ফিরে পাওয়া

ফিরে পাওয়া

পাঁচ বছর কেটে গেছে গ্রামের বাড়ি যাওয়া হয় না।আসলে ইচ্ছে হয় না বাড়িতে যেতে।তবে আজ যেতে হচ্ছে,

কারনটা আমার দাদি অসুস্হত।দাদি ফোনে অনেক অভিমান কন্ঠে বলছিলেন,
“তুমি যদি না আসো,তাহলে তোমার সাথে আর কখনও কথা বলব না।
আমি তখন বুঝতে পারলাম এই পাঁচ বছরে দাদির মনে অনেক অভিমান জমেছে।জমবেই না কেন?

সেই যে আব্বুর সঙ্গে রাগ করে গ্রাম থেকে শহরে পা দিয়েছি,আর এই পাঁচটি বছরের মাঝে একদিনও যাওয়া হয় নাই গ্রামের বাড়ি।
.
বাসের জন্য ওয়েট করছি,কখন যে আসবে।হঠাৎ রাস্তার অপাশটায় চোখ পড়ল।কাকে যেন দেখলাম,হ্যাঁ আজিজুল কে বোধ হয় দেখলাম।

কিন্তু আজিজুল এখানে কেন?আর শহরে এসেছে একবার আমায় জানাল না?নাকি অন্য কোন কারন আছে?
আজিজুল কে অনেক খুজলাম কিন্তু পেলাম না,আবার হঠাৎ মন বলে উঠল, “আজিজুল কে কি সত্যিই দেখেছি?নাকি মনের ভূল?
সে যাই হোক,বাস এসে দাড়াল।
বাসে গিয়ে বসলাম,আমি আবার নিতান্তই জানালার পাশে বসি।কারন চারিপাশের প্রাকৃতিক অনূকুল দেখতে বেশ ভালো লাগে,

তাই কোন জার্নি করলে জানালার পাশে সিট নেই।
.
গাড়িটি তেমন নাম করা না,লোকাল বললেই চলে।আজ শুক্রবার,তাই ভালো বাস পাওয়া একটু অসম্ভবই।কি আর করার নিরউপায়।
তবে বাসটা বেশ সুন্দর,যে যেখান থেকে ডাকছে সেখানেই দাড়াচ্ছে।এমন বাসে আমি বাপের জন্মে উঠি নাই।এদিকে লোকের ভীর,

অসম্ভব খারাপ লাগছে,কখন যেন চিৎকার করে উঠি,কিন্তু সেটাও পারছি না,পাগল বলবেত।
কিছুক্ষন যাবার পর মনে হলো,কানে ইয়ার ফোন নেওয়ার কথা।তৎক্ষনাত তারাতারি করে ব্যাগ থেকে ইয়ার ফোনটা বের করলাম।
গানের লিষ্টে গিয়ে”মন রঙের”তাসিন ভাই এর গানটা ক্লিক দিব।সেই মুহুর্তেই একটা বড় ধরনের চিৎকারের আওয়াজ।

কানে আর ইয়ার ফোন নেওয়া হলো না,সিট থেকে একটু মাথা চারা দিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে চিৎকার করল।
অতঃপর জানতে পারলাম তাকে সিট দেওয়ার কথা বলে বাস এ তোলা হয়েছে,তাই সে এতক্ষন দাড়িয়ে ছিলো,

কিন্তু তার ধয্যের বাধ ভেঙে যাওয়াতে চিৎকার করে উঠেছে।কেনই বা করবে না,একগাদা ছেলেদের মাঝে মেয়েটি দাড়িয়ে আছে,সেটা কেমন দেখায়?

এটাই এখন আমাদের সমাজের নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে।আমি যাত্রিদের দোষ দেই না,দোষটা কন্টেকটারের।মিথ্য বলে বাস তুলে বলে, ওয়েট করুন সিট দিচ্ছি।

এটাই আমাদের সুশিল সমাজ।
.
তার পর আর কোন কিছু না ভেবে কানে ইয়ার ফোনটা লাগিয়ে নিলাম।যে যা পারে করুক,আমি কেন এসব বেপারে মাথা ঘামাব।
ঢাকা থেকে নাটোর প্রায় ৩-৪ ঘন্টা লাগে।কিন্তু এ বাস পুরো ৭ ঘন্টা খেলো।মনে হচ্ছে মাথাটা ফাটাই।
.
অতঃপর অপেক্ষার অবসান,নাটোর বাস ষ্ট্যান্ড এ এসে বাস থামল।জানতে পারলাম বাসটি আর যাবে না।তাই আরেকটু ভেতরে যেতে পারলাম না।

একটা রিক্সা নিয়ে সামনের পুরাতন বাস ষ্ট্যান্ডএ গেলাম।গিয়ে গ্রামের বাসে উঠলাম।বাসে উঠতেই এক কাজিন এর সাথে দেখা,
–“কিরে তোরিয় তুই?কেমন আছিস?
–“আল্লাহ্‌’র রহমতে ভালো,তুই?
–“হ্যাঁ ভালোরে,চল বসি।
তার পর বসে দুজন অনেক কথা বললাম।গ্রামের কেমন অবস্হা?গ্রাম আগের মতো আছে কি না?

ইত্যাদি স্বরূপ কথা বলতে বলতে নিজের গ্রামের বাজারে পা দিলাম।মনটা একদম শিতল হয়ে গেলো।দক্ষিনা বাতাসে

আমার মনটা ভিজে গেল।কি মধুর এই বাতাস,যা আমায় একদম নিশ্চুপ করে দিলো।
.
তার পর ধিরে ধিরে পা হেটে বাড়ি গেলাম।বাড়ি যেতেই আম্মুকে দেখলাম রান্না করতে,দাদি তার স্বামীর চেয়ারে বসে রয়েছেন।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৯টা বাজে।তখন মন একটা কথা বলে উঠল,”এতো রাত পর্যন্ত আম্মু,দাদি জেগে?কারো কিছু হলো নাতো?
এসব ভাবতেই দেখি আম্মু আমার সামনে।তার দিকে চেয়ে দেখলাম সুখের হাসি,তার পর মা বলে উঠল,
–“কিরে বাবা কেমন আছিস?কত্ত শুকিয়ে গেছিস তুই।ওখানে ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করিস নাই তাইত?
সত্যিই মা’রা এমনই।সন্তান এক দিন দূরে থাকলে তাদের চিন্তা হয়।সন্তান খেয়েছে কি না?আর আমিতো পাঁচটি বছর বাইরে ছিলাম।

রোগা হয়নি,তবুও মায়ের চিন্তা অবিরাম কাজ করে সন্তানের উপর।
–“কি বলো না মা,আমি একদম ঠিক আছি।চলো ঘরে চলো।
তার পর দাদির পায়ে সালাম করলাম।দাদি তখন কান্নাস্বরে বলছিলেন,”তোমার এত অভিমান কেন?আমাদের ভূলে থাকতে পারলে কেমন করে?

নাকি আমার সতিন ছিলো পাশে,তার জন্য আসতে পারো নাই।
আমি তখন মিঠি হাসি দিয়ে ঘরে চলে গেলাম।
দাদিকে ছোট বেলায় বউ বলে ডাকতাম,আর সে আমায় বর।খুব দুষ্টু ছিলাম ছোট বেলায়।দাদি আমাকে সেই ছোট বেলা থেকেই তুমি করে বলে।
.
ঘরের ভেতরে ঢুকে দেখি বাবা,আমি যেতেই আমার দিকে চেয়ে রইলেন।তিনি কিছু বললেন না।তবে তার মুখে অনুতাপের একটা রঙ দেখাচ্ছিলো,

আর আমি তাতেই বুঝে গেলাম,আব্বু খুব কষ্ট পেয়েছে আমি চলে যাওয়াতে।
পরে আর আব্বুর সাথে কথা হলো না,নিজের রুমে গিয়ে শার্ট আর প্যান্ট খুলে,গ্রামের ঐতিহ্য লুঙ্গি পরলাম।
রাতে বাবা,আমি,মা,দাদি সবাই এক সঙ্গেই খাওয়া শেষ করলাম।
খাবার সময় বাবার সাথে টুকটাক কথা বললাম।সে এটাও বলল,”আমার নাকি আর শহরে যাওয়া হবে না।
রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছি সত্যিই তো বাবাকে একা রেখে শহরে যাওয়াটা কেমন দেখায়?এদিকে বাবাও কিছুটা অসুস্হ,বয়স হয়েছে।

তাকে আমার সংসারে কাজে সাহায্য করা উচিত।
তবে আমি থাকতে চাচ্ছি না একটা কারনে।যে কারনে পাঁচ বছর আগে বাড়ি ছেড়ে ছিলাম।
.
হয়ত তিথির বিয়ে হয়ে গেছে,শুনেছিলাম বাড়ির পাশের গ্রামেই বিয়ে হয়েছে।
তিথি আমার তেমন কেউ নয়,আমাদের বাড়ি থেকে দশ -বিশ বাড়িপরেই তাদের বাড়ি,ছোট থেকেই তার সঙ্গে পরিচয়।

এক স্কুলে পড়েছি,একসাথে হাত ধরে হেটেছি।
এইসব এদিন আব্বু দেখেছিলো,আর তাতেই বাড়ি এসে আমাকে মারে,তখন আব্বু বলেছিলেন,”এখনই এসব করিস,মানুষ কি বলবে?

নিজের পায়ে দাড়িয়ে এসব করিস।ছি ছি আমার মান সম্মান আর রাখবি না তুই।
সেই দিন বাবা আমাকে তুই করে বলেছিলো।খুব কষ্ট হচ্ছিলো,তাইত জেদ করে মামার কাছে চলে গিয়াছিলাম।নিজের পায়ে

দাড়ানোর জেদ এ আমি সফল হয়েছি।তবে তিথি এখন তো আর নেই।হয়ত এখন অন্য কাউকে নিয়ে ব্যাস্ত সে।
.
সকাল সকাল উঠে শিশির ভেজা ঘাস দেখতে বের হলাম।সকালটা বেশ কুয়াশা ময়,শিতের হিমেল পরশে গা হিম হিম করছে।
হাঠাৎ কারো স্পর্শ আমায় আতছন্ন করলো,কে যেন আমার কাধে হাত রেখেছে।পিছনে তাকিয়ে দেখি তিথি।কিছুটা অবাক হলাম,

তিথি এতো সকালে?সেটাও এখানে?তাকে দেখেও মনে হচ্ছে তার যৌবন কমে নাই।শুনেছিলাম মেয়েদের নাকি বিয়ে হলে তাদের চেহারা বাড়ে,

হয়ত সে সুখেই আছে।মুখটাও দেখলাম হাসিতে পরিপূর্ণ। সে হাসেনি,কিন্তু তার মুখের দিকে চেয়ে আমি বুঝতে পারলাম।
সেখানে তিথির সাথে কথা না বলে চলে এলাম।পিছনে তাকাইনি,কারন মায়া শুধু মানুষকে দূর্বল করে।
.
সকালে খাবার সময় আব্বু বলে উঠলেন,
–“তোরিয় তোমার জন্য আমরা একটা মেয়ে ঠিক করে রেখেছি।
আমি অবাক হয়ে খাওয়া বন্ধ করে দিলাম।
–“আমাকে তো কখনও বলোনি আব্বু?
–“যখন তোমার মামার কাছে থেকে শুনতে পারলাম,তুমি একটা ভালো চাকরি পেয়েছো,তার পর থেকে আমরা মেয়ে দেখতে শুরু করি।

এবং আমাদের মনের মতো মেয়েও পেয়ে যাই।আমি আর তোমার আম্মু,মেয়ের বাবা কে কথা দিয়েছি।তুমি বাড়ি ফিরলেই শুভ কাজটা শেষ করব।
–“তোমারা যা ভালো মনে করো বাবা।
তার পর মুখ বুজে খেয়ে রুমে চলে এলাম।রুমে এসে বসে আছি,সেই মাত্রই ফোনটা বেজে উঠল,ফোনটা ধরতেই অপাশ থেকে ছেলে কন্ঠে ভেষে আসল,
–“ভুলে গেছিস যে সালা।
–“কে?
–“আজিজুল
–“কোথায় তুই?
–“দোকানে আয়।
তার পর দোকানে গিয়ে আড্ডা দিলাম।সেই দুপুরে বাড়ি আসলাম।
দুপুরে বাড়ি ফিরে জানতে পারলাম,বিয়ের ডেট সামনে সাপ্তাহের পরের সাপ্তাহায়।কি আর কারার এখন শুধু খাওয়া আর দিন গোনা।
.
বিয়ের আগের দিন ঘনিয়ে এলো,কিন্তু আমি কেমন জানি গাধা।মেয়েটাকে এখনও দেখি নাই,আর তার সাথেই নাকি আমার বিয়ে।

নামটা পর্যন্ত জানিনা।কেউ কিছু বলেওনাই।
কি হচ্ছে আমার সাথে একমাত্র আল্লাই জানে।
এসব না ভেবে আজিজুল এর সঙ্গে আড্ডা দিতে গেলাম।দুপুরে আর ফিরলাম না,আজিজুলদের ওখানে খেয়ে রাতে ফিরলাম বাড়ি।
বাড়িতে এসে দেখি টিপটাপ বাতি,সারা বাড়ি ডেকোরেশন করা।
কার বিয়ে আমাদের বাড়ি?তখন মনে পড়ল আমার বিয়ে।নিজের বিয়ে আর আমারি মনে নাই?
রুমে ঢুকতে যাব,সেই সময় ছোট ভাইরা সব টেনে নিয়ে গেল।কি আর করব,বাধ্য হয়ে যেতেই হলো।গিয়ে দেখি বাবা-মা সবাই কাজে ব্যাস্ত।

আর ব্যাস্ত থাকবেই না কেন?কাল তো আমার বিয়ে,কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমার না অন্য কারো বিয়ে।এটা বিয়ে?রাগ করে আর সেখানে থাকলাম না,

দ্রুত চলে এলাম সেখান থেকে।রুমে ঢুকে ভেতর থেকে আটকে দিলাম দরজা।
আজ বড্ড তিথির কথা মনে পড়ছে,এ পর্যন্ত সেই একমাত্র মেয়ে ছিলো আমার জীবনে।আমি আমার পাশে আর কাউকে মেনে নিতে পারিনি।

আর প্রেম নাকি পাপ কাজ।এতে একরাত কাছে পাওয়ার লোভটা সব সময় মনের মাঝে বিরাজ করে।

হয়ত মেয়েটি তার সর্থের জন্য তাকে কাজে লাগায় “ভালোবাসা” নামক বস্তুটির মধ্যমে।পক্ষান্তরে ছেলেটাও হয়ত

কোন এক মত্লব নিয়ে রিলেশন তৈরি করে।তাই মনকে শক্ত করে “বিয়ে” করব ভাবছিলাম।তবুও তিথি আমার মনের মনি কোঠায় আছে এবং থাকবে।
.
একটু সকালেই উঠলাম,কারন সকালে উঠলে মনটা ফ্রেস থাকে।মস্তিষ্ক শান্ত থাকে।
সকালে উঠে ব্রাশ হাতে নিয়ে সেই কুয়াশা মাখা,শিশির ভেজা সকাল দেখতে বের হলাম।
.
আধা ঘন্টা পর শিমুল আসল(ছোট ভাই)।এসেই বলছে,
–“ভাইয়া চাচ্চু ডাকছে তুমি চলো!
তার পর শিমুল কে কোলে নিয়ে বাড়িতে চলে গেলাম।গিয়ে দেখি সবাই কাজ করছে।বাবা,মা,চাচ্চু।দেখলাম মামাও আসছে,

সেও কাজে হেল্প করছে আব্বুকে।
গিয়ে জানতে পারলাম আমার নাকি গোসল করতে হবে।এবং গোসল করে রেডি হয়ে পাশের গ্রামে যেতে হবে।

আমি ভাবছি পাশের গ্রামে কার বাড়ি যেতে হবে।বিয়ে বাড়িতে সবাই রেডি।হৈ হৈ করছে বিয়ে বাড়ি।ছোট ভাইরা গায়ে রঙ মেখেছে,

সবাই কি আনন্দ করছে।ইচ্ছা আমারও করছে,উঠানে গিয়ে লুঙ্গি ডান্স মারি।কিন্তু বিয়েটা যে আমার।লুঙ্গি ডান্স মারলে কেমন দেখায়?
.
রেডি হয়ে বাইরে বের হয়েছি।মামা সেই মুহুর্তেই আমার সামনে এসে বলছে,
–“কিরে তোরিয়?এসব পড়েছিস কেন?
আমিত অবাক,মামা এসব কি বলে?এসব পড়ব না নাত কি পড়ব?
–“কেন মামা কি পড়ব?
–“হাইরে গাধা,বিয়ে করতে যাবি আর বলছিস কি পড়ব?যা পান্জাবি পড়ে,মুকুট পড়ে আয়।
হ্যাঁ এখন বুঝতে পারলাম,আমি বিয়ে করতে যাচ্ছি।মামাতো ভাইকে ডেকে দিলো মামা।তার পর রুমে গিয়ে বের হলাম।একজন খাটি বর এর সাজে।
তার পর রওনা দিলাম বিয়ে বাড়ির উদ্দশ্যে।শুনেছিলাম পাশের গ্রামে বিয়ে।তাই পায়ে হেটে যেতে হচ্ছে।বিয়ে করব ভাবছিলাম,

মাইক্রোতে উঠে।কিন্তু নিজের দু পায়ের ছাইকেল চালিয়ে যেতে হবে এটা বাপের জন্মেও ভাবিনি।
.
আধা ঘন্টা লাগল সেখানে পৌছাতে।কারন গ্রামের বিয়েতে রাস্তায়ও গেট বাধা হয়।পাকা বাঁশ দিয়ে।টাকা না দিলে ছাড়াছাড়ি নাই।

তাই বাধ্য হয়েই টাকা দিতে হয়।ছোট বেলায় এমন আমি অনেক করেছি।বকাও খেয়েছি বাবার মুখে এর জন্য।তাই ইটকেলের পরক্ষে পাটকেল।
.
সব ঘনিয়ে পাত্রির ঘরে বসে কবুল বলব এমন অবস্হায়।কোন ষ্টেজ এর ব্যবস্থা করা হয় নাই।কি ফকিন্নি মার্কা বাড়িতে বিয়ে করছি আল্লাহই জানে?
অতঃপর মুল্লা কিছু সুরা বলতে বলল।গটগট করে বলেও দিলাম।এখন কবুল বলার পালা।আমার ভয় করছে,

তার সাথে লজ্জা আষ্টে পিষ্টে ধরে রেখেছে।খালোতা ভাইগুলাও খেপাচ্ছে।রাগ তখন মগজে চলে এলো।বলে দিলাম গট গট করে,

কবুল কবুল কবুল,মনে হয় ৫বার বলেছিলাম।তাইত বিয়ে না করা বউটা পর্যন্ত হেসে দিলো।কি হাসি,

মনে হচ্ছিলো দাঁত কয়টা ঘুসি মাইরা ফেলে দেই।কিন্তু বউত।দাঁত ফেললে আমারি ডাক্টার খরচ চালাতে হবে।মায়া দয়া একটু করলাম।
.
বিয়ে করে বাড়ি ফিরছি,সেই নিজের পা হেটে।যা স্বপ্ন ছিলো তা আর হলো না।বাড়ি এসে অনেক্ষন আদিক্ষেতা হলো।

তার পর নিজের বাসর ঘরে।কিন্তু আমি আফসোস করছি এই ভেবে,আমি আমার বউটারে এখনও দেখি নাই।

সত্যিই কি আমি বিয়ে করলাম?ধূর আমিইত বিয়ে করলাম।
.
বাসর রাতে এসব ভাবছি,কি আজব ছেলে আমি।হঠাৎ কেউ আমায় ছালাম দিলো।আমি তখন বললাম,
–“থাক এসব আদিক্ষেতা না করলেও চলবে।
তার পর বউ ঘোমটা খুলল।আমি একটি শক খেলাম।আমি কারে বিয়া করলাম?এটা না তিথি।
–“এই তুমি,মানে এটা সম্ভব কি করে?তোমার না বিয়ে……!!
–“আমার বিয়ে হয় নাই।সেদিন কার ঘটনার পর আমার অনেক বদনাম ছড়ায়।তাইত আমাদের বদনাম

ঢাকতে তোমার বাবা আমার বাবাকে কথা দিয়ে যায়,তার পুত্রবোধু তিনি আমাকেই করবেন।
–“তাহলে আমি যে শুনছেলিম,তোমার বিয়ে হয়ে গেছে?
–“তোমাকে ফিরে আনার জন্য একটি চেষ্টা।কিন্তু তবুও অভিমানটা ভাঙল না।
–“তবে অভিমানটা করে বেশ ভালোই করেছি।নিজের পায়ে দাড়িয়েছি।এবং বিয়েও করেছি,নিজের সেই চির চেনা মানুষটাকে।
তার পর বেশ শক্ত করে তিথি আমায় জড়িয়ে ধরল।
.
–“তার পর কি হলো নানু?
তার পর সেই রাজ কন্য ভালো করে সংসার করতে শুরু করল,তার রাজ পুত্রকে নিয়ে।
এতক্ষণ নাতিদের গল্প শুনাচ্ছিলাম।ডাইরীতে লেখা শেষ পাতাটি আর খুললাম না।কারন সেখানে রয়েছে কিছু বিষন্নতার ছাপ।

হেড়ে যাওয়ার গল্প।
.
তিথির সাথে বিয়ের পর আমাদের একটা মেয়ে হয়।এবং মেয়ে হওয়ার সময় তিথি আমাকে ছেড়ে চলে যায়।সেই না ফেরার দেশে।
আমাকে একা রেখে।ফিরে পেয়েও আজ হাড়িয়েছি।তবুও যে পেয়েছিলাম আমার জীবনে একটি সকালের মুহুর্তে।

পেয়েছিলাম জীবন সঙ্গিনি হিসেবে।তবে এখন নেই।তবে হাড়িয়ে থাকার মাঝে অনেক ভালোবাসা থাকে।

রাতে শুবার সময় তাকে মনে করা।খাবার সময় মনে হওয়া,এককথায়, প্রিয় মানুষগুলো সব সময় হৃদয়ের একপাশে অবস্হান করে।

গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত