বিবেক

বিবেক

অনেক কান্না করেছি, এখন অনেক ঘুম পাচ্ছে আমার, এ ঘুম যেন আর জাগার নয়। এই ঘুম যেন জীবনের শেষ ঘুম। এখন কেন যানি মরতেও ভয় হচ্ছে, যানি না পরকালে আল্লাহ আমার জন্য কোন শাস্তি অপেক্ষা করে রাখছে। তার তো কোন গোলামিই করি নাই।তারপরেও চোখকে আটকে রাখতে পারলাম, জানি না পরের দিন এই চোখ দুটো খুলবে কি না।।।।

মৃত্যু কি এত সহজ, যে যখন চাইব তখনই হবে।
পরের দিন ঘুম থেকে উঠলাম, নিজেকে আবিষ্কার করলাম এক বন্ধ ঘরে।। ঘরে একটা বিছানা, আমি একা শুয়ে আছি, পাশে আমার হাতে স্যালাইন লাগানো।। শরিরে দুর্বলতা নেই,,হয়ত স্যালাইন দেয়ার কারনে শরিরে শক্তি এসেছে। অনেক্ষন ভাবার পর বুঝতে পারলাম এটা একটা হাস্পাতাল। দেখে তো মনে হচ্ছে খুব দামি আর বড় হাস্পাতাল।।।
এরকম, হাস্পাতাল আগে কখনো দেখিনি।।।। অনেক্ষন ডাকা ডাকি করলাম
hello কেউ কি আছেন, hello….কেউ শুনছেন।।

কেউ শুনল না।। পাশে মোবাইলটা খুজলাম, না মোবাইল টাও নেই।।

এখন খুব খারাপ লাগতেছে, আমাকে হয়ত কেউ এখানে ভর্তি করে দিয়ে চলে গেছে, আমি এখন ছাড়া পাব কিভাবে।আমার কাছে টাকাও নেই, মোবাইলটাও নেই।।।

এসব ভাবতে ভাবতে আবার কখন ঘুমিয়ে গেছি মনে নেই।। ঘুম ভাংতেই বাবার বয়সি একটা লোককে দেখতে পেলাম। আমার সেবা যত্ন করছে।দেখে তো ডাক্তার মনে হচ্ছে না।। আমাকে জাগ্রত হওয়া দেখতেই বললেন,
–এখন কেমন আছ বাবা।
— ভালো আছি আংকেল।।। আমি এখানে কেন আংকেল ?
— আমি আজ সকালে অফিস যাওয়ার সময় দেখলাম অনেক মানুষ মাঠের মধ্যে ভিড় করেছে। আমি যখন বিষয়টা দেখতে গেলাম। তোমাকে একটা মাঠের মধ্যে আধা মরা অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখেছি। তাই সাথে সাথে তোমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি।
— ওও,,,,,তার মানে আমি এখনো মরি নাই।।।
–কেন বাবা এরকম কথা কেন বলছ।।।
— এমনি আংকেল।। আচ্ছা আংকেল, আমার তো টাকা পয়সা কিছু নেই, আমি তো এতিম। আপনার এ ঋন আমি কিভাবে পরিশোধ করব।
— ঋন পরিশোধ করতে হবে না বাবা। তুমি সুস্থ হও আমি এটাই কামনা করি।।।
— তা কিভাবে হয়।।
— আর কোন কথা নয়,এখন চুপ করে বিশ্রাম নেও।।

মনটা ভরে গেল।।।যাক একটা ভালো মানুষের দেখা তো পেলাম।।।

2 দিন হাসপাতালে থাকার পর আমি সুস্থ হয়ে গেছি। এই কয়েক দিন আংকেল টা অনেক যত্ন নিয়েছে। দিনে দুই বার আসত আমাকে দেখতে। পোশাক আশাক দেখে তো মনে হয় খুবই বড়লোক।ভাবতেও অবাক লাগতেছে এত বড় লোক হয়েও আমার মত তুচ্ছ মানুষ টার খোঁজ নিচ্ছে।

আমাকে তাদের বাড়ি নিয়ে গেল। কিন্তু আমি না করলাম তারপরেও আমাকে জোড় নিয়ে গেল।অনেক বড় বাড়ি। এসব বাড়িতে কাজের লোক হওয়াও যেন ভাগ্যের বেপার আমার জন্য।
বাড়ির ভিতর ঢুকালাম। আন্টিকে দেখে সালাম দিলাম।

আন্টিও অনেক ভাল।আংকেল আন্টি দুইজনে নামাজ পরে, আন্টি হিজাব পরে সারাদিন। আংকেলের দাড়ি আছে।।

তাই সেদিন থেকে আমিও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পরা শুরু করে দিলাম। জীবনে অনেক কিছু অবহেলা করছি। সেই অবহেলার প্রহর শেষ করতে চাই। হয়ত আল্লাহ তার গোলামি করার জন্ন্য আরেকটা সুজুক দিলেন। আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে, তা আবার প্রমানিত হল।

তাদের একটা ছোট মেয়ে আছে,মেয়েটার নাম পিংকি। ক্লাস 5 এ পরে। আমাকে ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকে।।।
যখন সে ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকে তখন বুকটা মোচর দিয়ে ওঠে।। খুব কষ্ট হয় তখন।। মনে পরে যায় পুরনো সৃতি, আমিও আমার ভাই গুলোকে ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকতাম।। কিন্তু আজ তাদের সামনে আমাকে অবিশ্বাসী হয়ে বেচে থাকতে হচ্ছে। আহারে কি কষ্ট আমার।।।।,

আল্লাহ আমাকে এত কষ্ট না দিলেও পারতেন।

আজ কয়েক দিন ধরে আংকেলের বাসায় আছি।।। অনেক ভালোবাসা আর আদর দিয়ে আংকেল আন্টি আমায় আগলে রেখেছেন এখানে। ছোট বোনটাও অনেক ভালো, ভালোবাসে আমাকে সারাদিন আমার সাথে খেলে। রাত হলে আমাকে আবার তাকে পড়াতে বসাতে হয়।

কিন্তু ভয়, সব সময় কোথা থেকে যেন এক অজানা ভয় এসে আবার আমাকে গ্রাস করে। বার বার মনে হচ্ছে যেন এই সম্পর্ক টাও যেন কোন এক মিথ্যা অপবাদে ভেংগে যাবে। আবার হারিয়ে যাব অচেনা শহরে। যেখানে কেউ কারো দিকে তাকানোর সময় রাখে না।

আজ ঘুমের মাঝে খুব খারাপ এক স্বপ্ন দেখলাম। এই স্বপ্ন যেন বার বার ইংজ্ঞিত করছে এই সম্পর্ক টাও ভেংগে যাবে।,

তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এই সুন্দর সম্পর্ক টা ভাংগার আগে আমি এখান থেকে চলে যাব।
তাই পরের দিন সকাল হতে আংকেলের কাছে গেলাম।

–আংকেল আমি আর এখানে থাকব না। আমি চলে যাব।আমি জানি আমি আপনার ঋন কখনও পরিশোধ করতে পারব না। আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। (আমি)
— কেন বাবা, তোমার এখানে থাকতে খারাপ লাগতেছে। তাছাড়া তুমি কোথায় যাবে, এই অচেনা শহরে। তুমি তো বলেছিল তোমার কেউ নেই। তোমার কেউ কি আছে যার কাছে তুমি যাবে।।।।
— না আংকেল আমি আপনাকে মিথ্যা বলেছিলাম।আমি এতিম না। আমার সব কিছুই ছিলো, এখনও আছে। কিন্তু আজ তা আমার নিজের নেই। আমি খুব খারাপ আংকেল, আমি খুব খারাপ। আমি চাইনা আপনার সাথে থাকা এত সুন্দর সম্পর্ক টাও কোন এক অজানা কারনে শেষ হয়ে যাক। আমাকে চলে যেতে দিন আংকেল। মাঝে মাঝে আসব দেখা করতে।
— এসব কি বলছ বাবা, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমাকে কি একটু পরিষ্কার করে বলবে। তুমি সেদিনও এরকম একটা কথা বলে ছিলে কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি।
— না আংকেল। এসব শুনলে আপনি অনেক কষ্ট পাবেন। তার চেয়ে না শুনাই ভালো।
— না, আজ যখন শুনতে চেয়েছি, আজ শুনাতেই হবে।।

বাধ্য হয়ে সব ঘটনা বলতে হল। ওখানে কি হয়েছিল, এখানে কিভাবে দিন কাটিয়েছি।।

বলতে বলতে যেন চোখ দুটো কোন এক সমুদ্রে ডুবে গিয়েছিল। চোখ উপরে উঠিয়ে দেখলাম আংকেলও কাদতেছেন।

— আংকেল, আমি অনেক খারাপ আংকেল আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। আমি আসি আংকেল। আংকেল আপনি ভালো থাকিয়েন।।।
— এই কই যাও দারাও। কে বলেছে এখন তোর কেউ নেই,,, আজ থেকে আমরাই তোর বাবা মা। তুই আজ থেকে এখানে থাকবি। আজ থেকে এটাই তোর বাড়ি। নিজের মত করে থাকবি।। ( এই বলে কাঁদতে কাঁদতে আমাকে জড়িয়ে ধরল)

বাধ্য হয়ে আবার আমাকে চোখের পানি ফেলতে হল। এত আদর আর ভালবাসার দাম আমি কি দিতে পারব।।।
ভয়টা যেন আরও বেড়ে চলছে।।

আংকেল এখানে একটা কলেজে আমাকে ভর্তি করিয়ে দিলেন। প্রতিদিন আমার খোজ খবর নেন। অনেকটা নিজের ছেলের মত করে দেখেন।।

আমার ফোনটা পাই নাই, আংকেল আমাকে নতুন একটা ফোন কিনে দিছে।। আংকেল কে বলেছিলাম আমাকে হাস্পাতাল নিয়ে যাওয়ার সময় ফোনটা দেখেছিল নাকি। আংকেল বলছে সেখানে নাকি কোন ফোন দেখেনি।।।
হয়ত ফোনটা চুরি হয়েগিয়েছিল সেদিন।।

আমার পুরনো বন্ধুর নাম্বার টা মনে করতে পারতেছি না। ৮ টা নাম্বার শুধু মনে আছে।। অনেক চেস্টা করেও মনে করতে পারছি না। অনেক দিন থেকে চর্চা করা হয় নাই তো।

তার সাথে কথা বলতে না পেরে মনটা ছট ফট করতেছিল। খূব জানতে ইচ্ছা করছিল বাড়ির খবর জানতে।। আজ 2 মাস ধরে বাড়ির কোন খোজ খবর পাচ্ছি না। হয়ত সেও আমার সাথে যোগাযোগ করার চেস্টা করে।

তাই বাধ্য হয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম,একদিন রাতের বেলা যাবো আমার সেই পুরনো দুনিয়া। যেখানে লেগে আছে আমার সব সৃতি আর কলংকের দাগ।

আন্টি কে আর আগের মত আন্টি আন্টি বলি না, আম্মু আম্মু বলি।।। কি করব, খুব যে মা ডাকটা ডাকতে ইচ্ছা করে। ইচ্ছা করে আবার কাউকে ভাইয়া ভাইয়া বলে ডাকতে।। ইচ্ছা করে পুরনো দিন গুলো ফিরে পেতে।।। এসব কথা যখন মনে পরে তখন দুই রাকাত নামাজ পরে আল্লাহর কাছে চিৎকার করে বলি, আমি আজ ভালো হয়েছি বলে তুমি আমাকে খারাপ বানালে। আমি আজ সত্য বলি বলে আমাকে বাড়ি ছাড়া করালে। এত দিন তোমার গোলামী করিনাই বলে, হয়ত তুমি শাস্তি দিছ। আমি মাথা পেতে নিছি।।। আজ আমাকে আর ফিরিয়ে দিয়ো না।। আজ কিছু একটা ভালো দেও। ফিরিয়ে দেও আমার পুরনো দিন গুলি।ফিরিয়ে দেও আমার বাবা মা কে, ফিরিয়ে দেও আমার পুরনো রক্তের সম্পর্ক গুলাকে। ফিরিয়ে দেও, ফিরিয়ে দেও, ফিরিয়ে দেও।।।

কাঁদতে কাঁদতে মাঝে মাঝে অজ্ঞান হয়ে যেতাম সাময়িক সময়ের জন্য।।।

তবুও আল্লাহর কাছে চেয়েই যেতাম, যদি কোন একদিন আমার কথা শোনে। যদি কোন একদিন ফিরিয়ে দেয়।।

এখন আর হাজারো বিপদে মিথ্যা বলি না।। নামাজ ছাড়ি না।। ,

আজ আন্টিকে বললাম, আমি আমার এক পুরোনো বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাব, বললাম 2 দিন লাগবে।আন্টিকে আমি আর বললাম না যে আমি আমার এলাকার বন্ধুর কাছে যাচ্ছি। আন্টি যাওয়ার অনুমতি দিলেন। কিছু টাকাও দিলেন।।আমাকে সাবধানে যেতে বলেছে আর বার বার ফোন করে বলতে বলেছে আমি কোথায় আছি। এ কয়েক দিনে যেন আন্টিটাও আমার মায়ায় পরে গেছে।।।

দুপুর 12 টায় বাসে চরলাম 7 ঘন্টার রাস্তা। যেন ওখনে গিয়ে সন্ধ্যায় নামতে পারি। একটা চাদর নিয়েছিলাম চোখ মুখ ঢাকার জন্ন্য।

ঠিক সন্ধ্যায় গিয়ে সেই এলাকায় নামলাম। একটা দোকানে গিয়ে কিছু, চা নাস্তা করলাম।। এই এলাকায় পা দেয়ার পর থেকে যেন বুকটা ধুক ধুক করা শুরু করেছে। মাথায় চাদর টা মুরে এলাকার চারদিক ঘুরতে লাগলাম, আর অপেক্ষা করতে লাগলাম আরেকটু রাত হওয়ার জন্য। রাত 8 টা বাজতে, আমি চলে গেলাম সেই চিরচেনা ব্রিজে। যেখানে বসে আমরা আড্ডা দিতাম। সেখানে গিয়ে বসে আছি 1 ঘন্টা ধরে। না কেউ আসল না, আমার এত গুলো বন্ধুর একটাও আসল না। মনে হয়ে এখন আর আড্ডা হয় না। তাই আর বসে না থেকে উঠে গিয়ে পিছনে তাকালাম দেখলাম একজন মুর্তির মত দাঁড়িয়ে আছে। সেটা আর কেউ নয়। সেটা হল আমার সেই বন্ধু। আমাকে দেখা মাত্র আমাকে জড়িয়ে ধরে দুই চোখের পানি ছেরে দিল। সাথে সাথে আমিও আর থাকতে পারলাম না।

আমি চাদর পরে থাকা সত্ত্বেও চিনতে কষ্ট হয়নি তার।

এটাই হল প্রকৃত বন্ধু।

— এতদিন কোথায় ছিলিরে, তুই নাকি মরে গেছিস, আমার বিশ্বাস হয়নি। তোকে ফোন দিয়েও পাই নি। তবুও হাল ছাড়িনি। প্রতিদিন এখানে এসে বসে থাকতাম।।। আমি জানি তুই একদিন ফিরে আসবি।।। ( কাদতে কাদতে)
— কি আর করব বল।। আমার সব কিছু তো শেষ হয়ে গেছে, এখন আল্লাহ যেভাবে রেখেছিল সেভাবেই ছিলাম। তুই কেমন আছিস।।
— আমি ভালো আছি।।। তোর ফোন কি হইছে রে।।
— আমার ফোন চুরি হইছে ।আমাদের বাড়ির অবস্থা কেমন রে, বাবা মার কি অবস্থা রে।আমার ছোট বোনটা কেমন আছে রে,, চাচা চাচিরা আমার ভাই গুলা কেমন আছেরে।।।।
— তাদের খবর শুনে কি হবে রে।। তুই কি আর ওদের আছিস।
— বলনা কেমন আছে রে। আমি তাদের না থাকলেও তারা তো এখনো আমার আছেরে।তারা আমাকে ফেলে দিলেও আমি তো তাদের ফেলে দিতে পারব না। বলনা কেমন আছে রে।
— আছে সবাই ভালো আছে।
–তারা কি যানে আমি মারা গেছি?
— না জানে না।
— তাহলে তুই কিভাবে জানলি আমি মারা গেছি।
— সেদিন পর থেকে যখন তোর ফোন বন্ধ পেলাম, তখন আমি তোর ভাবির কাছে গেলাম, তোর ভাবিকে অনেক জোড় করার পর ভাবি আমাকে বলল,,
তুই নাকি খুব অসুস্থ, আর কিছুক্ষনের মধ্যে মারা যাবি।। ভাবি শুধু আমাকে কথাটা বলেছিল। আর কাউকে বলেনি।।। আমাকেও বলতে নিষেধ করেছিল। তাই আমি আর কাউকে বলিনি। আমি সেদিন খুব কেদেছিলাম তোর অসুস্থতার কথা শুনে।
— ভাবি এখন কেমন আছে রে।।
— সবাই ভালো আছে রে।।
— আর, রাইশা। রাইশার বিয়ে হয়ে গেছে তাই না।
— নারে আর বিয়ে হয় নি।।। বিয়ের দিন নাকি ওর বড় পালিয়ে গেছে।।। তাই বিয়ে টা আটকে গেছে।
— ওওও,,, আচ্ছা তোর নাম্বারটা দে।
— এই নে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
— আচ্ছা আজ চলি রে, ভালো থাকিস। আমাকে ফোন দিস।
— কই যাবি এখন।।।
— যেখান থেকে এসেছি।।
–ওওও,,, সেখানে থাকতে কষ্ট হয় না।।।
— নারে। আল্লাহর রহমতে একটা ভালো মানুষের বাড়িতে আছি। অনেক আদর করে আমাকে।।
— ভালো থাকিস,
— দোয়া করিস এই অভাগাটার জন্য।।
— নিজেকে অভাগা ভাবিস না। একদিন অবশ্যই তোর ভালো হবে দেখিস।।

তার কাছে বিদায় নিয়ে এশার নামাজ পরলাম। এশার নামাজ পরে নিলাম একটা ফাকা মাঠে। মসজিদ গুলোতে তালা দেয়া।

নামাজ শেষ। এখন বাসে চরে ফিরে যাবার পালা।

কেন জানি না, আমার খুব ইচ্ছা করছিল আমাদের বাড়িটা দেখতে ।
তাই গেলাম দেখতে। খুব ইচ্ছা করছিল উকি দিয়ে বাড়ির ভিতর টা দেখতে। যদিও উকি দেয়া ঠিক না। চার দিক অন্ধকার, নিজেকে সামলে রাখতে পারলাম না,

অবশেষে উকি দিলাম। উকি দিতে গিয়ে দরজার কপাট টা একটু জোরেই শব্দ করে উঠল।,,

— বাড়ির ভিতর থেকে বলে উঠল কে, ওখানে কে।
— আমি তারা তারি মাথায় চাদর পেচিয়ে , সেখান থেকে পালাতে লাগলাম।
–আমার ভাই আমাকে চোর মনে করে, আমার পিছনে দৌড়াতে লাগল আর চিৎকার করে বলতে লাগল চোর চোর।। এর ফলে আমার সব ভাই বের হয়ে আসল।

তাই আমি ভয় পেয়ে আরও জোরে দৌড়াতে লাগলাম। দৌড়াতে দৌড়াতে একটা ইটে হোচট খেয়ে পরে গেলাম।
আর সবাই এসে আমাকে না দেখেই, উধাল পাতাল মাইর শুরু করে দিল।

আমাকে আধা মরা করে দিয়ে। আমার চাদরটা টানতে লাগল আমাকে দেখার জন্য। আমিও চাদর টেনে ধরলাম মুখ দেখাতে দিব না তাই।
তারা আবার আমাকে মারতে শুরু করল।

কেউ একজন বলছে এই দড়ি নিয়ে আয়। এটা কে পুলিশে দিতে হবে।

এবার আমার সত্যই চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করছিল হে আল্লাহ বার বার আমিই কেন বিপদে পরি আমার সাথে কেন এমন হয়।

আমি কি পাপ করেছিলাম যে এমন টা শুধু আমার সাথেই হয়।।।তুমি কি আমাকে দেখো না।

অবশেষে তারা তাদের জোর দিয়ে আমার চাদর টা টেনে নিল।
আমি আমার হাত দিয়ে মুখ লুকানোর চেস্টা করলাম। কিন্তু তাদের জেদের কাছে হেরে গেলাম।

গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত