(১)
ভূল বুঝতে পারাটাই অনেক বড় কিছু,মানুষ মাত্রই ভূল করে,এবং সেই মানুষই ভূল করে।
ক্ষমা অতি মহৎ একটি গুন,যা সবাই করতে পারে না।স্বচ্ছ এবং সুন্দর মনের মানুষ ছাড়া ক্ষমা খুব কম মানুষই করে।
মানুষ নিজের চাহিদা পূরনের জন্য ভূল করে, অপর পাশের মানুষের চাহিদার মূল্য তখন তার কাছে থাকে না, তাই সে ভূল পথে বাড়ায়।
যখন ভূলটি বুঝে অনুতপ্ত হয়,তখন সে ক্ষমা চায়।
–
আজও আমার মনে পড়ে,জীবনে একটি খুব বড় ভূল করেছিলাম,আর সেই ভূলের ক্ষমা আমি পেয়েছিলাম না।
আজও সেই ভূলের জন্য কাঁদি,অনেক অনুতপ্ত আমি,কিন্তু সেই মানুষটিই যে আর নেই।সে এখন অন্য কারো।
–
(২)
২বছর আগের কথা→
তখন আমি ইন্টার ফাইনাল দিব, কিন্তু ম্যাচ এ থাকার জন্য টাকা এরেজমেন্ট করতে পারি নাই,
বাড়িরও খুব খারাপ অবস্হা, বাড়ি থেকে টাকা চাইলাম,বলল; টাকা’টা দিতে পারব না।
মনটা প্রচন্ড খারাপ হলো,কারন ম্যাচ এ না গেলে,পরিক্ষাটা দেওয়া হবে না।
বাড়ি থেকে কলেজ অনেক দূর, বাড়ি থেকে রওনা দিলে পরিক্ষা ধরা সম্ভব নয়, তাই ম্যাচ এই থাকতে হবে।
এদিকে আর দু’দিন সময় আছে পরিক্ষার।
তেমন কোন কাজিনও নাই আমার, যে তার থেকে টাকা ধার করে ম্যাচ এ যাব।
আর পরিক্ষাটা না দেওয়া হলে আমার জীবনের বড় একটি ধাপ পিছিয়ে যাবে, মধ্যবিত্ত বলে খুব কষ্ট করে পড়াশোনাটা চালিয়ে গেছি।
দিন মজুর কাজ করে, আরো অনেক ধরনের কাজ করে, কলেজ এর ভর্তি, যাবতীয় খরচ আমিই বহন করছি।
তাই পরিক্ষা না দিতে পেরলে খুবই খারাপ লাগবে।
–
(৩)
আর মাত্র দু’দিন পর পরিক্ষা, টাকা’র কোন ব্যাবস্হাই হয় নাই, রাতে অবশ্য এর জন্য চোখের জলটা আটকে রাখতে পারিনি।
কি করব, আমার মতো মধ্যবিত্তের ছেলেদের স্বপ্ন এভাবেই হয়তো ভেঙে যায়।
–
সকালের খাবারটা খেয়ে রওনা দিলাম, পাড়ায় একজন কাজিন আছে, অনেক টাকার মালিক, যাই দেখি তার কাছে থেকে যদি সাহায্য’টা পাই।
সেখানে গেলাম, গেট পার করে বাসায় ঢুকলাম।
দরজাটা নক করলাম, একজন মহিলা এসে খুলে দিলো, সম্ভবত কাজের বুয়া, তাকেই জিজ্ঞসা করলাম;
আপনার সাহেব কোথায়?-তিনি বলল;-ভেতরে বসে কি যেন করছে.!!
সাহেব এর দরজা নক করলাম, তিনি খুলে দিল।
–;আরে বাবা তোরিয় তুমি? হাসি মাখা মুখ নিয়েই কথাটি বলল তিনি।
–;হ্যাঁ আংকেল, কিছু কথা বলার ছিলো আপনাকে, তাই আসা আর কি?
–;তো দাড়িয়ে কেন? ভেতরে এসো?
–;জ্বী আংকেল।
অতঃপর সোফায় বসলাম আমি।
–;হ্যাঁ বাবা কি বলবে বলো, আমার একটু তাড়া আছে?
–;হয়েছে কি আংকেল, আমার ৫ হাজার টাকা লাগবে, আসলে সামনেইত আমার ইন্টার ফাইনাল পরিক্ষা,
আর বাড়ির অবস্হাও খারাপ, তাই কিছু টাকা লাগবে.!
–;খুব ভালো করেছো এসে, কিন্তু বাবা?
–;কি আংকেল কিছু হয়েছে?
–;আসলে বাবা আমার সব টাকা আজ একটি কোম্পানি এর কাজে দিয়ে দিয়েছি, তুমি মন খারাপ করো না, কোন না কোন ব্যাবস্হা হবেই।
–;আচ্ছা আংকেল এখন তাহলে আমি আসি?
–;হ্যাঁ বাবা যাও..!!
–
(৪)
সেখান থেকে মনটা ভারি করে চলে আসছিলাম, একজন ভদ্রলোক গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকল, সেই ভদ্র লোকটি আমাকে জিজ্ঞাসা করলো!!
–;এই যে শুনছেন, এটা কি শাহিন সাহেব এর বাসা?-;হুম!!
আমি কথাটি বলে চলে যেতে লাগলাম, লোকটি আবার আমাকে ডাকল, আমি গেলাম।
–;জ্বী বলুন?
–;এই বিটকেস’টা কি আপনি শাহিন সাহেব কে দিয়ে আসতে পারবেন?
–;এটা কিসের বিটকেস?
–;টাকার.!
–;উনি না বললেন, টাকা উনি কোন এক কোম্পানি তে দিয়েছেন, তাহলে এটা আবার কিসের টাকা?
–;ভাই এসবই ভূয়া, তিনি কোন টাকা, ফাকা কোন কোম্পানি কে দেন নি!
–;ও, আচ্ছা আপনিই তাহলে ভেতরে যান, ওনি দেখুন ওপরেই আছে, আমার একটু কাজ আছে।
–
(৫)
আজ বুঝলাম,বড় লোক দের চেহাড়া,মাত্র পাঁচ হাজার টাকা চেয়েছি বলেই তিনি মিথ্য বলে আমিকে ফিরেয়ে দিলেন।
শাহিন সাহেব এর কোন কথা অমান্য করিনি, কোন কাজ এ ডাকলে সব কাজ ফেলে তার কাজ করেছি,
আর আজ সেই শাহিন সাহেব মাত্র পাঁচ হাজার টাকা আমাকে দিলেন না।
মিথ্য বলে আমাকে তাড়িয়ে দিলেন।
হাইরে মানুষ,তাদের মনুষত্বটা আজ কোথায় এসে পৌছে গেছে।পাঁচ হাজার টাকা তার কাছে কিছু না, তবুও তিনি না করে দিলেন।
দেশে এমন অনেক শাহিন সাহেব আছে, যারা ইচ্ছা করলে চার থেকে পাঁচটা মানুষের খরচ অনায়েসে চালাতে পারেন,
যারা টাকার অভাবে পড়ালেখা করতে পারছে না, তাদের জন্য কিছু টাকা সাহায্য করলে, তারাও পড়ালেখা করার সুযোগ পেয়ে যায়।
তাদের ত কোটি কোটি টাকা,তবুও তারা গরিবদের কোন সাহায্য করে না, তারা কিন্তু তাদের সাহায্যের হাতটা বাড়িয়ে দিলে,
অনেক দরিদ্র মানুষ পড়ালেখার সুযোগ পায়।
এমন অনেক ধনি এই দেশে রয়েছে, যারা সামান্য তাদের সাহায্যের হাতটা দরিদ্র মানুষদের পিছনে বাড়ালে অনেক দরিদ্র মানুষ না খেয়ে থাকবে না,
তারাও কিছুটা সুযোগ পাবে শিক্ষিত হওয়ার।
–
(৬)
সেখান থেকে চলে এলাম, বাড়ি এসে ভাবছি কিভাবে কি করব, এই ভাবতেই ফোনটা বেজে উঠল..!
ফোনটা ধরতেই হুমকির সমমুখী হলাম..
–; তোর হাত পা ভেঙে গাছে টাঙিয়ে রাখব!
ভয় ভয় চোখ নিয়ে স্কিনে তাকিয়ে দেখি ইতি ফোন করেছে, যাক বাবা বাচা গেলো, ইতি, আমিত ভাবছি কে না কে।
–;ত কেন হাত পা ভেঙে রাখবি?
–;ম্যাচ এ থাকার জন্য টাকা লাগবে তুই আমাকে বলিসনি কেন?
ভাব সাব ভালো না, ইতি ত আমাকে তুমি করে বলে, আজ তুই করে বলছে কেন?
–;বললে কি করতে?
–;তোর হাত পা ভেঙে ম্যাচ এ বসিয়ে রাখতাম।বাই দ্যা ওয়ে, ম্যাচ এর টাকা আমি দিয়েছি, বিকালে চলে আয়।
–;মানে, তুমি কেন টাকা দিছো?
–;অই চুপ করবি, নইলে তোর মাথায় হাড়ি ভাঙব কুত্তা।
চুপ করে রইলাম, ফোনটা কেটে দিয়ে সব কাপর গোছাতে গেলাম।
আমি অবশ্য আগে জানতাম, ইতি’কে বললে ও আগেই টাকা দিত, কিন্তু বলিনি, কেন বলিনি সেটাও জানিনা।
কে যে বলল আল্লাহ’ই জানে আমার টাকার কথাটা।
–
(৭)
কলেজ এর ভর্তি হওয়ার পর থেকেই আমাদের বন্ধুত্ব।
বন্ধুত্বটাও খুব সুন্দর ভাবে হয়েছিলো।
কলেজ এর প্রথম দিন গেলাম,আশে পাশে কেউ একটা চেনা জানা নেই।
কলেজ এর প্রথম দিন ইতি’কেই ভালো লেগেছিলো, আর সেদিনই ইচ্ছা ছিলো ইতির সাথেই বন্ধুত্ব করব।
অতঃপর শুরু করলাম আমার বন্ধুত্ব হওয়ার চেষ্টা।
আমিত ভয় পেতাম ইতি’র সাথে কথা বলতে, তাই ক্লাস এর সময় হা করে তাকিয়ে থাকতাম, কিন্তু সে কারো দিকে ফিরেও তাকায় না।
বাড়ি এসে একটা প্লান করলাম।
রাতে তিনটা তিন রঙের চিরকুর কিনলাম।
তাতে বন্ধুত্বের কিছু কথা লিখলাম।
পরের দিন কলেজ গেলাম, চিরকুট গুলো ইতি কে দিব, কিন্তু ভয় করছে।
ভয়’টা কাটিয়ে কলেজ শেষে তার পিছনে ছুটলাম।
আজ ইতি একাই, তার পিছনে আমি।
সময় সময় পিছনে ইতি তাকাচ্ছে, কিন্তু আমি না দেখার ভান করে অন্য দিকে তাকিয়ে কানে ফোনটা ধরে কথা বলার ভান করছি।
অনেক্ষন এমনটা চলল…
তার পর ইতি আমাকে ডাক দিলো, ভয়ে ভয়ে গেলাম…!
–;কিছু বলবেন?
–;হুম বলব, আমার দিকে তখন তাকিয়ে ছিলেন কেন?
–;কখন?
–;ক্লাসে..!
–;কই নাত, আমি কখন তাকালাম, বিস্বাস করুন আমি তাকাই নি!
–;হুমম করলাম, এই আপনার হাতে কি ওইটা দেখি?
হাতে রাখা তিনটা চিরকুট নিয়ে নিলো ইতি, জোর করেই নিল।
১ম চিরকুট→আপনাকে কতটা ভালো লাগে তা জানি না,
তবে আপনার সোন্দর্য্যর ওপর কোন ক্রাশ খাই নাই, ক্রাশ খেয়েছি আপনার হাসি মাখা টোল পড়া মুখটির।
২য় চিরকুট→বন্ধু বলে তেমন কোন কেউ নেই, আপনাকে দেখার পর ইচ্ছা ছিলো বন্ধুত্ব করব, ভয় পেয়ে বলি নাই।
৩য় চিরকুট→বন্ধুত্বের জন্য হাতটি বাড়াতে ভয় করছে, যদি রিজেক্ট করে দেন, তবুও বন্ধু ভাবব, আপনি ভাবলে আপনার হাতটি বাড়িয়ে দেবেন?
ইতি জোরে জোরে পড়ল, আমি মাথা নিচু করে ছিলাম, চিরকুট পড়া শেষ, কিছুক্ষন পর একটি শব্দ ভেষে উটল আমার কানে…!
;বন্ধুত্বের হাতটি বাড়িয়ে দিয়েছি.!-;আমি ও খুব খুশি মনে আমার বন্ধুত্বের হাতটি বাড়িয়ে দিলাম।
সেই থেকে আমরা দু’জন খুব ভালো বন্ধু, ইতি কখনও তুই করে বলেনি, তাই আমিও বলিনি।
কলেজ এর কোন টাকার সমস্য হলে আমাকে না বলেই টাকা দিয়ে দিত,
আমি তার জন্য মন খারাপ করলে হাত পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিত।
নিরউপায় হয়ে মেনে নিতাম, আমারও ভালো লাগত কেন জানি।
–
(৮)
বিকালে ম্যাচ এ গেলাম, তার পরের দিন থেকে পরিক্ষা শুরু হলো।
খুব ভালো ভাবেই পরিক্ষা চলছিলো।
৫টা পরিক্ষার পর ৩ দিন ছুটি আছে, ভাবছি বাড়ি যাব,
কিন্তু ইতি’ত বলল; আমাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে তোমার,না করতে পারলাম না,যদি হাত পা ভেঙে দেয়।
তবে ইতি’র রাগ আমার কাছে ভালোই লাগে, রেগে গেলেই হুমকি, এরকম কজন পায়।
তার পরের দিন- ঘুরতে বের হলাম, একটা সুন্দর নিরিবিলি জায়গায় গেলাম, চার পাশ কাশফুলে ভরা, হিমেল বাতাস বইছে,
আমরা দুজন পাশাপাশি হাটছি, ইতির চুল গুলো হাল্কা বাতাসে উড়ছে, ঠোটের কোনে তার মৃদু হাসি, আর এই মৃদু হাসিতেই তৈরি হয়েছে,
টোল’যা আমাকে পাগল করে রেখেছে, এতটা সুন্দর একটি মুহুর্ত যদি সারা জীবন থাকত,
কিন্তু সুন্দর মুহুর্ত গুলো সল্প সময়ের জন্য, দীর্ঘত হয় কষ্টের সময়।
২য় দিন- একই ভাবে দু’জন আরেকটি জায়গায় গেলাম।দশ টাকার বাদাম কিনলাম,
এবং ইতি আমাকে বাদাম গুলো এরিয়ে নিজেও খাচ্ছে এবং আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে।
যখন বাদাম খাচ্ছিলাম, একটা কথা ভাবছিলাম, ইতি কত্ত বড় লোকের মেয়ে, আর আমি কি?
তবুও আমাদের বন্ধুত্ব,আসলে সুন্দর একটি মন থাকলে ধনি গরিব দেখে বন্ধুত্ব হয় না।
টাকার বড়াই করা মেয়ে/ছেলে তারা কখনও গরিব ঘরের ছেলে/মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করে না।
৩য় দিন-ইতি নীল রঙের শাড়ি পড়ে এসেছে, চুল গুলো ছেড়ে দেওয়া, হা করে তাকিয়ে ছিলাম, ইতির চিমটিতে ঘোর ভাঙল…!
–;কি কেমন লাগছে, তোমার পছন্দের রঙ।
–;পরির মতো, এভাবে কখনই দেখিনি তোমাকে, খুব সুন্দর তুমি, তোমার বরটাও সুন্দর হবে।
–;থাক পাম না দিলেও চলবে, ও দিকে চলো কিছু বলব তোমাকে?
–;চলো, বাদাম আনি?
–;হুমমমমমমমমমমম।
তার পর বাদাম নিয়ে দূর্বা ঘাসের ওপর বসলাম।
ইতি বলে উঠল..!
–;তোরিয় আমি তোমাকে ভালোবাসি।
আমি আগেই জানি ইতি আমাকে ভালোবাসে, আমিও বাসি, তবে চাইনা আমার কষ্ট জড়িত জীবনটাতে সে আসুন,
তাই বুঝতে দেই না, নিজের মাঝেই কবর দিয়েছি, অব্যক্ত সেই কথাটি।
–;আমার জীবনটাত তুমি জানই, এসব বলে লাভ নেই, আমি কাউকে কষ্ট দিতে পারব না।
–;আমি ত তোমাকে ছাড়া কাউকে চাই না, বাবা আমার বিয়ে ঠিক করেছে,
পরিক্ষা শেষএ আমার বিয়ে, তাই এই তিনটি দিন আমি তোমার কাছ থেকে চেয়ে নিয়েছি।
–;আমি এখনও কিছু করিনা, বাড়ির অবস্হাও জানো।
–;তাহলে আমি কি করব বলে দাও না?(কান্না করে)
–;ভালোবাসার মানুষকে যে পেতেই হবে তার কোন মানে নেই,
না পাওয়ার মাঝে ভালোবাসা লুকায়িত থাকে, দূর থেকেই ভালোবেসো।
–;আমি তা পারব না, খুব ভালোবাসি যে তোমাকে।
ইতি খুব কাঁদছে, কিন্তু চোখের জল মুছে দিলাম না, কারন আমি বাস্তবতায় বন্দি একটি পাখি।
তার পর অনেক বুঝিয়ে বাসায় দিয়ে এলাম ইতি কে।
ম্যাচ এ এসে অনেক কেঁদেছি, তবে আমার চোখের অশ্রুর দাম কারো কাছেই নেই।
সেদিন রাতেই বাবা ফোন করে বলল; বাবা তোর একটা চাকরির ব্যাবস্হা করছি,
তোর এক মামার চেনা একটা কোম্পানিতে, তুই কি করবি চাকরিটা?
দেখ আমিত আর তেমন পারিনা, তুই একটু চাকরিটা করলে আমার কষ্টটা একটু কমে।
বাবা কে হ্যাঁ বলে দিলাম, পরিক্ষা শেষ এ জয়েন করতে হবে।
তাই ইতির সাথে আর পরিক্ষার ক দিন কথা বললাম না।
তাতে অনেক কষ্ট পেয়েছে সেটাও জানি, কিন্তু কি করব, কথা বললে হয়ত আরো পাগলামি করত ইতি।
–
(৯)
সেখান থেকে চলে আসি ঢাকায়, ঢাকায় আসার ২বছর পর ডাইরিটা আজ খুললাম।
সেখানে একটা চিরকুট এ লেখা ছিলো..!
→তোরিয় আমি তোমাকে খুব বেশিই ভালোবাসতাম, তাই হয়ত এ ক দিন কথা বললে না,
খুব কষ্টে হয়েছিলো জানো, যাকে এতো বেশি ভালোবাসলাম সেই মানুষটা আমার সাথে কথা বলল না।
অতঃপর জানতে পারলাম, তোমার বাড়ি গিয়ে তোমার জীবনের কষ্ট।
আমি তোমাকে সারা জীবন ভালোবাসব।
ক্ষমা করে দিলাম।
খুব ভালো থেকো, এবং নিজের পায়ে দাড়িয়ে ভালো একটা মেয়ে দেখে বিয়ে করো।
আমায় ভূলতে পারবে না আমি জানি, কারন তুমিও আমায় ভালোবাসতে, ঠিক আমি যতটা।
—-ইতি
—তোমার ইতি..!
আজ ডাইরিটার এই একটি চিরকুট আমায় অনেকটা সুখ দিলো, চোখ বেয়ে এতক্ষন বেয়ে চলছিলো অশ্রুধারা।
আমার ভালোবাসাটাও ইতি বুঝতে পেরেছে।
তবুও আমি অনুতপ্ত, নিজের জীবনের কাছে।