ক্ষেত ছেলে

ক্ষেত ছেলে

ভার্সিটির ক্লাসে বসে আছি সবার পেছনের বেঞ্চে আজ আমাদের ভার্সিটির প্রথম ক্লাস কিন্তু আমার কোন আগ্রহ নাই আমাকে দেখে একটা মেয়ে বলে উঠলো দেখ দেখ ছেলেটা কেমন পোশাক পরে এসেছে মনে হয় ডাজবিন থেকে কুরিয়ে এনেছে হুম ঠিক ই বলেছিস মনে হয় বস্তির ছেলে এরা কিভাবে যে ভার্সিটি তে চান্স পায় বুঝি না চুরি করে মনে হয় চান্স পেয়েছে বলেই সবাই হাসতে লাগলো আমি কিছু না বলে মাথা নিচু করে রাখলাম ঠিক ই তো বলেছে আমি তো ক্ষেত ছেলে আমাকে তো বলবেই একটু পর স্যার আমাদের ক্লাসে ঠুকলেন সবাই কেমন আছ? ভাল স্যার আপনি? আমি ও ভাল আছি আজ যেহেতু প্রথম ক্লাস সবার পরিচয় জানবো তারপর একে একে সবার পরিচয় বলতে লাগলো সবার শেষে আমি দারালাম তখন স্যার বললেন।

এর পরিচয় আমি বলি তোমাদের এর নাম রাসেল এই ভার্সিটি এর সব চেয়ে হাই স্কর করে চাঞ্চ পেয়েছে স্যার এর কথা শুনে সবাই অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে আর মায়াবী একটু বেশি অবাক হয়েছে ও হ্যা মায়াবী হচ্ছে সেই মেয়ের নাম যে আমাকে একটু আগে ক্ষেত বলে অপমান করলো।যাই হোক ক্লাস শেষ এ আমি বাহিরে এসেছি অমনি মায়াবি ওর বান্ধবীদদের বলছে এই ক্ষেত ছেলে কিভাবে এতো ভাল রেজাল্ট করে মনে হয় নকল করে বলেই হাসতে লাগলো আমি কিছু না বলে চলে এলাম এভাবেই ক্লাস পরিক্ষা চলে এলো আমি এবার ও ফাস্ট আর মায়াবী সেকেন্ড মায়াবী ভাল ছাত্রী কিন্তু আমার জন্য ফাস্ট হতে পারলো না আমি মাঠের এক কোনে বসে আছি এমন সময় মায়াবী আর ওর বান্ধবী আমার সামনে আসলো সরি সরি কেনো?

আসলে আমরা তোমাকে অনেক অপমান করেছি আমাদের মাফ করে দাও ছি ছি মাফ চাইছেন কেনো আমি যা আপ্নারা তো তাই বলছেন না তাও ভুল হইছে পিলিজ মাফ করে দাও পিলিজ আচ্ছা ওকে ফ্রেন্ড(হাত বারিয়ে দিয়ে) ওকে ফ্রেন্ড।এভাবেই চলতে থাকলো আমাদের ফ্রেন্ডশিপ আমি মায়াবী আর নয়না হ্যা নয়না মায়াবী এর ফ্রেন্ড ছিল সেই থেকে আমার ও ভাল ফ্রেন্ড কিন্তু মেয়েটা অনেক চুপচাপ মায়াবী এর মত চঞ্চল না কিন্তু আমার খুব কেয়ার করে আমি মাঝে মাঝে বুঝি না ও আমার সাথে এমন করে কেনো যাই হোক দেখতে দেখতে আমাদের ভার্সিটি এর ৪ বছর চলে জায় একটা ছেলে আর একটা মেয়ে কীন দিন বন্ধু হতে পারে না হয় ছেলেটা প্রেম এ পরে না হয় মেয়েটা আমি ও মায়াবী এর প্রেমে পরে জাই কিন্তু কিভাবে বলবো হ্যা নয়না ভাবতেই নয়নাকে কল দিলাম হ্যালো নয়না হ্যা বল কাল একটু আগে ভার্সিটি আসিস তো কেনো?

তোর সাথে জরুরি কথা আছে কি কথা ফোন এ বল না তুই কাল ভার্সিটি আয় পরে বলবো ওকে আসবো বলেই ফোন রেখে দিলো। পরদিন ভার্সিটি যেতেই দেখি নয়না বসে আছে নীল শারি কপালে ছোট একটা টিপ পরে এসেছে আস সত্যি নয়নাকে অনেক কিউট লাগছে কিন্তু হটাৎ এতো সেজে এছেছে কেনো কিরে আজ এতো সেজেগুজে এসেছিস কেনো প্রেমিক আসসবে নাকি কুত্তা প্রেমিক থাকলে কি তুই জানতি না হুম তাও ঠিক এখন বল কি বলবি আসলে কিভাবে যে কথাটা বলবো তোকে এতো ভনিতা না করে বলে দে আমি কিছু মনে করবো নে আসলে মানে কি মানে মানে করছিস বল তাড়াতাড়ি আমি না মায়াবী কে ভালবাসি। কথাটা বলতেই নয়নার মুখ কালো হয়ে গেলো কিরে কিছু বল কি বলবো ভালবাসিস মায়াবি কে বলে দে আরে আমি বলতে পারলে কি তোকে বলতাম তুই আমার হয়ে বলে দে আমি পারবো না।

পিলিজ বলে দে ওকে মায়াবী আসুক আজ বলে দিবো বলেই নয়না উঠে চলে গেলো আমি পেছন থেকে কিরে এভাবে চলে যাস কেনো কিন্তু নয়না কিছু না বলে চলে গেলো ভার্সিটি শেষ এ নয়না মায়াবী আরো কিছু বান্ধবী দারিয়ে আছে আমি ক্লাস থেকে বাহির হতেই আমাকে মায়াবী ডাক দিল রাসেল এদিকে আয় বল নয়না জা বল্লো তা কি ঠিক? হুম ঠিক(মাথা নিচু করে)বলতেই ঠাস ঠাস ঠাস ছোট লোকের বাচ্ছা নিজেকে কখনো দেখেছিস তুই কোথায় আর আমি কোথায় তোর সাথে ফ্রেন্ডশিপ করেছিলাম তোর কাছ থেকে হ্যাল্প নেয়ার জন্য কারিন তুই ভাল ছাত্র আর তুই আমাকে ভালবাসিস হু তোর কি যোগ্যতা আছে আমাকে ভালবাসার আমার চাকর হবার যোগ্যতা তোর নাই তুই তোর লেভেলের কীন বস্তির মেয়েকে খুজে নে বলেই মায়াবী চলে গেলো কিন্তু নয়না আমার সামনে দারিয়ে আছে ওর চোখে পানি হটাৎ নয়না।

ঠাস হয়েছে এবার ভালবাসার সাধ মিটেছে তো বলেই চোখ মুছতে মুছতে চলে গেলো আমি নয়নার ব্যবহারে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি আর চোখ দিয়ে পানি পরছে এরপর আমি আর ভার্সিটি আসি নাই শুধু পরিক্ষা দিছি ঠিক ৫ বছর পর স্যার একটা মেয়ে এসেছে আমাদের যে চাকুরীর বিজ্ঞাপন দিছিলাম।ওইটা দেখে ওকে পাঠিয়ে দেন ওকে স্যার একটু পর মে আই কাম ইন স্যার ইয়েস বলে সামনে তাকাতেই আমি অবাক সেই মুখ সেই চোখ কিন্তু চেহারায় নেই সেই আভিজ্জাতের ছাপ হ্যা এটা সেই মায়াবী আমি অবাক হলাম মায়াবী আজ আমার অফিসে চাকুরী এর জন্য আমার চেয়ে মায়াবী বেশি অবাক হয়েছে আমাকে দেখেই রাসেল তুমি সরি এটা অফিস আর আমি এই অফিসের বস সো আপনি করে বললে খুশি হব সরি স্যার।

বলুন আপনার জন্য কি করতে পারি? স্যার আসলে আমার এই চাকুরী টা খুব দরকার দরকার আপনার হলে তো হবে না আমাদের যোগ্যতা মত আপনি হলে চাকুরী হবে বলে আমি ওর কাগজ দেখতে লাগলাম এমন সময় মায়াবী বলে উঠিলো অনেক চেঞ্জ আমি মাথা তুলে মায়াবী এর কথা শুনে ওর দিকে তাকালাম চেঞ্জ তো হবার ই কথা তুমি ও তো অনেক চেঞ্জ আজ তোমার আমার অফিসে চাকুরী এর জন্য আসতে হল কেনো? আমার বিয়ে হয়েছে এক ব্যবসায়ী এর সাথে কিন্তু ব্যবসা এ ধস নেমে আজ আমাদের এই অবস্থা। কিন্তু তুমি এই জায়গায় কিভাবে? এটা আমাদের ই অফিস আমার বাবার মানে?

মানে হচ্ছে ভার্সিটি তে যে আমাকে দেখেছ ওইটা আমার ছদ্দবেস আমার বাবা ছিলেন শহরের নাম করা ব্যবসায়ী টাকার অভাব ছিল না তাই অনেক মেয়ে আমাকে ভালবেসেছিল কিন্তু আমি চেয়েছিলাম আমাকে যে ভালবাসবে সে টাকা পয়সা ছারাই ভালবাসবে আর সেখান থেকে তোমাকে প্রপোজ করি কিন্তু তুমি আমাকে অপমান কর কিন্তু আমি ভুল মানুষ কে ভালবেসেছিলাম তবে এর জন্য আমি প্রকিত ভালবাসা খুজে পেয়েছি কে সে? নয়না মানে আমাদের বান্ধবী নয়না?

হ্যা তুমি যখন আমাকে অপমান করে চলে জাও তারপর নয়না ও আমাকে চর মেরে কাদতে কাদতে চলে জায় আমি খুব অবাক হই তারপর আমি নয়নার বাসায় জাই ওর টেবিলে একটা ডাইরি পাই ডাইরি পরে সব বুঝতে পারি নয়না আমাকে ভালবাসে। এর পর আর কি নয়নাকে সোজা আমার বাবার কাছে নিয়ে যাই বিয়ে করি। বলতেই আমার ফোন বেজে উঠলো দেখি নয়না কল দিছে কল ধরেই হ্যালো জান বল কি কর কি আর করবো বল একটা থার্ট ক্লাস মেয়ের সাথে কথা বলছি বাজে মেয়েদের সাথে সময় দিও না দুপুরে বাসায় খাবে ওকে আচ্ছা ওকে জান এখন বাই বলেই ফোন কেটে দিলাম।

মায়াবী এর দিকে তাকিয়ে দেখি ওর চোখে পানি রাসেল আমার চাকুরী টা খুব দরকার সরি মিস মায়াবী আমার এখানে কোর সার্থবাদী মানুষ এর চাকুরী নেই কিন্তু কোন কিন্তু নেয় আপনি এখন আসতে পারেন। মায়াবী চোখ মুছতে মুছতে রুম থেকে বাহির হয়ে গেলো।একি আমার চোখে পানি কেনো না এটা কষ্টের পানি না এটা আনন্দের পানি এটা এটা একটা অহংকার এর পতনের জন্য সুখের পানি

মোরাল:কাউকে কখনো চেহারা বা টাকা দিয়ে বিচার করা ঠিক না সবাইকে মন দিয়ে বিচার করা উচিত।

গল্পের বিষয়:
দু:খদায়ক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত