বিকাল ৪টা,বন্ধুদের সাথে কলেজ ক্যাম্পাসে আড্ডা চলছে।এটা আমাদের প্রতিদিনের রুটিন।আড্ডা চলছে,হঠাৎ করে একদিকে চোখ পড়তেই আমার চোখ থেমে গেল।সাথে সাথে একটা মিষ্টি হাসি শুনতে পেলাম।একটা মেয়ে আপন মনে হাসছে।দেখতে ততটা সুন্দর না হলেও চেহারায় একটা মায়া আছে।দেখেই মেয়েটার প্রমে পড়ে গেলাম।বলতে পারেন love at first sight.হঠাৎ করেই মেয়েটা কোথায় চলে গেল,আর দেখতে পেলাম না।কিন্তু বন্ধুদের জন্য ওখান থেকে উঠতেও পারলাম না।অতপর সন্ধ্যা হয়ে এল।আমিও বাসায় ফিরে এলাম।শুধু সেই মেয়েটার কথা মনে পরছে।
আমি শিমুল,বাবা মায়ের দ্বিতীয় সন্তান।একটা কলেজে ইন্টার প্রথম বর্ষের ছাত্র।পরের দিন কলেজে গেলাম।হঠাৎ করেই সেই মেয়েটাকে দেখতে পেলাম।পরে বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পারলাম মেয়েটির নাম নীলা, আমাদের সাথেই পরে,তবে নতুন ভর্তি হয়েছে।আমি তো শুনে ভীষন খুশি।আস্তে আস্তে নীলার কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করলাম,কিন্তু কিছুই হল না।এদিকে আমার মন আর মানছে না।তাই ভাবলাম নীলাকে আমার মনের কথাটা বলেই দিব,,একদিন না একদিন তো বলবোই তাই দেরি করে লাভ নেই।ভাবনা অনুযায়ী কাজ।তাই একদিন কলেজ ছুটির পরে নীলাকে ডাক দিলাম।নীলাও আমাকে একটু একটু চেনে।
>ডাকছেন কেন?(নীলা)
>তোমাকে কিছু বলার ছিল।(আমি)
>কি বলবে তাড়াতাড়ি বল(নীলা)
>মানে,,,(আমি)[ কিছুই বলতে পারছিনা]
> মানে মানে না করে বল কি বলবে(নীলা)
>মানে নীলা আমি তোমাকে খুব ভালবাসি,তুমি ছাড়া আমি আর কিছুই ভাবতে পারি না(আমি)
কিছুক্ষণ নিরবতা,একটু পর নীলা কিছু না বলেই চলে গেল।
আমিও হার মানলাম না।আরেকদিন নীলাকে আবার আমার মনের কথাটা বললাম।কিন্তু সেদিন নীলা আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল।বলেছিল সে আমাকে ভালবাসতে পারবেনা আর আমি যেন তাকে বিরক্ত না করি।আমি আর কিছুই বলতে পারলাম না।আমিও এখন আর সামনে যাই না।যদি আমাকে দেখে বিরক্ত হয়,শুধু দূর থেকে তার হাসি মাখা মুখটা দেখে,নিজেকে শান্তনা দেই।জোর করে তো আর ভালবাসা পাওয়া যায় না।
হঠাৎ একদিন আমার শরীর ভীষণ খারাপ হয়ে গেল।তাড়াতাড়ি আমাকে হাসপাতালে নেওয়া হল।অতপর ডাক্তার পরীক্ষা করে যা বললেন তাতে সবার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল।আমার দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে,আমি আর কিছু সময়ের অতিথি।আজ নীলাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে,তাই আমার বন্ধু ফাহিম কে বললাম যেন নীলাকে যেন বলে শেষ বারের মতো আমি তাকে দেখছে চাইছি।জানিনা আসবে কিনা তবুও চাওয়াটা দোষের কিছু না।কিছুক্ষণ পরে ফাহিম নীলাকে নিয়ে এল।নীলাকে বললাম আমার পাশে বসতে,ইচ্ছে নেই তবুও বসেছে,কারণ মৃত্যুর কাছাকছি যে দাড়িয়ে আছে তার শেষ ইচ্ছা সবাই পূরণ করে।নীলাকে বললাম আমার হাতটা একটু ধরতে,,অনেক ভেবে তারপর আমার হাতটা ধরল।আমার এখব খুব ভাল লাগছে,কারণ মরার আগে নীলাকে একবারের জন্য হলেও দেখতে পাচ্ছি।আজ নীলাকে মন ভরে দেখছি,আর কখনো তো আর দেখতে পারব না,,এটাই যে নীলাকে আমার শেষ দেখা।
………………………………………………..সমাপ্ত………………………………………….
গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক