আমরা কখনো বুঝতেই পারি নি অর্ক একটু অস্বাভাবিক।একটু না,বেশ অস্বাভাবাবিক।সাধারন কথায় বলতে গেলে পাগল।
ফুল চাচী আমাদের কাউকে কখনো বুঝতেই দেন নি ব্যাপারটা।গ্রামের বাড়িতে অর্ককে নিয়ে খুব কম আসতেন।
মেজো চাচা একাই আসতেন ঈদে বা অন্য কোন উপলক্ষ্যে,ফুল চাচী আর অর্ক তাদের ঢাকার বাসাতেই থেকে যেতো।
ফুল চাচী মারা যাওয়ার পর পরেই অর্ক যখন আমাদের সাথে থাকতে ঢাকা থেকে চলে এলো,
তখনই অর্কর অস্বাভাবিকতা আমাদের কাছ ধরা পড়ে গেল।
প্রতিদিনের মতো সেদিনও মাঠে খেলছিলাম,অর্ক খেলাধুলা পারে না,ছোট থেকে শহরে মানুষ হয়েছে,
গ্রামের পরিবেশের সাথে এখনো মানিয়ে উঠতে পারে নি,মাত্র দুই মাস হলো সে আমাদের সাথে আছে।
আমরা বিকালে খেলতে আসলে অর্ক আমার সাথে সাথে আসে কিন্তু কখনো খেলে না,চুপচাপ কোনায় দাঁড়িয়ে দেখে।সেদিনও দেখছিলো।
আমরা বরফ-পানি খেলছিলাম।বকুলের পা কেটে গেছে,তাই দৌড়াতে পারছে না,ও তাই অর্কর পাশে দাঁড়িয়ে আছে।
আমি বরফ হয়ে আছি,কেউ পানি করার জন্য ছুঁতে পারছে না।হঠাৎ অর্ক আর বকুলের দিকে চোখ গেল।
দুইজনে কথা বলতে বলতে পুকুরের দিকে সরে গেল,আমি তাকিয়ে দেখছি।
একটু পরেই আমি অবাক হয়ে দেখলাম অর্ক বকুলকে ধাক্কা মেরে পুকুরে ফেলে দিল।
আমি চিৎকার করার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেললাম,বাকিরা কেউ কিছুই দেখে নি।
আমি দৌড়ে পুকুরের কাছে যাওয়া শুরু করতেই দেখি মন্টু ভাই সাইকেল নিয়ে সাঁই করে ছুটে আসছেন,উনি বকুলকে পানিতে হাবুডুবু খেতে দেখেছেন।
মন্টু ভাই বকুলকে তুলে ফেললেন,আমরা সবাই বকুলকে ঘিরে ধরে দাঁড়িয়েছি,ভেবেছি সে বুঝি মারাই গেছে।
বকুল যখন কেশে উঠে চোখ মেললো পাশে অর্ককে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভয়ে কেঁদে উঠলো।
আমি ছাড়া আর কেউ দেখে নি অর্কই বকুলকে ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলেছে,আমি কাউকে কিছু বললাম না,কিন্তু বকুল সবাইকে বলে দিলো।
বড়রা কেউ অবশ্য তার কথা বিশ্বাস করলো না,সবাই ভাবলো,বকুল নিজেই নিজেই পানিতে পড়ে গেছে এখন অর্কর দোষ দিচ্ছে!
অর্ককে আমার বয়সী কেউই পছন্দ করে না;সে খুবই ফর্সা, স্বাস্থ্যবান, ফুটফুটে বাচ্চা।
বড়রা সবাই অর্কর গাল টিপে আদর করে দেয়, চকলেট দেয়, এটা সেটা নানান কিছু দেয়,
মা মরা বাচ্চা, সেইজন্য আদর আরো বেশি, সে তাই ছোটদের চক্ষুশূল।শুধুমাত্র আমি অর্কর একমাত্র বন্ধু।
অর্ক দিনরাত আমার পিছেপিছে ঘোরে, ওর সাথে গল্প করতে আমার খারাপ লাগে না,
আমি অনেক বেশি কথা বলি, অর্ক শুধু চুপচাপ শোনে, তাই তার সাথে গল্প করে আরাম।আমি ওকে ‘তুই’ বলি, ও আমাকে ‘তুমি’ বলে।
অর্ক কাউকে ‘তুই’ডেকে অভ্যস্থ নয়।
অর্ক কিছুই পারে না, গাছে উঠতে পারে না, দৌড়াতে পারে না, ঝগড়া করতে পারে না, এমনকি অংকও পারে না।
সহজ সহজ যোগ করতে ভুল করে,আমার খুব হাসি পেয়ে যায় তখন।
তবে অর্ক ইংরেজীতে খুব পাকা, গটগট করে ইংরেজী বলে,বড় মানুষদের মতো গল্পের বই পড়ে!
‘আমার দুধ খেতে ভাল লাগে না।‘’
‘ভাল লাগে না তো জানলা দিয়ে ফেলে দে।‘’
অর্ক আমার দিকে বড় বড় চোখে তাকিয়ে থেকে বলে,
‘’ফেলে দিলে ছোট চাচী বকবে না?’’
তার ছোট চাচী হচ্ছে আমার মা।
টের পেলে মা খুবই বকবে, অর্ককে না, আমাকে, মা সাথে সাথেই বুঝে যাবে এই বুদ্ধি আমার, তবু আমি ঠোঁট উলটে বললাম ,
“বুঝবে কি করে গাধা? জানলা দিয়ে ফেলে দে, মা বুঝবে খেয়ে নিয়েছিস,আমি এরকম কত করি!মা কিচ্ছু টের পায় না!’’
অর্ক অবিশ্বাস্যের দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে দুধ জানলা দিয়ে ফেলে দেয়।
‘’তুমি খুব সাহসী অরু!’’
আমার মুখে গর্বের হাসি ফোটে।
অর্কর একটা ছোট বোন আছে।একবারে গ্যাদা,তাকে আমি একবারই দেখেছিলাম,
সে থাকে অর্কর ছোটখালার কাছে,মেজো চাচা ঢাকায় থাকে,এক-দুইদিনের জন্য এসে অর্ককে দেখেই আবার চলে যায়।
অর্কর জন্য আমার খুবই মায়া হয়।আমার বয়সী একটা ছেলের মা নেই,বাবাও কাছে নেই।
অর্ক তবু একটুকু কাঁদে না।সে আমার থেকে বেশি সাহসী।
‘’তুই বকুলকে কেন ধাক্কা দিয়ে পানিতে ফেলেছিলি?’’
অর্ক এতটুকু চমকালো না,একটু যেন রেগে গিয়ে বললো,
‘’আমার মা নেই জন্য ও আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করে, আমার ভাল লাগে না, খুব রাগ লাগে, তাই ধাক্কা দিয়েছিলাম,ভাল করেছি না অরু?’’
আমার বকুলের উপর রাগ হলো,মা নেই জন্য হাসবে কেন? এটা হাসির কোন কিছু?অর্ক ঠিকই করেছিল পানিতে ফেলে দিয়ে, শিক্ষা হয়েছে।
‘’কিন্তু তুই আর এরকম করিস না,কেউ তোকে কিছু বললে সাথে সাথে আমাকে বলবি,আমি তাকে মারবো।তুই কিছু করিস না,কেমন?’’
অর্ক সুন্দর করে হাসলো।অর্ক আবার একদিন এরকম কান্ড ঘটালো।পাশের বাড়ির টুটুলকে মেরে মাটিতে শুইয়ে ফেললো।
কেউ অর্ককে ছাড়াতে পারে না,বড়রাও না,অর্কের গায়ে যেন অলৌকিক কোন শক্তি ভর করেছে,টুটুলের নাকে মুখে রক্ত।
টুটুলের মা প্রায় অজ্ঞান হয়ে গেছেন ছেলের অবস্থা দেখে।বড় চাচা অনেক কষ্টে অর্ককে ছাড়াতে পারলেন।
টুটুল তখন মার খেয়ে আধামরা। টুটুলের মা ছেলেকোলে বললেন,উনি পুলিশে খবর দিবেন।
উনি রাগে গজরাতে গজরাতে বললেন, ’পাগল ছেলেকে খোলা রেখে দিয়েছেন।আপনাদের আমি পুলিশে দেবো।
এখন আমার বিশ্বাস হচ্ছে এই ছেলেই বকুলকে পুকুরে ফেলে দিয়েছিলো,এই ছেলে দিব্যি মানুষ খুন করতে পারে।‘’
বড় চাচা হাত জোর করে ক্ষমা চাইলেন।বড় চাচা গ্রামের একজন গন্যমান্য ব্যক্তি, সবাই তাকে মানেন।
‘’ভাবী,মাফ করে দেন।আমরা ওকে দেখে রাখবো,আর কখনো এমন কিছু ও করবে না!’’
হৈ-চৈ থেমে গেল।বড় চাচা অর্ককে কোলে নিয়ে ঘরে ঢুকে গেলেন,অর্ককে বড় চাচা খুবই ভালবাসেন।
আমি খুব চমকে গেছিলাম অর্কক এরকম দেখে।
আমি আর টুটুল স্কুলের একটা ঘটনা নিয়ে হাসাহাসি করতে বাসায় ফিরলছিলাম, তখনই অর্ক ছুটে এসে টুটুলকে মারা শুরু করে।
আমি আটকাতে যাওয়ায় আমাকে বলেছিল,
‘’খবরদার অরু, একদম কাছে এসো না, তোমাকেও মারবো তাহলে।‘’
রাতে চুপিচুপি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম,
‘’টুটুলকে ওভাবে মারলি কেন?’’
‘’তুমি ওর সাথে গল্প করছিলে কেন? ওরকম আবার দেখলে আবার ওকে মারবো।
শুধু ওকে না, যার সাথে দেখবো তাকেই।তুমি শুধু আমার বন্ধু।ঠিক আছে অরু?’’
অর্কর চোখ কেমন যেন ঠান্ডা, সেই রাতে আমি সত্যি অর্ককে ভয় পেলাম।
এরকম ঘটনা আস্তে আস্তে বাড়তে থাকলো, মেজো চাচা খবর পেয়ে আসলেন।
মেজো চাচা দেখতে একেবারে রাজপুত্রের মতো ছিলেন, এখন একবারে চেনাই যায় না ,
আমি প্রথমে দেখে বুঝতেই পারি নি উনি মেজো চাচা, অর্কর বাবা!
দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পরে বারান্দায় বসে বড় চাচা,
মেজো চাচাকে অর্কর জন্য একটা নতুন মা আনার কথা বলছিলেন,আমি আর অর্ক পাশের ঘর থেকে সব শুনতে পাচ্ছিলাম।
আমার খুবই আনন্দ হচ্ছিলো, অর্কর নতুন মা আসবে, অর্ক আর কাউক মারবে না, ঠিক হয়ে যাবে, একবারে শান্ত।
হঠাৎ অর্ক টেবিলে পড়ে থাকা ফল কাটার ছুরিটা নিয়ে ছুটে যেয়ে বড় চাচার ডান হাতে ধাঁ করে বসিয়ে দিল;
মুহূর্তের মধ্যেই সবার চোখের সামনেই বড় চাচা রক্তে ভেসে গেলেন।মা চিৎকার করে উঠলেন,বাবা অর্কর হাত চেপে ধরলেন।
আমি কাঁদতেও ভুলে গেছি।বড় চাচাকে বাবা যখন হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন মেজো চাচা অর্ককে তখন অমানুষের মতো পেটাচ্ছেন!
‘’আজ তোকে আমি মেরেই ফেলবো।আমার বড় ভাইকে তুই মেরে ফেলছিলি!তোকে আজ শেষ করে ফেলবো!’’
মেজো চাচাকে এর আগে কখনো অর্কর সাথে উঁচু গলায় কথা পর্যন্ত বলতে শুনি নি।
অর্ক কোন শব্দ করছিলো না,কাঁদছিলোও না,শুধু মার খেয়ে যাচ্ছিলো,ওর ফর্সা মুখ রক্তের দাগে ভরে যাচ্ছিল।
পাশের বাড়ি থেকে লোকজন এসে মেজো চাচাকে কোনরকমে থামালেন।
‘’কি করেন ভাই? মরেই যাবে তো ছেলেটা।ও বুঝলে কি আর করতো এমন! ছাড়েন! ছাড়েন!’’
মেজো চাচা অর্ককে শেষ পর্যন্ত ছাড়লেন, আমি ভেবেছিলাম অর্ক বোধ হয় মরেই গেছে।মা অজ্ঞান অর্ককে ঘরে নিয়ে গেলেন।
সেদিন রাতে এক ঘরে অর্ক শুয়ে আছে,ছোট মুখে অসংখ্য কাটা-ছেঁড়ার দাগ, ঘুমের মধ্যে কি নিষ্পাপ লাগছে ওকে!
পাশের ঘরেই বড় চাচার পায়ের কাছে মেজো চাচা বসে,বড় চাচার হাতে ব্যান্ডেজ।মেজো চাচা হাউমাউ করে কাঁদছিলেন,
‘’আজ আমার ফুল বেঁচে থাকলে আমার বাবু কখনো এরকম হয় বলেন! ফুল দিনরাত ওকে আগলে রাখতো!
এখন আর কে দেখবে ওকে? আমার সব শেষ হয়ে গেল বড় ভাই!’’
মেজো চাচা চিৎকার করে কাঁদছেন,মা,বাবা,বড় চাচা সবাই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন।আমারো খুব কান্না পেয়ে গেল।
আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে বললাম , ‘’কি হয় আল্লাহ, অর্কর কষ্ট একটু কমিয়ে দিলে?’’
অর্কর কষ্ট একটু হলেও কমেছিল,ওর আবার একটা ছোট্ট পরিবার হয়েছিল।
মেজো চাচা,অর্কর নতুন মা এনেছিলেন,অর্কর ছোটখালাকে বিয়ে করেছিলেন।
প্রথম প্রথম অর্ক নতুন চাচীকে মা বলতো না,নতুন চাচীকেও মারতো,
কিন্তু নতুন চাচী অর্ককে কখনো ঠেলে ফেলে দেন নি,ওকে আস্তে আস্তে নিজের করে তুলতে পেরেছিলেন।
মেজো চাচা,অর্ক,নতুন চাচী,অর্কর বোন আবার একসাথে ঢাকায় থাকা শুরু করলো।
বাইরে থেকে দেখলে সুখী একটা পরিবার,কিন্তু কাছ থেকে দেখলে কেমন একটা অসুখী অসুখী ছায়া।
অর্কর চিকিৎসা চলছিলো, সে এখন অনেকটা সুস্থ,শান্ত,মারধোরের অভ্যাসটা প্রায় চলে গেছে।আমি,মা,বাবা ওদের বাসায় বেড়াতে গিয়ছিলাম।
আমি ক্লাস এইটে পড়ি,অর্কও বড় হয়েছে,অনেক লম্বা হয়েছে,সেই আগের মতোই মিষ্টি দেখতে।
অর্ক ক্লাস সিক্সে পড়ে,পিছিয়ে পড়েছে একটু পড়ালখায়।আমার সাথে ওর কত গল্প!আমি ওকে কখন যেন ‘তুমি’ বলতে শুরু করেছি!
‘’তুমি ভাল আছো অর্ক?’’
‘’হ্যাঁ, এখন ভাল।‘’
অর্কর মুখে লাজুক হাসি।চলে আসার সময় অর্ক আমার হাত ধরে ওর ঘরে নিয়ে গেল।
‘’অরু,শোনো।তুমি ছাড়া এখনো আমার অন্য কোন বন্ধু নেই।তোমার কি অনেক বন্ধু?
খুব বেশি বন্ধু বানিয়ো না, আমার কিরকম হিংসা হয়! এটা তোমার জন্য।‘’
অর্ক ওর সবচেয়ে প্রিয় আর্ট খাতাটা আমাকে দিয়ে দিল।আমার তো অনেক বন্ধু,স্কুল,হাসাহাসি,পড়ালেখা,গল্প।
অর্কর কথা আমি কতটুকুই বা ভেবেছি? আমার খুব কান্না পেল।
…অর্ক আমার বিয়ের দিন এসেছিল।ওর পড়ালেখা আর হয় নি।
মেজো চাচা ওকে একটা বইয়ের দোকান করে দিয়েছেন,লাইব্রেরীর মতোন, ছিমছাম,সুন্দর।মন ভাল হয়ে যায় গেলেই।
ও এখন একবারে সুস্থ-স্বাভাবিক। বিয়েবাড়ির হৈ-চৈ এর ফাঁকে অর্ক আস্তে করে আমার ঘরে ঢুকলো।
আমি সেজেগুজে জবজরং হয়ে বসে ছিলাম,অর্ককে দেখে চমকে উঠলাম। চব্বিশ-পঁচিশ বছরের লম্বা-ফর্সা এক যুবক,মুখে হাসি।
‘’তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে অরু! চেনাই যাচ্ছে না!’’
আমি হাসলাম।
‘’ভাল আছো অর্ক?’’
‘’হ্যাঁ,আছি।‘’
‘’আমাকে জিজ্ঞস করলে না?’’
‘’ভাল আছো যে বুঝতেই পারছি!’’
অর্ক আরো কিছু বলবে,আগ্রহভরে আমাকে দেখছে।
‘’তোমার সাথে আমার একটা কথা আছে অরু, আর বলা হবে আজ না বললে!’’
‘’বলো।‘’
‘’আমার মা কিন্তু তোমাকে আমার সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন জানো?বাচ্চাকালে আমাকে একবার বলেছিলেন!
মা কি পাগল না অরু?এক্কেবারে পাগল!’’
অর্ক শব্দ করে হাসছে, সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের হাসি,দেখতে ভাল্লাগছে।
আমি অর্ককে দেখছি, জানালা দিয়ে বিকেলের রোদ ঘরে ঢুকছে,অর্কর চোখে পানি চিকচিক করছে, নাকি আমি ভুল দেখছি?
অর্কর হাতটা আমার ধরত ইচ্ছা করছিলো,কিন্তু ধরলাম না,কেন ধরবো?
আমি তো অর্কর ভাল বন্ধু হতে পারি নি!আমাকে ক্ষমা করো অর্ক!তুমি ভাল থেকো!