মাসের শুরুতেই বাবার প্রশ্ন, ‘কিরে এ মাসে তোর টাকা কত লাগবে?
ছেলে চুপ করে যায়।কি উত্তর দিবে? গ্রাজুয়েশনের আগে প্রায়ই মিথ্যা বলে পাঁচশ বা একহাজার টাকা বাড়তি নিত।তখন কিছু বাড়তি টাকা নিতে পারলে কত আনন্দ,,কত উত্তেজনা!
অথচ এখন মাসের খরচের টাকাটাই যখন বাবা হাতে তুলে দেয় তখন ছেলেটা মাথা নিচু নিঃশব্দে টাকাটা হাতে নেয়।বিশাল একটা অপরাধবোধ মনটাকে চেপে ধরে।দম আটকে আসে।
বাবা বলেই হয়ত মুখ ফুটে বলে না,, ‘আর কত দিন নিবি? কিন্তু ছেলে ঠিকই বাবার মনের কথাটা পড়তে পারে।হাতে টাকা তুলে দিতে দিতে বাবাও ক্লান্ত।আর কতদিন নিতে হবে এভাবে,,আর কতদিন?
এ মাসে আরও কিছু বাড়তি টাকার দরকার ছিলো,,নতুন একটা চাকরীর ফর্ম কিনতে হবে।সেটার ব্যাংক ড্রাফট, পরীক্ষা দিতে যাওয়ার খরচ, নতুন আরো কয়েকটা একটা বই কেনা দরকার, আর,,
না,,ছেলেটা আর কিছু ভাবতে পারে না।সবকিছু ছেড়ে পালিয়ে যেতে ইচ্ছা করে কোথাও। যেখানে সমাজ নেই, চাহিদা নেই, মেয়ের বাবার কাছে যোগ্য হয়ে ওঠার তাড়না নেই।
যেখানে গেলে চোখের সামনে ভেসে উঠবে না বাবার ক্লান্ত মুখ, মায়ের ভেজা অথচ এখনও আশাবাদী দুটি চোখ।
ছেলেটা এসব ভাবতে ভাবতে হাঁটতে থাকে।মোবাইলটা বের সময় দেখতে গিয়েও থেমে যায়।সবকিছু ভুলে যেতে চায় সে।সবকিছ,
কিন্তু চাইলেই কি পারবে কি ভুলতে সবকিছু ? এই জীবন, অভাব, চাপ, যন্ত্রনা, আর সবেচেয়ে নির্মম সত্যটা,,
তার কোন রোজগার নেই, সে একজন বেকার।।