লাগিয়ে বস্তুটি ব্যবহার করতে হবে।
IPDC এর কারন হিসাবে জানায় এভাবে অল্প আয়তনে বেশি বস্তু পাঠানো সম্ভব। IPDC আপডেট নং- ২৬৪” জাফর এবং সাধীন মিলে ক্যাটালগ পড়ে পড়ে তিন ঘন্টায় সফলভাবে গাড়িটি তৈরি করতে পারল। তো এভাবে তাদের দিন কাটে। জাফর গাড়ি নিয়ে ঘুরে। সাধীন বউয়ের সাথে ঝগরা করে অফিসে ঘুমায়। কিছুদিন পর। জাফর এবং সাধীন একসাথে একটা কম্পিউটার তৈরি করছিলো।
জাফর: ধুর! 57 পার্টস! এইটা কিছু হইলো। এতোগুলা কি IPDC এর বাপ জোরা দিবে নাকি?
সাধীন: সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো ক্যাটালগ। কোন বলদে এইটা লিখসে কে জানে! ৩৭ পেজের ক্যাটালগ। তার পর আবার হাতের লেখা এতো সুন্দর…. কিছুই বুঝি না। মানুষের হাতের লেখা এতো খারাপ হইতে পারে? যত্তসব ফইন্নির দল।
জাফর: হা হা হা সাধীন: কুত্তা না হাইসা গুগল অ্যাসিস্টেন্ট কে জিগাও সমাধান কি?
জাফর: Hi Google! Please help us. Google: Good News! Bangladesh(moon) has invented a pozitronic robot for this situation. Buy it!
জাফর: সাধীন গুড নিউস বাংলাদেশ একটা রোবট বানাইসে এইসব বস্তু জোরা লাগানোর জন্য । কিনব? সাধীন: এতোদিনে বাংলাদেশ একটা কাজের মতো কাজ করেছে। কিনে ফেল । দাম কতো?
জাফর : ৩লাখ মার্কিন ডলার।
সাধীন : এতো কম! কস কি মামা। এখনি অর্ডার দে। নাইলে শেষ হয়ে যাবে ।
জাফর : ওকা। জাফর অর্ডার দিলো। তিন ঘণ্টা পরে দেখল একটা মাঝারি সাইজের বাক্স আসছে। বাক্স কাছাকাছি আসতেই দুই জন ঝাপিয়ে পড়ল। দ্রুত বক্সের কাগজ ছিড়ে প্যাকেট খুলল। প্যাকেট খুলেই জাফরের মাথায় হাত। সাধীন এর মেজাজ এমনিই খারাপ কারন তার বউ বাপের বাড়ি এর পরে আবার এই কাহিনি। সাধীনের মুখ যথেস্ট খারাপ হয়ে গেল। ভাষায় লিখলে এরকম “বাংলাদেশের সার্ভিস এর *** **।
” পাঠকের নিশ্চয় আগ্রহ জেগেছে যে বাক্সে এমন কি ছিল। তাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েই দিলাম। বাক্সে ছিলো ৬৩৯১ টি পার্টস আর ৪০০০ পেজের ক্যাটালগ, যার হাতের লেখা ডাক্তারদের থেকেও খারাপ।