–এই শুনছো?
–হুম বলো
–বাবু কাদছে।শুনছো না?একটু ধরো।অামি গোসলটা করে অাসি।
–ধুর এখন ডিসটার্ব করেনা।দেখছোনা পিসি তে একটা ইম্পরট্যান্ট কাজ করতেছি।তুমি একটু ধরো।পরে গোসল কইরো।
–শোনো,তোমাকে অাগেও বলছি, অফিসের কাজ অফিসে।অার বাড়ির কাজ বাড়ি।বাবুকে ধরো বলছি।নাহলে কিন্তু এক বালতি পানি এনে তোমাকে অার তোমার কাজকে ধুয়ে দেবো।
–অাচ্ছা বাবা।ধরছি এই যে।তুমি যে মানুষ! অামাকে ধুয়ে দিতে তুমি ২য় বার ভাববে নানে।
..
অামার রাগী অার ঝগড়াটে বৌ মিথীলা।অবশ্য তার রাগটা অামার ওপর নয়।অামার কাজের ওপর।অামার কাজ নাকি তার স্বতীন।অবশ্য সব বৌদের ই একই অভিযোগ।
খুব ছোট সংসার অামাদের।বাবা,মা গ্রামে থাকেন।হাজার চেষ্টা করেও তাদের এখানে অানতে পারিনি।অার এই ছোট্ট সোনার সংসারে বিগত ৬ মাস অাগে ঘর অালোকিত করে এসেছে অামাদের দুজনের দুই টুকরো ভালোবাসায় মিলিত ফসল এক টুকরো ভালোবাসা।অামাদের ১ম সন্তান।যে এখন অামাদের ভালোবাসার একমাত্র কেন্দ্রবিন্দু।
যে ভালোবাসার শুরুটা হয়েছিল অারো ৪ বছর অাগে ফেসবুকের বদৌলতে।
হঠাৎ একদিন দেখি একটা আইডি থেকে অামার প্রোফাইলেরর সকল পোস্ট এবং ছবিতে লাভ রিয়্যাক্ট দেওয়া হয়েছে।কিছুটা অবাক হয়ে ঐ আইডির প্রোফাইলে ঢুকে গেলাম। দেখলাম অামাকে রিকুয়েস্ট দেছে। কিন্তু ৫০০০ ফ্রেন্ড পূর্ণ হওয়ার জন্য এক্সসেপ্ট করতে পারিনি। তবে অাইডিটা দেখে পরিচিতও মনে হলো না। আইডিটার নাম ছিল “লাল চাদর”।ফেইক মনে করে নক করার প্রয়োজন মনে করলাম না।
.
.
২দিন পর,
মেসেঞ্জার এ মেসেজ রিকুয়েস্ট। এক্সসেপ্ট করলাম।দেখলাম সেই অাইডিটা।
–ki bapar? ato gulo love react dilam akta msg o dlen na j??
–প্রয়োজন মনে হয়নি।অাপনাকে অামি চিনি না।অার অপরিচিত কেওকে অামি নক দিনা।
–ooo..ta oporichito karo sthe porichito hote mon chaina..??
–বিনা দরকারে মন চাই না।
–bujhlm..niramish (নিরামিষ)
–মানে?
–kicu na..apnr bujhte hbena..
–ওকে
তখনকার মতো ওই পর্যন্তই।
রাত ১২টা,
–ki bapar??vule gelen nki??
–মনে রাখার মতো তো কিছু নেই।
–apni amn kno??aktu vlo vbe ktha blte paren na??akta mayer sthe kew avbe ktha ble??
–ও।তার মানে আপনি মেয়ে।
–keno??ki vbclen??cele??
–সেটাও না
–what??
–nothing.. (অামি)
–………. (একটা মেয়ের ছবি)
–কে এটা??
–amar clone coppy.
–তাই নাকি??খুব ভালো।অাপনার থেকে অাপনার ক্লোনটা অনেক বেশি সুন্দরী।(সত্যই ছবির মেয়েটা অনেক সুন্দরী ছিল)
–jani..akta kotha boli??
–বলছেনই তো।অাবার নতুন করে অনুমতি নেওয়ার কি অাছে?
–apni onk besi handsome..
–থ্যাংকস।
–r akta ktha bli??
–অাবারও অনুমতি দিতে হবে??বলেন.
–nah.thak..
–ok
–ato rate fb te ki krclen??gf er sthe prem krclen nki??disturb krci nki atokhn??
–সরি।অামার জিএফ নেই।
–oh..khub vlo..ta apnr kmn maye pocondo??
–জানিনা।অার অাপনাকে বলার প্রয়োজনও মনে করছিনা।–thak blte hbe na..
–হুম
–asca r akta qs krci..plzzzz ansns ta dben..
–করেন
–apnar jodi gf thakto tahle take kivbe sajate pocondo krten??bujhcen to ki blte chaici??
–হুম।বুঝছি।তোমার মাথার তার কাটা অাছে।যাই হোক,অামার পছন্দ নীল শাড়ি,চোখে কাজল,হাতে নীল চুড়ি, অবশ্যই মেহেদি থাকবে হাতে,হালকা লিপস্টিক অার খোলা চুল।
–owo..prem na krleo apnr pocondo ta kintu osmvb sundor.
-থ্যাংকস
–asca..good night..vlo thkben..
..
পরদিন সকাল থেকে একটা কাজের ভিতর ছিলাম।তাই ফেসবুকে অাসা হয়নি।কাজ শেষ করে বিকালের দিকে ফেসবুকে অাসি।অার এসেই দেখি কয়েকটা মেসেজের ভিতর “লাল চাদর”আইডি টাও অাছে।ওটা ক্লিক করার সাথেই কিছুটা না অনেকটাই অবাক হয়ে গেলাম।দেখলাম নীল শাড়ি,নীল চুড়ি,মেহেদি,কাজল পরে খোলা চুলের কিছু ছবি।অার ছবি গুলো ওই মেয়েটারই ছিল।অার সাথে বড় করে একটা মেসেজ লেখা।
— অাপনার সাথে কথা বললাম। কিন্তু কথার মাঝে নামটাই বলা হয়নি। অামার নাম মিথিলা। অামি জানি অাপনি অনেক ভালো। তাই কথাটা বলতে খুব ভয় এবং খারাপ লাগছে।তবুও বলছি।কারণ অামকে বলতেই হবে।অামি অাপনাকে অনেক ভালোবাসি ।অামি অাপনাকে ১ম দেখেছিলাম একটা বাস কাউন্টারে।সেদিন দেখেই অাপনাকে ভালো লেগেছিল।কিন্তু তখন অাপনাকে বা অাপনার ঠিকানা কিছুই জানতাম না।কিন্তু অাপনি বাসের টিকিট কেনার সময় অাপনার কনট্যাক্ট নাম্বারটা বলছিলেন।অার তখন অামি সেটা তুলে নিছিলাম।অার পরে ওটা দিয়ে ফেসবুকে সার্স দিতেই অাপনাকে পেয়ে গেলাম।বাকিটা অাপনি জানেনই তো।তবে সবশেষে আবারও বলছি I love you…
অাপনার পছন্দ মতো সাজার চেষ্টা করেছি।জানিনা এটা পরার পর অামাকে কতটা ঘৃনা করবেন।
..
..
মেসেজটা পড়া শেষে ছবিগুলো অার একবার দেখলাম।সত্যিই অসম্ভব সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে।নীলপরির মতো।যে দেখবে তারই চোখ দাড়িয়ে যাবে।
.
কিছুক্ষন ভাবতেছিলাম কি উত্তর দেবো।তবে অামার যেহেতু কোনো পিছুটান ছিল না সেই জন্য হ্যা সূচক উত্তরটাই দেওয়ার চিন্তা করলাম।অার সেটাই দিলাম।
.
এরপর ফেসবুকে চ্যাট,মোবাইলে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলা।সব মিলিয়ে ভালোই চলছিল।মাঝে মাঝে ওর সাথে দেখা করতে যাওয়া।দুরত্বটা অনেক বেশি হওয়া জন্য খুব কমই দেখা হতো।২/৩ মাসে ১/২ বার।তবে এর জন্য ভালোবাসার কোনো কমতি হয়নি।বরং বেড়েছে।চিঠি লেখার প্রচলন না থাকলেও অামরা লিখতাম।এভাবে কেটে গেল দেড় বছর।তারপর পারিবারিক ভাবেই দুজনের বিয়ে হলো।দুজনের দুই টুকরো ভালোবাসা এক হয়ে ২ বছর পর জন্ম হলো এক টুকরো ভালোবাসার।
.
.
.
১৫মিনিট পর মিথিলা বাথরুম থেকে বের হলো।ততক্ষণে বাবু ঘুমিয়ে গেছে।মিথিলার তখন পরনে ছিল একটা বাসন্তি রঙের শাড়ি।বাসন্তি রঙের শাড়ি অার খোলা ভেজা চুলে মিথিলাকে যেন রুপের দেবী মনে হচ্ছে।সেই ৪বছর অাগে যেমনটা ছিল অাজও ঠিক তেমনই অাছে।
..
অামি হা করে তাকিয়ে অাছি মিথিলার দিকে।
–হা করে কি দেখো?
–তোমাকে
–ঢং।৪ বছর ধরে দেখছো অাবার এরকম হা করে দেখার কি অাছে??
–সারা জীবন তোমাকে দেখলেও যে মন ভরবেনা,লক্ষীটি।
.
পরক্ষণেই ওর হাত ধরে টান দিলাম।অামি খাটের ওপর বসে ছিলাম।আর ও দাড়িয়ে ছিল।টান দিতেই ও অামার বুকের ওপর এসে পড়ল।এখন অামারর বুকের ওপর শুয়ে অাছে মিথিলা।ওর ভেজা চুলগুলো অামার মুখের ওপর এসে পড়ল।দুজন দুজনের সাথে একাকার হয়ে গেলাম।ঠিক যেমন হয় দুই টুকরো ভালোবাসার মিলন।