রক্তে ভেজা সেই ডায়েরীটা

রক্তে ভেজা সেই ডায়েরীটা

গাড়িতে বসে আছি আর বারবার চোখের জল মুছছি আমি। পাশের সিটে বসে চোখ মুখে একরাশ হতাশা হারিয়ে ফেলাকিছু মুহূর্তের বিষাদের ছাপ নিয়ে আপন মনে

ড্রাইভিং করে যাচ্ছে শান্ত। উদ্দেশ্য ঢাকা-দর্শনা। তার চোখের দিকেও তাকানো যাচ্ছে না।অকাতরে নোনাজল গুলো গড়িয়ে পড়ছে। স্মৃতিগুলো আজ যেন বাধা মানছে

না। ব্যাগ থেকে সেই পুরানো ডায়েরী টা বের করলাম। এখনও রক্তের ছোপ ছোপ ছাপ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে ডায়েরীটার মলাটে তে। ডায়েরী টার দিকে চোখ পড়তেই শান্ত

দেখলাম অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিল। আপন মনে গাড়ি এগিয়ে যাচ্ছে আর আমি ভাবতে লাগলাম জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া কয়েকটা মুহূর্ত কে।

আজ রবিবার বন্ধুত্ব দিবস। অন্যদিক তাহসিনের ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী।তাহসিনের এই ডায়েরী টার প্রত্যেকটা পাতায় পাতায় স্মৃতি জড়িয়ে আছে। যেগুলো প্রতিনিয়ত আমার আর শান্ত আমাদের দুজন কে কাদায়। আমি ভাবতে শুরু করলাম ঘটে যাওয়া কয়েটা ঘটনা ….

দীর্ঘ দশটা বছর আমার, শান্তর আর তাহসিন এর সাথে কেটে গিয়েছিল আনন্দ, হাসি,একটুখানি রাগ,অল্পখানি অভিমান আর অনেকটা খুনশুটি তে। সারাক্ষণ আনন্দে মেতে থাকতাম আমরা তিনজন।
.
এসএসসি পরীক্ষার পর তিনজনই ভর্তি হয়েছিলাম পৌরসভার কলেজে। আমাদের ডিপার্টমেন্টে আমরা তিনজন সহ মাত্র কয়েকজন ছাত্রছাত্রী। প্রেম ভালোবাসায়

আমার আর শান্তের জ্ঞান থাকলেও তাহসিন তখনও বুঝেনি প্রেম কাকে বলে আর ভালবাসা কি? কয়েকমাস আমাদের এভাবেই চলতে লাগল। হঠাৎ একদিন আমাদের

ডিপার্টমেন্টের জেরিন নামের একটা মেয়ে আমাদের সবারই ফোন নম্বর নিল। জেরিন দেখতে ওতটা সুন্দর না হলেও কেমন যেন মায়াবী মায়াবী চেহারা তার চোখগুলো

ছিল অসম্ভব রকমের সুন্দর।দেখলেই প্রেমে পড়ার উপযোগী। তারপর হঠাৎ এক সন্ধায় তাহসিন বলল, তার কাছে নাকি জেরিন ম্যাছেজ করেছে।আমরা দুজন শুনে একটু অবাকই হলাম।

–তা কি লিখেছে জেরিন? (আমি আর শান্ত)
–আরে তেমন কিছু লেখি না শুধু সন্ধ্যার শুভেচ্ছা জানিয়েছে।”Good Evening” লিখে পাঠিয়েছে। (তাহসিন)। তারপর শান্ত তাহসিন কে বলল,” তাহলে তুই ও রিপ্লে দে”। আর এখান থেকেই শুরু। তাহসিন আর জেরিনের সম্পর্ক।

১৭জুলাই,২০১২;রাত ১১ টা ৩৭ মিনিট।
হঠাৎ জেরিন তাহসিন এর কাছে ফোন করে। জেরিনের ফোন দেওয়া দেখে একটু অবাকই হলো তাহসিন। এতদিন তাহসিন আর জেরিনের ম্যাছেজে কথা বলার মধ্যেই

সীমাবদ্ধ ছিল আর আজ হঠাৎ ফোন! ভয়ে ভয়ে তাহসিন ফোন টা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে জেরিন বলে উঠল, “কেমন আছো তাহসিন?”
–ভালো আছি, তুমি?(তাহসিন)
–হ্যা আমিও ভাল আছি।
তাহসিন কখনও মেয়েদের সাথে কথা বলেনি। সে কি ভেবে বলবে ভেবে পাচ্ছেনা। সেদিন তাহসিন জেরিনের সাথে ১ মিনিট ২৬সেকেন্ড কথা বলেছিল তারপরেই

লাইনটা কেটে দিয়েছিল তাহসিন।আর তার কিছুদিন পর জেরিন আবার তাহসিন কে কল করল। আর এভাবেই ২দিন ৪দিন পর তাহসিনও জেরিন কে ফোন করতে

থাকলো।দুজনের মধ্যে জানাশোনা সৃষ্টি হলো। তারা দুজন-দুজনকে জানতে শিখল। জেরিন আর তাহসিনের মধ্য শেয়ারিং কেয়ারিং টা বেড়ে গেল। আস্তে আস্তে তাহসিন জেরিনের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়ে।

১৭ই আগস্ট, ২০১২;
এই দিনটা ছিল জেরিনের জন্মদিন। সেদিন তাহসিন জেরিন কে জন্মদিনের গিফট হিসাবে অনেক কিছুই উপহার দিয়েছিল। এভাবেই জেরিন আর তাহসিন এর মধ্যে

ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। কিন্তু তাহসিন জেরিন কে বন্ধুত্বের থেকে বেশি কিছু ভাবতে শুরু করে। তারপর হঠাৎ ই একদিন তাহসিন জেরিন কে প্রোপোজ করে ফেলে।
–দেখ তাহসিন, আমি তোমাকে কখনও বন্ধুত্বের বেশি কিছু ভেবে দেখেনি। আর তুমি এসব কি বলছো?আমরা শুধুই বন্ধু তার বেশি কিছু না। আর তুমি যদি আবার এসব

বলো তাহলে তোমার সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্কটাও নষ্ট করে দিতে বাধ্য হব। জেরিনের মুখ থেকে এসব শুনে সেদিন তাহসিন আর বেশি কিছু বলতে পারিনি।
.
আমি আর শান্ত এসব কিছুই জানতাম না। তাহসিন কে দুদিন কলেজে না পেয়ে তার থেকে এসব শুনে আমরা দুজন একেবারেই ভড়কে গেলাম। যে গুলো প্রেম

ভালোবাসা বুঝত না। সে এসব কি বলে? সে নাকি জেরিন কে ছাড়া থাকতে পারবে না।তার কাছে পৃথিবী বলতে এখন জেরিনই হয়ে গেছে। সেদিন আমরা তাহসিন কে

সাত্বনা দেওয়া ছাড়া কিছুই বলতে পারেনি। তারপরের দিন আমি আর শান্ত জেরিনের কাছে গিয়েছিলাম তাহসিনের পক্ষে প্রস্তাব নিয়ে কিন্তু সেদিন জেরিন আমাদের

সোজাসুজি বলে দিয়েছিল, “বন্ধুত্ব সম্পর্ক থাকলে ও তাহসিনের সাথে সম্পর্ক রাখবে না হলে সবকিছু নষ্ট করে দিবে। ”

একথা শুনে সেদিন তাহসিনও জেরিনের প্রস্তাব মেনে নিয়েছিল। তারা এখন বেস্ট ফ্রেন্ড। যদিও তাহসিন জেরিন কে মনে মনে ভালবাসে তবুও সম্পর্ক রক্ষার জন্য তারা

দুজন বেস্ট ফ্রেন্ড হিসাবেই থেকে গেল। ওরা দুজন একসাথে কলেজে আসত।এক জায়গায় বসত দুজন। ওদের দুজনকে একসাথে থাকতে দেখে আমি আর শান্ত

অনেক খুশি হয়েছিলাম। অল্পখানি রাগ,একটুখানি অভিমান অনেকটা হাসাহাসির মধ্য দিয়েই আস্তে আস্তে কলেজ জীবন কেটে গিয়েছিল আমাদের।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আমাদের কে সেদিন তাহসিন কে ছাড়তে হয়েছিল আমি আর শান্ত এক ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছিলাম আর তাহসিন অন্য ভার্সিটিতে। সেদিন

একটু কষ্ট হলেও অনেকটায় আনন্দ পাচ্ছিলাম মনের ভিতরে যে তাহসিন আর জেরিন একই ভার্সিটিতে পড়ছে।
.
একদিন ক্যাম্পাসে বসে আমি আর শান্ত আড্ডা দিচ্ছিলাম হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল। তাকিয়ে দেখি তাহসিন ফোন করেছে।
–কি রে দোস্ত! কেমন আছিস?(আমি)
–ভাল আছি, তোরা কেমন আছিস?(তাহসিন)
–হ্যা আমরা ভাল আছি।(আমি)
–দোস্ত জানিস? আজ একটা মেয়ে আমারে প্রোপজ করেছে। (তাহসিন)
–বাহ! ভালো তো। তা এক্সেপ করেছিস ?তা মেয়েটির নাম কি?
–মেয়েটার নাম সুমাইয়া । আমাদের ব্যাচেই পড়ে। না এক্সেপ করেনি।
–কেন? এক্সেপ করিস নি কেন?
–আমি সুমাইয়ার পিছনে সময় দিতে গিয়ে যদি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড জেরিন কে ভুলে যায়। তাহলে জেরিন অনেক কষ্ট পাবে।
.
তাহসিনের মুখ থেকে একথা শোনার পর আর কিছু বলার সাহস পেলাম না আমরা। তারপরে হঠাৎ একদিন তাহসিন জানালো, “জেরিন নাকি অন্য একজন কে

ভালবেসে ফেলেছে। “আর তাহসিন কে জেরিন এখন এড়িয়ে চলছে। জেরিন তার বিএফ কে সময় দিতে গিয়ে এখন আর তাহসিন কে সময় দিতে পারছে না। এতে

তাহসিন একদম ভেঙ্গে পড়েছে। আমি আর শান্ত আগে থেকেই জানতাম এটাই হবে। জেরিন কখনও তাহসিন কে মেনে নিবে না। তাহসিন ভেবেছিল, জেরিন একদিন

হয়ত তাকে মেনে নিবে। কিন্তু তা আর হলো না। জানিস দোস্ত? আমি জেরিন কে বলেছিলাম,”আমরা দুজন তো অনেক ক্লোজ। তাহলে তুমি কেন আমাকে এড়িয়ে

চলছো?” জবাবে জেরিন কি বলেছিল জানিস? ও বলেছিল, দেখ তাহসিন আমরা কেমন ক্লোজ জানিনা। আর একটা ছেলে মেয়ে কখনও বন্ধুত্বের সম্পর্ক নিয়ে এতটা

ক্লোজ থাকতে পারেনা। আর এখন তো আমার বিএফ আছে। তুমি প্লিজ আমাদের মাঝে আর এসো না। আমি জেরিন ছাড়া কখনও থাকতে পারব দোস্ত। কিভাবে থাকব বল? যাকে এতটা ভালোবাসি তাকে কিভাবে ছেড়ে থাকব??
–দেখ তাহসিন তুই এমন করিস না। দেশে কি মেয়ের অভাব পড়েছে। জেরিনের চেয়ে তুই অনেক ভাল মেয়ে পাবি। দেখবি সে তোকে অনেক ভালবাসবে। (আমি আর শান্ত)
–না দোস্ত! আমি অস্ট্রেলিয়া চলে যাচ্ছি। (তাহসিন)
–মানে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছিস মানে?তোর তো পড়াশোনা শেষ হয়নি।
–না আমি আর পড়ব না। আর দেশে থাকলে হয়ত আমি আর হয়ত বেচে থাকতে পারব না। আমার বড় মামা আমার অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা করে দিয়েছে। (তাহসিন)
—জেরিন জানে এইটা??
–না,আর আমি ওকে জানাতেও চাই না।ও আর এখন আমাকে সহ্য করতে পারেনা। জানিস দোস্ত? সেদিন আমি আর জেরিন একসাথে হাটছিলাম হঠাৎ জেরিনের

বিএফ এসে জেরিন কে কি বলল জানিস? জেরিন যদি আমার সাথে ঘোরাফেরা করে তাহলে ওর বিএফ ওকে ছেড়ে দিবে। আর জেরিন ও সেদিন আমাকে সোজাসুজি

বলে দিয়েছিল ওর সাথে আমি আর যেন যোগাযোগ না করি। আমি জানি একটা বিএফ কখনও তার জিএফ এর সাথে অন্য কোনো ছেলের চলাফেরা কে কখনও মেনে নিবে না।দোস্ত তোদের কাছে একটা জিনিস চাইব, দিবি?(তাহসিন)
–হ্যা বল, কি চাস তুই?(আমি)
–কাল তো বন্ধুত দিবস। তোদের অনেক দিন দেখেনি। কাল একটিবার আমার ক্যাম্পাসে আসবি? (তাহসিন)
–আরে তাহসিন তুই এমন করে বলছিস কেন?আমরা নিশ্চয় যাব। আর তুই অস্ট্রেলিয়া কবে যাচ্ছিস?(আমি)
–সামনে মঙ্গলবার।
–মানে?আজ তো শনিবার। আর তিন দিন পর। এত তাড়াতাড়ি?
–হুম একটু তাড়াতাড়ি। তোরা কাল আসছিস তো?
–হুম আসছি।(আমি)

এরপরের ঘটনা খুব সংক্ষিপ্ত। জীবন কখনও গল্পের মত না যে চাইলেই হ্যাপি এন্ডিং দেওয়া যাবে। জীবন নাটকের চেয়েও যে নাটকীয়।সেদিন ছিল ,বন্ধুত্ব দিবস। এদিকে

তাহসিন জেরিনের সাথে শেষ বারের মত দেখা করতে ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছে। যেখানে আমরাও যাচ্ছি।ক্যাম্পাসে আসার সময় তাহসিন জেরিনের জন্য একটা

ডায়েরী ও তার পছন্দের রজনীগন্ধা ফুল নিয়ে ক্যাম্পাসের দিকে রওনা হয়েছিল। সেদিন ক্যাম্পাসে তাহসিন কে দেখে অনেকটায় বিরক্ত হচ্ছিল জেরিন আর তার

বিএফ। জেরিনের জন্য তার আনা ডায়েরী টা আর ফুলগুলো যেই না তাহসিন জেরিন দিতে যাবে ওমনি ওগুলো হাত থেকে কেড়ে নিয়ে জেরিনের বিএফ সেগুলো হাত থেকে কেড়ে মাটিতে ফেলে দিয়েছিল।
—ওই লুজার তোকে আর কত বার বলব? তুই আর জেরিনের কাছে আসবি না আর ওর সাথে মিশবি না। তাও তা শুনিস নি। এই বলে সে তাহসিন কে চড় মারে।
–জেরিন, আমি আর তোমার সাথে দেখা করতে আসব না। এটাই শেষ দেখা। (তাহসিন)
–হা হা হা তাহসিন! তুই আর কতবার বলবি আমার সাথে এটাই শেষ দেখা?? তুই একটা মিথ্যুক। তুই কখনও চাস না যে আমি ভাল থাকি। তুই কখনও কারো ভাল থাকা

সহ্য করতে পারিস না। এজন্য বার বার আমার কাছে আছিস। এসব সেদিন তাহসিন কে অনেক অপমান করেছিল জেরিন আর বিএফ মিলে। বেচারা সেদিন এত্ত

অপমানের ভিতর ভুলে গিয়েছিল আমরা তার দেখা করতে ক্যাম্পাসে আসছি।এত অপমান সহ্য করতে না পেরে তার নিয়ে যাওয়া ডায়েরী টা মাটি থেকে তুলে তাহসিন

ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে আনমনে রাস্তা দিয়ে হাটছিল। আমি আর শান্ত ততক্ষণ তার ক্যাম্পাসের রাস্তায়।

—“সজীব?সজীব??এই সজীব??” এই কি ভাবছিস এত??আরে উঠ। এসে গেছি আমরা।(শান্ত)

শান্তের ডাকে বাস্তবে ফিরলাম। এতক্ষণ ভাবছিলাম তাহসিনের সাথে ঘটে যাওয়া মুহূর্ত। গাড়ি থেকে নামতেই বুঝলাম সন্ধ্যা হয়ে গেছে। দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা পর আমরা দর্শনা পৌছালাম।দূরে একটা কবর দেখা যাচ্ছে। আমি আর শান্ত এগিয়ে যাচ্ছি।
..
না সেদিন আমাদের আর তাহসিনের সাথে দেখা করার সুযোগ টা মেলেনি।সেদিন তাহসিনের আর অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া হয়নি। চলে গিয়েছিল এই পৃথিবী ছেড়ে। সেদিন

তাহসিন ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়েই হাটতে হাটতে কখন যে রাস্তার মাঝখানে চলে গিয়েছিল!হঠাৎ পিছন দিক থেকে আসা ট্রাকটা ওর শরীরের উপর দিয়ে চলে

গিয়েছিল। মিনিট পাঁচেক পর আমাদের গাড়ি ভিড়ের জন্য ওই জায়টা থামল। আমি আর শান্ত ভিড় ঠেলে ভিড় ঠেলে ভিতরে যেতে লাগলাম। তখনও ভাবেনি ওখানে

কে পড়ে আছে! হঠাৎ শান্তর আত্মচিৎকার। আমি সামনের দিকে তাকাতেই দেখলাম রক্তমাখা অবস্থায় তাহসিন মাটিতে পড়ে আছে আর হাতে সেই ডায়েরী টা। শান্ত

দৌড়ে গিয়ে সেদিন তাহসিন কে কোলে নিয়ে কাদছিল। আমি যেন কান্না ভুলে গিয়েছিলাম একেবারে নিথর হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সেদিন আমরা হারিয়ে ফেলেছিলাম আমাদের কাছের বন্ধু তাহসিন কে।
….
এই ঘটনার পর আমরা জোরিনের কোনো খোজ পেয়েছিলাম না। দুজন প্রতিবারের মত তাহসিনের মৃত্যুবার্ষিকীত ে আসতাম। আজও এসেছি। আজ তাহসিনের ৫ম

মৃত্যুবার্ষিকী। তাহসিনের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলাম আর স্মৃতিগুলো কে অব্যর্থ ভাবে হত্যা করতে চেষ্টা করছিলাম। আর চোখের নোনাজল গুলো বারবার মুছছিলাম।

হঠাৎ আমার ঘাড়ে কারো স্পর্শ টের পেয়ে পিছন ফিরে তাকাতেই দেখলাম জেরিন দাঁড়িয়ে আছে আর তার সাথে একটি ছোট্র বাচ্চা । আমি জেরিন কে প্রশ্ন

করলাম,”বাচ্চাটি কে?” জবাবে জেরিন কি উত্তর দিয়েছিল জানেন? “বাচ্চাটি তার দুবছরের ছোট্র ছেলে তাহসিন!” আমি খেয়াল করলাম দূরে একজন মানুষ

মাইক্রোবাস নিয়ে জেরিন আর তাহসিন এর জন্য অপেক্ষা করছে…..

গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত