মুহিবের হাতে একগুচ্ছ গোলাপ ফুল,তাজা বলা যেতে পেরে..
দশটাকা ধরে কিনেছে সাত পিস” সত্তর টাকা নিয়েছে।।
মুহিব গোলাপের গন্ধ একবার শুকলো তার মন আনন্দে ভরে উঠলো!
কি সুন্দর ঘ্রাণ নীলুর নিশ্চয় পছন্দ হবে!!
নাহ পছন্দ হয়ে উপাই কি!!
মুহিবের ধারণা নীলু এই পৃথিবীতে মাএ দুটি জিনিস পছন্দ করে, একটি হচ্ছে বৃষ্টিতে ভিঁজা আরেকটি হচ্ছে গোলাপ ফুল..।।
মুহিব লম্বা লম্বা পা ফেলে হাঁটতে লাগলো, উদ্দেশ্য নীলুদের বাসায় যাবে,
কলিংবেল টিপ দিয়ে দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকবে” নীলু আসা পর্যন্ত ভিতরে যাবে না।।
ভাগ্য ভালো থাকলে নীলু নিজেই দরজা খুলবে আর যদি ব্যাতিক্রম হয় তাহলে বলবে নীলুকে একটু ডেকে দেওয়া যাবে!!
নীলু এলেই সে কি কি বলবে মনে মনে অনেক রির্হাসেলও দিয়েছে,
সে ভেবে রেখেছে নীলু এলে সে তার হাতে গোলাপ গুলো দিয়ে বলবে…………….
“একটি গোলাপ ফুটেছিল গোলাপের মতো আর সেই গোলাপটি হচ্ছো তুমি নীলু।।”
এরপর মুহিব ভেবে রেখেছে নীলু যদি হেসে দেয় তাহলে সে বলবে নীলু আমি সত্যিই তোমাকে অনেক ভালবাসি,
আর নীলু যদি মুখ গম্ভীর করে রাখে তাহলে সে বলবে আজ আসি কাল এসে দেখা করে যাবো।।
গোলাপ ফুল গুলো খুব সুন্দর লাগছিলো,আর খুব সস্তাও ছিলো!!
তিনটাকা করে পিস।।
তাই ভাবলাম তোমার জন্যে নিয়ে যায়!!
ফুলের দামের কথা মুহিব মিথ্যে বলবে কারণ দশটাকা ধরে ফুল কিনেছে শুনলে নীলু গম্ভীর মুখ করে বলবে,
কে বলেছে আপনাকে এতো দাম দিয়ে ফুল কিনতে!!
এমনিতেই আপনার চাকরী বাকরী কিছুই নেই এর উপর শুধু শুধু এতোগুলো টাকা নষ্ট করলেন!!
”
”
”
নীলুদের বাড়ির সামনে গিয়েই মুহিব হতবাক এবং বিভ্রান্ত হয়ে গেলো, নীলুদের বাড়ি খুব সুন্দর করে সাজানো..
মরিচ বাতিও লাগানো হয়েছে,বাড়ি ভর্তি লোকের হৈইচৈই”” এই কি কান্ড!!
কোন অনুষ্ঠান চলছে!!
কিসের অনুষ্ঠান!!
কারো বিয়ে নয়তো!!
মুহিবের বুক কোন এক অদ্ভুদ কারণেই ধড়ফড় ধড়ফড় করতে লাগলো।।
কলিংবেল টিপতেই সঙ্গে সঙ্গেই ছুঁটে এলো নাদিয়া, নীলুর ছোটবোন..
দেখতে নীলুর মতোই রুপবতী!!
না নীলুর মতো হবে নাহ, নীলুর চেয়ে সুন্দর কেউ হতেই পারে নাহ..।।
নাদিয়া নীলু কোথায়!!তাকে একটু ডেকে দিবে!!
নাদিয়া খিলখিল করে হেসে উঠে বললো কি বলছেন মুহিব ভাইয়া!!
আপা আসবে কোত্থকে!!
আপার তো আজ বিয়ে, আপনি জানেন নাহ?
ছেলে একসপ্তাহ পর আমেরিকা ফিরত যাবে, ছেলে চাচ্ছে আপাকেও যাওয়ার
সময় নিয়ে যাবে।।তাই হুট করে আজ আপার বিয়ে হচ্ছে” ও আচ্ছা নাদিয়া আমি যাই আরেকদিন আসবো।
না না ভিতুরে আসুন!
আপার বিয়ে আর আপনি থাকবেন নাহ!!
নাহ আসলে আমার একটা গুরুত্বপূর্ন কাজ পড়ে গেছে তো তাই কাল এসে দেখা করবো।।
——
মুহিব চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার পাশে,তার বুকে কেমন যেন ব্যাথা করছে।
মনে হচ্ছে কেউ যেন তার বুকে বিশাল এক পাহাড় বসিয়ে দিয়েছে, তার মাথাটাও যন্ত্রণা করছে!!
তার খুব কাঁদতে ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হচ্ছে কাঁদতে পারছে নাহ।।
সম্ভবত তার চোখের জল শুকিয়ে গেছে।।
মুহিবের ভয়ংকর কিছু একটা করতে ইচ্ছে হচ্ছে!
কিন্তু কি করবে ভেবে পাচ্ছি নাহ!!
কি এক অদ্ভুদ যন্ত্রণায় তার বুক জ্বলে যাচ্ছে।।
মুহিব লক্ষ্য করলো আজ আকাশে অনেক তারা উঠেছে, মুহিব তারা গুনতে শুরু করলে এক, দুই, তিন, চার..
না না ভুল হয়েছে গোনাতে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে এক, দুই, তিন, চার…….