নিহত ভালোবাসা

নিহত ভালোবাসা

হঠাৎ চোখে মুখে পানির ছিটা অনুভব করছি। বুঝতে পারলাম সায়মা তার চুলের পানি দিয়ে আমার ঘুম ভাঙানোর চেষ্টা করছে। এই পাগলি মেয়েটা প্রতিটা দিন তার চুলের পানি দিয়ে আমার ঘুম ভাঙায়।

~ রাতুল এই রাতুল, উঠো না আর কত ঘুমাবা ?
— প্লিজ সায়মা আর একটু ঘুমাই। অনেক ঘুম পাচ্ছে।
~ দেখ অনেক বেলা হয়ে গেছে অফিসের দেরি হয়ে যাবে কিন্তু বাবু তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠো।
— হোক দেরি স্যার কিচ্ছু বলবে না আমাকে আমি ম্যানেজ করে নিবো। প্লিজ বাবু আর ২০ মিনিট আমাকে ঘুমাতে দাও।

~ না বাবু আর ১ মিনিট ও না… সাড়ে ৮ টা বাজে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হও। আমি টেবিলে নাস্তা দিয়ে দিচ্ছি.. বাহানা না করে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে অফিস যাও।

ঘুম ঘুম চোখে বিছানা থেকে উঠে বারান্দায় এসে দেখি বাহিরের আকাশটা মেঘলা। মনে হয় একটু পর ঝুম বৃষ্টি নামবে। কতদিন হল বৃষ্টি তে ভেজা হয় না। কয়েক বছর আগে যখন আমি আর সায়মা একসাথে ভার্সিটিতে পড়তাম তখন বৃষ্টির দিনে আমরা দুজন রিক্সার হুট খুলে সারা শহর ঘুড়ে বেড়াতাম আর বৃষ্টিতে ভিজতাম। বৃষ্টি হবে আর আমরা দুজন ভিজবো না এমনটা আগে কখনোই হয় নাই। বৃষ্টি শুরু হলেই ভিজতে ভিজতে আমি বেরিয়ে পড়তাম তারপর সায়মা কে নিয়ে রিক্সা করে ঘুরে বেড়াতাম, রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার পছন্দের ফুসকা, ঝালমুড়ি আর বাদাম কিনে খেতাম, দুজনে মিলে বেশ মজা করতাম। আহা ! কি রোমাঞ্চকর ছিল সেই সব দিনগুলো। সারাদিন হৈ হুল্লোড় আর খুনসুটিতেই কেটে যেত। বড্ড মিস করি অতীত টাকে।

~কি হলো রাতুল এখনো যাও নি তুমি? এইখানে এইভাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি ভাবছ ?

–আজ অফিসে না গেলে হয় না ? একটু পর মনে হয় বৃষ্টি নামবে। চল না তুমি আর আমি আজ বৃষ্টিতে ভিজি ভিজতে ভিজতে রিক্সা করে পুরো শহরটা ঘুড়ে বেড়াবো ঠিক ভার্সিটিতে যেমনটা ঘুরতাম। অনেকদিন তো আমরা বৃষ্টিতে ভিজি না। দেখ আকাশে মেঘ জমেছে ভারী বৃষ্টি হবে বলে মনে হচ্ছে। আজ আর অফিস যাব না চল আমরা দুজন পুরো শহর ঘুরতে বের হবো এই ঝুম বৃষ্টি তে।

~২দিন পর পর অফিস না যাওয়ার বাহানা তাই না? যাও তো চুপচাপ নাস্তা করে অফিসে যাও… তোমার এত্ত ঢং দেখতে আর ভালো লাগছে না, তাড়াতাড়ি টেবিলে এসো। তাছাড়া আমার অনেক কাজ আছে।

কি আর করা কোন উপায় না দেখে বউয়ের কথা মত নাস্তা খেয়ে অফিসে চলে এলাম। কিন্তু অফিসে এসেও যে শান্তি পেলাম না… কাজে কিছুতেই মন বসছে না। চারদিকে ঝুম বৃষ্টি নেমেছে পুরো শহর জুড়ে। এমন দিনে রিক্সা করে ঘুরে বেড়ানো আর ভুনা খিচুড়ির সাথে ইলিশ ভাজা খাওয়ার মজাই আলাদা। সায়মা কেমন জানি বেরসিক হয়ে গেছে আমার অনুভুতিটা একবারও বুঝতে চাইল না। এখন যদি সায়মাকে কিছু না জানিয়ে ২ টা ইলিশ মাছ কিনে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়াই তাহলে কেমন হবে ব্যাপারটা। হয়তো সায়মা একদম চমকে যাবে। ব্যাস্ততার কারণে অনেকদিন হলো সায়মাকে কোন সারপ্রাইজ দেয়া হয়ে উঠে নি এটাই সুযোগ। এসব ভাবতে ভাবতেই অফিসের সমস্ত কাজ ঘুছিয়ে বেরিয়ে পড়লাম।

যেই ভাবা সেই কাজ বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে চলে গেলাম বাজারে।বড় বড় সাইজের ২ টা ইলিশ কিনে ফেরার পথে দেখি বাজারের পাশেই ছোট একটা মেলা বসেছে, অনেক মানুষের ভিড়। সায়মাকে চমকে দেবার জন্য মেলা থেকে বিভিন্ন রঙের কয়েক ডজন কাঁচের চুড়ি ও তার পছন্দের ফুল দোলনচাঁপা কিনে কাকভেঁজা হয়ে বাসার দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছি।

অনেকক্ষণ ধরে দরজাতে ঠোকা দিচ্ছি কিন্ত সায়মা দরজা খুলছে না। মনে মনে ভাবলাম হয়তো ঘুমাচ্ছে তাই শব্দ শুনতে পারছে না। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর হঠাৎ মনে হলো আমার কাছে তো এক্সট্রা একটা চাবি আছে। আমি শুধু শুধু কেন বোকার মত দাঁড়িয়ে আছি দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখি সোফাতে একটা সানগ্লাস পড়ে আছে। দেখে যতদূর মনে হচ্ছে সানগ্লাস টা আমার না আর আমার হলেও ওটা এখানে কি করে আসবে আমি তো রুমে ড্রেসিং টেবিলের উপর রেখেছিলাম। টেবিলে তাকিয়ে দেখি ২ টা খালি কফির মগ কি ব্যাপার বাসায় কোন অতিথি আসলো না কি? হঠাৎ দেখলাম সায়মা রুম থেকে বের হলো।এভাবে হুট্ করে আমাকে দেখে খুব অবাক হয়ে বললো,

~কি ব্যাপার তুমি এই সময় বাসায় ?
–ভুনাখিচুড়ি খেতে ইচ্ছে করছে খুব তাই এসে পড়লাম।
~ওহ আচ্ছা, তা এই অবস্থা কেন জামাকাপড়ের? এভাবে কেউ ভিজে বৃষ্টি তে? শুধু ঠান্ডা লাগাও একবার তারপর মজা দেখাব।

–আরে বাবা ইচ্ছা করে কি ভিজেছি আমি? তোমার জন্য এগুলো কিনতে গিয়েই তো কাকভেঁজা হয়ে গেলাম।
~ওহ এখন সব দোষ আমার আমি কি আমার জন্য এসব আনতে বলেছিলাম ?
–এমন ভাবে বলছো কেন? আমি নিজেই কিনে এনেছি তোমাকে সারপ্রাইজ দেবার জন্য। দেখ তোমার সব পছন্দের জিনিস নিয়ে এসেছি।

~নেকামি কর না যাও ফ্রেশ হও। আর তোমার সারপ্রাইজ তুমি ই রাখ আমার লাগবে না এসব।

সায়মা আজকে কেমন জানি আচরণ করছে… বুঝতে পারলাম না কি হয়েছে? সাধারণত ও ওর পছন্দের জিনিস পেলে খুব খুশি হয়ে যায় আর আজকের এই সারপ্রাইজ ওকে একটুও অবাক করে নি, খুশি করে নি বরং রাগ করেছে। ওর চোখে মুখে এক ধরণের বিরক্তি দেখতে পেলাম। আমি আর বেশি কিছু না বলে রুমে চলে গেলাম।রুমটাও কেমন জানি অগোছালো। প্রতিদিন যেমন সুন্দর মতো ঘুছানো থাকে আজকে তেমনটা নেই। আন্দাজ করলাম সায়মার হয়তো মন খারাপ।

প্রায় ২০-২৫ মিনিট পরে রান্নাঘরে গিয়ে দেখি সায়মা রান্না করছে। আমাকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বলল রান্না শেষ হতে টাইম লাগবে তুমি রুমে গিয়ে একটু অপেক্ষা কর ব্যাপার নাহ তুমি রান্না কর আর আমি তোমাকে সাহায্য করি। অনেক দিন পর তোমার হাতের ভুনা খিচুড়ি আর ইলিশ ভাজা খাব শুনেই আমার বেশ লোভ লাগছে। থাক হইছে তোমার সাহায্য করা লাগবে না।এই কথা সেই কথা বলতে বলতে রান্না প্রায় শেষ। টেবিলে বসে আছি খাবারের অপেক্ষায়। কিছুক্ষণ পর সায়মা সুন্দর করে খাবার সাজিয়ে টেবিলে দিয়ে দিল। খেতে খেতে সায়মাকে জিজ্ঞেস করলাম….

আমি : সায়মা তোমার কি মন খারাপ? কি হয়েছে আসার পর থেকে দেখছি কেমন অন্যমনস্ক লাগছে তোমাকে ?

সায়মা : কই কি হবে কিছু হয় নি তো আমি একদম ঠিক আছি।

আমি : আচ্ছা বাসায় কি কেউ এসেছিল ?

সায়মা : না তো কেউ আসে নি আর কে আসবে হঠাৎ এই কথা কেন বলতেছ ?

আমি : টেবিলে ২ টা কফির মগ আর সোফায় একটা সানগ্লাস পড়ে আছে দেখলাম ওইটা তো আমার না তাহলে সানগ্লাসটা কার ?

সায়মা : মানে কি? রাতুল কি বলতে চাচ্ছ, তুমি কি আমাকে সন্দেহ করতেছো ?

আমি : না একদমই না আমি শুধু জানতে চাইছি… এতটা রিয়াক্ট কেন করতেছো ?

সায়মা : পাশের বাসার ভাবি এসেছিল তাই কফি খেতে দিয়েছিলাম আর তুমি সন্দেহ করলে ছিঃ রাতুল আমি ভাবতে পারছি না।

আমি আর কথা বাড়ালাম না চুপচাপ খেয়ে উঠে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম। বারান্দায় গিয়ে খানিকটা অবাকই হলাম। বারান্দার এক কোণায় সিগারেটের ছোট্ট একটা মাথা পড়ে আছে এটা কোথা থেকে আসল ভাবতে ভাবতেই গ্রিলের ফাঁক দিকে বাহিরে চোখ পড়তেই সিগারেটের প্যাকেট দেখতে পেলাম। মনে হচ্ছে যেন কেউ সিগারেট খেয়ে এখান থেকে ফেলে দিয়েছে। একের পর এক এসব কি ঘটছে কিছুই বুঝতে উঠতে পারছি না তাহলে কি সায়মা অন্য কারো সাথে ছিঃ ছিঃ এসব আমি কি ভাবছি? আমি নিজের থেকেও সায়মাকে বেশি বিশ্বাস করি এমন কোন কাজ সে করতেই পারে না। হয়তো আমার ই কোথাও ভুল হচ্ছে। সায়মা শুধু আমাকেই ভালোবাসে এত বছরের প্রেম কি এত সহজে ভোলা যায় আমি তো চিনি ওকে আর অনেক বেশি ভরসা ও করি।

আস্তে আস্তে আমার আর সায়মার সম্পর্ক যেন ফিকে হয়ে যাচ্ছে আগের মতো সেই ভালবাসা, কেয়ারিং, মান অভিমান কোনটাই নেই সময়ের সাথে সাথে সবকিছু কেমন হারিয়ে গেছে। ব্যস্ততার কারণে এখন আর সায়মাকে পর্যাপ্ত সময় দিতে পারি না, কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাই না এসব ছোট ছোট বিষয় নিয়ে সায়মা প্রায় ই চিল্লাচিল্লি করে, মাঝে মাঝেই খুব বাজে ব্যবহার করে… তখন আর কিছুই বলার থাকে না, বুঝিয়ে বলেও তেমন লাভ হয় না। মুখ বুঝে সবটা সহ্য করে নিতে হয়। এমনকি সানগ্লাস থেকে শুরু করে সিগারেটের বিষয়টা নিয়ে অনেক বার জানার চেষ্টা করেছি কিন্তু কোন লাভ হয় নি। যতবার প্রশ্ন করেছি ততবারই কোন না কোন কথা বলে এড়িয়ে গেছে। তাই আর এ বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামায় নি, আমার মনের ভুল হিসেবে সে সব ঘটনা ভুলে গেছি।

বেশ কিছুদিন পর আজ সকাল থেকে সায়মাকে অনেক খুশি খুশি লাগছে, অনেকটা স্বতঃস্ফুর্ত লাগছে সেই আগের মতো।টেবিলে একসাথে বসে দুজনে নাস্তা করলাম ও বেশ খানিকক্ষণ আড্ডা দিলাম। অফিস যাওয়ার আগে সায়মার এই হাসিমাখা মুখ দেখলেই বুকটা ভরে যায় অনেক দিন পর মনে হল আবার নতুন জীবন ফিরে পেয়েছি। ঘড়ির অ্যালার্ম বেজে উঠতেই সায়মা অফিস যাওয়ার জন্য তারা দিতে লাগল। কি আর করা উপায় নাই অফিস যেতেই হবে।দেরি না করে অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম। বিকেল হতে না হতেই হাতের সমস্ত কাজ শেষ করে বাসায় এসে দেখি দরজায় তালা দেয়া কি ব্যাপার সায়মা নাই নাকি, কোথাও কি গেল আমাকে না বলে এসব চিন্তা করতে করতে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলাম। ২/৩ বার ডাকার পর কোন সারা-শব্দ না পেয়ে রুমে ঢুকতেই বেডের উপর একটা চিঠি দেখতে পেলাম। চিঠি টা হাতে নিয়ে দেখি সায়মা বড় বড় করে আমার উদ্দেশ্যে কিছু লিখেছে যা লিখেছে তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না মেনে নিতে পারছিলাম না এই সত্যিটাকে।

রাতুল , আমি আর তোমার সাথে থাকতে পারলাম না সরি রাতুল। তোমার সাথে মিথ্যে ভালোবাসার অভিনয় করতে করতে আমি হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। তোমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম কিন্তু বিয়ের পর আমার একাকীত্ব জীবনে তোমার কোন অবদান ছিল না, তুমি আমাকে ঠিক মতো সময় দিতে পারতে না, আমাকে নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার বা কোন অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় পর্যন্ত হতো না।সারাদিন শুধু অফিস, মিটিং আর কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতে। বিয়ের আগে তুমি অনেক বেশি কেয়ারিং ছিলা, ঘুরতে পছন্দ করতে কিন্তু বিয়ের ২ বছর হতে না হতেই তুমি অনেক বদলে গেছো। সম্পূর্ণ অন্য একটা মানুষ যেখানে আমার কোন ভূমিকা নাই।আস্তে আস্তে আমিও কেমন জানি পাল্টে যেতে শুরু করলাম। অনেক স্বপ্ন নিয়ে তোমার সাথে সংসার করব বলে বিয়ে করেছিলাম কিন্তু আমি নিজেই পারলাম না। তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা মলিন হয়ে গেলো। তোমার বন্ধু আবিরের সাথে নতুন করে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লাম। আবিরের সাথে আমার এতটাই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়ে গেলো যে, আমি তোমাকে ভুলে যেতে বাধ্য হলাম। আবির আমাকে অনেক বেশি কেয়ার করে, ভালোবাসে, অনেক বেশি সময় দেয়ওই একমাত্র আমাকে ঠিকভাবে বুঝতে পারে। তাই আমিও আবিরকে না ভালোবেসে পারলাম না।

আমাদের সম্পর্ক প্রায় ১ বছরের আর এর মাঝেই আমাদের অনেক বার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। তোমার সামনে দাঁড়িয়ে সত্যিটা বলার সাহস ছিল না বলে তোমাকে না জানিয়ে বাসা থেকে পালিয়ে এসেছি। রাতুল পারলে আমাকে মাফ করে দিও, প্লিজ। আমি তোমাকে এভাবে ঠকাতে চাই নি কিন্তু জানি না কিভাবে কি হয়ে গেলো। আমি আজ আবিরের কাছে চলে এসেছি আমাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য কখনো এসো না আমি আর ফিরতে পারব না। আমি জানি এখনো তুমি আমাকে কতটা ভালোবাসো। হয়তো কষ্ট হবে আমাকে ভুলে যেতে, একটু টাইম লাগবে তবে ব্যাপার না সব ঠিক হয়ে যাবে। নতুন কাউকে নিয়ে এসো যে জিনিস আমি তোমাকে দিতে পারি না ই তার অভাব নিশ্চয়ই সে পূরণ করে দিতে পারবে। ভালো থেকো রাতুল। আর আমাকে মাফ করে দিও ,সরি।

চিঠিটা পড়তে পড়তে কখন যে চোখ দিয়ে পানি ঝড়তে শুরু করেছে টেরই পায় নি, আসলেই কি কথাগুলা সত্যি? আমাদের এতো বছরের সম্পর্ক সায়মা কি এভাবে ভুলে যেতে পারল? আমাকে কিভাবে ঠকাতে পারল, আমি তো শুধু ওকেই ভালোবেসে ছিলাম এখনো অনেক ভালোবাসি। বিভিন্ন ব্যস্ততার জন্য হয়তো সময় দিতে পারি নি, ওর সাথে বাইরে ঘুরতে যাই নি এটাই কি আমার অপরাধ? আমার ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে এটাই কি পাওনা ছিলাম আমি? এই মুহূর্তে অনেক গুলা প্রশ্ন মাথায় ঘুরছে যার কোন সঠিক উত্তর আমার কাছে জানা নেই কি করব কিভাবে ভুলে যাব কিছুতেই আর ভাবতে পারছি না, বিশ্বাস করতে পারছি না। ৭ বছরের ভালোবাসা এই ভাবে ফিকে হয়ে যাবে ভাবতেই যেন অবাক লাগছে।তবে কি ভালোবাসা নামক শব্দ টা শুধুই ছলনা ছিল ?

আজ প্রায় ১ যুগ হতে চলেছে রাতুল এখনো একা বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন থেকে পরিবারের সবাই অনেক বুঝিয়েছে কিন্তু কেউ তাকে ২য় বার বিয়ের জন্য রাজি করাতে পারে নি মনে মনে এখনো সায়মার ফেরার অপেক্ষা করে কিন্তু সায়মা আর ফিরে আসে না পরিশেষে রাতুলের ভালবাসা এক ছলনাময়ী নারীর কাছে হার স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছে।

গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত