–ও মা পানি খামু ! গলাডা শুকায় গেছে ।
অার জানে কুলায় না । দমডা বন্ধ হইয়া যাইতাছে । ইট্টু পানি দেও খাই!
–বাজান অার ইট্টু সবুর করো । এই অাশ্রয় কেন্দ্রে সাহাইয্য অাওনের সময় হইছে ।
বোতলে বোতলে পানি দিবো । খাওন দিবো । অার ইট্টু সবুর করো বাজান ।
অার ইট্টুহানি ।
— এই কথ তো তুমি কাইলকা থ্যাইকা কইতাছো, কই এহোনো তো কিছুই অাইলো না ।
খিদায় অার পানির পিপাসায় অামার জীবন যায় যায় অবস্তা ।
–বাজান কলসিতে যে পানি অাছিলো , সেই পানি তো শ্যাষ । তোমারে কি দিমু ?
যতক্ষণ পর্যন্ত মাইনষে সাহাইয্য না করবো , ততক্ষণ কই পামু ?
–ও মা মাইনষের সাহাইয্যের কথা বাত দেও । অামারে অাগে ঐ ময়লা পানি থ্যাইক্কা ইট্টু পানি দেও খাই ।
চোক্কের সামনে কত পানি , পানির তো অভাব নাই ।
দেওনা ইট্টুহানি পানি ।
–পানির তো অভাব নাই , তয় খাওনের পানির অভাব বাজান । খাওনের পানি ।
–অামার দুই পা নাই বইলা যাইতে পারতাছি না । নাইলে একলাই যাইয়া খাইতাম । তুমি পানি দিবা কি না কও ?
–বাজান অার ইট্টু সবুর করো ।
১৩ বছরের সাজু মায়ের কথা না শুনে ,
সে একাই দুই হাতের উপর ভর করে , পানির কাছে এগিয়ে গিয়ে , দুই হাতের চোউল ভরে ঢগঢগ করে পানি খেয়ে ফেললো ।
সাজুর মা কাঁদতে কাঁদতে ছেলেকে অাশ্রয় কেন্দ্রের ভিতরে নিয়ে গেলো ।
ময়লা দূষিত পানি পান করার ফলে । সাজুর প্রচন্ড পেট ব্যথা অার পাতলা পায়খানা শুরু হলো ।
পাতলা পায়খানার সময় প্রচুর পানি পান করতে হয় । যাতে শরীরে পানির ঘার্তি পূরণ হয় ।
কিন্তু খাওয়ার পানি পাবে কোথায় সাজুর মা ? বান্যায় চারিদিকে শুধু ময়লা পানি অার ময়লা পানি ।
সাজু অাস্তে অাস্তে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পরতে লাগলো । তার পর এক সময় সে মারা গেলো ।
সাজুর মা ছেলেকে বুকে জরিয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো । ঠিক সে সময় হেলিকপ্টারে করে ত্রাণ এসেছে ।
সবাই ছুটাছুটি করে পানি অার শুকনা খাবার সংগ্রহ করছে । সাজুর মা ছেলেকে বুকে ধরে মানুষের সেই ছুটাছুটি দেখছে ।
সাজুর মায়ের ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকা চোখে একটাই প্রশ্ন ।
এই ত্রাণ অাগে কেনো এলো না ?