অনেকদিন আগের কথা, গ্রামের নাম হাকিমপুর । গ্রামের সবাই প্রায় মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য । এছাড়া কিছু সম্ভ্রান্ত ধনী পরিবার এবং কিছু গরীব পরিবার ও এই গ্রামে বসবাস করে । গ্রামের সবাই একে অপরের দুঃখে নিঃস্বার্থভভাবে এগিয়ে আসে । এইজন্য গ্রামের সবার ভিতর অনেক ভাল সম্পর্ক । সবাই একসাথে মিলে মিশে বসবাস করে ।
গ্রামের সবার প্রিয় একজন ব্যক্তি “আবু সাঈদ সাহেব” । তিনি একজন ধনী ব্যাক্তি , সবার বিপদে তিনি সবার আগে সাহায্যে হাজির হন ।
মূল ঘটনায় আসি….. … ……
একদিন জনাব আবু সাঈদ এর বাসাই ডাকাতি পড়ে । ডাকাত সর্দার ও তার ডাকাত সাথীগন আবু সাঈদ ও তার পরিবারের সবাইকে বেধে রেখে জিনিসপত্র লুট করতে শুরু করে । তাদের বেধে রেখে সবাই যখন লুট করতে ব্যাস্ত, এই সুযোগে জনাব সাঈদ কনোরকম এ হাত খুলেই ফোন এর মাধ্যমে এলাকাবাসীর একজনকে খবর দেন। এলাকাবাসী গ্রামের সবাইকে নিয়ে সাঈদের বাসায় হাজির হন । এবং ডাকাত দলের সদস্যদের আটক করতে গেলে ডাকাত রা পালিয়ে যায় । একমাত্র ডাকাত সর্দার ই পালাতে ব্যার্থ হন। সবাই একপর্যায়ে তাকে প্রচুর মারধর করে । ডাকাত সর্দার ক্ষমা চাইলেও কেও তা কানেই নেই না । প্রচুর মারের কারনে একপর্যায়ে ডাকাত সর্দারটি মারা যায় ।
ডাকাত এর সম্পর্কে কারো কোনো ধারনা না থাকাই সাঈদ সাহেবের বাড়ির পিছনের একটু দুরে যে কবরস্থান আছে ওখানে ডাকাতকে কবর দেওয়া হয় ।
তারপর সবার দিন ভালোই কাটছিল ।
হঠাৎ করে এলাকার ভিতর দুঃখকর সংবাদ এসে হাজির হইল। এলাকার যারা যারা সেই কবরস্থানের পাশ দিয়ে যাতায়াত করত সন্ধার পর, তাদের উপর নানা রকম দুর্ঘটনা ঘটতে থাকলো । যে ব্যাক্তি ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করত সন্ধার পর, তাদের সবাই কবরস্থান এর কাছে এসে অজ্ঞান হয়ে যেত। যখন জ্ঞান ফিরত, তখন দেখত তার (এলাকাবাসী) গায়ে অসংখ্য মারার দাগ । যেন কেও তাকে নৃসংস্য ভাবে মেরেছে ।
এরপর থেকে কেও আর সেই রাস্তা দিয়ে সন্ধার পর চলাচল করত না ।
তারপর থেকে আবু সাঈদ এর পরিবারের লোকজনেরা তাদের আশপাশে একটা বিশাল কালো ছায়া দেখতে পেত।
আবু সাঈদ সাহেব এলাকার হুজুরকে খবর দিলে হুজুরটি এসে বলেন এইটি সেই ডাকাতের ছায়া । এবং তিনি সবাইকে একটা করে তাবিজ দেন আর এই তাবিজ সবসময় নিজের কাছে রাখতে বলেন , তিনি আরও বলেন তাবিজ কাছে না থাকলে তাদের প্রাণনাশের সম্ভাবনা আছে ।
এরপর কেও আর ছায়াটি দেখে নি । আবু সাঈদের একমাত্র ছেলে একদিন তাবিজটি খুলে রেখে ঘুমিয়ে পড়ে । পরের দিন থেকে তার ছেলের প্রচন্ড জ্বির হয় এবং সে মারা যায় ।
পরে হুজুর এসে বলেন, আমি বার বার বলেছিলাম যে কোনো সমস্যা হলেও যেন তাবিজটি কেও না খোলেন । কিন্তু আপনারা আমার কথা শোনেন নি । শুনলে অকালে এই ছেলেটাকে মরতে হয় না । তারপর তিনি সবাইকে এই বাড়ি ছেড়ে দিয়ে অনেক দুরে চলে যেতে বলেন । আবু সাঈদ তাই ই করে । হুজুর সাহেব তাদের নতুন বাড়িটিতে দোয়া পড়ে দিয়ে আসেন। তারপর থেকে আর কোনো সমস্যা হয় নি ।
কিছুদিন পর থেকে আবু সাঈদ দুঃসপ্ন দেখতে শুরু করেন । তিনি দেখেন ডাকাত সর্দার তাকে তার পুরানো বাড়িতে ফিরে আসতে বলছেন ।
কিন্তু আবু সাঈদ এই সপ্নের কথা আর কাওকে বলেন নি , তিনি নিজেই চেপে রেখেছেন ।
এখন পর্যন্ত তার পরিবারের আর কোনো ক্ষতি হয় নি তবে তিনি সপ্নটি প্রতিদিন রাতেই দেখতে পান।।
ডাকাত সর্দার সপ্নে তাকে বলে “কত দিন পালিয়ে বাচবি আমার হাত” থেকে ফিরে আয় দেখি আগের বাড়ি টাতে”
গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক