” আপনি ভার্জিন হয়েও আপনি বলছেন আপনাকে ধর্ষণ করেছে! কীভাবে সম্ভব? এটাত হাস্যকর বিষয় হয়ে গেলো না?” আদালতে উকিলের কথাশুনে জ্ঞান হারায় নীলা। কাঠগড়ার মাঝখানের অংশে হেলান দেয়া অবস্থায় ঢলে পড়ে সে। উপস্থিত সবাই মানে আমজনতা দেখছেন বিচার কার্য। তাদের মাঝে বসে আছেন নীলার বাবাও। নীলার বাবা কান্না করছেন অবিরত। এই কোন দেশে আছেন তিনি বুঝতে পারেন না। বিচার চাইতে এসে উল্টো হ্যনস্তের শিকার হচ্ছেন তারা। অথচ সারাজীবন দেশকে ভালবেসেছেন তিনি।
কখনো কেউ দেশ বা মানুষের বিরুদ্ধ আচরণ করলে তাদের সাথে কথাও বলতেন না নীলার বাবা। আজ একমাত্র মেয়ের এই জ্ঞান হারানোর দৃশ্য দেখে, নিজেকে কান্না থেকে বিরত রাখতে পারলেন না আর। অথচ মেয়ে যখন ধর্ষণের কথা বাবাকে বলেন তখনও তিনি কাঁদেননি। একজন বাবা যদি মেয়ের সাথে কেঁদে দেন, আর তা দেখে সে যদি ভেঙে পড়ে, সে যদি জীবন থেকে ছিটকে যায়, তাই তিনি সেদিন শক্ত হয়েছিলেন। অথচ আজ ছোটো বাচ্চার মতো চোখ দুটো ধরে কেঁদেই চলেছেন। নীলার বাবার সামনে ভাসছে দড়ি। মানে ফাঁসির দড়ি। বাসায় গিয়ে মেয়ে আর বাবা একসাথে ঝুলে পড়বেন এই সিদ্ধান্ত নেন। চোখের সামনে ভাসতে থাকে আগের কথাগুলো। যখন তিনি নীলার মা’কে বিবাহ করেছিলেন সে কথা।
কতবার ভালবাসার কথা বলতে গিয়েও বলতে পারেন নি তিনি; তার কোনো হিসাব নেই। শেষমেশ বিরক্তভাব নিয়ে নীলার মা মানে ফাতেমাকে বিবাহের প্রস্তাব পাঠান। অনেক কষ্টে বিবাহ হয় তাদের। তাদের ছোট্ট সংসারে টেনে হিঁছড়ে চলে যাচ্ছিল কোনোরকম। নীলার বাবা, যে সরকারী চাকরী থেকে মাইনেটা পেতেন তা ছিল খুবই সীমিত। তাই বেতন পাওয়ার সাথে সাথে বসতে হতো হিসাব খাতা নিয়ে। দুধওয়ালা থেকে কারেন্ট বিল, ঘরভাড়া, পকেট খরচ সব লিখা থাকত সে খাতাতে। এতো টানাটানির সংসারে তবুও ভালবাসার কমতি ছিল না। একদিন নীলার মা জানায় তাদের কোল জুড়ে আসতে চলেছে এক চাঁদের মতো সন্তান। সে সন্তান আলোকিত করবে তাদের পরিবারকে। নীলার বাবা অনেক ছোটোবেলায় মাকে হারান, তাই তিনি মা ডাকার জন্য একটি মেয়ে চেয়েছিলেন আল্লাহর কাছে।
এই নিয়ে ফাতেমার সাথে হতো তুমুল ভালবাসার ঝগড়া। ছেলে না মেয়ে, তা নিয়ে ঝগড়া। কিন্তু নীলার বাবার কোলে এক মেয়েকে এনে দিয়ে চলে যান এই দুনিয়া ছেড়ে ফাতেমা। নিজের মেয়েকে বাঁচাতে নিজের জীবন বিলিয়ে দেন নির্ভাবনায়। আর মৃত্যুর সময় বলে যান মা-বাবার ভালবাসা দিয়ে মানুষ করতে নীলাকে। অন্যকাউকে যদি বিয়ে করলে, নিজের মেয়েকে পর করতে হয় তাই তিনি আর বিয়ে করেন নি। মেয়েকে উপজাতির মতো গামছা দিয়ে বেঁধে নিয়ে যেতেন অফিসে। কখনো বকা অবধি দিতেন না তিনি। অথচ আজ সে আদরের মেয়েকে মানুষ রুপি কিছু হায়েনা রক্তাক্ত করেছে। বিচার চাইতে এসে শুনতে হচ্ছে অবাস্তব কথাবার্তা। যে মেয়ের চোখে কখনো অশ্রু আসতে দেন নি, তাকে কষ্টে জ্ঞান হারাতে দেখে সহ্য করতে পারছেন না আর। এমন কষ্ট মরলেও তো হয় না।
নীলা, এখনো অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। পুলিশ একজন পানির বোতল থেকে নীলার মুখে পানি ছিটালে জেগে উঠে সে। নীলার বাবা, মেয়ে চোখের পানি দেখার আগেই চোখ মুছে নরমাল হওয়ার চেষ্টা করেন। যাতে মেয়েটা আরো ভেঙে না পড়ে, তাই নীলার বাবার এমন মিথ্যা প্রসেস। নীলার বয়স ১৮ বছর। এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে, তবে রেজাল্ট আসেনি। অনেক আগে থেকে কলেজে যাওয়ার সময় ইভটিজিং করত একদল স্থানীয় নামদারি নেতা। সোনার ছেলে। পথ আগলে ধরত তাকে। একদিন বাধ্য হয়ে বাবাকে খুলে বলে সে। বলার পর, নীলার বাবা অভিযোগ দিয়ে আসেন থানায়। জিডি করে আসেন ছেলেগুলোর নামে। নির্ধারিত তারিখে ছেলেগুলোকে ডাকা হয় পুলিশ বক্সে। বর্তমানে প্রতিটি পৌরসভার থানায় এই পুলিশ বক্সগুলো দেখা যায়। যে বক্স হলো দুর্নীতির প্রথম স্তর। এলাকার মেম্বর বা প্রধান কোনো নেতা এবং একজন এসআই এর তত্ত্বাবধানে নির্দিষ্ট তারিখে এখানে মীমাংসা করে দেয়া হয়।
যেদিকে টাকা ওইদিকে বিচার। দল করেছেন তো বেঁচে গেছেন, একা থেকেছেন তো তবে ফেঁসে গেছেন। ইচ্ছেমতো বাদী-বিবাদী দু’দল থেকে টাকা খায় পুলিশ। বিশেষ অপরাধ ছাড়া পাঠানো হয় না জেলে। নেতা, মেম্বর আর পুলিশের মাঝে থাকে টাকা ভাগের এক শেয়ার মাধ্যম। আর এসব অপরাধী সহজে ছাড়া পেয়ে একসময় ধর্ষণ আর খুনের মতো অপরাধে লিপ্ত হয়। যেমনটা সেদিনও হয়েছিল। পুলিশ বক্সে যেদিন নীলার অভিযোগের ডেট পড়ে, সেদিন ছিল শুক্রবার। ছেলে তিনজনকে বিকেলবেলায় আসতে বলা হয়। তারা নিয়ে যায় স্থানীয় কোনো এক নেতাকে। নীলার বাবা আর নীলাও যায় সেখানে। এলাকার মেম্বর ফরিদও সেখানে উপস্থিত থাকে। সে তিনজনই এলাকার চেয়ারম্যানের দলের। তাই নেতা ছুটে যান তার ছেলেদের সম্মান রক্ষা করতে।
তাদের তিনজনকে একটা স্বাক্ষর আর ছোটোখাটো নীলাকে সরি বলিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় ইভটিজারদের। আসার সময় নীলার বাবার কাছে এসআইকে দু’হাজার টাকা দাবি করলে, দু’হাজার টাকা গুনে দিয়ে আসেন তিনি। এটা নাকি তার কষ্টের প্রাপ্য।। কিন্তু বিচারের কয়েকদিন পরই নীলাকে ঘরের সামনে থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায় তারা। তিনজন মিলে ফুলের টোকাও না পড়া মেয়ে টিকে ইচ্ছে মতো ধর্ষণ করে এক পরিত্যক্ত দালানে। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে তারা। নীলাকে ভাইরাল করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখে। বাবা সমাজে মুখ দেখাতে পারবে না, তাই মেয়েও মুখ বুঝে সহ্য করেছিল সব। নীলার কাছে তার বাবার সম্মানি যে সব। জীবন যেতে পারে কিন্তু বাবা ছোটোহোক সেটা যে নীলা চায় না। কয়েকবার তাদের কাছে যেতেও হয়েছিল তাকে।তাকে জিম্মি করে অনেকবার ধর্ষণ করেছিল তারা৷ রক্তাক্ত শরীর নিয়ে বাবা ঘরে ফিরলে, বাবাকে ডিনার বা লান্স দিতেও ভুলত না সে। হাসিমুখে বাবার সাথে কথা বলত সে।।।
-” কিরে মা? তোকে ইদানিং এমন লাগছে কেন? কোনো সমস্য”
-” না বাবা! কোনো সমস্যা নয়৷ সামনে পরীক্ষা তো তাই পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত আছি৷ বাবা! মা’কে খুব মিস করছি।
“( কথাটা বলে হাউমাউ করে কেঁদে দেয় নীলা) এসব কথা বাবাকে কীভাবে বলতে হয়, তা নীলার জানা ছিল না। শেষমেশ নীলা একদিন বলেছিল। বলতে তাকে হয়েছিল। বাবাকে জড়িয়ে ধরে শরীরের ক্ষত দাগ দেখিয়েছিল সে। বাবা, মেয়ের শরীরে কঠিন দাগ দেখে পাগলের মতো হয়ে যায়। ছুটে যায় ওসির কাছে।
আগে বাদী হওয়ায় পুলিশের ওসি সহ অনেকে ফেঁসে যেতে পারেন, সে ভয়ে প্রথমত কেস নিতে চায় নি তারা। মেয়েকে লুকিয়ে বিয়ে দেয়ার কথা বলেন ওসি।। কিন্তু পত্রিকায় খবরটি ছাপার পরই, ছেলেগুলোকে ধরতে বাধ্য হয় পুলিশ। ভাইরাল ছাড়া আজকের যুগে কেসও যে হয় না। ছেলেগুলোর পরিবারসহ নেতারা বাঁচাতে তাদের উঠেপড়ে লাগে । দেশের সবচেয়ে বড়ো নামকরা উকিলকে হায়ার করে আনে তারা। উকিল সাহেব, ডাক্তারের রিপোর্ট সহ বিভিন্ন ভুয়া ডকুমেন্ট বানিয়ে জজকে দেখান। তিনটি ছেলে ঘটনার দিন ভারতে ছিল, সে বিমানের টিকিট দেখান জজকে। টাকা ছিটালে গাছও যে কথা বলে, সেটা জানান দেন উকিল সাহেব। এমনকি ধর্ষণ হওয়া নীলাকেও বানিয়ে দেওয়া হয় ভার্জিন হিসেবে। নীলার জ্ঞান ফেরার পর উকিল সাহেব আবার বলেন,” এই মেয়েটি শুধুমাত্র বিরোধীদলের প্ররোচনায় এরকম জগন্য কাজ করতে উদ্ভুদ্ধ হয়। আমাদের কাছে আছে অডিও ক্লিপ।”
আদালতে বানোয়াট অডিও ক্লিপ চালানো হয়। এসব অডিও শুনে নীলার বাবার মাথা ঘোরাতে থাকে। ধর্ষণের বিচারটা যদি হত, অন্তত মনকে সান্ত্বনা দিয়ে বাকি জীবনটা তারা বাঁচতে পারত। কিন্তু তাও আর হলো না। এখন মৃত্যুই যে শ্রেয়। অনেক আগেই ভেবেছিলেন মেয়েকে নিয়ে অন্য কোথাও চলে যাবেন, কিন্তু আলো,বাতাসের মতো দেশের সব জায়গায় ধর্ষণকারীরা যে রয়েছে। আদালতে জজ সব কিছু শুনেন। তিনি নীলাকে প্রেপ্তার আর রিমান্ডের আদেশ যখন মনে মনে দিবেন ভাবছিলেন,ভদ্রতার খাতিরে একজন বাবা হিসেবে নীলার বাবাকে এই নিয়ে কিছু বলার জন্য আদালতে অনুরোধ করেন। নীলার বাবা, নীলা কাঠগড়া থেকে সরে এলে সেখানটাই গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। পুরো আদালত নীলার বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। একজন মিথ্যাবাদীর বাবা কি বলেন, সেটার জন্যই এই তাকানো। তিনি নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।
একদম চুপ। ঘড়ির আওয়াজ ছাড়া কিছু নেই। তার মুখ দিয়ে কোনো কথায় আসছে না। কথা বললেই শ্রাবণের দিনের মতো বৃষ্টি নেমে আসবে তার চোখ বেয়ে। তাই কথা বলতে চাচ্ছেন না তিনি। জজ উনার এভাবে দাঁড়ানো দেখে বিরক্ত ভাব নিয়ে বললেন,” মশাই! কিছু বলবেন না-কি বলার নেই? আপনার মতো আমাদের অত সময় নেই। প্লিজ! কিছু বলার থাকলে বলুন নীলার বাবা গম্ভীর হয়ে বলেন,” আমার মেয়ে নীলা। তাকে যেদিন বাবা ডাকটা শিখালাম, সে যখন ডাকল আমার তখন কি যে আনন্দ হয়েছিল তা বলার বাইরে। আবার, তাকে যখন প্রথম অ বর্ণটি লেখাটা শেখালাম, সেদিন আনন্দে চোখ থেকে পানি পড়েছিল।
আমার মেয়েকে আমি যা করতে বলতাম সেটা করত। যদি বলতাম ক্লাসে ফ্রাস্ট হতে হবে, সে হতো স্যার! যদি বলতাম ঘুমাও সে ঘুমিয়ে যেতো। বিনিময়ে সে কোনোদিন জজ সাহেব কিছু চাইত না। কোনোদিন অন্যবাচ্চার মতো বলত না যে, বাবা! আমার খেলনা দরকার, আমার রংপেন্সিল দরকার। কিছু চাইত না তাই আমার মনে দুঃখের শেষ ছিল না। মেয়েটা কখন কিছু চাইবে, সেটার আশা নিয়ে জীবন অতিবাহিত করতে থাকলাম। কিন্তু একদিন আমার মেয়েটা কান্না করে বলল, বাবা! আমাকে যারা র্যাপ করেছে তাদের শাস্তি চাই। তাদের বিচার চাই! কিন্তু শালার আমারো ভাগ্য খারাপ, যা চাইল আমি তাকে দিতে পারলাম না। কোনো বাবা এই দেশে দিতে পারবে না।আল্লাহর কছম যদি কহিনূরের হীরা চাইত তাও দিতাম কিন্তু ধর্ষণের বিচার তা তো এই দেশে দেওয়া যায় না রে মা। তা তো আমবশ্যার চাঁদের মতো পাওয়া যায় না।
তবে স্যার, তাকে আমি আইনের বিচার দিতে না পারি অন্য বিচার দিয়েছি। হা হা হা কঠিন বিচার সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে নীলার বাবার দিকে। নীলার বাবা হালকা থেমে আবার বলতে থাকে,” স্যার! এই দেশে ধর্ষণের বিচার চাওয়াটা বোকামী। আপনার সামনেই তো উকিল সাহেব ধর্ষণ হয়েছে যে, তা কেউ দেখেছে কিনা তা জিজ্ঞাসা করল!! তাই আমার মেয়ের মুখে জিম্মি করে ধর্ষণের কথাশুনে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে আমি একজন এইডস রোগীর কাছে গেলাম। যে রোগী কয়েকদিন পরই মারা যাবে। এইডস রোগীর শরীরে ইউজ করা ইঞ্জেকশন আমার মেয়ের শরীরে বিছমিল্লাহ বলে প্রবেশ করালাম। তারপর সে যখন এইডসে আক্রান্ত হলো, একজন বাবা হয়ে, ধর্ষকদের কাছে আমি আবার পাঠালাম। আগেই তো বললাম, আমার মেয়ের কাছে আমি যা চাই, তাই দেয়। আমার মেয়ে আমার জন্য তাও করেছিল, আনন্দের সাথে। হা হা হা ধর্ষক তিনজন সে কথা শুনে ঘামতে থাকে। ধর্ষকের একজন বিবাহিত ছিল। সামনে বসা তার ওয়াইফ ছুটে যায় ডাক্তারের কাছে।
উপস্থিত আমজনতা কথা বলতে থাকে, একে অন্যের সাথে। ঠাণ্ডা আদালত গরম হয়ে উঠে। এই কোন পাগল! যে নিজের মেয়েকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়৷ জোরেশোরে আলাপচারিতা হতে থাকে চারপাশ৷। জজ সবাইকে চুপ হতে বললে আবার সবাই চুপ হয়ে যায়। সবাই চুপ হলে নীলার বাবা আবার বলেন, ” স্যার! আমার মেয়েকে যদি এই তিনজন সত্যি ধর্ষণ না করে থাকে, তাহলে ভালো। তাহলে তো তাদের এইডস হবে না। আর যদি করে থাকে আসা করি, তাদের অজান্তেই তারা এইডসের জীবাণু বহন করছে। যার নিশ্চিত মৃত্যু। ( উকিলের দিকে তাকিয়ে) সম্মানিত উকিল সাহেব বললেন, ধর্ষকরা ঘটনার দিন ছিল না, তাই আমি অনুরোধ করব তাদের শরীরে এইডস আছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য। তাহলে কোনটা সত্য আর কোনটা মিথ্যা সব প্রমাণ হয়ে যাবে।”
উকিল সাহেব কথাটা শুনে বসা থেকে চিন্তায় দাঁড়িয়ে যান। জজ সব কিছু শুনে, আদালতে তিনজন আসামীর রক্ত পরীক্ষা করার জন্য নির্দেশ দেন। কয়েকঘণ্টা পর রিপোর্ট হাতে এলে, তা নিয়ে জজ দেখেন তিনজনই এইচআইবিতে আক্রান্ত। তিনি তার রায় পরিবর্তন করতে বাধ্য হোন। ধর্ষকদের তাদের মৃত্যু অবধি জেলে রাখার নির্দেশ দেন। আর ধর্ষকদের পক্ষের বানোয়াট তথ্য দেয়ার জন্য উকিলকে এরেস্ট করতে বলেন। আদালত থেকে মেয়েকে নিয়ে হাসিমুখে আসার সময় নীলার বাবা জজকে বলেন,” একদিন সকল বাবা তাদের মেয়েকে ধর্ষণ হওয়া থেকে বাঁচাতে এইডসের জীবাণু রক্তে পুশ করবে। আর সেদিন থেকে কোনো পুরুষ ধর্ষণ করার চিন্তাও করবে না।” নীলা বাবাকে বলল,” বাবা! অনেকদিন তুমি বিরিয়ানি রাঁধো না, আজ রাঁধবে? আজ পেটভরে খাবো।”
-” অবশ্যই মা! আমার মেয়ের জন্য আমি সব কিছু করতে পারি। চল মা। বাসায় যেতে যেতে তোকে একটা গল্প শুনায়। একদেশে এক রাজকুমারী ছিল। রাজকুমারীর নাম নীলা…
-” বাবা! তুমি বানিয়ে গল্প বলছ!”
-“না মা। আগে শুন।।”
জজ অবাক হয়ে তাদের কথা শুনতেই লাগল। জজ জানল না নীলার বাবা বানিয়ে গল্প বলেছিলেন তাকে। এইডসের ইঞ্জেকশন তিনি ধর্ষকদের বিভিন্নভাবে পুশ করেছিলেন তিনি। কখনো পথচারী সেজে, কখনো বা ডাক্তার সেজে, কখনো বাসায় কাজের ছেলে হয়ে। কারণ এই ছাড়া যে, তার মেয়ের প্রথম চাওয়া পূরণ করতে পারতেন না। তিনিও যে একজন অসহায় বাংলার বাবা।।
গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক