ইটের ভাটা থেকে ফেরার সময় সরাসরি পাশের প্রাইমারি স্কুলে চলে যায় রহিমা। ইটের ভাটা থেকে স্কুলটা বেশী দূরে না, মাত্র অল্প দূরত্ব, বলতে গেলে কাছেই। ওর কাজের জায়গা থেকে কাছে বলে ওখানেই ওর একমাত্র চোখের মণিকে ভর্তি করিয়ে দিছে। ভাটার ওর প্রাপ্ত কাজ শেষ করে স্কুলে যায় ওর ছেলেকে আনতে। হাটতে হাটতে স্কুলে চলে আসে রহিমা, মাঠের পাশে পা রাখতেই স্কুল ছুটি হয়ে যায়। দুপুর বেলা ওর ভাটার কাজও শেষ হয়ে যায় আর ওর ছেলের স্কুলও ছুটি হয়ে যায়। তাই মা ছেলে একসাথেই বাড়িতে ফিরে আসে।
বেল পড়ার সাথে সাথে ক্লাস টু থেকে রহিমার চোখের মণি দৌড়ে ওর কোলে এসে পড়লো। আর রহিমা নিজের ছেলেকে অনেক যত্ন করে কোলে তুলে নিয়ে বাড়ির দিকে যেতে শুরু করলো। দিন শেষ হতে এখনো অনেক দেরী, কেবল সাড়ে বারটা বাজে। আরও অনেক সময় বাকি আছে, আরও অনেক কাজ আছে ওগুলো শেষ করতে হবে ওর একাই। অতঃপর ওর ছোট্ট কুটিরে এসে ছেলেকে চকিতে বসিয়ে ছেলের জামাকাপড় পাল্টিয়ে দিয়ে চুলায় ধোঁয়া উড়ায় রহিমা। এখন যে ওকে অল্প কিছু রান্না করতে হবে। তারপর কিছু একটা রান্না করে ছেলেকে কোলে তুলে নিয়ে পরম যত্নে তুলে খাইয়ে দিয়ে নিজে কিছু খেয়ে নেয় রহিমা। তারপর খাওয়া শেষ করে এই দুপুরের রোদের মাঝেই ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে অন্যের বাড়িতে কাজ করার জন্য আবার রওনা হলো রহিমা। ওর কাজের শেষ নেই, নিজের পেট আর ছেলের পেট চালাতে সবরকম কাজ করতে পারে রহিমা। ওর ছেলেরও অনেক কষ্ট করতে হয়। রহিমা শুধু দুপুরে আসার সময়ই ওকে স্কুল থেকে নিয়ে আসে, কিন্তু সকালে ওকে একাই স্কুলে যেতে হয় হেটে হেটে। ওর স্কুল শুরু হয় বেলা দশটায়,, আর নয়টার সময় খেয়ে নিয়ে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে হেটে চলে আসে স্কুলে।
রহিমা ওর সাথে সকালে আসতে পারে না, কারণ রহিমার কাজ আরও সকালে শুরু হয়। ভোরের আলো ফোটার আগেই রান্না করে ইটের ভাটার কাজে বেরিয়ে যেতে হয় ওকে, তাই রহিমা সকালে ওকে স্কুলে নিয়ে আসতে পারে না, একাই আসতে হয়। ওর জন্য ভাত বেড়ে রেখে দেয়, খাওয়ার সময় হলে খেয়ে নিয়ে স্কুলে চলে যায়।
এইটুকু ছেলে, কই এই বয়সে একটু মার আদর যত্নে থাকবে, তিন বেলা মা আদর করবে, তুলে খাইয়ে দিবে তা না, নিজের কাজ নিজেকেই করতে হয় এই ছোট্ট বয়সে।
কি আর করবে?? অভাবে পরলে যে সবকিছুর সাথে মানিয়ে নিতে হবে। এমন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য ওদের এই কষ্টকেই আকড়ে ধরে থাকতে হয়, এছাড়া আর কোনো রাস্তা নেই রহিমা আর ওর ছেলের হাতে। দুপুরে রান্না শেষ করে খাওয়া হয়ে গেলে ছোট্ট ছেলেকে ঘুম পাড়িয়ে কাছেই কোনো এক ধনী বাড়িতে কাজের লোকের কাজ করতে চলে যায় রহিমা। কাজ না করলে যে ওর ভাত মিলবে না। নিজের ভাত মিলুক চাই না মিলুক, নিজে মরে গেলেও কোনো আফসোস নেই ওর কিন্তু ওর ছোট্ট ছেলেটার মুখের দিকে তাকিয়ে সবরকম কষ্ট সয্য করে নেয় রহিমা।রহিমার বয়স বেশী না, কেবল বাইশ বছর অতিক্রম করলো,, বয়স বেশী না হলেও সবরকম কষ্ট সয্য করার শক্তি ওর আছে। আর এই বয়সে এতো কাজকর্ম খাটাখাটনি নিজেকে একাই করতে হয়। ওর আজ এই অবস্থা হতো না, ও হয়তো আরও সুখেই থাকতো, যদি ওর স্বামী সারাদিন রাত নেশা না করতো। ওর স্বামী আছে তবে বেশী বাড়িতে থাকে না, সারা রাত দিন বাইরে অন্য মাতালদের সাথে কাটায়।
কাজকর্ম একটাও করে না, একদম অকর্মা, শুধু বউয়ের টাকায় বসে বসে খায়। এবার হয়তো ভাবছেন ও নেশা করার টাকা পায় কই থেকে তাই না? রহিমা সকালে যে কাজ করে ইটের ভাটায় ওই টাকা শুধু রহিমা আর ওর ছেলের জন্য রাখে আর দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্যের বাড়িতে যে কাজ করে সেই টাকা ওই নেশাখোরটাকে দিতে হয়।
রহিমা যদি না দেয় টাকা, দিতে অস্বীকার করে তাহলে ধরে প্রচুর মাইর দেয় ওকে। মারতে মারতে শরীরে লাল দাগ বানিয়ে দেয় তবুও রহিমা টাকা দিতে নারাজ,
রহিমার এক কথা, আমি আমার এতো কষ্টের উপার্জন করা টাকা আমি তোমাকে দিব না, আমাকে যদি মেরেও ফেল তবুও একটা কানাকড়িও দিব না তোমাকে ওই নেশা করার জন্য, পারলে নিজে উপার্জন করে নেশা কর। এতো মেরেও যখন কোনো টাকা বের করতে পারে না,, তখন বুঝতে পারে ওকে মেরে টাকা বের করা পারবে না তখন রহিমার কলিজার টুকরাকে মারতে যায় ওই নরপশুটা। পিশাচটা জানে রহিমাকে মারলে ও নিজে টাকা দিবে না ওই বাচ্চাটাকে মারলেই ও টাকা দিবে।
যখন ছেলেটাকে মারতে যায় ওই পশুটা তখন আর কিছু বলতে পারে না রহিমা, বিকেলের রোজগারের টাকাটা তুলে দেয় ওই পশুটার হাতে।
এভাবে প্রতিদিনের বিকেলের কাজ করা টাকা ওকে দিতে হয় নেশা করার জন্য আর সকালের টাকাটা নিজের আর ছেলের জন্য রোজগার করতে হয়।
রহিমা আজ সুখেই থাকতো ওকে আর এতো কাজ করতে হতো না, যদি ওর স্বামী কোনো একটা কাজ করতো, এভাবে নেশায় ডুবে না থেকে। অনেক সময় ছেলেটার গলা টিপে মেরে ফেলতে যায় ওই পশুটা কিন্তু রহিমার জন্য পারে না,, রহিমা কাছে না থাকলে হয়তো মেরেই ফেলতো ওই ছোট্ট বাচ্চাটাকে,,
কিন্তু মা তো, ছেলের কিছু হলে ঠিকই আঁচ করতে পারে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে রান্না করে ইটের ভাটায় চলে যায়, দুপুরে ছেলেকে সাথে নিয়ে ফিরে এসে আবার রান্না করে, দুপুরে রাতেরটা একসাথে রান্না করে রাখে তারপর খেয়ে নিয়ে আবার অন্যের বাড়িতে কাজ করতে চলে যায়। সারাদিন খেটেখুটে এসে সন্ধ্যা বেলা হাতমুখ ধুয়ে খেয়ে নিয়ে, নিজে যা পারে তাই ছেলেকে শিখায়। তারপর চোখের মণিটাকে বুকের উপর রেখে ঘুমিয়ে পরে রহিমা, এই হলো ওর নিত্য দিনের রুটিন, আর ওই পশুটা রাতে কখন ফিরে কেউ বলতে পারে না, ওর ফেরার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই, যখন খুশি তখন আসে।রাতে ফিরে এসে রহিমা যখন শান্তির জন্য একটু গভীর ঘুমে তলিয়ে যায় তখনই পশুটা নিজের শরীরের তৃপ্তি মেটানোর জন্য ঝাপিয়ে পরে রহিমার ওই কষ্টে ঘেরা নিস্তেজ দেহটার উপর। রহিমা কিছুই বলতে পারে না, এই অবিচারের কোনো প্রতিবাদ করতে পারে না, কখনো স্বামীর একটু ভালবাসার মুখ দেখতে পারেনি রহিমা, তাই নীরবে শুয়ে শুয়ে চোখের জল ফেলে আর পশুটা নিজের তৃপ্তি মিটিয়ে শুয়ে থাকে রহিমার কোনো এক পাশে। এভাবে চলছে এই অসহায় নারীটার জীবন। ওর পাশে এসে দাড়ানোর কেউ নেই,, আজ ও একা, সম্বল বলতে আছে ওই ছেলেটা, আর স্বামী তো ওর না, ওকে যদি ভালবাসতো তাহলে তো ওর হতো, কিন্তু ওকে তো পশুটা ভালবাসে না, পশুটা ভালবাসে ওই নেশাকে।
কয়েক মাস পর, ভোরে রান্না করে সূর্য ওঠার সাথে সাথে ছেলেটার ঘুমন্ত অবস্থায় কপালে একটু চুমু দিয়ে রহিমা চলে যায় ইটের ভাটায় কাজ করতে।
সেখানে কাজ করার ফাকে ওর কেমন যেন আজ একটু অস্বস্তি লাগছে,, ঠিক মতো কাজে মন বসাতে পারছে না। ছেলেটার জন্য আজ কেন জানি বড্ড মনটা কাঁদছে।
দুপুরে ভাটার সবার কাজের ছুটি হয়, দুপুরে কাজ শেষ হলে স্কুলে চলে যায় রহিমা ছেলেকে আনতে। স্কুলে গিয়ে দাড়াতেই স্কুল ছুটি হয়ে যায়, গেটের সামনে দাড়িয়ে থাকে রহিমা ওর ছেলের জন্য, একে একে সব ছাত্র ছাত্রীরা বেরিয়ে যায় কিন্তু ওর কলিজাটা এখনো বের হয়নি, তাই নিজের পরণের ময়লা কাপড়টা একটু ভালভাবে গুছিয়ে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো রহিমা, ভেতরে গিয়ে এক ম্যাম কে বললো,,
– বইন হুনেন?
– জ্বী বলেন,
– আমি রনির আম্মু, রনি এহনও বাইর হই নাই ক্যা?
– আপনি কোন রনির কথা বলছেন?
– ওইযে টু তে পড়ে,
– একটু দাঁড়ান, আমি রেজিস্টার খাতাটা দেখে আসি,,
– আইচ্ছা।
( রেজিস্টার খাতা দেখে ম্যাম আসলো)
– বোন আপনার ছেলে আজ আসেনি স্কুলে।
– ওহ্ আইচ্ছা, আমি আহি এহন।
ওর কলিজাটা আজ স্কুলে আসেনি, কিছু হলো না তো ওর? ওই পশুটা আবার ওর কোনো ক্ষতি করলো না তো?
এই কথা ভেবে বাড়ির দিকে জোরে জোরে পা চালাতে থাকে রহিমা।
পনেরো মিনিটের রাস্তা পাঁচ মিনিটে অতিক্রম করে রহিমা,, অবশেষে এতো তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরে আসে রহিমা।
দরজার সামনে এসে হাফ ছেড়ে বাঁচে রহিমা।
ওর কিছু করেনি,, শান্তিতে চকিতে ঘুমিয়ে আছে রহিমার কলিজা।
তারপর ধীর পায়ে গিয়ে চকির এক কোণে বসে রহিমা। তারপর ছেলেটার কপালে একটু হাত বুলিয়ে দেওয়ার জন্য ছেলের কপালে হাত রাখে,,,
কিন্তু কপালে হাত রেখেই ভয়ে চমকে যায় রহিমা, জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে ছেলেটার। তার জন্যই হয়তো স্কুলে যেতে পারেনি আজ। ছেলেকে কোলে তুলে নেয় রহিমা, ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য। তারপর ময়লা কাপড়ের আঁচলটাতে হাত দেয় রহিমা,, আঁচলে একটা টাকাও নাই।
এ সপ্তাহের খরচ রেখে যে কয় টাকা বেঁচে ছিলো ওগুলোই আজ শেষ সম্বল ছেলেটার ওষুধ কেনার জন্য। মাটির হাড়িতে বোধ হয় রাখছিল টাকা গুলো,, এই দু তিনশো টাকার মতো হবে। একটু আশা নিয়ে হাত রাখে হাড়িটার ভেতর,, কিন্তু একি,, এটাতো খালি। একটা টাকাও নেই এর ভেতর। এখন কি করবে ও?
তাহলে কি ওই পশুটা এই কটা টাকাও রাখলো না, আমার এই সম্বল টুকু নিয়ে নিজের নেশার টাকার বানালো। এখন তো হাতে আর একটা টাকাও নেই।
কি করবে এখন ও? এদিকে ওর জ্বর বেড়েই যাচ্ছে। ওষুধ কেনার কোনো টাকা বা রাস্তা পাচ্ছে না রহিমা। আর কোনো কিছু না পেয়ে নিজের ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে কাদতেঁ থাকে রহিমা। আর ছেলেটা জ্বরে চোখ তুলে তাকাতে পারছে না,, কেউ তো এখন টাকা ধারও দিব না। আজ দুপুরে আর কাজে যায়নি রহিমা, দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুধু ছেলেকে বুকে জড়িয়ে কাঁদছে। সন্ধ্যায় ওর স্বামী ফিরে আসলে তাকে অনেক বকাবকি করে রহিমা, কিন্তু এখন বকলেই তো আর সেই টাকা ফিরে আসবে না। তাই চুপ করে বসে বসে আবার কাদতেঁ থাকে।
সারারাত ছেলেকে কোলে নিয়ে বসে থাকে রহিমা। রাত যত গভীর হয় ওর জ্বরের পরিমাণও বাড়তে থাকে,, এটা দেখে আবারও ঢুকরে কেঁদে উঠে রহিমা।বেলা হলে যখন দেখে ওর জ্বর কমেনি আগের থেকে আরও বেড়েছে তখন ছেলেটার কষ্ট দেখে নিজেকে আর ধরে রাখতে পারেনা রহিমা,, কাল থেকে ও নিজেও কিছু খায়নি,, খাবেই বা কি করে? ছেলের এ পরিস্থিতিতে এমন অভাগার গলা দিয়ে খাবার নামবে কি করে?
আরও বেলা হলে ছেলের অসুখের টাকা জোগাড় করার জন্য আর কোনো রাস্তা না পেয়ে অবশেষে স্বিদ্ধান্ত নিল নিজের দেহটাকে বিক্রি করে দিব,, নিজেকে বিক্রি করে ছেলের ওষুধের টাকা রোজগার করবে। ভাটায় আজ যদি যেতো তাহলে হয়তো আজকের টাকাটা পেতো কিন্তু আজ তো যায়নি তাই আর টাকাও পায়নি, মালিক অগ্রিম টাকাও দিবে না। আর ছেলেকে এই অবস্থায় রেখে কাজেই বা যাবে কি করে? তাই নিজের শরীরটা পরপুরুষকে তুলে দেওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা খুজে পায় না ও।
অবশেষে ছেলেটাকে কোনো এক পরিচিত বাড়িতে রেখে কোনো এক পতিতালয়ের দিকে রওনা হয় রহিমা। ও জানে, সেখানে একটু সময়ের জন্য ও অনেক টাকা পাবে, আর সেই টাকা দিয়ে ছেলের ওষুধ কিনেও টাকা আরও থাকবে। অবশেষে সেখানে গিয়ে মাত্র একটু সময়ের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেয় রহিমা অন্য কোনো পাষন্ডের হাতে।মাত্র অল্প সময়ের জন্য ৪০০ টাকা পায় রহিমা।আর সেই টাকা নিয়ে দৌড়ে ফিরে আসে চোখের মণিটার কাছে। আর সেই টাকা দিয়ে ওষুধ কিনে রহিমা ওর ছেলের জন্য।
তার তিনদিন পর সুস্থ হয় ওর ছেলে। কিন্তু বাচ্চাটা বুঝতে পারে না ওকে সুস্থ করার জন্য ওর মা কি করেছে? ওর ওষুধের টাকা রোজগার করার জন্য ওর মা যে পাপের খেলায় মত্ত হয়েছিল সেটা ও জানে না। জানলেই বা কি? এখন তো ও এসবের কিছুই বুঝতে পারবে না। কিন্তু রহিমার কপালটা বোধ হয় খারাপ,, ওর কপালে কোনো সুখ লেখা ছিলো না। কোনো এক ভাবে কাছের অনেকেই জেনে যায় রহিমা পতিতালয়ে গিয়ে নিজের দেহ বিক্রি করে এসেছে। তাই তারা সবসময় রহিমার সামনে এসব নিয়ে কথা বলতো আর ওই পশুটা এটা জানার পর ওকে আরও বেশী বেশী মারতে থাকে।
কয়েক দিন পর , রহিমা এসব কিছু সয্য করতে না পেরে অবশেষে নিজের কলিজার টুকরা কে কোনো এক এতিমখানায় রেখে এসে সুসাইড করে। মরে যাওয়ার আগে ছেলের মুখটা প্রাণ ভরে দেখে যায় রহিমা। পশুটার কাছে ছেলেটাকে রাখার বিশ্বাস ছিলো না রহিমার, হয়তো একদিন ছেলেটাকেও বেঁচে দিবে, এই ভেবে আর তার কাছে রাখেনি ছেলেটাকে। শুধু নিজের ছেলের ওষুধের টাকা জোগাড় করার জন্য ৪০০ টাকায় নিজের শরীর বিলিয়ে দেয় রহিমা, আর শেষে এই টাকার জন্য যে দুর্নাম হয়েছে সেজন্য নিজের জীবন বিসর্জন দেয় কিন্তু কেউ বুঝতে চাইলো না, রহিমা কেন নিজের দেহটা ওখানে বিলিয়ে দিয়ে আসলো,,?
রহিমার আজ এই পরিস্থিতি হয়েছে শুধু ওর স্বামীর জন্য। ওর স্বামী যদি ওর আর বাচ্চাটার প্রতি একটু অনুগত হয়ে নেশা না করে একটু রোজগার করতো তাহলে রহিমা এমন করতো না আর ওর এই দশা হতো না।
ধিক্কার জানাই সেইসব পুরুষদের যারা নিজের স্ত্রী সন্তানের কথা চিন্তা না করে কাজ বাদ দিয়ে সবসময় নেশায় ডুবে থাকে।