ভাইজান

ভাইজান

রাস্তা দিয়ে দৌড়াচ্ছে আর গুলি করছে। বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষটা প্রাণের ভয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে রাস্তায় হোচট খেয়ে পড়ে। লোকটার কাছে গিয়ে বলে
.
– ‘কি! দৌড় শেষ? আর দৌড়াবি না? সময় থাকতে দৌড়া, পরে সময় পাবি না।’
– —————
– ‘এভাবে তাকিয়ে থাকিস না, চুপ করে থাকিস না, কথা বল। চুপ করে থাকলে আমার রাগ বাড়ে।’
– —————
– ‘তোর এতো বড় সাহস? ভাইজানের কথা অমান্য করস? কানের নিচে দিমু না মাথার খুনি উড়ামু! বল কোনটা করব?’
.
– ‘ভাইজান আমার ভুল হয়ে গেছে আমাকে মাফ করে দেন।’
সিগারেটের ধোঁয়া উড়াতে উড়াতে বলে
– ‘ভুল, ভুল, মাফ, মাফ আমার কাছে? হা হা হা মানুষ আর খুঁজে পাইলি না!’
.
– ‘ভাইজান আমাকে একটা সুযোগ দেন।’
– ‘সুযোগ! সুযোগ! কিন্তু কে আমি? তোকে কেনই মারব? তোকে কেনই সুযোগ দিব? বেশী কথা বলবি না, একদম চুপ হয়ে যাহ।’
– ‘ভাইজান! ভাইজান!’
– ‘ভাইজান তোরে চুপ থাকতে বলছে না? ভাইজান বললে শোনতে হয়, না হলে মার খেতে হয়।’
.
– ‘তোর কাছে একটাই অপশন। সেটা হলো ঐ-পাড়ে যাওয়ার। আর কোনো অপশন নাই।’
– ‘ভাইজান, এতো বড় শাস্তি আমাকে দিয়েন না। একটু দয়া করুন।’
– ‘দয়া, দয়া, মায়া, মায়া, আমার কাছে? সব ঐ আকাশে চলে গেছে। এতদিন কি কি অপরাধ করছস মনে করতে থাক।’
– লোকটার মনের মাঝে পুরনো দৃশ্যগুলো ভাসতে থাকে। চোখ থেকে অশ্রু ঝরছে থাকে।

– একটা গুনির শব্দ হয়।

তাওহীদ রাতের আকাশে তাঁরা দেখছে। মনের মাঝে শান্তি অনুভব করছে। কারণ আজকে আর একটা ধর্ষণ কারীকে হত্যা করতে পেরেছে। মনের কল্পনাতে দেখে, দূর আকাশে তার দুলাভাই, আপু ও ভাগ্নি হাসি মুখে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষণ পর অনুভব করে চোখের কোণে পানি জমেছে।
.
তাওহীদের জীবনটা এরকম ছিল না। তার একটা সুন্দর পৃথিবী ছিল। সেই পৃথিবীতে দুলাভাই, বোন ও ভাগ্নিকে নিয়ে তার জীবনটা পরিপূর্ণ ছিল। কখনও মান-অভিমান করা, কখনও ঝগড়া-ঝাটি করা, আবার কখনও ভালোবাসায় জড়িয়ে যাওয়া। এভাবেই তার দিন গুলি চলে যাচ্ছিল। কিন্তু একটা ঝড়ে সব পাল্টে যায়।
.
একদিন তার দুলাভাই ফোন করে বলে,
– ‘তাওহীদ আজকেই ভার্সিটি থেকে বাসায় আসো।’
তাকে কোনো কিছু বলার সুযোগ দেয়নি। তার ভাগ্নী বলেছিল ভার্সিটি থেকে ফিরার সময় পুতুল আনতে। ওর কথা মতো দোকান থেকে পুতুল কিনে নেয়।

বাসার গেইটে পা রাখতেই তার হৃদয়টা আতংকে উঠে। মনের মাঝে হাজারও ভয় ভিরতে থাকে। কারণ বাসায় যে প্রতিবেশীরার ভির জমেছে। আস্তে আস্তে রুমে যায়। সে দেখে, দুইটা লাশ পাশাপাশি রাখা আছে। দৃশ্যটা দেখে, সে বুঝ শক্তি হারিয়ে ফেলে, বাক শক্তি হারিয়ে ফেলে। তার দু’চোখে অন্ধকার নেমে আসে। অবুঝ শিশুর মতো একবার ভাগ্নীর দিকে, একবার বোনের দিকে, একবার দুলাভায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে। চিৎকার করে কান্না করার চেষ্টা করে, কিন্তু সে পারে না।
.
তার দুলাভাইকে দেখে, এক দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। উনার কাঁধে হাত রাখতেই; তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে। কিছুক্ষণ পর অনুভব করে তার চোখ থেকেও পানি ঝরছে।
.
তার দুলাভাই কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে, ‘গতকাল সন্ধায় নাওরীনের জন্য আইসক্রীম কিনতে বের হয়েছিল। আমি অফিস থেকে এসে দেখি- তারা বাসায় নেই। ফোন করলে নাম্বারটা বন্ধ বলে। সারাটারাত বিভিন্ন যায়গায় খুঁজেছি। কিন্তু তাদেরকে কোথাও পাইনি। সকালে গেইটের সামনে তাদের লাশ দেখতে পাই। ওরা আমার পাঁচ বছরের মেয়েটাকেও রেহাই দেয়নি। তাদের সাথে একটা অডিও রেকর্ডও রেখে গেছে।’
.
তাওহীদ কি বলবে? কিছু বলতে পারছে না। কিছুক্ষণ পর তার দুলাভাই মৃত্যু বরণ করে। তিনি স্ত্রী ও সন্তানের মৃত্যুটা সহ্য করতে পারেননি। তিনি স্টোক করেন। দুলাভাই বলে ডাক দেয় কিন্তু কথা বলে না। উনার হাতটা ধরতেই তার হৃদয়টা ছেদ করে উঠে। চোখের কোণে নতুন করে নোনা পানি জমা শুরু করে। তার চোখের সামনে তিনটা লাশ! সে এখন কি করবে? তার কি করা উচিৎ ভেবে পাচ্ছে না। শূণ্য দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকে।
– ‘আপু! এই আপু! তাকিয়ে দেখো দুলাভাইও না আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। এখন আমি একা একা কিভাবে থাকব?’
– —————
– ‘নাওরীন! এই নাওরীন দেখো তোমার জন্য পুতুল এনেছি, তুমি খেলা করবে না? মামার সাথে কথা বলবে না?’
– —————
– ‘দুলাভাই, এই দুলাভাই। আপু, এই আপু। নাওরীন, এই নাওরীন।’
– —————
কিন্তু তাওহীদের সাথে কেউ কথা বলে না। প্রত্যেকেই চুপ করে থাকে। সে একবার দুলাভায়ের দিকে, একবার বোনের দিকে, একবার ভাগনীর দিকে তাকিয়ে থাকে।
.
রাতে রেকর্ডটা চালু করে
– ‘মা, আমাকে বাঁচাও! আমাকে মেরে ফেলছে।’
তার মা কাঁদতে কাঁদতে বলে,
– ‘ও ছোট মানুষ, আপনারা আমাকে রেখে তাকে ছেড়ে দিন।’
– ‘হা হা হা ছেড়ে দিব? ছেড়ে দেওয়ার জন্য তো তুলে আনেনি। বাসর করব বলে তুলে এনেছি।’
– ‘আপনাদের পায়ে পরছি; আমার অবুঝ বাচ্চাটাকে ছেড়ে দিন।’
– ‘হা হা হা সেটা তো হবে না। আজ আমরা আনন্দ করব, ফূর্তি করব। কেউ বাঁধা দিতে আসবে না, কেউ কিছু বলতে আসবে না।’
– ‘দেশে আইন আছে। একদিন তোদের বিচার হবে।’
– ‘দেশের আইনের কথা বলছিস? দেশের আইন, বিচার সব আমাদের পকেটে। আমাদের কোনো ভয় নেই। কারণ আমাদের কোনো বিচার নেই। আমরা স্বাধীন।’
কথাগুলো বলে আবার নোংরা হাসি দিতে থাকে।
– ‘বাবা! বাবা! আমাদের বাচাও! মামা! মামা! আমাদের বাঁচাও।’
– ‘ডাক, আরো জুরে ডাক, আজ কেউ আসবে না। কারো তোর কণ্ঠ পৌছাবে না।’
– ‘মামা মামা মামা’—-
তারপর রেকর্ডটা শোনতে আর সাহস পায়নি। ঐদিন সে অনেক কেঁদেছিল। তার এই কান্না কেউ দেখেনি। শুধু দেখেছিল রাতের জোনাকিরা। আর দেখেছিল রাতের চাঁদ, তাঁরারা।
.
তাওহীদ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে, রাত দুইটা বাজে। বিষন্ন মনে আকাশ পানে তাকিয়েই থাকে। তারপর কখন ঘুমিয়ে পড়ে বলতে পারে না।

দূরের মসজিদ থেকে আযানের মধুর ধ্বনি ভেসে আসে। পূর্ব আকাশে সোনালী আলো উঠে। পাখিরা কলরব শুরু করে। তাওহীদ ধীরে ধীরে চোখের পাতা খুলে দেখে সকাল হয়ে গেছে। এক দৃষ্টিতে সকালের সূর্যটার দিকে তাকিয়ে থাকে। তাওহীদকে খুঁজতে খুঁজতে তার ছোট ভায়েরা ছাদে আসে। ওরা দেখে যে, সে এক পলকে সূর্যের দিকে তাকিয়ে আছে।
.
– ‘তাওহীদ ভাই দেখো পত্রিকায় কি লিখেছে।’
– রহস্য জনক ছয় জনের মৃত্যুর পর।আবার এক জনের রহস্য জনক মৃত্যু।কিন্তু এই দুইটা মৃত্যুর এক দিক দিয়ে একটা মিল পাওয়া যায়। সেটা হলো- ঐ ছয় জনও ধর্ষণকারী ছিলেন। আজ যার মৃত্যু হয়েছে তিনিও ধর্ষণকারী ছিলেন। দুইটা মৃত্যু থেকে একটা জিনিস বোঝা যাচ্ছে। যারা ধর্ষণ করছে তাদেরকে এভাবে মৃত্যু দেওয়া হচ্ছে। এই রহস্য জনক মৃত্যুর পিছনে কেউ ছিল কি ছিল না? এখন পর্যন্ত কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
.
সবটা শোনার পর তাওহীদ মুচকি একটা হাসি দেয়।
– ‘তাওহীদ ভাই আজকের প্ল্যান কি?’
– ‘চল আমার সাথে এক জায়গা থেকে ঘুরে আসি।’
.
অনেক কিছুর পর পুলিশ ওদের ধরতে পেরেছিল। তাওহীদ মনে করেছিল তাদের ফাঁসি হবে। কিন্তু আইনের ফাঁক দিয়ে তারা বের হয়ে যায়। তখনেই তাওহীদ নিয়ত করে এই বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ গুলোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবে। এক এক করে নিজ হাতে সবাইকে শাস্তি দিবে। সমাজ ও দেশটাকে নতুন করে সাজিয়ে তুলবে।
.
আর কোনো বাবার, মায়ের, ভায়ের, বোনের, সন্তানের ও স্বামীর চোখের পানি পড়তে দিবে না। তাদের বুক খালি হতে দিবে না। এরপর একটা দল তৈরি করে। তারপর থেকেই শুরু হয় তার একশান আর ভাইজান নামের গুণগান। কেউ গুন্ডা বলে, কেউ ঘৃণা করে, আবার কেউ ভালোবাসে।

তাওহীদ এক মনে সিগারেটের ধোঁয়া উড়িয়ে যাচ্ছে। এক মনে চায়ের কাপের ধোঁয়া শেষ করে যাচ্ছে। সময় বয়ে যেতে থাকে, তার অপেক্ষার প্রহর কমে আসতে থাকে। হঠাৎ দেখে, ফারাহ আনমনে হেঁটে আসছে। ফারাহর ড্রেসআপ দেখে, তার মেজাজটা গরম হয়ে যায়। তার পাশ দিয়ে ও চলে যাওয়ার সময় সে বলে
.
– ‘ঐ মাইয়া শুনে যাহ।’
তাওহীদের এমন কথা শুনে ওর মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। কিছুক্ষণ রাগী চোখে তাকিয়ে কাছে এসে বলে
– ‘আপনার মুখের ভাষা এমন কেন? ঘরে কি কোনো মা-বোন নেই? তারা কি অন্য মা-বোনকে সম্মান দিতে শিখায়নি?’
তাওহীদ রক্তচোখে তাকিয়ে থেকে
– ঠাসসসসস(থাপ্পড় মারে)
হঠাৎ এরকম দৃশ্য দেখে সবাই স্তব্ধ হয়ে যায়। থাপ্পড় খেয়ে ফারাহর চোখে পানি চলে আসে। লজ্জা ও ভয়ে একদম চুপ হয়ে যায়।
.
– ‘তোকে কেন মারলাম তা জানতে চাইবি না? আমাকে প্রশ্ন করবি না? আমাকে প্রশ্ন কর। তোর তো খুব সাহস?’
– —————
– ‘কি হলো? প্রশ্ন করতে বলছি না। নাকি আরেকটা দিতে হবে?’
– ‘আমাকে কেন মারলেন?’
– ‘তোর ড্রেসআপটার জন্য।’ তাওহীদ সাথে আরও অনেক কথা শোনায়।
– ফারাহ কিছু বলতে পারছে না, লজ্জায় তার নাক-মুখ লাল হয়ে যাচ্ছে।
.
– ‘নাম কি?’
নরম সুরে বলে
– ‘ফারাহ রহমান।’
একটু চুপ থেকে বলে
– ‘এতদিন তো পর্দা করেই চলতেন, হঠাৎ আল্ট্রা মর্ডান কাপড় পরার কারণ কি?’
পাশ থেকে তাহসীন বলে
– ‘ভাইজান বোঝেন নাই পরুষকে’…….
– ঠাসসসসস(ও কথাটা শেষ করতে পারেনি)
– ‘তোকে কথা বলতে কে বলেছে? এই মাত্র না শোনলি মা-বোনকে সম্মান দিয়ে কথা বলতে হয়। কয়েক সেকেন্ডে ভুলে গেলি?’
.
– ‘এই মেয়ে! তোকে সম্মান দিতে বললি না? তোকে দেখার পর সম্মান না, তোকে ভোগ করতে ইচ্ছা হচ্ছে। তোর শরীরটা দেখার পর আমার মাথাটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন আমি কি করব? তুই বল’
– —————
– ‘কথা বল চুপ করে থাকিস না।’
– ‘মাথা নিচু করে কান্না করতে থাকে।’
– ‘একদম কান্না করবি না, চোখের পানি আমার ভালো লাগে না।’
– তারপরেও কাঁদতে থাকে।
– ‘ঐ কান্না থামাবি না জীবন হারাবি?’
– সাথে সাথে একদম চুপ হয়ে যায়।
– ‘শোন, আজকের পর যদি তোকে এই কাপড়ে আর কখনও দেখী তাহলে রেপ করব। তারপর পোস্টার বানিয়ে সারা দেশে ছাপাব। কথাটা মনে রাখিস।’
.
সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া উড়াতে উড়াতে ফারাহর চোখের সামনে থেকে চলে আসতে থাকে। ফারাহ ঐ জায়গায় নিস্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়েই থাকে। ফারাহর চোখে নোনা পানি ঝরতে থাকে।

বিষন্ন মনে প্রত্যেকে চুপচাপ রুমে বসে আছে। তাওহীদ রুমে প্রবেশ করতেই; তাহসীন তার পায়ে ধরে বলতে থাকে
– ‘তাওহীদ ভাই আমি আর জীবনে এমন ভুল করব না। আমাকে ক্ষমা করে দাও। আমি আমার ভুলটা বুঝতে পারছি।’
তাওহীদ কথা না বলে তাকে বুকে টেনে নেয়। কিছুক্ষণ চুপ থেকে প্রসঙ্গ পাল্টানোর জন্য তাওহীদ বলে
– ‘তোদের ভাবী না বেশী বেড়ে গেছে তার একটা ব্যবস্থা করতে হবে।’
ওরা প্রত্যেকে এক সাথে বলে উঠে
– ‘ভাই এইটা কিন্তু আমরা দেখব। আপনি শুধু দেখেন এই বাড়িতে ভাবী কিভাবে আসে।’
মুচকি হেসে তাওহীদ বলে
– ‘ঠিক আছে, এখন খেতে চল।’
.
ফারাহ কলিং বেল বাজাতেই তার মা দরজা খুলে দেখেন, ও মুখ কালো করে আছে।তা দেখে উনি বলেন
– ‘তোর কিছু হয়েছে মা?’
– ‘না মা তেমন কিছু না, গরমে শরীরটা একটু ক্লান্ত লাগছে।’
রুমে এসে ফারাহ ভাবছে, আজ পর্যন্ত তার বাবা-মা গায়ে হাত তুলেনি। কোনদিন অপমান করেনি। কিন্তু আজ! অচেনা এক ছেলে তাকে থাপ্পড় মারল? তাকে অপমান করল? আবার কতকিছু বলল? ফারাহ আর ভাবতে পারছে না। লজ্জা ও অপমানে এখন তার মরে যেতে ইচ্ছা করছে।

পড়ন্ত বিকেল, তাওহীদ এক মনে আকাশ পানে তাকিয়ে আছে। মনে মনে বলে, ফারাহ আমাকে ভুল বুঝল? আমার ইতিহাসটা জানলে সহ্য করতে পারবে?
তার ছোট ভায়েরা পাশে এসে দাঁড়ায়। তাদের মাঝে তাহরীন বলে
.
– ‘তাওহীদ ভাই আজ রাতের প্ল্যান কি?’
উদাসীন সুরে ও বলে
– ‘জানি না।’
তাওহীদের সুর শুনে চলে আসে। তাকে আর বিরক্ত করেনি। আবার নতুন কোনো তথ্যের সন্ধানে ওরা বের হয়ে পরে।
তাওহীদ মোবাইলটা হাতে নিয়ে নাওরীনের ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকে। কিছুক্ষণ পর অনুভব করে চোখের কোণে পানি জমেছে। চোখের পানিটা মুছে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শেষ বিকেলের সূর্যটার দিকে তাকিয়ে থাকে।
.
ফারাহ কখন ঘুমিয়ে যায় বুঝতে পারেনি। ঘুম থেকে ওঠে নিজেকে আয়নার সামনে দাড় করায়। মনে মনে বলে, ‘আমি কি খুব খারাপ মেয়ে? আমার মতো মেয়ের কি বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই? হ্যা আমি খারাপ মেয়ে, বাজে মেয়ে, আমার মতো মেয়ের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। তা না হলে নিজের ধর্ম-কর্ম ভুলে আধুনিকতায় পড়তাম না। নিজের বাবা-মার কথা অমান্য করে চলতাম না।’
এসব নানা ধরণের কথা বলছে আর আয়নায় নিজের চেহারা দেখছে।

মেঘলা রাতের আকাশে প্রত্যেকে চুপচাপ বসে আছে। হঠাৎ তাহরীন বলে
– ‘তাওহীদ ভাই ছয় জনের মৃত্যুর পর, ভয়ে অনেক ধর্ষণ কমে গিয়েছিল। কিন্তু আবার শুরু হয়ে গেল, এখন আমাদের বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষের মনে কঠিন ভয় ডুকাতে হবে। তা না হলে দুইদিন পর পর আবার এভাবে শুরু হবে।’
– ‘হ্যা তুই ঠিক বলেছিস। এই বিষয়টা নিয়ে আমিও ভেবেছি। আমাদের এভাবে কাজ করলে হবে না। আমাদের কাজটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি একটা রিপোর্ট তৈরি করেছি।’
.
– ‘কি রিপোর্ট তৈরি করেছেন?’
– ‘আজকের পর থেকে যে মা-বোনকে ধর্ষণ করবে। তাকেই ভাইজান ঐ পাড়ে পাঠিয়ে দিবে। যেই ঐ ব্যক্তির লাশটা দেখতে সেই ভয়ে সাথে সাথে জ্ঞান হারাবে। তাই আবারও সাবধান করছি। যারা এরকম মনোভাব নিয়ে আছেন, তারা ভালো হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। না হলে ভাইজানের হাত থেকে কোনো মানুষ বাঁচাতে পারবে না। ভাইজানকে তথ্য দিয়ে সহায়তা করুন। দেশটাকে নতুন ভাবে গড়ে তুলতে সাহায্য করুন।’
– ‘কিন্তু এই লেখাটা দিয়ে কোনো কাজ হবে? কারো মনে আতংক ডুকবে?’
– ‘যদি না হয় তাহলে একটা গণহত্যা হবে। তারপর মনে হয় না আর কেউ এই পথে পা বাড়াবে।’
– ‘এই কথাটা ঠিক বলেছেন।’
– ‘এক কাজ কর এই লেখাটা সোশ্যাল মিডিয়াতে ছড়িয়ে দে। তারপর দেখ পরিবেশটা কোন দিকে মোড় নেয়।’
– ‘ঠিক আছে ভাই তাই করতেছি।’

সকালে সোনা রবি উঠে। পাখিরা কিচির মিচির শুরু করে। আলোটা ফারাহর চোখে মুখে এসে পড়ে। সে ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখে সকাল হয়ে গেছে। ও বেলকনিতে এসে দাঁড়ায়। হঠাৎ গতকালকের ঘটনাটা মনে হতেই; তার মনটা মেঘে ডেকে যায়।
.
তাওহীদ এক মনে সূর্য ওঠা দেখছে। তাহরীন দৌড়ে এসে তাকে বলে
– ‘তাওহীদ পুরা দেশ তো কেঁপে গেছে।’
– ‘মানে? কি বলছিস বুঝলাম না।’
– ‘তুমি যা বলেছিলে তাই হয়েছে। ফেসবুক, পত্রিকা থেকে শুরু করে টিভি চ্যানেল পর্যন্ত খবরটা পৌছে গেছে। মানুষের মনে আতংক ডুকে গেছে।’
একটা মুচকি হাসি দিয়ে তাওহীদ বলে
– ‘এখন আমাদের কাজ হচ্ছে- কে কি বলছে, কোথায় কি হচ্ছে, সব খবরা-খবর রাখা। তারপর সময় বুঝে একশান নেওয়া।’

ফারাহ উদাস মনে আকাশ পানে তাকিয়ে আছে। একটা ছেলের কারণে তার জীবনটা এভাবে থমকে যাবে? সে বুঝতে পারেনি। সময়ে অসময়ে তাওহীদের কথাগুলো বার বার তার কানে ভেসে আসে। তখন সে কেমন যেন হয়ে যায়। এমনটা তার কেন হয়? সে বুঝতে পারে না। ঐদিনের ঘটনার পর থেকে রুম থেকে ঠিকমত বের হয় না, কারো সাথে মন খুলে কথা বলে না, ঠিকমত ক্লাসেও যায় না। সব সময় একা একা আর মনমরা হয়ে থাকে।
.
প্রতিদিনের মতো আজও তাহসীনরা ফারাহর ভার্সিটির পাশে দাঁড়িয়ে আছে। ফারাহকে আসতে দেখে, ওরা অনেক খুশি হয়। তাদের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে বলে,
– ‘আপু একটু দাঁড়াবেন! আপনাকে কয়েকটা কথা বলার ছিল।’
তাদেরকে দেখে রেগে যায়। রাগী সুরে বলে
– ‘হ্যা বলেন কি বলতে চান।
– ‘তাওহীদ ভাই আপনাকে এক বছর ধরে পছন্দ করে। আর আপনি তাওহীদ ভাইকে যে রকম মনে করেছেন আসলে ভাই ঐ রকম না।’
– ‘তাহলে আপনাদের তাওহীদ ভাই কি রকম? সাধু না মহাপুরুষ? তার গুণ গাওয়ার জন্য আমাকে দাড় করিয়েছেন?’
.
– ‘না, আজ সে কেন এমন হয়েছে, সেটা শোনাতে এসেছি। তা না হলে আপনি ভাইকে সারা জীবন ভুল বোঝেই যাবেন।’
ওরা সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলে। ফারাহর চোখের কোণে কখন যে পানি চলে আসে বুঝতেই পারেনি।
– ‘কখন ভাই মরে যায় বলা তো যায় না। যদি পারেন তাওহীদ ভাইকে ক্ষমা করে দিয়েন। এবং আমাদেরকেও ক্ষমা করে দিয়েন।’
হাতে তাওহীদের ঠিকানা ধরিয়ে দিয়ে তারা চলে আসতে থাকে। ফারাহ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়েই থাকে।

তাওহীদের জীবনের ইতিহাসটা শোনার পর থেকে দিন দিন ফারাহ কেমন যেন হয়ে যাচ্ছে। সময়ে অসময়ে মনের অজান্তে তাওহীদ তার ভাবনায় এসে যায়। তখন তার হৃদয়ের মাঝে কেমন যেন একটা হয়। সে ঠিক বুঝতে পারে না। মনে মনে বলে, ‘মানুষের জীবনে এরকম ঘটনা ঘটতে পারে? এভাবে কেউ কাউকে নীরব ভালোবাসা বাসতে পারে? আর আমি কিনা?’
নিজেকে স্মৃতির পাতায় ফিরিয়ে নেয়।এখন তার সব কিছু মনে পড়েছে। তাওহীদকে মাঝে মাঝে চায়ের দোকানের পাশে দেখতে পেত। সব সময় তাকে সিগারেটের ধোঁয়া উড়াতে আর চা খেতে দেখতো। কিন্তু তাকে যে আড় চোখে দেখতো, তাকে এভাবে ভালোবাসতো, সে বুঝতেই পারেনি? আনমনে ভাবছে আর হৃদয়টা হু হু করে কেঁদে উঠছে। নিজেকে বড় অপরাধী মনে করছে।
.
দিন যেতে থাকে তাওহীদ পাল্টাতে থাকে। প্রচুর ব্যস্ততার মাঝেও কেমন যেন আনমনা হয়ে যায়। প্রায় সময় ফারাহর কথা মনে আসে। তখন তার বুকের মাঝে কেমন যেন একটা কষ্ট অনুভব করে। ঐদিন এর পর থেকে রাগে-অভিমানে ফারাহকে আর দেখতে যায়নি। মনে মনে বলে, ‘তাকে দেখার পর থেকে নতুন করে বাঁচতে ইচ্ছা জেগেছিল। তার চোখের দিকে তাকালে সকল কষ্ট ভুলে যেতাম। তাই তাকে এক নজর দেখার জন্য বার বার ছুটে যেতাম। কিন্তু সে আমাকে ভুল বুঝল? ফারাহ আজ থেকে তোমাকে মুক্তি দিলাম। তুমি ভালো থেকো।’
.
বৃষ্টিভেজা দিনে ফারাহকে প্রথম দেখেছিল। প্রথম দেখাতেই মনের কুঠীরে জায়গা করে নিয়েছিল। তাকে দেখার পর তার সকল দুঃখ-কষ্ট কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিল। তাই বার বার আড়াল থেকে এক নজর দেখার জন্য ছুটে যেত। আবার নতুন করে বাঁচতে স্বপ্ন দেখত। নতুন পৃথিবীর ঠিকানা খুঁজে বেড়াতো।কিন্তু স্বপ্নবুনার আগেই তার স্বপ্নজ্বালটা ভেংগে গেল? নতুন পৃথিবীটা খোঁজার আগেই হারিয়ে গেল। তাওহীদ জানে না, আবার সব কিছু ঠিক হবে কিনা।
.
সন্ধার আকাশে তাকিয় দেখে, নাওরীনের ছবিটা ঝাপসা ঝাপসা দেখছে। হঠাৎ নাওরীনের আত্মচিৎকারটার কথা মনে পড়ে যায়।তার বুকের মাঝে আগুন জ্বলে উঠে।সাথে সাথে তাহসীনদেরকে বলে
– ‘চল আমার সাথে ওদেরকে আর বাঁচিয়ে রাখব না। তাদেরকে মেরে নতুন ইতিহাস তৈরি করব।’
তাওহীদরা একটা লিস্ট তৈরি করে। তারা সারা দেশ থেকে ৩০ জনকে খুন করার প্ল্যান করে। তাদেরকেই মৃত্যু দিতে তারা এগিয়ে চলছে।
সিগারেটের ধোঁয়া উড়াতে থাকে আর তাদেরকে দেখতে থাকে। ওরা প্রাণের ভয়ে বলতে থাকে,
– ‘আমাদেরকে মারবেন না, আমাদেরকে ছেড়ে দিন। আমরা আর কখনও অপরাধ মূলক কাজ করব না।’
– ‘বিভিন্ন ধরণের ক্রাইম ও ধর্ষণ করার সময় মনে ছিল না? মা-বোনদের আত্মচিৎকারেও তো তোদের হৃদয়টা নরম হয়নি। এখন কিভাবে নরম হলো?’
– ‘ভাইজান একটা সুযোগ দেন’
– ‘হা হা হা হা সুযোগ! সুযোগ! সুযোগ! ঠিক আছে।’
– ঠাস ঠাস ঠাস ঠাস ঠাস———–
– আত্নচিৎকার গুলো কয়েক সেগেন্ডে দূর আকাশে মিলিয়ে যায়।
– আজ ৩০ জনকে খুন করেছি।প্রয়োজনে ৩০০ বা ৩০০০ জনকে খুন করব তবুও কারো মুখের হাসি কেড়ে নিতে দিব না। ভাইজানকে শান্ত রাখবেন ভালো থাকবেন। ভাইজানকে রাগাবেন ঐ পাড়ে চলে যাবেন।

ফারাহ মোমবাতি জ্বালিয়ে মনমরা হয়ে এক দৃষ্টিতে মোমবাতির দিকে তাকিয়ে থাকে।তার মা এসে বলে,
– ‘ফারাহ তুই আমাকে সত্যি করে একটা কথা বলবি?’
– ‘কি জানতে চাও বল’
– ‘তোর হয়েছেটা কি? প্রতিবার প্রশ্ন করলে চুপ করে থাকিস।আজ তোকে বলতেই হবে।’
– ‘না মা আমার কিছু হয়নি।’
– ‘কিছু হয়নি মানে? কিছু একটা তো হয়েছেই।আজ তুই যদি না বলিস! তাহলে তুই আমার মরা মুখ দেখবি।’
– ‘মা’—
– ‘হ্যা, এটাই সত্যি।’
তারপর মাকে সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলে। তারপর হু হু কেঁদে উঠে। কান্না সুরে মাকে বলে,
– ‘বল মা এখন আমি কি করব?’
– ‘আগে যেমন পর্দা করে চলতি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তি। দিন-রাত কুরআন তিলাওয়াত করতি। এখন আবার শুরু কর তাহলে শান্তি খুঁজে পাবি।’
– ‘মা আমি অনেক ভুল করেছি। আমাকে ক্ষমা করে দাও।’
– ‘মায়ের কাছে সন্তানের কোনো অপরাধ থাকে না।’
– ‘কিন্ত মা! যার জন্য আমার জীবনটা পাল্টে গেল। আমিও তার জীবনটা পাল্টে দিতে চাই। আমাকে সে সুযোগটা দিবে?’
– ‘আমার মনে হয় না তার সাথে থাকলে তোর জীবনটা মন্দ হবে।’
সাথে সাথে মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলে।
.
ফারাহ রাতের আঁধারে আধুনিক জামা কাপড় গুলো ছাদে নিয়ে এক এক করে আগুনে পুড়িয়ে দিচ্ছে। কাপড় গুলো পুড়তে থাকে, এক দৃষ্টিতে আগুনের দিকে তাকিয়ে থাকে।
.
রাতেই ফেসবুক থেকে শুরু করে টিভি চ্যানেল পর্যন্ত খবরটা পৌছে যায়। এবার দেশ জুড়ে ৩০ জনের খুনের খবর পাওয়া গেছে। এরাও ধর্ষণের সাথে যারা জড়িত ছিল। এক সূত্র থেকে জানা যায় ভাইজান নামের এক ব্যক্তি তাদেরকে এভাবে শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু পরীক্ষার রিপোর্ট থেকে জানা যায়। তারা নিজেরা একজন আর একজনকে হত্যা করে তারপর মৃত্যুবরণ করেছে। কিন্তু কে এই ভাইজান রহস্যটা থেকেই গেল।
.
খবরটা শুনে ওরা হাসতে থাকে। চোখের কোণে অশ্রু জমা হতে থাকে। আর তাওহীদ রাতের আকাশে তাকিয়ে থাকে। সে দেখে, দুলাভাই, আপু ও নাওরীন হাসি মুখে তাকিয়ে আছে। সে এক পলকে তাকিয়েই থাকে, তারা ধীরে ধীরে অদৃশ্য হয়ে পরে।
.
দূরের মসজিদ থেকে আযানের মধুর ধ্বনি ভেসে আসে। ফারাহ ঘুম থেকে জেগে ওঠে। সে ওযু করে নামাজ পড়ে কুরআন তিলাওয়াত করে। তারপর বেলকনিতে দাঁড়িয়ে পাখিদের কলরব শোনতে থাকে। আজ মনের মাঝে এক অন্যরকম এক অনুভূতি অনুভব করে। কাগজের টুকরোটা নিয়ে তার নতুন ঠিকানার পথে এগিয়ে চলছে।

নতুন ভোরের আলোতে, আজ তাওহীদ নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করছে। আজ বুকের মাঝে কোনো কষ্ট অনুভব করছে না। এক অন্যরকম শান্তি অনুভব করছে। সে দেখে, ওদের চোখে-মুখে স্বস্তির হাসি ফোটে উঠেছে।
.
হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজে তাওহীদ যায় দরজা খুলতে। ফারাহেক দেখে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকে। মনে মনে অনেক খুশি হয়। কিন্তু চোখে ও মুখে রাগ-অভিমান ফুটিয়ে তুলে। ওরা ফারাহকে দেখে খুশিমুখে তাকিয়ে আছে।
.
তাওহীদ অভিমানী ভাব নিয়ে চুপ থাকে। ফারাহ কি বলবে বুঝতে পারছে না। কিছুক্ষণ নীরবতা পালন করে বলে
– ‘আমাকে ক্ষমা করে দেন। আমি না জেনে, না বুঝে, আপনাকে অনেক কথা বলেছি। আপনাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। আপনার সাথে বাকী জীবনটা কাটাব বলে চলে এসেছি।’
কথাটা শুনে ফারাহর দিকে তাকায়।
– চুপ থাকে।
– তাওহীদকে চুপ থাকতে দেখে, সে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে।
– তাওহীদ কিছু বলে না দেখে তার কান্নার গতি বাড়তে থাকে।
ফারাহর চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলে
– ‘ক্ষমা করতে পারি- মৃত্যু পূর্ব পর্যন্ত আমার সাথে থাকতে হবে। সুখের সাথী নয় দুঃখের সাথী হতে হবে। মুখে নয় চোখের ভাষায় ভালোবাসা বোঝাতে হবে।’
দু’জন অপলক দৃষ্টিতে চোখে চোখে তাকিয়ে থাকে, ভালোবাসার গভীরতায় হারাতে থাকে।

আজ তিন বছর পূর্ণ হলো
৩০ জন খুন হওয়ার পর থেকে সারা দেশে শুধু শান্তি আর শান্তি। কোথাও শ্লীলতাহানীর অভিযোগ নেই। কোথাও ধর্ষণের অভিযোগ নেই। প্রত্যেকে নির্ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারে। আবার ঘরে ফিরে আসরে পারে। পরিবার নিয়ে সবাই শান্তিতে ঘুমাতে পারে।
কিন্তু যার জন্য এসব হয়েছে, সে ভাইজানের সন্ধান তারা কোথাও পায়নি। ভাইজান তাদের কাছে অদৃশ্য থেকেই গেল।

গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত