জন্মই যখন মৃত্যুর কারণ

জন্মই যখন মৃত্যুর কারণ

–এই সন্তানকে জন্ম দেয়াই তোমার পাপ হয়েছিল বুঝলা। আজম রাগতস্বরে বলল কথাটা।

–কি বলো তুমি?? ও আমাদের সন্তান, আমার রক্ত, তোমার রক্ত বইছে ওর শরীরে। কান্নামিশ্রিত কন্ঠে বলল জয়া।

–খবরদার। আমার রক্তের কথা বলবানা! তোমার কোন পাপের ফল তুমি আমার নামে চালাইতেছো??

—নাউজুবিল্লাহ! ছিঃ! এগুলো কি বলছো তুমি?? জয়ার কান্নার বেগ বেড়ে গেল।

—ভুল বলছি কিছু??আমার রক্ত দেখবা?? বলেই পাশের ঘরে থাকা অরুন আর তনুকে ডাক দিলো আজম। অরুন আর তনু ঘরেতে আসতেই আজম স্ত্রী জয়াকে ডেকে বলল,

–এই দেখো। এরা আমার সন্তান। এরা কি ওর মতো নাকি??

–তুমি এমন কথা কেমনে বলতে পারছো?? পাপ হবে তোমার! অনিকও তো মানুষ। শুধু আমাদের মতো সাধারণ না।

—হয়। এই অসাধারণ ছেলে তোমার পাপের ফসল আমার না।। আর একটা কথা কান খুলে শুনে রাখো, ওর বাবা হিসেবে আমার পরিচয় কখনো দিবে না। আমার দুই সন্তান, অরুন আর তনু। কথাগুলো বলেই আজম শাহ ঘর থেকে চলে গেল।

আর স্ত্রী জয়া বেগমের কান্নার আওয়াজ কিছুটা ক্ষীণ হতে লাগল। অরুন আর তনু চুপটি করে দাঁড়িয়ে রইল। পাশেই দাঁড়ানো জয়ার ৩য় সন্তান অনিক (তৃতীয় লিঙ্গের/হিজরা) যাকে নিয়ে জয়াকে এত গুলো কথা শুনতে হলো। অনিক এসে জয়ার চোখ থেকে পানি মুছে দিয়ে বলল,

–মা, তুমি কাঁদছো কেনো?? কেঁদো না মা। বাবা তুমারে বকা দিছে?? আমি বাবারে বকা দিবোনে। মা তুমি কেঁদো না। কিছু টা এলোমেলো করে বলল কথাগুলো। জয়া অনিক কে বুকের সাথে নিয়ে,

–বাবা রে, তোর বাবা যে আমার নামের সাথে নষ্টা মহিলাদের সিল মেরে দিলো রে। তোরে জন্ম দেওয়াই কি আমার দোষ ছিল রে বাবা??

অনিক ৪ বছরের। মায়ের কথা বোঝার মতো বয়স ওর হয় নি। শুধু এটুকু বুঝতে পারে যে ওর মা জয়াকে বাবা আজম শাহ বকা দিয়েছে। তনু (৬ বছর) পাশ থেকে এসে জয়াকে ধরে বলল, আম্মু, খিদা লাগছে। জয়া বেগম চোখ থেকে পানি মুছে বলল, হুম আম্মু দিতাছি। তোমরা ৩ জনে হাত মুখ ধুয়ে আসো, আমি খাবার দিতেছি। অরুন (১০ বছর) তনুকে ডাক দিয়ে বলল, তনু আই আমরা হাত মুখ ধুইয়া আসি।

—ভাইয়া, আমিও যাবো। অনিক খুশি হয়ে বলল।

—তুই আমাদের সাথে আসবি না। তোর জন্য আম্মুরে বাবা বকা দেয় শুধু। কই? আমাদের জন্য তো কখনো বাবা আম্মুরে বকা দেয়নি। অনিকের ছোট্ট মাথায় এগুলোর কিছুই ঢোকে না। ও শুধু অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে অরুন আর তনুর দিকে।

এইভাবেই অবহেলা, মানুষের মুখের কুৎসিত আর নোংরা কথাগুলো শুনতে শুনতেই অনিক বড় হয়ে উঠে। একমাত্র মায়ের ভালোবাসা ছাড়া যার কপালে আর কারোর ভালোবাসা জুটেনি। অনিক বড় হয়ে বুঝতে পারে ওকে মানুষ কেন ঘৃনা করে। কেনো ওকে সবাই দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়।

বর্তমানে অনিকের বয়স ১৫। শারীরিক, গঠনিক, আচরনিক, সব দিক দিয়েই মানুষের নজর কাড়ার ক্ষমতা ওর আছে। কোন মানুষ প্রথম দেখাতেই কাছে টেনে নিয়ে অনেক আদর করবে কিন্তু পাশ দিয়ে কোন পরিচিত লোক যখন আদর করা মানুষটিকে অনিকের ব্যাপারে বলে তখন আদর করা মানুষটি নাক ছিটকে তাড়াতাড়ি প্রস্থান করে সেখান থেকে। অনিকের চোখে পানি চলে আসে। অনিকের কোন বন্ধু, বান্ধবী, সাথী বলতে কেউ নেই। সকাল টা শুরু হয় বাবার মুখের গালি শুনে,

–ওই জমিদারের পূত্র, আপনার ঘুম ভাঙ্গেনি এখনো?? কি আমার লাট সাহেব আসছে রে। কলিজা ডা একটু একটু ছিইড়া না খাইয়া একেবারে টান দিয়ে ছিইড়া খা।

সকালে সবার কেমন করে ঘুম ভাঙ্গে অনিক সেটা জানে না। কিন্তু অনিকের প্রতি সকালেই ঘুম ভাঙ্গে বাবার কটাক্ষপূর্ণ কথার মধ্য দিয়ে। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে মায়ের রান্নার পাশে বসে মা জয়াকে সাহায্য করতে চাইলেও করতে পারে না। কারণ অরুন এসে বলে, মা, অনিক যেই জিনিসে হাত দিবে আমি কিন্তু সেই জিনিস খাবো না। জয়া বেগম অসহায় ভাবে অনিকের দিকে তখন চেয়ে থাকে। অনিক মায়ের চোখের ভাষা আর কষ্ট বুঝতে পেরে, হাজার টা চাপা কষ্ট নিয়ে ওখান থেকে বিদায় হয়। তুলির ফুল গাছ টাতেও তুলি হাত দিতে দেয় না। একবার হাত দিয়েছিল জন্য তুলি হাজার টা কথা শুনায়ছিল। তন্মধ্যে একটা কথা ছিল,

–বেজন্মা, হিজরার বাচ্চা, তুই আমার ফুল গাছটারে শেষ করার লেগে আসছিস এখানে তাই না??

অনিকের চোখ থেকে পানি পড়ে।

—আপু, কি বলো এটা?? আমিতো আমার মায়ের সন্তান তোমার আমার, আমরা তো একি মায়ের সন্তান গো আপু।

–একি মায়ের হলেও এক বাপের না। বুঝলি। তুই আমার বাবার সন্তান ন, কথাটা শেষ করতে পারল না তনু। ঠাস করে একটা চড় পড়ল তুলির গালে।

–আমায় যা বলার বলো। কিন্তু আমার মায়ের চরিত্র নিয়ে একটা বাজে কথাও আমি সহ্য করবো না। আমার মা পবিত্র। এইটা মনে রেখ।

তুলি রাগে ফুসতে থাকে। তুই আমার গায়ে চড় দিলি?? এত সাহশ তোর?? আজ বাবা আসুক,তারপর তোকে দেখে নিবো। হ্যা সত্যিই দেখে নিয়েছিল তুলি। আজম শাহ এসেই অনিক কে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছিল। যতক্ষণ পর্যন্ত না অনিক জ্ঞান হারিয়েছিল, ততক্ষণ অবধি আজম শাহ মাইর থামায় নি। জয়া পা জড়িয়ে ধরেছিল আজমের। কিন্তু আজম জয়াকে লাথি দিয়ে ফেলে দিয়েছিল।

জয়া, অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকা হতভাগা সন্তান অনিক কে কোলে নিয়ে চিৎকার করে কান্না করেছিল আর উপর দিকে তাকিয়ে বলেছিল, এ কি বিচার তোমার?? আর কত কষ্ট দিবা আমার এই বাচ্চাটাকে?? কেনো এমন করে পাঠালা ওকে?? ওর তো কোন দোষ নাই?? তুমিই ওকে এভাবে পাঠিয়েছো। তাইলে কেন ওরে এত কষ্ট সহ্য করতে হবে??

তুলি আর অরুন হাসতে হাসতে রুম থেকে চলে গেল। এরপর থেকে অনিক কেমন যেন চুপচাপ হয়ে যায়। আগে থেকেই চুপচাপ ছিল কিন্তু আগের থেকেও আরো নিরবতা হয়ে যায়। এখন মায়ের সাথেও তেমন একটা কথা বলে না। শুধু বাড়ির পাশে পুকুর তলায় গিয়ে চুপচাপ বসে থাকে। জয়া বেগম নিঃশব্দে কান্না করে আর বলে, মালিক আমার ছেলেটারে হয় সাহায্য করো নয় ওরে নিয়া যাও তোমার কাছে। কিন্তু তবুও এমন করে ধুকে ধুকে আমার ছেলেটারে কষ্ট দিও না।

এর কয়েক বছর পরে, হঠাৎ একদিন কাজ করার সময় আজম শাহ জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যায়। তার সহযোগী রা ধরাধরি করে বাসায় নিয়ে আসে। মাথায় পানি ঢাললেও কোন কিছু হয় না দেখে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার সমস্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে রিপোর্ট থেকে জানান যে, আজম শাহের ২ টো কিডনিই ড্যামেজ হয়ে গিয়েছে। এখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কিডনি ডোনার করতে হবে নয়তো খারাপ কিছু হতে পারে। জয়া বেগমের মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। কি করবে কি করবে ভেবে না পেয়ে কান্নায় ভিজে উঠে ওনার চোখ। ডাক্তার এসে বললেন, কিডনি যদি একটা আপনাদের মধ্যে থেকেই দিতে পারেন তো ভালো। আর না হলে খোঁজ করুন। অরুন আর তুলির গলা শুকে যায় এই কথা শুনে। মা জয়া বেগম ডাক্তার কে বলে, স্যার, আমি দিবো। আমার টা নেন। ডাক্তার সাহেব হ্যাংলা পাতলা জয়ার দিকে তাকিয়েই সোঁজাসুজি বলে দেন,

–আমরা রোগী বাঁচানোর কাজ করি। তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার না। জয়া বেগম তুলি আর অরুনের দিকে তাকাতেই, অরুন আর তুলি কয়েক কদম পিছে যায়।

–বাবা, তোদের বাবার জন্য একটা কিডনি দে না বাবা। দেখ তোর বাবা সারাজীবন তোদের কে মানুষ করতে নিজের রক্ত কে পানি করে ফেলছে। দে না বাবা একটা কিডনি।

–অরুন চুপ করে থাকে।

তুলির দিকে তাকিয়ে জয়া বেগম বলে, মা’ রে, তোর বাবার জন্য এইটুকু করবি না মা?? তুলি এদিক ওদিক তাকাতে থাকে। জয়া বেগম অরুন আর তুলির সামনে আঁচল পেতে বলে,

–আমার সারাজীবনের ভালোবাসার দাম হিসেবে একটা কিডনি আমায় দেনা তোরা! অরুন আর তুলি কিছু না বলেই চলে আসে ওখান থেকে। এর কয়েকদিন পরের কথা, আজম শাহ এখন অনেক ভালো আছেন। ফুরফুরে মেজাজে আছেন উনি।। আরো বেশি খুশি হয়েছেন এই কারণে যে অনিক নামক হিজরাটাকে ওর মা ওর মামার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে।

–যাক, আর তো আর পাপীটার মুখ দেখা লাগবে না ভেবেই আজম শাহর মন টা আনন্দে নেচে উঠছে।

কিন্তু ইদানিং জয়াটাকে কেমন যেন লাগে। চুপচাপ থাকে। মাঝেমধ্যে ডুকরে কেঁদে ওঠে। আর বাসার পেছনে, পারবারিক কবরস্থানের দিকে তাকিয়ে চোখ থেকে জল ঝড়ায়। জিজ্ঞেস করলে কিছু বলে না। শুধু চুপ করে থাকে। এর কয়েকদিন পরে অরুন আর তুলির মামা বেড়াতে আসে বোন জয়ার বাড়িতে। চায়ের দোকানে বসে আজম শাহের সাথে হাজার টা কথা বলার পড়ে যখন জহির মামা আজম শাহ কে জিজ্ঞেস করে,

—আচ্ছা, অনিক কই গিছে দুলাভাই?? ওকে তো একবারো দেখতে পেলাম না এখন পর্যন্ত। আজম শাহ ধাক্কা খায় বড়সড়।

–মানে! কি বলেন?? জহির মামা আজম শাহের দিকে তাকিয়ে, কেন কেন??

–অনিক আপনাদের বাড়িতে না??

–পাগল হইছেন?? আমাদের বাড়িতে ও যাবে কেন?? আর আমার বাড়িতে থাকলে আমি আপনারে প্রশ্ন করি?? আজম শাহ বাড়িতে ছুটে আসে। ঘরে ঢুকতেই দেখে জয়া অনিকের ছোট সময়ের খেলনা গুলো নিয়ে কান্না করছে। আজম জয়ার হাত ধরে টেনে বাইরে এনে,

–অনিক কই?? জয়া চুপ….

–আজম আবার বলে ওঠে, অনিক কই?? কথা বলো না কেন??

–বেজন্মা, জারজ বলো। ওর নাম ধরে ডাকার কোন অধিকার নাই তোমার।

আজম শাহ জয়াকে থাপ্পড় দিতে গিয়েও আটকে যায়। আবার জয়াকে ঘ্যাচায়ে বলে, বলো অনিক কই?? তুমি আমায় বলেছিলা ওর মামার বাড়িতে পাঠাইছো। ওর মামা বলে ওনাদের বাড়িতে অনিক নাই। তাইলে কই রাখছোস বলো?? জয়া বেগম হাসতে থাকে। তারপর অপারেশনের সব ঘটনা বলতে থাকে। অপারেশনের আগের দিনঃ

জয়া বেগমের কান্না দেখে অরুন আর তুলি সহ্য করতে পারলেও অনিক পারেনি। তাই মা জয়াকে না জানিয়েই ডাক্তারের সাথে কথা বলে অনিক। তবে একটা না, অনিক ২ টো কিডনিই ডোনেট করবে বললে ডাক্তাররা নিতে চায়নি। কিন্তু অনিকের জোরাজুরি, আর অনিকের জীবন কাহিনী শোনার পরে ডাক্তার স্যার অশ্রুসিক্ত নয়নে অনিকের কাধে হাত রেখে বলেছিল, আমাদের ক্ষমা করো অনিক। অপারেশনের পরে জয়া বেগম হাসিমুখে ডাক্তারকে, কে কিডনি দিয়েছে জিগ্যেস করলে ডাক্তার স্যার চুপ হয়ে যায়। জয়া বেগমের হাসিমুখটা নিমেষেই কালো হয়ে যায়।বুকের ভেতর কোন একটা কিছু না থাকার হাহাকার করে উঠছে তারপর আবার এতসময়েও একবারও অনিককে দেখতে পায়নি জন্য ভয় হচ্ছে জয়ার।

জয়া ২য় বারের মতো জিজ্ঞেস করলে ডাক্তার এক এক করে সব বলে দেয়। জয়া ডাক্তারদের সব কিছু শুনে ফ্লোরে বসে পড়ে। একটু আগে যেই মানুষ টা হাসিমুখে এসেছিল ডাক্তারদের কে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য। এখন সেই মানুষটার মনেই বয়ে চলছে সন্তান হারানোর ঝড়। জয়া বেগমের কান্নায় পুরো হাসপাতাল ভারী হয়ে উঠে। জয়ার বিলাপের কাছে হাসপাতালের অন্য মানুষ গুলোর বিলাপ ফিকে মনে হচ্ছে।

ঐদিন রাত্রেই, জয়া ৫ থেকে ৬ জন মানুষ কে বলে পাশে থাকা পারিবারিক কবরস্থানে অনিককে কবর দেয়। আর ওনাদের নিষেধ করে দেয় যাতে এই কথা অনিকের বাবা, ভাই বোন কেউ না জানতে পারে। শুধু একটা ভয়ে, যদি এই কথা জানতে পেরে আবার অনিককে এখানেও কবর দিতে না দেয়। আজম শাহের শরীর কাঁপতে থাকে। চোখ থেকে বিন্দু ফোঁটা পানি পড়ল।

জয়া বেগম আজমের দিকে আঙ্গুল তুলে বলে, আমার সন্তানের জন্য এক ফোঁটা চোখের পানিও তুমি ফেলবে না। তোমার এই লোকদেখানো চোখের জল, আমার সন্তান কে আরো কষ্ট দিবে। সারাজীবন তো ওকে কষ্ট দিয়েছো। তোমার দুইটা পায়ে পরি। আমার সন্তান কে আর যন্ত্রণা দিও না। জয়া বেগম কান্না করে দিলো। জহির এসে নিজের বোনকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করল। জয়া জহির কে ধরে বলল, ভাইজান, ভাইজান রে, আমার অনিকরে একটা মুহুর্তের জন্যও শান্তি দেয় নাই এই লোকটা।

তারপর আজমের দিকে তাকিয়ে বলল, আরে তোমার কি মাথায় এইটুকু বুদ্ধি নাই?? যে, তুমি যেই রবের সৃষ্টি তোমার সন্তান কেও সেই তিনিই সৃষ্টি করেছেন। শুধু তুমি পুরুষ হয়ে জন্মায়ছা আর ও, তোমাদের ভাষায় হিজরা। কিন্তু ও তো মানুষ ছিল। নাকি ছিল না বলো?? ওর তো মন ছিল, নাকি ছিল না?? ওর তো কষ্ট হতো, নাকি হতো না?? ওর শরীরেও তো রক্ত বইতো আর সেটা তোমারি কিন্তু তুমি সেইটা অস্বীকার করে আমাকে নষ্টা মেয়েদের মধ্যে ঠাঁই দিয়েছিলা।

জহির খা লজ্জা ভরে আজম শাহের দিকে তাকিয়ে বলল, ছিঃ। মানুষ এতটা খারাপ মনের হতে পারে?? আজম শাহের কিছু বলার নেই। শুধু চুপ করে আছে। আর নিরবে চোখ থেকে পানি ঝড়াচ্ছে। জয়া বেগম আবার পাগলের মতো হেসে বলে,

–তুমি অনিক কে বলতা না যে, জারজ, বেজন্মা, হিজরা। এখন শুনে রাখো, ওই হিজরার দেয়া কিডনিতেই এখন তুমি এখানে দাঁড়িয়ে আছো। ওই হিজরার কারণেই তুমি নিঃশ্বাস নিতে পারছো। যেই কারণটা তোমার আদরের অরুন আর তুলি হতে পারেনি। আজম শাহ জয়াকে কিছু না বলে কবরস্থানে দিকে ছুটে যায় পাগলের মতো। কবরের কাছে গিয়ে অঝোর ধারায় চোখের জল ফেলতে থাকে আর করুনস্বরে বলতে থাকে,

—আমায় ক্ষমা করে দে বাবা। আমায় মাফ করে দে,

গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত