সুখের ঠিকানা

সুখের ঠিকানা

কেমন আছো..?? ‘

শব্দটা শুনে সামনের দিকে তাকাতেই আমি একটু অবাক হয়ে গেলাম। সম্পর্ক ছিন্ন এর প্রায় ২৯বছর পর আবার ও ওকে দেখলাম।
কলেজ লাইফে ও আমি ভালোবাসতাম।। শুধু ভালোবাসতাম বললে ভুল হবে পাগল এর মতো ভালোবাসতাম। কলেজের সবচেয়ে বেস্ট জুটি ছিলো আমার আর মিম এর।। আমাদের বন্ধুরা আমাদের মাঝে মাঝে বলতো,

” ইস.. এতো ভালোবাস যে কই পাস তোরা।। একটু কমায় রাখ নাহলে বিয়ের পরে দেখবি আর ভালোবাসা নাই ”

আমরা কথাটা শুনার পরে বড্ড অহংকার নিয়ে বলতাম, ‘ উহু না। আমাদের ভালোবাসার কমতি হবে না কখনো। ‘

সবাই বলতো দোয়া রইলো। আমার আর মিম এর সম্পর্ক ভালোই চলছিলো। আমরা কলেজ শেষ করার পর ভার্সিটি ভর্তি হলাম। ভাগ্যক্রমে আমাদের এক শাখাতেই সিট পড়েছিলো। আমাদের ভালোই চলছিলো। শেয়ারিং, কেয়ারিং, রোমেন্স (!) সব মিলিয়ে এক সুন্দর সময় কাটছিলো আমাদের। ভার্সিটি শেষ হবার আগেই চাকরী পেয়ে গিয়েছিলাম। যার কারনে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম। মিম এর পরিবার আর আমার পরিবার ও রাজী ছিলো। যার কারনে আমাদের কোন সমস্যা হয় নি।
……….. বিয়ে হয়েগেলো আমাদের।। মিম নিজে সবসবয় স্বাধীন থাকতে চেয়েছিলো।। চেয়েছিলো চাকরী করতে৷। আমি না করি নি…! কেনো না করবো.? চাকরী করলে ক্ষতি কি? পড়াশোনা করেছে তো চাকরীর জন্যই। বিয়ের পরে আমাদের সম্পর্ক যেনো এক নতুন মাত্রা পেয়েছিলো।৷
‘ বিয়ের ৬ মাস এর মাথায় ও চাকরী পায়। তখন ও ঠিক ছিলো। কিন্তু চাকরীর ২ মাস এর মাথায় আর বিয়ের ৮ মাস এর মাথায় (,) ওর ভিতরে পরিবর্তন আসতে থাকে। আফিস থেকে এসে আমার সাথে কথা বলতো না। ফোন নিয়ে ব্যাস্ত থাকতো। আমি কথা বললে রেগে যেতো।। আমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করতে শুরু করলো। আমি ওকে কিছু বলতে পারতাম না। কেনো? সেটা আমি জানতাম না। চুপচাপ সহ্য করে নিতাম।

বিয়ের ১বছর ২ মাস ১৩ দিন পর….

আমি অফিস থেকে এসে বসে আছি। অপেক্ষা করছি মিম এর আসার। ওর সাথে আজ কথা বলতেই হবে। কারন ওর আর আমার সম্পর্কটা ঠিক নেই। বাজে হচ্ছে দিন দিন। মিম বাসায় আসলো রাত ১২ টা ১৬ মিনিট এ। মিম বাসায় আসার পর মনে হল ও খুব ক্লান্ত। ও এসে আমার সাথে কথা না বলে সোজা ফ্রেস হতে চলে গেলো। তারপর এসে বিছানায় শুয়ে পড়লো। আমি তখনি প্রশ্ন করে বসলাম,

– কি হয়েছে তোমার? (আমি)
– কি হয়েছে মানে? (মিম অনেকটা রেগে বলল)
– তোমার ভিতর এত পরিবর্তন কেনো? গত বেশ কয়েকটা মাস ধরে..??
– রাকিব… প্লিজ। আমি অফিস থেকে এসে তোমার এই বকনকানি শুনতে চাচ্ছি না প্লিজ….
– আমার কথা গুলো তোমার কাছে বকবাকানি মনে হচ্ছে? আমার প্রশ্ন এর উত্তর তোমায় দিতেই হবে।
– হুম। বল কি উত্তর জানতে চাও তুমি। (উঠে বসলো মিম)
– তোমার এত পরিবর্তন কেনো? আমার সাথে আগের মত কথা বল না। আমার সাথে মিশো না। ঘুড়তে বের হও না। আমি কিছু জানতে চাইলে বল না। আমিবকি তোমায় কোন কষ্ট দিয়েছি? আমাদের টাকার অভাব নেই। তবুও তুমি চাকরী করছো। তুমি যা চাইতে সব তোমার কাছে আছে। তাহলে? কেনো এতো পরিবর্তন? কেনো??
-………. ( কোন কথা বলে নি মিম)……
– মিম তুমি মিথ্যা কথা বলো না আমি জানি। প্লিজ.?? Ans me..??

মিম সোজা উঠে গেলো। ওর ড্র‍্য়ারে কি জেনো খুজতে লাগলো। একসময় পেয়েও গেলো। এরপর ও আমার দিকে কাগজ টা বাড়িয়ে দিয়ে বলল,

– Good bye… (!) And best of luck…..

আমি পিছন থেকে ডাকেছিলাম, ‘ মিম! মিম! ‘ বলে কিন্তু ও সাড়া দেয় নি। চলে গিয়েছিলো। আমি কাগজ টা খুলে দেখি এটা ডিভোর্স লেটার! মিম আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে?? আমাকে? কিন্তু কেনো? ওর কিসের অভাব ছিলো? টাকার? নাকি অন্যকিছুর? ভালোবাসা ছিলো, পরিবারে সমস্যা ছিলো না কোন আর টাকার তো না ই। কারন আমাদের অর্থ সম্পদ ভালো ছিলো।

তারপর ওর সাথে আমার আর দেখা হয় নি। আমি একটু খোজখবর নিলাম ওর উপর। কিন্তু সেটা থেকে যা ফিডব্যাক আসলো সেটা শুনে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। মিম নাকি ওর অফিসের বস এর সাথে Affair এ জড়িয়ে পড়েছে। আর সেটা নাকি অনেকদিন ধরে। আমি শুনে অবাক হলাম আরও যে মিম সেখানে অবিবাহিত বলে চাকরী করছিলো! কিন্তু ও তো বিবাহিত ছিলো?

তাহলে কেনো? কেনো এত ছলনা করলো আমার সাথে? আচ্ছা মিম কে চাকরী করতে দেওয়াটা কি আমার ভুল সিদ্ধান্ত ছিলো? ভুল ছিলো ওকে স্বাধীনতা দেওয়ায়.?? (প্রশ্নের উত্তর টা সকল পাঠক’রা দিবেন)

এরপর পরিবার এর চাপে বিয়ে করেছিলাম। যাকে করেছিলাম তাকে আমি বেশি ভালবাসতাম না। কিন্তু সে আমায় অনেক ভালোবাসতো। তার নাম হলো ইতু। আস্তে আস্তে ইতু আর আমার সম্পর্ক টা স্বাভাবিক আট দশ টা সম্পর্কের মত হয়ে যায়। কতই বা কষ্ট দিবো ওকে অন্যজন এর কারনে?? ইতু আমার আগের বিয়ের কথাটা জানতো। তাই ওর সাথে নিজেকে মিলিয়ে নিতে সমস্যা হয় নি কোন।
আমি কল্পনা থেকে বাস্তবে আসলাম আমার দাদু ভাই এর কথায়।

– দাদাই, দাদাই… (আমাকে হালকা ধাক্কা দিয়ে বলল কথাটা)
– হুম। দাদুভাই বল। (আমি)
– ওই যে নানুটা তোমায় ডাকছে তো।
– না দাদুভাই। উনি অন্য কাউকে ডাকছে। আমাকে না। চল আমরা চলে যাই। দেরী হলে তোমা

গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত