নীলয়ঃআমায় ছেড়ে কোথায় যাবি বল?
মোনিয়াঃ কেন?তোর বুকের মধ্যে ঠাই দিবি না?
নীলয়ঃকে বলেছে দেবো না!!!একশো বার দেবো।
মোনিয়াঃতাহলে তোর বুকের মধ্যে আমাকে ঢূকিয়ে দে?
নীলয়ঃতাহলে দাড়াও আমি একটা ছুড়ি নিয়ে আসি?বুক টা ছিড়ে তো ঢুকাতে হবে নাকি?
মোনিয়াঃজানু তুমি যদি বুকটা ছিড়ে ফেলো তাহলে তো তুমি মরে যাবে।কার বুকের মধ্যে মাথা রাখবো আমি। জানু তোমায় ছাড়া বাঁচা আমার অসম্ভব।
নীলয়ঃতাহলে দাঁড়িয়ে আছো কেন?জড়িয়ে ধরো আমাকে।
মোনিয়াঃযা দুষ্টূ!এখানে মানুশ পরে একদিন।
মোনিয়া বাসায় চলে যাবে,অনেক্ষণ ধরে দুজন কলেজের পিছনে দাঁড়িয়ে অনেক গল্প করেছি।এবার মোনিয়াকে বাসায় যেতে হবে,মোনিয়া বাসায় চলে যায়।আমি একা একা হেঠে যাচ্ছি বাসায়।মাঝে-মধ্যে মোনিয়া আমার মনের মধ্যে ঢুকে কি যেন একটা গন্ডগুল পাকিয়ে দেয়।তখন আমার মনের মধ্যে জ্বালা শুরু হয়।একটু সময় জ্বালা করে আমার অন্তরটা পুড়িয়ে আবারও চলে যায় সে।সত্যি কথা হচ্ছে মোনিয়া আমার চোখের আড়াল হলে আমি কখনই মেনে নিতে পারি না।তবুও বাধ্য হয়ে মেনে নিতে হয়।এখনও তো বিয়ে করিনি তাই।
নীলয়ের বন্ধুরা নীলয় আর মোনিয়ার সম্পর্ক নিয়ে অনেক গুণগান করে।কারণ নীলয় আর মোনিয়ার মতো একটা সম্পর্ক এই কলেজে আর কেউ করতে পারেনি।তাইতো বন্ধুরা সবাই আমাদের সম্পর্কটাকে অনেক শ্রদ্ধা করে।
আমি বাসায় চলে এসেছি।কেন জানি আজ আম্মুর অনেক খুশি খুশি ভাব।কিছু বুঝতে পারার আগেই আমি ওয়াশ রুমে গিয়ে একটু ফ্রেশ হয়ে আসলাম।টেবিলের উপরে ভাত রাখা আছে,আমি ভাত খেয়ে একটু বিছানায় বিশ্রাম করতে গেলাম্। হঠাত মোনিয়া ফোন দেয়্।অনেক্ষণ কথা হয় দুজনার,তবে হ্যা,জগড়াটা যেন লেগেই থাকতো্।খুব বেশি জগড়া হতো আমার মোনিয়ার সাথে্।যেকোন একটা খুনসুটি ধরে জগড়াটা মোনিয়া শুরু করতো।কিন্তু শেষ-মেষ দুশটা আমার ঘাড়েই চাপাতো্। অবশ্য আমিও মাথা পেতে মেনে নিতাম্। ছোট বেলায় একটা বইয়ে পড়েছিলাম,জয়ি হতে হলে মাথা নিচু করতে হয়্।এইজন্য আমি মাথা পেতে দুশটা নিজের ঘাড়েই বহন করতাম্। মোনিয়ার সাথে ঘন্ঠা খানেক কথা বলার পর আমি ফনটা রেখে দেই্।
বিকেল শেসে রাত ঘনিয়ে আসে।প্রতিটা রাতই যেন আমার একেকটা দুজখের সমান্।খুব বেশি চিন্তা হয় রাতে, কিভাবে মোনিয়াকে বিয়ে করব, কিভাবে পরিবারের সবাইকে রাজি করাবো।এই কয়েকটা কথাই যেন মাথার মধ্যে ভূমিকম্পের মত নাড়া দিতে থাকে।মোনিয়াকে নিয়ে আমি গর্ব করতাম,আর যখন মনে হয় যে আমি পরিবারের সবার ছোট তখন যেন সব মাটি হয়ে যায়।আসলে দেহের ভেতর মন আর মনের জুরে চলছে দেহ,এই মনটাই যেন প্রতিটা মানুশের একেকটা বিশ্ব,আর আমার বিশ্বটা যেন গভীর অন্ধকার।
মোনিয়ার সাথে আমার সম্পর্ক জেনে বড় ভাইয়া একদিন আমাকে অনেক মার-ধর করে আমার হাত থেকে আমার ফোনটা কেড়ে নেয়।এমনকি আমার সিমটাও ভেজ্ঞে ফেলে্।তারপর বলেছে আমার ফোন ব্যবহার করতে হবে না।
এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি আমি্। আমি বুজেছিলাম তখন,ভালোবাসা কাকে বলে।বুজেছিলাম তখন মোনিয়ার সাথে কথা না বলে আমার কেমন অনুভূতি হয়েছিল।একটা পাগলকে যখন লোহার শিকল দিয়ে বেধে রাখা হয় তখন তার ছটফটি দাড়িয়ে অনেক মানুশেই দেখে্ কিন্তু আমার মনের ছটফটি দেখার মতো কেউ ছিলো না।মূল কথা হচ্ছে,দেখার মতো সুযোগই ছিলো না।
ভালোবাসার শক্তি আমি সেদিনই বুজেছিলাম্।বাসার মধ্যে একটা সিংহ থাকা অবস্থায় আমি আম্মুর ফোনটা প্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে ভাথরুমে গিয়ে মোনিয়ার সাথে কথা বলি।সব কিছুই আমি মোনিয়াকে বলি।অনেক কান্না করছিলো মোনিয়া্। অনেক্ষণ কথা বলার পর আমি স্বাভাবিক ভাবেই ভাথরুম থেকে বেরিয়ে আসি।পরের দিন সবার আড়ালে একটা ফোন আর একটা নতুন সিম কিনে সব কিছুই আগের মতো ফিরিয়ে আনি।
এইরকম মাস খানেক চলছিলো আমাদের।আমি জানতাম না যে খুব শীঘ্রই মোনিয়ার বিয়ের সাজন সাজানো হবে।বিয়ের সময় গরম জলে গোসল করাইছিলো,আতর গোলাপ সূরমা মোনিয়ার অজ্ঞে মাখাইছিলো।আমি শুধু দাঁড়িয়ে কান্না করছিলাম।আর ভাবতে থাকি মোনিয়ার সাথে আমিও বাসর ঘরে যাবো।গোসল করিয়ে মোনিয়াকে বিয়ের শাড়ি পড়ানো হবে্।চারটা বেহারার পালকি করে মোনিয়াকে বাসর ঘরে নিয়ে যাওয়া হবে্।বাসর ঘরের দরজাটা লাগিয়ে দিলে ঘরটা অন্ধকার হয়ে যাবে ভেবে আমিও ঠিক করি মোনিয়ার সাথে বাসর ঘরে যাবো আর অন্ধকারের সময় বাতিটা জালিয়ে দেব।
আমি প্রায় সময় মোনিয়েকে বলতাম ,আল্লাহ যেন তুমার আগে আমার মৃত্যু দেয়্।কিন্তু কোথায় মোনিয়া তো আমার আগে সে বাসর ঘরে চলে গেল্। স্বার্থপর মোনিয়া আমায় একা রেখে বাসর ঘরে যায়।আমি এখনও ওই ঘরের দরজার পাশে গিয়ে কাদিঁ
কিন্তু মোনিয়ার কোন সাড়া পাইনা।
এই ঠান্ডার মধ্যে মোনিয়া অনেক কষ্টে আছে আমি জানি।তাই আমি ইচ্ছা করেই ঠান্ডা মাখি্। আমার মোনিয়াটা যে ঠান্ডায় কাপছে,আমি কি করে শীতের কাপর পড়বো।সেই সপ্ন গুলোকে আকড়ে ধরে এখনও আমি বেচে আছি।
……………………………………..সমাপ্ত……………………………….