ক্ষতি

ক্ষতি
বস একটা জিনিস আছে! আমি আসছি। কথাটা বলে জাহিদ ফোনটা রেখে দিলে।এখন তাকে অনেক দূরে যেতে হবে,অনেক দূরে।শহর থেকে অনেক দূরে একটা জঙ্গলে তার গোপন আস্তানায় যেখানে জমা আছে তার শতশত পাপের হিসাব। অফিসে সবাইকে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে সে রওনা দিলো।
গাড়ি তে বসে বসে সে তার পৈশাচিক হাসি হাসতে থাকলো।অফিসের কেউ জানেনা তাদের এই জাহিদ সাহেবর আসল চেহারা। মেয়েটা কোথায়? বস ঘরে আটকে রেখেছি। বয়স কতো?? বস বাচ্চা মেয়ে ৮-৯হবে হয়তো।আপনি দেখবেন মেয়েটাকে?? নাহহ, আমার দেখার প্রয়োজন নেই। আজ রাতেই সব কাজ সম্পুর্ন করতে হবে।বড় ডিল হাত ছাড়া করতে চাচ্ছি না। ঠিক আছে বস।আজ রাতের মধ্যে সব শেষ হয়ে যাবে।আপনি কাল এসে নিয়ে যাবেন। এই সময় কে ফোন দিচ্ছে? এই নিশি কে নিয়ে পারি না একটু পরপর ফোন দিয়ে জ্বালাতন করবে। কথা টা বলে ফোনটা রিসিভ করলো জাহিদ সাহেব। হ্যালো নিশি বলো একটু কাজে আছি সব সময় বিরক্ত কেন করো বলোতো? আমাকে কথাটা বলতে দিবা নাকি?ফোনটা রিসিভ করে নিজের মতো বকতেই আছো। বলো কি বলবে?
আসার সময় বাইরে থেকে খাবার আনবে তোমার মেয়ে রাগ করে মিলিদের বাড়ি বসে আছে নিশ্চয়ই।বাইরে থেকে কিছু নিয়ে আসলে ও খুশি হবে। ঠিক আছে রাখছি এখন। বলে ফোনটা রেখে দিলো। জাহিদ সাহেবের স্ত্রী নাম নিশি আর তাদের এক মাত্র মেয়ে মাইশা। শোনো আমি এখন চলে যাচ্ছি কাল এসে জিনিস নিয়ে যাব। বস মেয়েটার লাশ কে কোথায় ফেলতে হবে? নদীর পাশে জঙ্গল টাতে। কথা টা বলে জাহিদ সাহেব টানা পায়ে গাড়িতে এসে বসলো।জাহিদ সাহেব একজন বড় ব্যবসায়ী। ব্যবসার পাশা পাশি জাহিদ সাহেব মানুষের দেহের অংশ যেমন কিডনি,চোখ ইত্যাদি বিদেশে পাচারের কাজ করে।এর থেকে সে প্রচুর ইনকাম করে। গাড়ি যখন বাড়ির কাছি কাছি জাহিদ সাহেের ফোনটা আবার বেজে ওঠলো। নাহহহ এই নিশি আমাকে জ্বালিয়ে খায়।
হ্যালো হ্যালো কোথায় তুমি??কাঁদতে কাঁদতে কথাটা বললো। কি হয়েছে তুমি কাঁদছো কেনো? মাইশাকে খুজে পাচ্ছি না। কি বলো? তুমি না বললে মিলিদের বাড়িতে? আমি ভেবেছিলাম ওখানে আছে তাছাড়া তো মাইশা কোথাও যায় না। ওইটুকু বাচ্চা মেয়ে কোথায় যাবে!তুমি ভালো করে খুজে দেখো কোথায় রাগ করে বসে আছে হয়তো।আমি চলে এসেছি প্রায়। আমি সব জায়গায় দেখেছি কোথায়ও নেই। আচ্ছা আমি দেখছি।বলে ফোনটা রেখে গাড়ি টা পার্কিং করে উপরে উঠে আসলো জাহিদ সাহেব।কলিং বেল বাজাতেই নিশি দরজা খুলে দিলো। কেঁদে কেঁদে মেয়েটা চোখের কি অবস্থা করেছে। আমি পুলিশ কে ফোন করেছি।তুমি তোমার বাবার বাসায় ফোন করে শুনেছো তো?? আমি সব জায়গায় শুনেছি কোথায়ও নাই বলে আবার কেঁদে উঠলো নিশি। আহ!!মরা কান্না করো না!
কথাটা নিশিকে কড়া ভাবে বললেও নিজেরি কান্না আসছে ওই একটা মাত্র মেয়ে তাদের। মাইশার জন্মের পর ডাক্তার জানিয়েছে তাদের আর কোনো বাচ্চা হবে না।আর নিশিকে সে ভালোবেসে বিয়ে করছে। নিশিকে সে কখনও ছাড়তে পারবে না। পুলিশকে ফোন দেওয়া হয়েছে। পুলিশ তন্ন তন্ন করে খুঁজছে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না।এই দিকে নিশি কাঁদতে কাঁদতে দুইবার জ্ঞান হারিয়েছে।জাহিদের ও অবস্থা ভালো না।কখন স্টোক হবে বলা যাচ্ছে না। সকালে ৭টার দিকে ফোনটা বেজে উঠলো জাহিদের।তড়িঘড়ি করে ফোনটা রিসিভ করলো স্যার আমরা নদীর কাছে ঝোপের মাঝে একটা ডেডবডি পেয়েছি।এটা আপনার মেয়ের ডেডবডি! কি বলছেন আপনি অফিসার? জ্বি ডেডবডিটার দেখে মনে হচ্ছে শরিরে কিছু নাই।
আপনার মেয়ের ছবির সাথে তার মিল আছে।আমরা লাশটাকে থানাতে এনেছি আপনি প্লিজ এসে দেখবেন একটু।
বলে ফোনটা রেখে দিতেই আবার ফোনটা বেজে উঠলো জাহিদ সাহেবের। হ্যালো বস একটা সর্বনাশ হয়েগেছে!! কি হয়েছে? মেয়েটাকে আমরা যে ঝোপের মাঝে ফেলেছি সেখানে পুলিশ এসে মেয়েটাকে নিয়ে গেছে! জাহিদ সাহেব আর কিছু বলতে পারলো না হাত কাঁপছে তার ফোনটা মেঝেতে পড়ে চারদিকে ছাড়িয়ে গেলো।তার দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই তার! অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে তার!!
গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত