– অনি, তুমি আরেকটা বিয়ে করো প্লিজ, এতো বড় সংসার আমার একার পক্ষে সামলানো সম্ভব হচ্ছে না!
– কী বলছো এসব?
– হুম, রিহান বড় হচ্ছে, ওরে সময় দিবো নাকি তোমার সংসার সামলাবো ?
– কিন্তু তাই বলে!
– দেখো আমি সংসারের মঙ্গলের জন্যই বলছি, তুমি না করো না প্লিজ !
– কিন্তু আমি তোমাকে ছাড়া আর কাউকে ভালোবাসতে পারবো না?
– এসব ইমোশনাল কথা রাখো, আরেকটা বিয়ে করলে কি আমাদের ভালোবাসা কমে যাবে?
– কিন্তু!!!
– কোনো কিন্তু নয়, তোমার জন্য আমি মেয়ে ঠিক করে রেখেছি।
– সত্যি?
– হুম,অল্প বয়সী সুন্দরী মেয়ে, তোমার সাথে দারুণ মানাবে।
– এতো করে যখন চাইছো কি আর করা কিন্তু মেয়েটা কে?
– বাড়িওয়ালা আঙ্কেলের একমাত্র মেয়ে ইবু।
– ইবু! বলো কী? কিন্তু ওর তো বয়স কম, মাত্র কলেজে পড়ে?
– তাতে কী ! কম বয়সি মেয়েই ভালো। ইবু তোমাকে অনেক ভালোবাসাবে?
– কিন্তু!
– কিন্তু কিন্তু করো না তো, ইবুকে বিয়ে করলে বাসা ভাড়া দিতে হবেনা। সংসারের আয় বাড়বে।
– ইবু রাজি হবে তো?
– ইবুকে নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবে না,তুমি রাজি কিনা বলো ?
– আঙ্কেল আন্টি রাজি হবে?
– আঙ্কেল আন্টির সাথে কথা বলেছি তারা রাজি!
– সত্যি! আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না!
– অবিশ্বাসের কি আছে, তুমি কি দেখতে কম হেন্ডসাম?
– কিন্তু আমি তো তোমাকে ছাড়া অন্য কাউকে ভাবতে পারিনা।
– তা তো আমি জানিই, সংসারের কথা ভেবে রাজি হয়ে যাও প্লিজ।
– ঠিক আছে তোমার যা ভালো মনে হয় করো ?
– অফিস করে ক্লান্ত হয়ে বাসায় আসো তোমাকে এক গ্লাস শরবত করে দিবো তাও পারিনা। তোমার সেবাযত্নের জন্য একজন মানুষ দরকার। ইবু তোমাকে দেখেশুনে রাখবে!
– ঠিক আছে তোমার যা ভালো মনে হয় করো!
– ইবু তোমাকে অনেক ভালোবাসবে,তাছাড়া ইবুর নামে অনেক সহায়সম্পত্তি আছে।
– ঠিক আছে তোমার যা ভালো মনে হয় করো।
– আর সবচেয়ে বড় কথা তুমি দুইটা বউ ডিজার্ভ করো।
– তোমার যা ভালো মনে হয় করো?
– তোমার যা ভালো মনে হয় করো?
– তোমার যা ভালো মনে হয় করো! অতঃপর
– এ্যাই… এ্যাই অনি, কী হয়েছে তোমার? ঘুমের মধ্যে কী সব আবোলতাবোল বকছো? আমি হরিমরি করে ঘুম থেকে উঠে, চোখ মুছতে মুছতে বললাম,
– তোমার যা ভালো মনে হয় করো !
– কীসব হাবিজাবি বকছো?
– হায় হায়, আমি কী স্বপ্ন দেখছিলাম?
– স্বপ্ন নয় দুঃস্বপ্ন দেখেছো!
– হায় হায় বলো কী?
– দিনেদুপুরে ঘুমালে এমন দুঃস্বপ্ন তো দেখবেই।
– হায় হায় এটা দুঃস্বপ্ন ছিলো ?
– হুম, যাও এখন তাড়াতাড়ি বাথরুমে যাও?
– বাথরুমে কেন?
– এক বালতি কাপড় ভিজিয়ে রাখছি ভালো করে ধুয়ে নিয়ে আসো।
– বলো কী, সকালে না এক বালতি ধুইলাম।
– আরও এক বালতি ধুইতে হবে তাড়াতাড়ি যাও, কাপড় ধুয়ে ঘরটাও মুছতে হবে!
– ঘরও মুছতে হবে ?
– অবশ্যই, ঘরে তো আর দশটা দাসীবাঁদী নেই যে ধুয়েমুছে দিবে ?
– আচ্ছা ঠিক আছে, আস্তে বলো মানুষ শুনবে তো!
– আস্তে বলবো মানে! দিনেদুপুরে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ব্যাঙের মতো ভুঁড়ি বানাচ্ছো। ঘরের কাজে কোন মনোযোগ নাই!
– আচ্ছা, স্যরি যাচ্ছি তো…..!!!
হায়রে কী স্বপ্ন দেখলাম আর কী বাস্তবতা! স্বপ্নের সাথে বাস্তবের কোন মিল নাই! বাস্তবতা অনেক নির্মম। যাই কাপড়গুলো ধুয়ে আসি। ঘরও নাকি মুছতে হবে
গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক