—চাকরিটা আপনার হয়ে যাবে, একরাতের জন্য আমার কাছে আসুন, নাহয় বেশি না দুইলক্ষ টাকা দিন।
— দেখুন স্যার, এভাবে বলবেন না, আমার চাকরি টা খুবই প্রয়োজন।
— সেজন্যই তো বলছি, একরাতের ব্যাপার।
— আপনি আমার বাবার বয়সী ছিলেন। এটা আপনার কাছে আশা করিনি স্যার, বাই।
অফিস থেকে বেরিয়ে আসলো সাবিহা। চোখে জল ছলছল করছে, যেকোন সময় বেরিয়ে আসবে। বড় আশা নিয়ে এইখানে এসেছিলো সে, বাবার বয়সী একজন মানুষ এসব বললো কি করে? মনে হতাশা নিয়ে বাড়ি ফিরলো সে।
–কি রে আজও কিছু হলো না? আমি জানতাম হবে না। কি দরকার ছিলো এতো পড়ার? এতো টাকা খরচ করে পড়ে আজ সার্টিফিকেট গুলো হয়ে গেছে কলাপাতা।
— আম্মা তুমি চুপ করো তো! একদিন হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। চাকরি এমনিতে পেলে করবো, কিন্তু ঘুষ দেবোনা, ইজ্জত ও বিক্রি করবো না।।
— পাড়ার সবাই কানাঘুষা শুরু করছে, এতো লেখাপড়া করে কি হলি, না জর্জ না ব্যারিষ্টার, সামান্য প্রাইমারী টিচার ও হতে পারছিস না।
— আচ্ছা আম্মা, চাকরি কি আমার দোষে পাচ্ছি না? আমি কি চেষ্টা করছি না? মোড টা অফ করে দিয়েছো।
সারাদিনের ক্লান্তিতে আর মায়ের কথায় মন খারাপ করে সাবিহা শুয়ে পড়লো। মনে তার চিন্তার ঝড় বইছে, কি করবে সে? এদিকে বয়সটাও শেষ হয়ে যাচ্ছে, বিয়েটাও হচ্ছে না। “নাহ্ ও শুনেছে মেধা দেখে চাকরি দেওয়া হয়। ও যদি চাকরি এক্সাম এ বা ভাইভা বোর্ড এ সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট করতে পারে তাহলে চাকরি হয়ে যাবে। আবারও নতুন উদ্যমে পড়তে বসলো, মনে তার নতুন করে আশা বাঁধতে লাগলো। সকালবেলা দিনা আপুর মেয়ে পড়াতে গিয়ে শুনলো উনার কলেজ লাইব্রেরিয়ান পদে সামনের ৫ তারিখ পরীক্ষা। নাহ উনি চিন্তা করছেন না, পড়া নিয়ে মাথাব্যথা নেই তার, আশ্চর্য্য!!
—- আপু পড়তে বসেন না? পরীক্ষা কি দিবেন?
— পড়তে হবে না, আমার তো সব ব্যবস্থা হয়ে আছে।
— মানে? আপনি একা পরীক্ষা দিবেন?
— নাহ্ আরও দশজন দিবে।
—- তাহলে?
—- আমার টাকা দেওয়া হয়ে গেছে।
ম্যানেজম্যান্ট কমিটি জানে আমার কথা। যাবো সহজ প্রশ্নগুলো ডাকবে, আর না পারলেও আমার নিয়োগে কোন সমস্যা হবেনা সাবিহার মনে ভাবনা তাহলে অন্য দশজন কষ্ট করে পড়ে এসে পরীক্ষা দিয়েও কিচ্ছু হবে না?। কত আশা করে এসে দিচ্ছে পরীক্ষা! আর পরীক্ষার আগেই কিনা নিয়োগ দেওয়া হয়ে গেছে, কে ঠিকবে তা জানা!! মনে তীব্র আক্রোশ নিয়ে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বাড়ি ফিরলো।
—- কি রে মন খারাপ কেন?
— না দাদী, কিছু না।
— চাকরি বাকরি কিছু পাইছিস? বাংলাদেশের সব পড়া তো পড়ে ফেলেছিস! বড় একটা চাকরি পাওয়া উচিৎ।
— দেখা যাক দাদী, দোয়া করিও। তারপর পাশের বাড়ির দাদীর প্রশ্নযুক্ত কথা থেকে বাঁচতে তাড়াতাড়ি ঘরে প্রবেশ করলো।
–আম্মা জানো আজকাল পরিচিত কেউ না থাকলে, চাকরি হয়না। আমরা গরিব মানুষের পরিচিত কেউ নাই, তাহলে হয়তো আর চাকরিও হবে না। যেখানে ইচ্ছা বিয়ের ব্যবস্থা করো, রিকসাওয়ালা হলেও আমি রাজি আছি। তারপর চাপা কান্না ঢেকে রুমে দৌড় দিলো। বিকালবেলা..
— পাশের বাড়ির চাচীর ভাই এসেছেন। শুনেছি তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বলেছেন বিকালে আসবেন তিনি।
—- তো আমি কি করবো আম্মা? আমাকে বলছো ওই মানুষের সামনে যেতে?
— গেলে কি? তোর নানাই তো। আর আত্মীয়দের মধ্যে কেউ খারাপ চিন্তা করতে পারবে না, চাকরিটা হয়ে গেলে আর সমস্যা নেই। বিকালবেলা নানা নামক মানুষটি আসলেন, সাবিহা চা নাস্তা নিয়ে উনাকে সালাম দিলো।
— কেমন আছো নানুভাই?
–আলহামদুলিল্লাহ, আপনি কেমন আছেন?
— ভালো আছি, শুনলাম তুমি নাকি পড়াশোনায় অনেক ভালো, কিন্তু চাকরি পাচ্ছো না?
— এটাতো ভাগ্যের ব্যাপার, ভাগ্য ভালো না থাকলে তো চাকরি পাবো না।
— কে বলেছে ভাগ্য?
চেষ্টা তো সাথে করতে হবে। সাবিহা আর কিছু বললো না, এদের সাথে তর্ক করা বৃথা। তারপর দেখা গেলো উনি সকাল বিকাল আসা শুরু করলেন। সাবিহা কিছুটা ইসলাম মানে তাই সামনে আসা থেকে বিরত থাকলো। উনি বললেন, সামনে একটা পরীক্ষা আছে, ও যেন তার ফোন নাম্বারটা দেয় যাতে যোগাযোগ করতে পারেন। ভালো মানুষ মনে করে সাবিহা ফোন নাম্বারটা দিলো, তারপর থেকে সকাল বিকাল চব্বিশঘন্টা তিনি ফোন দিতে থাকলেন। আর এমন কিছু কথা বললেন যে সাবিহা লজ্জায় কাউকে বলতেও পারলো না। একদিন ওই মানুষটি তার সাথে সরাসরি কথা বলার জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে রইলো। সাবিহা ও সুযোগ হাতছাড়া করার পাত্রী নয়।
—দেখো সাবিহা তোমাকে আমার ভালো লাগছে, আমি একটু বয়স্ক হয়ে গেছি, তাই বিয়ে করবে না। আমরা অন্য একটা সম্পর্ক তো রাখতে পারি।
— দেখ বুড়ো, অনেক বলেছিস তাও আমি তোকে ইজ্জত দিয়েছি, আর নয়। আমার মতো বড় দুইটা মেয়ে আরও তিনটা মেয়ে। পাঁচ মেয়ের বাবা হয়ে তোর লজ্জা করলো না আরেকটা মেয়েকে এমন কথা বলতে? তোরা আমাদের মুরব্বি ছিলি এসব শিখবো তোদের কাছ থেকে? একবার মেয়েদের কথা চিন্তা করিস, কারন প্রত্যেকেই তার কর্মফল ভোগ করতে হবে। তারপর দ্রুত চলে আসলো। যাক একটু তো বলতে পারছি, লজ্জা থাকলে বুড়ো আর কাউকে কিছু বলতে পারবে না।
বিসিএস পরীক্ষা, ব্যাংক পরীক্ষা দিলো, সাথে প্রাইমারী, নিবন্ধন তো আছেই। কিন্তু এত্ত ভাল ছাত্রী হওয়ার পর ও সাবিহা চান্স পেল না। বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে ওয়েটিং লিস্টে রেখে দিলো। পাড়া থেকে শুরু করে বাড়ির মানুষ ও বলা শুরু করলো। মেয়েটা কচুর পড়া পড়েছে, একটায় ও পাশ করেনি। চাকরি জীবনেও হবেনা। মা বাবা বলতে লাগলেন গরিব ঘরের একজন দেখে বিয়ে দিয়ে দিলে আজ অন্তত একটা নাতি-নাতনীর মুখ দেখতাম। সাবিহা শুনে আর কাঁদে, আজ তার কিচ্ছু হলো না। সত্যি বান্ধবীদের মতো প্রবাসীদের বিয়ে করলেই ভালো ভালো হতো, এখন পাড়া প্রতিবেশী আর ঘরের লোকের কথা শুনতে হতো না।
মনের কষ্টে সারা বিকাল কাঁদলো সে। তারপর সন্ধ্যায় ঘুম ভাঙতেই চাকরির খবর পত্রিকা নিয়ে বসলো সে। একটা এনজিওতে চাকরির অফার আছে সরাসরি যোগাযোগ করতে বলেছে। আগেও এরকম পেয়েছিল ও সবাই টাকা চায়, চাকরির বাজারে মানুষ বুঝে গেছে বেকাররা কত অসহায় তাই টাকা চেয়ে, অফার দিয়ে বিভিন্ন ভাবে মানুষ মানুষ কে ঠকায়। “এটাতে যেহেতু টাকা চায়নি, গিয়ে দেখতে পারি।” মনে মনে ভাবলো সে। কিন্তু যাওয়ার পর শুনলো সে এই চাকরির জন্য শারীরিক ভাবে ফিট নয়। আজকাল মেধার প্রয়োজন নেই, টাকা, পরিচিত মামা, আর শারীরিকভাবে ফিট হলেই চাকরি পাওয়া যায়! শিক্ষা তো কোন কলাপাতা!!
ঘরে এসে শুনলো বাবার অসুখটা বেড়ে গেছে, বাবা আজ ছয়মাস হলো ব্রেইন স্ট্রোক করে প্যারালাইজড হয়ে পড়ে আছেন। সঠিক চিকিৎসা হচ্ছে না, যে ঘরে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় সে ঘরে উন্নত আর সঠিক চিকিৎসা! রং তামাশার দুনিয়ায় আর কত তামাশা বাকি!!
— আপু, খাতা কলম কিচ্ছু নেই, স্কুলে গেলে স্যার মারেন। ছোটভাইটা পাশে এসে বললো।
— আমার তো জুতাই নেই, কলেজে যাবো কি করে? স্যান্ডেল পরে কি কলেজে যাওয়া যায়? সিম্মি ও বোনকে বললো।
— কালকে খাতা কলম এনে দেবো ভাই, আর তুই? কলেজে যাওয়ার কোন দরকার নেই, আমি পড়ালেখা করে কোন জর্জ হয়ে গেছি? মেয়েদের এতো পড়তে নেই। তারপর বাবার পাশে গিয়ে বসলো, হাতে পায়ে একটু তেল ম্যাসাজ করে দিলে উনার আরামবোধ হবে সেই আশায়। পাশের রুম থেকে কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে, সিম্মি তার সূরে কাঁদছে আর বকবক করে যাচ্ছে, শাওন তাকে শান্তনা দিয়ে বলছে, “আপু কালকে নদী থেকে দুই বস্তা বালু তুলে বিক্রি করে তোমার জুতা এনে দেবো, তখন তুমি কলেজে যেতে পারবে, আর কেঁদোনা!” রান্নাঘর থেকে রান্নার সুভাস আসছে। নাহ্ আর খেতে ইচ্ছা করছে না। পেটে রাজ্যের খিদে নিয়ে একগ্লাস পানি খেয়ে বাবার পাশেই সাবিহা শুয়ে পড়লো।
— আপু, আপু, নানু এসেছেন আমাদের উনার বাসায় নিয়ে যেতে। দেখোনা কত কিছু এনেছেন, আমাকে খাতাকলম কিনার টাকাও দিয়েছেন। আপুকেও জুতা কিনার টাকা দিয়েছেন।
— কোন নানু? সাবিহা রুমে পড়ছিল, তখন শাওন দৌড়ে এসে কথাগুলো বললো।
—- চিনো নাই? ওইযে অফিসে তোমার সাথে দেখা হয়েছিল ওই নানু, চলো না গিয়ে দেখবে।
— আচ্ছা চলতো, গিয়েই দেখি।
গিয়ে দেখলো ফখরুল সাহেব বসে আছেন। ওই বেটার ভাবগতি সাবিহার কাছে ভালো লাগেনি, তাই সালাম দিয়েই সরে আসলো। করেছে কি বুড়ো টা! সাদা চুল দাড়ী সব কালো করে ফেলেছে! আরও কত কি করবে। এদের কি মৃত্যুর ভয় নেই।
— রেডি হ, ওরাও রেডি হচ্ছে, চাচাজান তোদের উনার বাসায় বেড়াতে নিতে এসেছেন।
—- দেখো আম্মা, আমি যাবো না। এই বুড়োটাও অন্যদের মতো কারেক্টার লেস।
— আমি অতশত বুঝি না, জানিস তোর বাবার সব চিকিৎসার খরচ তিনি দিবেন বলেছেন, তোর চাকরির একটা ব্যবস্থা করবেন। এই দুর্দিনে আমাদের কাছে তিনি ফেরেশতা হয়ে এসেছেন।
— আম্মা উনাকে মানুষ বললেও ভুল হবে, ফেরেশতা বলে গোনাহ করিও না।
— যা রেডি হ গিয়ে, আমার সাথে তর্ক করিস না।
মা রেগেমেগে বললেন। অবশেষে সাবিহা বাধ্য হয়ে রেডি হয়ে গেলো। সারাক্ষণ নানু নামক ব্যক্তি তাকে ইশারা করলেন উপরতলায় যাওয়ার জন্য, ভয়ে সে সেদিকে পা ও বাড়ালো না। পরে অনুরোধ রাখতে গিয়ে ভাইবোনকে সাথে নিয়ে উপরে উনার রুমে আসলো, তিনি সিম্মি আর শাওনকে টিভি দেখতে বসিয়ে তাকে লাইব্রেরি রুমে তার সংগ্রহ শালা দেখতে জোর করে নিয়ে গেলেন। সে যখন মগ্ন হয়ে বইগুলো দেখছিল তখন তিনি ওকে পেছন থেকে ধরার চেষ্টা করতেই সে সিটকে বেরিয়ে এলো।
— কাজটা কিন্তু ভালো করলেনা তুমি?
— আপনি এসব কি করছেন? আপনি আমার নানার বয়সী, আমার তিন সিঁড়ি বড়, আপনাকে আমি সম্মান করি, আপনার কাছ থেকে কি এসব শিখবো?
— দেখো আমাকে এসব বলতে এসো না। আমার ছেলেমেয়ে বউ সবাই আমেরিকায় থাকে, ওরাও তো ওখানে লিভ টুগেদার করে।
— সেটা আপনাদের কালচার, এতে আমি কি করবো? আপনার স্ত্রী রেখে এসব চিন্তা করতে লজ্জা করে না?
— কিসের লজ্জা? সবার জীবনে চেইঞ্জ এর দরকার আছে, তুমি কি এক খাবার প্রতিদিন খেতে পারবে? এক পুকুরে প্রতিদিন গোসল করা যায় না, মাঝে মাঝে স্রোতস্বিনী নদী প্রয়োজন হয়।
— ছিঃ ঘৃণা লাগছে আপনার কথা শুনতে। আমি আর এক মুহুর্ত ও এখানে থাকবো না। আমাদের বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।
— তোমার বাবার কথা চিন্তা করো, পরিবারের কথা চিন্তা করো। আমি এতো দেবো যে তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।
—- হালাল পথে এক টাকা তেও শান্তি আছে, আর শরীর বিক্রি করে বাবার চিকিৎসা করার চাইতে তার মৃত্যুই শ্রেয়।
— আমি না চাইলে তোমরা যেতে পারবে না। আমার বাসায় আর অন্যকোন লোকের বসবাস নেই, সুতরাং কেউ কিছু শুনতে পারবে না।
— আর আপনি যে ভালো মানুষের মুখোশ পরে আছেন সেটাও থাকবে না। আমাকে ভালো মেয়ে ভাবার কোন প্রয়োজন নেই, আমি কি আপনিও সেটা জানেন না। ভালোয় ভালোয় গাড়ি ডেকে দিন।
বাড়ি ফেরার পর সাবিহা তার মাকে ধরে অনেক কাঁদলো। কিন্তু মা কিছুই বললেন না, অনড় হয়ে বসে থাকলেন। আজ যেন চোখের পানিগুলোও শুকিয়ে গিয়েছে। সে রান্না করে সবাইকে খাওয়ালো, ভাইবোনকে পাশে নিয়ে অনেক বুঝালো, বাবার গায়ে তেল ম্যাসাজ করে দিলো। শেষে মাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমালো, কিন্তু সকালে তার উঠার নাম নেই, অনেক ডাকাডাকির পর যখন উঠলো না তখন গিয়ে ধাক্কা দিতেই দেখেন সম্পূর্ণ শরীর শক্ত বরফ হয়ে আছে । তিনি জোরে চিৎকার দিতেই সিম্মি আর শাওন ও দৌড়ে আসলো। সিম্মি পালস চেক করে কাঁপতে কাঁপতে সেখানেই বসে পড়লো।
—- আম্মা আপু মারা গেছে।
— নাআআআআ, এ হতে পারে না। মা রে তুই একি করলি? মায়ের চিৎকারে আকাশ পাতাল ও বোধহয় কাঁপলো।
সিম্মি টেবিলে চাপা দেওয়া একটুকরো কাগজ দেখে হাতে নিয়ে পড়লো “আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী এই সমাজ ব্যবস্থা, এই সিস্টেম, কিছু ক্ষমতালোভী স্বার্থান্ধ মানুষ। আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম, সুন্দর পৃথিবীর বুকে আরও কিছুদিন পরিবারকে নিয়ে থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দারিদ্র, পড়ালেখা আর চাকরি নামক অভিশাপ আমাকে বাঁচতে দিলো না। শেষ অনুরোধ আমার দেহটা যেন পোস্টমর্টেম করা না হয়।”
সবকিছুই স্তব্ধ হয়ে গেলো, সেই হায়েনারাই আবার পরিবারকে শান্তনা দিতে আসলো। আর সিম্মির জন্য সুযোগ খুঁজতে লাগলো। কিন্তু সিম্মি তেমন মেয়ে নয়। মন শক্ত করে তাদের ঝেটিয়ে বিদায় করলো। আর নতুন সংগ্রামে পা বাড়ালো। তারও পনেরদিন পর বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জয়েন লেটার আসলো। সাবিহা বিসিএস পরীক্ষায় মেধা তালিকায় পাশ করেছে, সে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে চান্স পেয়েছে। কে করবে এই চাকরি? এটা কি আরও কিছুদিন আগে আসতে পারলো না?বা সাবিহা কি আরও কিছুদিন বেঁচে থাকতে পারলো না?। কে দায়ী এসবের জন্য? একটা ফুলের মতো নিষ্পাপ জীবন ঝরে যাওয়ার জন্য?