আপনারা হয়তো আমার নামটা জানেন ,আমার নাম সানভি আহমেদ সাকিব।কিন্তু আজকের গল্পটা আমার নাম না দিয়ে
আমার সুইট দুইটা বন্ধুর নামে লিখলাম।
,
আমিঃ দোস্ত আমি সরি দোস্ত আমি এইটা করতে চাই নাই প্লিজ আমাকে মাফ করে দে।
বর্নঃ না মাফ করা যাবেনা, তুই যে কাজটা করসোস তার কোনো মাফ নাই।
আমিঃ দেখ দোস্ত প্লিজ এরপর আর এরকম হবেনা।
বর্নঃ না মাফ নাই,,,তবে তোর জন্য একটু স্যাকরিফাইস করতে পারি।
আমিঃ কি করতে হবে আমাকে?
বর্নঃ আমাকে ফুচকা খাওয়াতে হবে এখন।
আমিঃ তাহলে মাফ করবি তো? ?
বর্নঃ হুমম।
আমিঃ আচ্ছা তাহলে চল।
/
আচ্ছা আসেন পরিচিত হই, আমি শান্ত ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি।আর যার সাথে কথা বলছিলাম ও হলো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড বর্ন। মেয়েটা ফুচকা খেতে খুব ভালোবাসে।
তাই যখনই রাগ উঠে তখনই ফুচকা খাওয়াই।
ও এতোক্ষন কি নিয়ে মাফ চাইলাম সেটা বলি।
আসলে কলেজ থেকে ফেরার পথে হঠাৎ মামতো বোনের
সাথে দেখা হয়ে গেল ওর সাথে কথা বলতে বলতে দেরি হয়ে গেল। ওদিকে বর্ন রেগে চলে গেল।মেয়েদের এই এক
দোস অল্পতেই রেগে যায়।তবে মেয়েটা দেখতে খুবই সুন্দর।
ওকে প্রথম যেদিন দেখেছিলাম সেদিনই ভালোলেগে ছিল।
আস্তে আস্তে কথা বলতে বলতে এক সময় আমরা বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে যাই।
,
তারপর ওকে নিয়ে ফুচকা খেয়ে চলে আসলাম।
রাতে বর্ন ফোন দিলো,,
আমিঃ হ্যালো বর্ন, কি করিস।
বর্নঃ কেক বানাচ্ছি খাবি নাকি??
আমিঃ হুমম খাওয়া যেতেই পারে কলেজে নিয়ে আসিস তো দেখবোনি কেমন কেক বানাস।
আমিঃ আচ্ছা রাখি কালকে কথা হবে।
বর্নঃ আচ্ছা।
পরদিন কলেজ গিয়ে আমি তো অবাক, মেয়েটা পুরো কেকটাই নিয়ে এসেছে। মাঝে মাঝে ওর পাগলামি দেখে হাসি পায়।
আমিঃ কি করসোস কি পুরোটা নিয়ে আসছিস কেন।
বর্নঃ তুই খেতে চাইছিস আর আমি কি কম আনবো।
আমিঃ তাই বলে এতো।
বর্নঃ কি জানিস তুই ছাড়া আমার আর আপন কেউ নাইতো
তাই তোর জন্যই আনলাম।
ও একটা কথা বলা হয়নি।ওর বাবা মা একটা এক্সিডেন্টে মারা যায়। এখানে ওর মামার কাছে থাকে।
আমিঃ আচ্ছা চল।
বর্নঃ কো্থায়? ??
আমিঃ বাড়িতে চল আম্মুর সাথে দেখা করিয়ে দেই তোকে আর এতো বড় কেক আমি একা খেতে পারবো না।
বর্নঃ আচ্ছা চল।
বাড়িতে এসে,
মা ,মা কোথায় তুমি।
মাঃ কি হয়েছে।বল।
আমিঃ দেখো কাকে নিয়ে এসেছি।এইটা আমার বন্ধু বর্ন।
মাঃ বাহ বেশ মিস্টি দেখতে তো মেয়েটা, তোর মতো একটা বাদরের সাথে বন্ধুত্ব করলো কো জানে।
আমিঃ দেখো মেয়েটা এতো বড় একটা কেক বানিয়ে আনসে আমি খাবো বলে।
এমন সময় আমার পিচ্চি বোনটার আগমন,
সিমাঃ ভাবি ভালো আসেন।
বর্নঃ হুমম ভালো আসি।এদিকে আসো।
তারপর সারাদিন বর্ন আমাদের বাসায় থাকলো।বেশিরভাগ সময়টাই সিমার সাথে কাটালো।
বিকেল বেলা আমি ওকে পৌছে দিতে গেলাম,
আমিঃ বর্ন কিছু মনে করিস না ও ছোট তো তাই বলে ফেলেছে।
বর্নঃ মনে করবো কেন,আমার তো কিছুক্ষন এর জন্য বউ বউ মনে হচ্ছিলো।
তারপর ওকে বাড়ি পৌছে দিয়ে আসলাম।
এখন সবসময় মাথায় একটা কথাই ঘুরে বউ, তাহলে কি ও আমাকে ভালোবাসে।
না আমাকে বলতেই হবে???
তাই পরদিন কলেজ গেলাম, আমি গিয়ে ওকে ফোন দিলাম,
আরে ওইতো বর্ন আসছে।
আমিঃ চল আজকে ঘুরবো।
বর্নঃ আচ্ছা চল।
তারপর একটা পার্কে গেলাম,
আমিঃ বর্ন দুই এই ব্রেন্চ টাতে বস আমি আসছি।
বর্নঃ কই যাস।
আমিঃ আসতাছি।
আমি একটা ফুল নিয়ে আসলাম, এখন কেমন যানি ভয় লাগছে যদি না করে দেয় এতো সুন্দর একটা বন্ধুত্ব নষ্ট করে দেয়। তবুও আমাকে বলতে হবে।
আমি হাটু মুরে বসলাম,
আমিঃ বর্ন আমি তোকে ভালোবাসি। এটা ভালোলাগা নয় ভালোবাসা। আমি তোকে কখনো কষ্ট পেতে দেবোনা। তুই কি আমাকে ভালোবাসিস।
বর্নঃ আমি ও তোকে ভালোবাসি। একটা শর্ত আছে?
আমিঃ কি শর্ত???
বর্নঃ আমাকে প্রতিদিন ফুচকা খাওয়াতে হবে।
আমিঃ এর চাইতে ভালো তুই একটা ফুচকাওয়ালা কে বিয়ে কর।আনলিমিটেড ফুচকা খাবি।
বর্নঃ তুই রাজি কিনা বল??
আমিঃ রাজি রাজি রাজি।
তারপর আমাদের মিস্টি মিস্টি প্রেম চলতে লাগলো
প্রতিদিন ওই পার্ক টাতে গিয়ে ঘুরা।ওই ব্রেন্চ টাতে বসে ওখানকার ফুচকাওয়ালার কাছ থেকে ফুচকা খাওয়া।
কিন্তু হঠাৎ করে একদিন বর্ন বললো,
বর্নঃ শান্ত তুমি যানো মামা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে।
আমিঃ কি বলসো কি??
বর্নঃ প্লিজ কিছু একটা করো আমি তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা।
আমিঃ তুমি কেদোনা আমি দেখছি কি করা যায়।
কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও কিছুই করতে পারলাম না,
ওর বিয়ে হয়ে গেল।চলে গেল আমাকে শুন্য করে।
পরদিন পার্কে গেলাম ফুচকাওয়ালা আমাকে দেখে,
ভাই আপনি আজ একা কেন ভাবি আসে নাই।
আমিঃ ওর বিয়ে হয়ে গেছে রে ভাই ।
আমি নিজেকে সামলাতে পারলাম না ,আসলে খুব ভালোবেসেছিলাম মেয়েটাকে।
আমি এখনো ওই পার্কে যাই প্রতিদিন,
শুধু ব্রেন্চ টার একটা পাশ খালি থাকে যেখানে বর্ন বসতো।
আমি এখনো ওই পার্কের ফুচকাওয়ালার কাছ থেকে ফুচকা খাই ,শুধু কয়েকটা ফুচকা থেকেই যায় একজনের জন্য।
আমি এখনো তাকে ভালোবাসি।
মেয়েটা বলেছিলো আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে না কিন্তু সেদিনই দেখলাম ওর স্বামির সাথে হাসতে হাসতে আসছে, ।
আমাকে দেখলো কিন্তু না চিনার ভান করে চলে গেল।
আসলে মেয়েরা এমনই খুব সহজে ভালোবেসে ফেলে
আবার খুব সহজেই ভুলে যায়।কিন্তু আমি কেন পারছি না তোকে ভুলতে, সরি বর্ন ভুলতে পারিনি আজোও ভুলতে পারবোনা কখনো। আসলে কি জানিস তো কিছু কিছু মানুষকে ভুলা যায়না।তারা হৃদয়ে গেথে থাকে আর
ধিরে ধিরে কষ্ট দেয়।
গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক