ভালোবাসার “রোম্যান্টিক” গল্প

ভালোবাসার “রোম্যান্টিক” গল্প

হ্যালো, বাবু তুমি কই?????????

এই তো বাবুনি আসছি।জ্যামে পড়েছি। ওকে, তারাতারি আসো।

৫০ মিনিট লেট।নিশ্চয় ঘুম থেকে উঠতে দেরি করছো? কি করবো বলো ঘুমালে চোখ খুলতে ইচ্চে করে না। ও তাই।তাহলে আর আমার সাথে দেখা করতে এসো না।বাড়িতে শুয়ে ঘুমাবা। এতো রাগ করো না প্লিজ।

আমি তো প্রতিদিনই এই দোষ করি তাই তুমি যা শাস্তি দেবে তা আমি মেনে নেবো। তাই? হ্যা, তাই। তাহলে তোমার বুকে আমার মাথাটা রাখতে দাও? যেরকম ভাবে বলছো মনে হচ্ছে টিকিট কাটছো।রাখো।

রাইসা আমার বুকে ওর মাথাটা রাখার সাথে সাথে মনের ভিতর একটা প্রশান্তির ছোয়া পেলাম।মনে হচ্ছে এরই নাম ভালোবাসা।হ্যা, এরই নাম ভালোবাসা।যে ভালোবাসায় কেউ রাগ করে থাকতে পারে না।

আমি রাফি।আমি প্রাইভেট কম্পানিতে চাকরি করি।আর আমার বুকে মাথা রাখা মেয়েটা হলো রাইসা।আমার সাথে ওর দেখা হয় সপ্তাহে ১ দিন। আমি এই ১ দিনই দেরি করে আসি।আর এর কারণ দুইটা।

১.আমার ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়।

২.রাস্তার জ্যাম।

রাইসা আমার সাথে দেখা করার জন্য শুক্রবার সকালে প্রাইভেটের নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে আমার সাথে দেখা করতে আসে।আর আমি অকর্মার ঢেকি দেরি করে আসি।

এই জন্য রাইসা অনেক কথা শুনায়।পরে খুব ভালোবাসে।এরই নামই ভালোবাসা।

রাইসা আামাকে যত কথাই শুনাক না কেন তাতে আমার মন খারাপ হয় না।

ভালোবাসার মানুষের বকা খেতে খুব ভালো লাগে।

আচ্ছা বাবু একটা কথা বলি? বলো? আমি দেখতে সুন্দর না।তবুও কেন তুমি আমাকে ভালোবাসো? ভালোবাসা রূপ দেখে হয় না।কাকে, কিভাবে, কে ভালোবেসে ফেলে তা কেউ বলতে পারবে না, বাবুনি। হুম।জানো বাবু আমার খুব চিন্তা হয়।

আমার থেকে কত সুন্দর মেয়ে রয়েছে।মনে হয় আমাকে ছেড়ে তুমি ওদের কাছে চলে যাবা। আমার পাগলি বাবুনি একটা।তুমি রূপে সুন্দর না হলেও তোমার মধ্যে একটা মায়া খুজে পাই আমি।

আর এই মায়াটা তোমার প্রতি আমার ভালোবাসার সাথে ওতপ্রোত ভাবে জরিত। সত্যি? হুম, সত্যি।তোমাকে যেদিন আমি প্রথম দেখেছি সেদিন তুমি কিছু ছোট ছেলেদের সাথে বৃষ্টিতে ভিজছিলে।সেদিনই আমি তোমার প্রেমে পড়ে যাই। তারপর তোমাকে যখন গরিবদের সাহায্য করতে দেখি তখন তোমাকে কাছে পেতে ইচ্ছে করছিলো।বার বার মনে হচ্ছিলো তুমিই আমার বাম পাশের হাড্ডি। হা হা হা।তাই? হ্যা, তাই।

ওভাবে কি দেখছো? তোমাকে। কেন আগে দেখ নি? দেখেছি তো।কিন্তু দেখে ফুরাতে পারি না।সব সময় দেখতে ইচ্ছে করে তোমাকে। কোনো সমস্যা নাই।

বিয়ের পর দেখো।কেউ না বলবে না।কেউ এভাবে দেখলে অনেক কিছু ভাববে? যে যা ভাবে ভাবুক।তাতে আমার কোনো যায় আসে না। হুম।আচ্ছা এখন যেতে হবে বাই। ওকে, বাই।

রাইসা রিক্সা দিয়ে যাচ্ছে।আমি ওকে দেখছি।নিমিশেয় ও উদাও হয়ে গেলো।

আমার সাথে রাইসার সম্পর্ক প্রায় ১ বছর হলো।ও খুব ভালো মেয়ে।মায়াবতী।রাইসা অনার্স ২য় বর্ষে পড়ে।রাইসাকে প্রথম দেখেই আমি ওর প্রেমে পড়ে যাই। তারপর ওকে ফলো করতে করতে ওকে ভালোবেসে ফেলি।ওর মায়ায় পড়ে যাই।রাইসা প্রথমে আমাকে মানিয়ে নিতে পারে নি।আমিও হার মানি নি।আমি ওর পেছনে আঠার মতো লেগে থেকেছি।

ডোস্ত তোর মন খারাপ কেন? ব্রেকাপ হয়েছে আমাদের। আমাদের মানে? আমার আর তিথির।মন ভালো নাই ডোস্ত। আমাকে একা থাকতে দে। আচ্ছা। তবে নিজের ক্ষতি করোস না যেনো। আমি এখোনো ছোট আছি নাকি যে প্রেমে ফেল হয়ে নিজের ক্ষতি করবো?

হ্যা, তাহলে বুঝছোস। ও যদি অন্য ছেলেকে নিয়ে খুশি থাকতে পারে তাহলে আমিও ওকে ছাড়া একা থাকতে পারবো। হুম।নিজের মনটাকে শক্ত কর। আচ্ছা এখন যা।আমি একা থাকতে চাই। ওকে।থাক তাহলে।

ছাদে বসে আছি।সিফাতের জন্য মনটা খারাপ হয়ে আছে।আজ সিফাত আর তিথির ব্রেকাপ হয়েছে।বর্তমানে এটাই চলছে।বেশির ভাগ সম্পর্কই কিছুদিন থেকে ব্রেকাপ হয়ে যাই। হয় ছেলেটি ব্রেকাপ করে না হলে মেয়েটি।ব্রেকাপের কারণে মানুষের প্রতি বিশ্বাসটাই।

উঠে যায়।আমাদের সম্পর্কের পরিনামটা এই রকম হবে না তো? কিছু একটা করতে হবে যাতে আমি বুঝতে পারি আমি রইসাকে, রাইসা আমাকে কতটা ভালোবাসে।

কিরে তোর আর রাইসার মধ্যে কিছু হইছে নাকি? ? ম্যাসে ঢুকতেই সিফাত কথাটা বললো।

না তো। মনে হয় কিছু হয়ছে।তুই আমার কাছে কিছু লুকাচ্ছিস? তোর এই রকম মনে হয় কেন? আজ রাইসা এসেছিলো তোকে খুজতে। আমি বললাম তুই বাইরে গিয়েছিস। তখন ও মনটা খারাপ করে চলে গেলো।

আর যেতে যেতে চোখ ও মুচ্ছিলো। আসলে আমি কয়েকদিন ধরে ওর ফোন ধরছি না।কথা বলছি না।এজন্যই ও এসেছিলো। কেন?

কারণ আমি জানতে চাই রাইসা আমাকে আর আমি রাইসাকে কতটা ভালোবাসি। তা কি জানতে পারলি? এই কয়েকদিনে আমি একটা জিনিস বুঝলাম যে আমি রাইসাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। তাহলে যা ওর সাথে দেখা কর? এক্ষনি যাচ্ছি।

হ্যালো, রাইসা, তুমি কই? এতোদিন পর তোমার মনে হলো? আমি সব বলছি।তোমার সাথে আমার দেখা করতে হবে।তারাতারি নদীর ঘাটে চলে আসো। ওকে, আসছি।

সরি? …

বলছি তো সরি।আগে আমারর কথাটা শোনো? আগে বলো তুমি আমার সাথে এতদিন কথা বললে না কেন? এই কথাই তো বলবো।শোনো? বলো?

আমার বন্ধু সিফাত আর তিথির ব্রেকাপ হয়েছে।ওদের এই অবস্হা দেখে মনে হলো আমাদের মধ্যে কখনো ব্রেকাপ হবে না তো? তাই আমি এই ১৩ দিন তোমার সাথে কথা বলিনি।না করেছি দেখা।বিশ্বাস করো আমি তোমাকে এই অনেক মিস করেছি আর বুঝতে পেরেছি যে আমি তোমাকে কত ভালোবাসি।

তোমার এই পরীক্ষার জন্য আমি কত কষ্ট পেয়েছি জানো তুমি? জানি না।তবে তোমার মুখ দেখেই বুঝতে পারছি।তুমি এই কয়েকদিন অনেক কেদেঁছো তাই না? হ্যা।

আর হবে না।আমি আর তোমাকে কষ্ট দেবো না।এবারের মতো মাফ করে দাও? তাহলে কথা দাও আমাকে যে আর তুমি আমাকে কষ্ট দেবে না? কথা দিলাম।

রাইসা আমার বুকে ওর মাথাটা রেখেছে।আর আমি ওকে জড়িয়ে ধরেছি।

রাইসার চোখ, মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে ও এই কয়েকদিন অনেক কেদেছে।আমারও অনেক কষ্ট হয়েছে ওকে ছাড়া এই কয়েকদিন থাকতে। তবুও কষ্টাটা বুকে চেপে রেখে এই কয়েকদিন ওকে ইগনোর করেছি।করেছি বলেই বুঝতে পারছি আমি রাইসাকে কতটা ভালোবাসি।খুব ভালোবাসি আমার এই পাগলিটাকে।বড্ড বেশি ভালোবাসি।

 

 

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত