বস্তির ছেলে ফারাবী

বস্তির ছেলে ফারাবী

ছেলে→আই লাভ ইউ তমা
মেয়ে→থাপ্পর চিনেন..
ছেলে→চিনি তো..
মেয়ে→খাবেন..
ছেলে→কে দিবে..
মেয়ে→কেনো আমি দেবো..
ছেলে→দারিয়ে আছো কেনো দাও..
মেয়ে→ আপনার লজ্জা করে না.
ছেলে→কেনো আমি তো পেন্ট পরে আছি..
মেয়ে→ আপনাকে যে কি করি..
ছেলে→ বিয়ে করো..
মেয়ে→আপনাকে একটা থাপ্পর দেয়া উচিত..

ছেলে→ চাইলে কিস ও করতে পারো.না করবো না
মেয়ে→কি করেন আপনি
ছেলে→ পড়াশোনা করি..
মেয়ে→আপনার বাবা কি করেন।
ছেলে→বাবা নেই..
মেয়ে→ মারা গেছে..
ছেলে→আসলে আমি জানি না..
মেয়ে→আপনার মা কি করেন..
ছেলে→মা জন্মের পর মারা গেছেন..

মেয়ে→কোথায় থাকেন…
ছেলে→বস্তিতে..
মেয়ে→ওখানে থাকেন কেনো..
ছেলে→এক ভিখারীর কাছে এখন ওনি আমার মা…
মেয়ে→ফকিন্নির পোলা তোর কও বড় সাহস..
ছেলে→আপনাকে ভালবাসতে পারবো না কেনো…
মেয়ে→একটা ভিখারীর ছেলেকে ব্রয়ফেন্ড কি করে বানাই..
ছেলে→আমি আর তোমার সামনে আসবো না..

ঠিকি তো আমি তো একটা ভিখারীর ছেলে..
আর আমার ভালবাসার কথা মোখে আনাও পাপ..

আমি ফারাবী হাবীব.ডাক নাম ফারাবী..
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিক্স করছি।

জন্মের সময় মা মারা গেছেন তাই মার মোখটা পর্যন্ত দেখিনি…এক ভিখারীর কাছে বড় হয়েছি…।
যখন একটু বুঝতে শিখেছি..তখন এক টোকাই দলে নাম লিখিয়েছি..
সারাদিন টোকাই করে যা পেতাম, তা দিয়ে পেট চলত।
একদিন পাশের মহল্লার কয়েকটা টোকাই আমায় মেরেছিলো…তাই মা আর টোকাই গিরি করতে দেননি..

কিছুদিন পর একটা স্কুলে এ পাঠান। আর মা সারাদিন রাস্তায় মানুষের কাছে টাকা নিয়ে সংসার চালায়।
পাইমারী শেষ করে হাইস্কুলে এ আসি,খুব মেধাবী ছিলাম,সব ক্লাসে ফাস্ট হতাম..

পড়ার পাকে একটা ফ্লাস্টিক কারখানায় কাজ করতাম,
যা বেতন পেতাম তা দিয়েই সুন্দর পেট চলত।
মা মানুষের কাছ থেকে খুঁজে পড়ার খরচ চালাতো.
খুব ভাল কিছু খেতে পারতাম না। নিম্নমানের চাল আর কাঁচাজ্বাল পিঁয়াজ..হলেও চলতো,

মাঝে মধ্যে মা বড় লোকের এটো বাসি খাবার নিয়ে আসতো। আমি লোভ সামলাতে পারতাম না, তারাহুরো করে খেয়ে নিতাম,খাবার শেষে ডেকুর দিয়ে যখন মায়ের দিকেকে তাকাতাম, দেখতাম মায়ের চোখে জল.
আমাকে দেখে মোখ আড়াল করে নিতো…
আর বলতো… বাজান চোখটা মনে হয় খারাপ। হইয়া গেছে খালি পানি পড়ে।।।

তুই কবে বড় হবি বাজান,আমারে মেমসাব গো মতন একখান বড় চসমা কিন্না দিবি। আমি তো বুঝি মায়ের চোখের জলের উস্স্য..হে আমাকে বড় হতে হবে অনেক বড়।।
তাই কাদের চাচার গেরেজ থেকে একটা রিকসা ভাড়া নিলাম….

ফ্লাস্টিক কারখানার কাজটা ছেড়ে দিলাম, মালিক বেটা খালি পেন পেন করে. স্কুল থেকে এসে রিকসা চালানোর জন্য বের হই…রাতে আবার পড়তে বসি।
সামনে পরীক্ষা, এমন করে চলতেছে দিন।

একদিন দুইজন বড়লোক আমার রিকসায় উঠলো.. আর বলতেছে, আজকের শপিংটা দারুন হইছে, তাইনা
আমি ভাবলাম অনেক টাকার মারকেট করছে।
দশটাকা বকসিস চাইবো হয়তো না করবে না।
রিকসা থেকে নামার পর ভাড়া দশটাকা দিলো,
আমি বললাম সাহেব আর দশটাকা বেশি দেননা,
কিছু খাবো, ওনি আমাকে একটা থাপ্পর দিলো।।

আমি নাকি ভাড়া বেশি চেয়েছি. আরেক জন বলে তুমি ওদের গায়ে হাত দিলে কেনো, ওদের শরীরে জীবানু থাকে…তুমি জানো না
রাতে বস্তিতে ফিরলাম, কাল S.S.C পরীক্ষা।।
পরীক্ষা শেষ ভাল রেজাল্ড হইছে আমার, গোল্ডেন প্লাস।
দৌরে বস্তিত গেলাম মাকে বললাম মা আমি পরীক্ষায়
পাস করছি, গোল্ডেন প্লাস পাইছি…

মা বললো সত্যি বাজান, কেরুম্মা পেলাস বাজান ঐ যে
কারেন বাও করে এই পেলাস নি, বাজান পেলাসটা বেইছা এক কেজি চাউল আনিছ, আইজগা ঘরে চাউল নাই… আমার মা আজো বুঝেনা প্লাস মানে কি।।।।

… এভাবেই কাঠলো কয়েক বছর।

মা রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে ভার্সিটিতে ভর্তি করাই..
আমি ফকিন্নির পোলা বলে, তাই কেউ আমার বন্ধু হতে চায়নি….

আমি আজ ম্যাজিট্টেড. আরো দশজনের মতো আমাকে সবাই স্যার বলে ডাকে…এখন গাড়ি বাড়ি সব কিছু আছে আমার,, আর আছে সব চেয়ে দামি আমার ভিখারি মা…

কিছুদিন পর বিয়ের জন্য পএিকায় নাম দেই, শত লোকের লাইন আমার বাসার সামনে…একজন কে সিলেক্ট করি..মেয়ের বাবা বাসার ঠিকানা দিলো. আমার মা সোমবার দিন যাবে বলে দিলেন.!

সোমবার→গাড়ি নিজেই ড্রাইভ করি মা পাশে বসা।
বাড়িতে গেলাম, সবাই অনেক খাতির করলো।
বসে আছি মেয়ের বাবা বললো মেয়েকে নিয়ে আসতে।

দুটি মেয়ে -ওনাকে নিয়ে আসলো মাথার ঘুমটা যখন
খুললো আমি অভাক, সে আর কেউ নয় সে যে তমা..।
কলেজ লাইফে আমি যে ওর পেছনে ঘুরে ছিলাম।

আমি ওনার সাথে একা কিছু কথা বলতে চাই,
সবাই রাজি হলো…দুজন ছাদে চলে গেলাম,
খোলা আকাশের দিখে তাকিয়ে খুব জুরে নিঃশ্বাস ফেললাম।

আমি→কাশি দিলাম
তমা→ কি পানি খাবেন
ফারাবী→না..কেমন আছো তমা?
তমা→আপনি আমার নাম জানেন।
ফারাবী→হুমম-তুমি আমাকে কতোটুকো জানো..
তমা→আপনি একজন ম্যাজিট্টেড.
ফারাবী→ না এর বাহিরে অনেক কিছু আছে!
তমা→মানে..

ফারাবী→তুমি আমাকে চিনতে পারোনি,আমি সেই
ফারাবী একজন ভিখারীর ছেলে..
যে তোমাকে ভালবাসতো, যাকে তুমি ফকিন্নীর ছেলে বলে অপমান করে ফিরিয়ে দিয়েছো..
আমি সেই বস্তির ছেলে ফারাবী…

তমা→ এতটা সেইন্চ কি করে
ফারাবী→ মুচকী হাসি দিলো..

হঠাৎ কোথা থেকে বাতাসে গান বাজতে লাগলো।
.নদীর একুল ভাঙ্গে ঐকুল গড়ে এইতো নদীর খেলা.
সকাল বেলার ধনীরে তুই ফকির সন্ধা বেলা।।।

গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত