আমি আশিক।একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করি।ভাল বেতন পাই।জীবনে সবকিছু আছে শুধু একজন ছাড়া।যাকে আমি আমার জীবনে সবচেয়ে বেশি ভালবেসেছিলাম।নুসরাত জাহান মাঈশা।আমার ভালবাসার মানুষের নাম।সবার জীবনের মতো আমার ও একটা গল্প আছে।সময়টা ছিল ২০১৩।তখন আমি অনার্স ২য় বর্ষে পড়ি।
একদিন ভার্সিটিতে দাঁড়িয়ে বন্ধুর সাথে কথা বলছিলাম।তখন আমর চোখজোড়া থমকে যায় এক রমণীর দিকে।একটা মানুষের চোখ যে এতটা সুন্দর হতে পারে তাকে না দেখলে কখনোই বুঝতে পারতাম না।সৃষ্টিকর্তা যেন জগতের সকল সৌন্দর্য তার মধ্যে ঢেলে দিয়েছেন।আমার নির্লজ্জ চোখ দুটিকে শত শাসন করেও থামাতে পারি নি।তার সৌন্দর্য দেখার নেশায় বিভোর ছিল।কখন যে আমার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে টের-ই পাইনি।পরে তার সাথে দেখি আমার ক্লাসমেট ফারিন।
ফারিন:হাই,কিরে কি অবস্থা?
আমি:ভাল।তর?
ফারিন:ভাল।এটা আমার কাজিন মাঈশা।
আমি:হ্যালো।
মাঈশা:হাই।কেমন আছেন?
আমি:ভাল।
এভাবেই আমাদের প্রথম কথাবার্তা শুরু হয়।তারপর আমি ফারিন কে সব কথা খুলে বলি।ফারিন ই আমাকে ওর সম্পর্কে সব বলেছিল।মাঈশা ইন্টার ২য় বর্ষে পড়ে।কি পছন্দ,কোন কলেজে পড়ে এসব।ফারিন কে দিয়েই আমি মাঈশাকে আমার মনের কথা জানিয়েছিলাম।প্রায় ৬মাস পর মাঈশা আমার ভালবাসা গ্ৰহন করেছিল।এরপর শুরু হয়েছিল আমাদের ভালবাসার নতুন অধ্যায়।রাগ,অভিমান,কেয়ারিং সবকিছু মিলিয়ে ভালই চলছিল।কিন্তু কথায় আছে বেশি সুখ সবার কপালে সয় না।একদিন মাঈশার সাথে আমার দেখা করার কথা ছিল।কিন্তু এদিন বাসায় মামারা এসেছিল।মামাত বোন বলেছিল তাকে শহর দেখাতে।তারপর আমি মাঈশাকে দেখা করতে মানা করে দেই।ওকে আমি বলেছিলাম বাসায় কাজ আছে।তারপরদিন ঘটলো বিপত্তি।
মাঈশা কেমন আছ? আমার ভাল থাকা না থাকা নিয়ে তোমার কি মানে এভাবে কথা বলছ কেন? কিভাবে বলব?কাল তোমার বাসায় কাজ ছিল।আমার সাথে দেখা করার সময় নেই।কিন্তু অন্য মেয়ের সাথে ঠিকই ঘুরতে পারো।আমি এখন পুরনো হয়ে গেছি। তুমি ভুল বুঝছ।আমার কথাটা একবার শোন।
ও শুনেনি।সেদিন ও চলে গিয়েছিল।আর যোগাযোগ করেনি আমার সাথে।অনেক চেষ্টা করেছি তার সাথে যোগাযোগ করার কিন্তু লাভ হয়নি।ফারিনকে দিয়ে খবর পাঠিয়েছি কিন্তু ও তবুও একটাবারের জন্য আমার সাথে দেখা করেনি।আমি প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিলাম।কত রাত যে নির্ঘুম কাটিয়েছি তার কোন হিসেব নেই।তার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম তবুও তার রাগ কমেনি।তারপর আমি এই অভিশপ্ত শহর ছেড়ে নতুন শহরে পাড়ি জমাই তার কষ্ট ভুলে থাকার জন্য।জানিনা কতটুকু পেরেছি তবুও চেষ্টা করে যাচ্ছি।
তারপর হঠাৎ ৪ বছর পর সেই চিরচেনা চোখজোড়ার সাথে দেখা হয়ে যায়।কখনো ভাবতে পারিনি এই পৃথিবীতে আবার তার সাথে দেখা হয়ে যাবে। কেমন আছ? যেভাবে রেখে চলে এসেছিলেন। আমাকে বলবে না কেমন আছি? আপনি হয়তো ভালই থাকবেন। এভাবে কথা বলছ কেন?আর আমাকে আপনি করে বলছ কেন?
সময়ের সাথে সাথে আপনি বলার অধিকার টুকুও হারিয়ে ফেলেছি।আমার জীবনে যে সময়টা আপনার প্রয়োজন ছিল তখন থাকেন নি।চলে গিয়েছিলেন।আপনি যাওয়ার পর আমার সব শেষ হয়ে গিয়েছিল।কিন্তু মার অনুপ্রেরণায় আমি এখানে।আমার পরিবার আমাকে সহায়তা করেছে। আমাকে কি আর একটা সুযোগ দেয়া যায় না।
এখন আপনাকে ছাড়া আমি একা থাকতে শিখে গেছি।আমি আর চাইনা পুরনো সব স্মৃতি মনে করতে।জীবনে নতুন কাউকে খুঁজে নিবেন। I wish আমার থেকে বেশি আপনাকে ভালবাসবে।
আর দাঁড়াইনি,মায়ায় পড়তে হবে।আমাকে আবার সব নতুন করে শুরু করতে হবে।ভাবছি মাকে বলব পাত্রী দেখতে।মাকে আর কষ্ট দেওয়া যাবে না।