অন্তিম দেখা

অন্তিম দেখা
-‘চলে গেলো খাঁচা ছেড়ে, মণি নামের পাখি।’ হৃদয় আমার ছিড়ে গেল,জল ভরা আঁখি। বেদনায় করে চিৎকার, মণি, মণি ডাকি। কেনো দিলি মণি রে তুই এভাবে আমায় ফাকি।
-বাঁচবো বলনা কি করে আমি এ অন্ধ ঘরে। মন প্রাণ উজাড় করে, বাসতাম ভালো যারে। সে যে আমায় করলো পাগল,এ জীবনের তরে। ছেড়ে গেলো মণি আমায়, বড্ড একলা করে।
– যাবার আগে বলে যা’না কবে ফিরে আসবি।
যতন করে আগের মতই আবার ভালোবাসবি। স্মৃতি মাখা প্রতিটা মূহুর্ত কি করে আমি ভুলবো? মনের মাঝে কত দিন আর স্মৃতি ধরে রাখবো? তুই যে গেলি অবেলাতেই,আমায় কেনো রাখি? কেনো দিলি মণি রে তুই এভাবে আমায় ফাকি? নয়ন পাগলের মত কাঁদছে আর এই গানটা গাইছে। গত ছয় মাস ধরে ও একই গান গেয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই ওর কাছে মণির মৃত্যুর দিন মনে হয়। ওর চোঁখের সামনে দিয়ে ভেসে উঠে সাদা কাফনে মুড়ানো মণির সেই প্রতিচ্ছবি। একদিন এই মেয়েটিকেই লাল টুকটুকে শাড়ি পড়া অবস্থায় প্রথম দেখেছিলো নয়ন।
– সেই দিনটা ছিলো শুক্রবার ।ছুটির দিন।তাই সাকালে ফজরের নামাজের পর নয়ন ঘুমাচ্ছিলো। কিন্তু আম্মুর বুঝি তার এই ঘুমটা সহ্য হলোনা। অনেক ডাকাডাকির ফলেও যখন নয়ন ঘুম থেকে জাগলনা। আম্মু এসে তখন তাকে কান ধরে টেনে তুলল। নয়নের রিয়্যেল নাম নাঈম। আর ওর মা নাজমা বেগম।
নাজমা বেগম – ওঠ বলছি, ওঠ। বাদর ছেলে একটা।
নাঈম- উমমম,মা আরেকটু ঘুমাতে দাওনা।কেনো এত জ্বালাতন করছো? আজ তো ছুটির দিন।
নাজমা বেগম- আরে বাবা,আজ তোর বিয়ে। নাঈম কম্বলটা আরো ভালো করে টেনে নিল।
নাঈম- আমি এ বিয়ে করবোনা মা।
নাজমা বেগম – কেনো করবিনা?
নাঈম -দেখো আম্মু আমি সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করবো। মেয়ের মামা বলেছে মেয়ে নাকি কালো,দাত বড়, বোকা টাইপের। নাজমা বেগম-হা,হা,হা। হোকনা সে কালো বা নিন্দনীয়। সেও তো আল্লাহর সৃষ্টিই তাইনা? তাছাড়া তুইও তো শ্যাম বর্নের।
নাঈম- আম্মু,তুমি হয়তো ভুলে গেছো আমি উজ্জল শ্যাম বর্নের ছেলে।
আর ফর্সা ছেলেদেরকে দেখতে বিড়াল বিড়াল লাগে। একজন উজ্জল শ্যাম বর্নের ছেলে যদি সব দিকেই স্মার্ট থাকে তাহলে সে’ই নাম্বার ওয়ান পাত্র। আর সে দিক দিয়ে তোমার ছেলে কিন্তু নাম্বার ওয়ান। ওনলি ওয়ার পিচ।
নাজমা বেগম – হয়েছে,আর ডায়লগ দিতে হবেনা উঠ এবার।
নাঈম- না আম্মু, আমি এ বিয়ে করতে পারবোনা।
নাজমা বেগম – আমাকে রাগাসনা। সিরিয়াসলি বলছি দ্রুত রেডি হয়ে নে। নাবালেগা মেয়ে তাই বেশি ঝাঁকজমক করবোনা। চুপ চাপ বিয়ে টা হয়ে গেলে তার পর অনুষ্ঠান করবো।
নাঈম- তোমরা যাই বলো,আমি এ বিয়ে করবোনা ব্যাস করবোনা।
নাজমা বেগম – কেনো করবিনা?
নাঈম- আমি একজনকে ভালোবাসি। নাজমা বেগম – কিহ্?এতদিন পর তুই কি বলছিস এসব?
নাঈম- হ্যা আম্মু ঠিক তাই।
নাজমা বেগম – ভুলে যা তাকে,
নাঈম- কি করে?
নাজমা বেগম -এ আমার আদেশ’ আর আমার আদেশ অমান্য করলে আমার মরা মুখ দেখবি। কথাটা বলেই নাজমা বেগম চলে গেলেন। নাঈম -আ–আ–আম্মুউউউ…এটা তুমি কি বললে? আসলে নাঈম কোন রিলেশন করেনি। মেয়ে কালো তাই ওর মনটা নষ্ট হয়ে গেছে।ও কালো মেয়ে একদম বিয়ে করবেনা। কিন্তু এখন আম্মু যা বলে গেল,কোন উপায় নেই। বিয়েতো করতেই হবে। কপালে যা আছে হবেই।কি এমন দেখল আম্মু যে কালো মেয়েটাকে আমার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লাগল? মেয়ের বাবা কোন লোভ দেখায় নি তো? নাহ্, আমার বাবা মা অন্তত পক্ষে লোভি নন। নারাজ সত্ত্বেও নাঈম বিয়ের প্রস্তুত নিয়ে গাড়িতে চেপে বসল। ১ ঘন্টার মধ্যেই গাড়ি হবু শুশুড় বাড়ি পৌঁছে গেল। অবশেষে বিয়েটাও হয়ে গেল। কিন্তু ঐ কালোতি মেয়ের মুখ নাঈম এখন পর্যন্তও দেখেনি। ওর কোন ইন্টারেস্টই নেই নিযের বৌয়ের প্রতি।
রাতে বৌ নিয়ে বাড়ি ফিরে যখন বাসর ঘরে গিয়ে দেখল পুরো ঘর চাঁদ কন্যার শুভ্র আলোতে ঝলমল করছে।তখন নাঈমের অবস্থাতো নাজেহাল। উফ্ কেউ তো আমাকে বলেনি এত রুপোবতী মেয়ে।ইসস আগে জানলে আরো কত আগে বিয়ে করে ফেলতাম। নাঈমের মনের কোনে কোথায় জেনো একটা আনন্দে চিৎকার দিয়ে উঠল।ও উপলব্ধি করতে পারল এটা ভালো লাগার আর্তনাদ নয়।ভালোবাসার আর্তনাদ। মেয়েটার চোঁখে মুখে ভিষন মায়া বিস্তার করছে। ইচ্ছে করছে প্রতিটা মায়াকে চুমু এঁকে দিতে। এক মূহুর্তে ভালোবেসে ফেলল নাঈম। তার পরী বৌটা কে। নাঈম খাটে বসে তার পরী বৌটা কে কোলে বসালো। মেয়েটাও শান্ত হয়ে নাঈমের কোলে বসে রইল। নাঈম আস্তে করে বলল এই!তোমার নাম টা কি? মেয়েটি মিষ্টি করে বলল,আমার নাম আয়েশা মণি।
নাঈম- আমি তোমার নামের প্রথম অংশ কেটে শুধু মণি বলে ডাকবো। কারন তুমি আমার নয়নের মণি।
মণি-তাই?
নাঈম-হুম।
মণি-তাহলে আপনি আমার নয়ন, আর আমি আপনার মণি।
নাঈম- ওয়াও!দারুন বলেছো। সেদিন থেকেই নাঈমের নামটা বদলে নয়ন হয়ে গেল,আর আয়েশা মণির নামটা কেটে শুধু মণি হয়ে গেল।
নয়ন-এই মণি শুনো!তুমি আমাকে তুমি বলে ডাকবে।
নয়ন- আচ্ছা,এত সুন্দর কেনো তুমি?
মণি-তোমার জন্য,শুধু তোমার জন্য।
সেদিন এই উত্তর পাওয়ার পর নয়ন মণিকে খুব করে আদর করেছিলো। অজস্র ভালোবাসায় ভরে দিয়েছিলো পুরোটা রজনী। যদি সেই রজনীর স্টোরি লেখা হতো তাহলে ইতিহাসের পাতায় গল্প হয়ে থাকতো। এত ভালোবাসা বুঝি কেউ দিতে পারেনা। নয়ন ঠিক তার মণিকে, নয়নের মণি করেই রাখতো। সব অনূভুতি, প্রেম, ভালোলাগা, ভালোবাসা জেনো তারই কাছে। কখনো চোঁখের আড়াল হলে জেনো প্রানে মরে যেতো। ১৬ বছরের বেড়ে উঠা সচ্ছল তরুণী ছিলো মণি। নয়নের হৃদয়ের মণি কোঠায় সেই তরুণী কে ধারণ করেছিলো।
পৃথিবীর সকল আদর আহ্লাদ, ভালোবাসারা যদি নয়ন আর মণি কে দেখতো হিংসায় মরে যেত। প্রতিদীন অফিস থেকে এসে নয়ন মণিকে প্রথমে কপালে ভালোবাসার চুমু এঁকে দিত। তারপর শক্ত করে বুকে জড়িয়ে নিত। ৩০ মিনিট পর্যন্ত ভালোবেসে তারপর ড্রেস চেঞ্জ, গোসল,তারপর খাবার খেতো। হাজারো ক্ষুধা ক্লান্তি সব দূর হয়ে যেত তার মণিকে দেখে। মণির একটু জ্বর নয়নকে উন্মাদ করে দিতো। মণির গায়ে,একটু ফুলের টোকাতেই নয়নের অশ্রু গলে পরতো। ভালোবাসা এক ফুলদানির নাম ছিলো নয়ন, আর সেই ফুল দানির ফুলের নাম ছিলো মণি। পুরো একটি বছর ওদের রঙের সংসার। নিত্যদিন নয়নের হাতে না খেলে মণির পেট ভরতোনা। একদিন অফিস থেকে ফেরার পথে, মণির জন্য নয়ন দুই ডজন লাল চুড়ি নিয়ে এল। কলিংবেল বাজতেই মণি দৌড়ে এসে দরজা খুলে দিল।
নয়নের ইচ্ছে ছিলো তার মণি জেনো সব সময় শাড়ী পড়ে থাকে। সেজন্য মণি কখনো থ্রীপিজ বা রাউন জামা, এসব পড়তোনা। মণি নিযে চুল বাধতে পারতোনা আর শাড়িও পড়তে পারতোনা। নয়ন প্রতিনিয়ত সকালে শত ব্যাস্ততার মাঝেও মণিকে চুল নানা ডিজাইন করে বেধে, শাড়ি পড়িয়ে দিতো। আশপাশের মানুষ গুলো নয়নের কারবার দেখে হাসতো। কিন্তু নয়ন কারো কথায় কর্ণপাত না করে।পৃথিবীর সর্বোচ্চ ভালোবাসা টুকু তার মণিকে দেওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতো। সেদনিও ঠিক তাই ছিলো, মণি শাড়ি পরিহিতা ছিলো তবে তার শাড়ি এলোমেলো হয়ে গিয়েছিলো। নয়ন নিযের ড্রেস চেঞ্জ না করেই মণির শাড়ি ঠিক করে দিয়ে হাত ভর্তি চুড়ি পরিয়ে দিল। তারপর ভালোবাসায় ভরিয়ে দিল তার নয়নের মণিকে।
মণি- আচ্ছা তুমি আমায় এত ভালোবাসো কেনো?
নয়ন-তুমি যে আমার মায়ার পুতুল। আমার নেশা।আমার ভালোবাসা। আমার তৃষ্ণা। আমার নিদ্রা। আমার তন্দ্রা। আমার স্বপ্ন। আমার বাস্তব।
মণি- এত ভালোবাসতে নেই। জানোনা? এত ভালোবাসা বেশি দিন থাকেনা।
নয়ন-একদম বাজে কথা বলবেনা আমার ভালোবাসা ওমর।
মণি-আমি যদি তোমাকে ছেড়ে চলে যাই তুমি থাকবে কেমন করে?
নয়ন- সেদিন জেনো আমার মরণ হয়।
মণি-প্লিজ এসব বলোনা নয়ন। আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাবোনা।
নয়ন-প্রমিস?
মণি-প্রমিস।
নয়ন-চোঁখে চোঁখ রেখে বলো।
মণি-আরে পাগলু এইযে চোঁখে চোঁখ রেখে বলছি।
মণি যখন নূপুর পায়ে শিশির ভেজা ঘাসের উপর হাটতো তখন নয়ন নিযের হাটুর উপর মণির বিন্দু বিন্দু জমে থাকা শিশির কনা মাখা শুভ্র পা রেখে আলতো করে চুমু দিতো। মণি যখন খোলা চুলে বিছানায় বসতো নয়ন তখন মণির চুলে নাক ডুবিয়ে মণির কোলে ঘুমিয়ে যেতো। বৃষ্টি যখন গুড়মুড়িয়ে আকাশ ফেটে বর্ষিত হতো। নয়ন তখন তার ঘুমন্ত পরীকে কোলে নিয়ে এসে বৃষ্টি ফোটায় ঘুম ভাঙ্গাতো। প্রতিদিন একটি ফুলের মালা এনে খোঁপায় গুজে দিতো। আর নয়ন, নয়ন ভরে দেখতো তার মায়ামণি কে। মণিটাও কম ভালোবাসতে জানতোনা। নয়নকে গান গেয়ে ঘুম পারাতো। প্রতিদিন বিকেল বেলা বাগানে গিয়ে দুজনেই কানামাছি খেলতো।তবে চোর বানাতো মণিকে।
মণি হাতের ইশারায় নয়ন কে খুঁজতো আর একটু লুকোচুরি খেলে এক্কেবারে সামনে এসে ধরা দিতো। মণির তখন মনে হতো এতক্ষণ বুঝি নয়ন তার চোঁখের আড়ালে ছিলো।কাছে পেয়েই শক্ত করে জাপটে ধরতো।কখনোতো খুঁশিতে ডুকরে কেঁদে উঠত। কখনোবা খিলখিল করে ঝুনঝুনির মত হেসে উঠত। সেই মূহুর্তটা ছিলো সব চাইতে মন মুগ্ধকর। নয়ন চিৎকার করে বলতো হে আকাশ!হে জমিন!হে বৃক্ষ রাজি।হে নদী! তোমরা সাক্ষি থেকো আমি আমার মণিকে ভালোবাসি অনেক বেশি ভালোবাসি। খোলা স্থান থেকে চারিদিকে নয়নের কথা গুলোর প্রতিধ্বনি হতো। সেই প্রতিধ্বনির সাথে তাল মিলিয়ে মণিও চিৎকার করে বলতো হে আল্লাহ!আরো ভালোবাসা দাও আমাদের মাঝে যদি তোমার ভান্ডারে থাকে। এত্ত ভালোবাসার খুটি গুলো একদিন হেলে গেল। তসনস হয়ে গেল সব রঙিন সাজ। পৃথিবীটা সাদাকালো হয়ে গেল নয়নের চোঁখের সামনে।
– একদিন মণি বায়না করলো সে ঘুরতে যাবে। সেদিন কেনো জানি নয়নের অতোটা আগ্রহ ছিলোনা।মনটা বার বার পিছু ডাকছে।তবুও তার প্রিয়তমার ইচ্ছা পূরনের জন্য সে তাকে নিয়ে বের হল এক প্রাকৃতিক ঘেরাময় সুন্দর স্থান দেখতে। নয়ন দেখলো একটা কাচা ফুলের তোড়া নিয়ে একটি ছেলে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছে। নয়নের মণি সব চাইতে ফুলে দূর্বল ছিলো।তাই তার মণিকে সে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য বলল এই মণি তুমি এখানে একটু দাড়াও। যাস্ট টু মিনিট ওয়েট। আমি আসছি। মণি রাস্তার পাশে দাড়াল। নয়ন রাস্তা পার হয়ে ওপাশে গেল ফুলের তোড়াটা কিনতে। কিন্তু কে জানতো?নয়ন তার মণিকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য গিয়ে ফিরে এলে মণিই তাকে পৃথিবীর সব চাইতে নির্মম সারপ্রাইজটা দেবে?
শো.. করে একটা গাড়ি এসে মণিকে ধাক্কা দিল। মণি ছিটকে পড়ে গেল অনেক দূরে। পিচঢালা রাস্তা মণির শরীরের চামরা কে ছিড়ে দিলো।গাড়ির চাকা এসে নয়নের দেওয়া চুড়ি পড়া মণির হাতটা থেতলিয়ে দিলো। রক্তাক্ত হয়ে গেল পুরো দেহ্। মণির কন্ঠ থেকে বাতাসের সাথে অস্ফুট সুরে ভেসে এল নয়ন! আমি বাঁচতে চাই শুধু তোমার জন্য বাঁচতে চাই। নয়ন যখন ফুলের তোড়াটা নিয়ে পেঁছনে ঘুরেই তার মণির এই অবস্থা দেখতে পেল। তখন একটা বিকট চিৎকার দিয়ে দৌড়ে মণির কাছে গেল।কিন্তু ততক্ষণে খুব দেরী হয়ে গেছে।তার মণির দেহ্ ক্ষত-বিক্ষত হয়ে গেছে। নয়নের হাতের ফুল গুলো ছড়িয়ে একটি একটি করে পাপড়ি মণির রক্তাক্ত দেহের উপর পড়ল। নয়ন উন্মাদের মত চিৎকার করতে করতে মণিকে পাজকোল করে ডক্টরের কাছে নিয়ে এল।
তখনো মণির দেহে প্রাণ ছিলো। মণি বার বার রক্তে ভেজা ঠোঁটে অস্পষ্ট সুরে বলছিলো।আমি বাঁচতে চাই শুধু তোমার জন্য বাঁচতে চাই। আমি আমার প্রমিস রক্ষা করতে চাই। কিন্তু সেদিন আজরাইল মণির কাকুতি শুনলোনা।শুনলোনা নয়নের আকাশ ফাটা চিৎকারের আওয়াজ। ডক্টর কত স্বাভাবিক ভাবে বলে দিলেন সরি। সরি শব্দটা বার বার নয়নের কানে বাজতে লাগল। খুব নির্দয় ভাবে নয়নের মণিকে কেড়ে নেওয়া হলো। সাথে পাথর বানিয়ে দেওয়া হলো নয়নের আন্তর। শুধু নিথর দেহটা পড়ে রইলো অনাথ হয়ে পৃথিবীর বুকে।জীবন্ত লাশ হয়ে গেল সেই রোমান্টিক ছেলেটা। সবাই যখন মণিকে বড়ই পাতা গড়ম জলে গোসল করাচ্ছিলো।মণির দেহ্ থেকে পানি নয় রক্তের বন্যা বইছিলো। সাদা কাফনের কাপড় পড়িয়ে যখন মণিকে নয়নের সামনে তুলে ধরা হলো। তখন মনে হচ্ছিলো একটা নিষ্পাপ নবজাত শিশু ওকে হেসে চির বিদায় জানাচ্ছে। এটাই ছিলো নয়নের অন্তুিম দেখা।
যখন তার মণির নামটা হয়ে গিয়েছিলো লাশ। শত আর্তনাদেও সেদিন কেউ মণিকে ফিরিয়ে দিলোনা তার বুকে। এক অজানা গহিন মাটির দেশে মণিকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। মণির যে দেহে নয়ন ফুলের আঘাতও সহ্য করতে দেয়নি। সেই দেহে নিযের হাতে মণিকে মাটি চাপা দিতে হলো। নাজানি কত কষ্ট হচ্ছে তার মণির। অবেলায় নিষ্ঠুর ভাবে নিয়ে নেওয়া হলো তার মণিকে। ভালোবাসা গুলো মেরে ফেলা হলো এক নিমিষেই। এত ভালোবাসা দেখে হয়তো আজরাইলেরও হিংসা হচ্ছিলো। তাইতো সব শেষ করে দিল। কি নিয়ে বাঁচবে এখন নয়ন? মণির অন্তিম স্মৃতি? নাকি মণিকে অন্তিম দেখা?
গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত