-ঐ চলো ছাদে যাই
-মাথা খারাপ?এই শীতে এত রাতে ছাদে আমার কোন কাজ নাই নতুন বিয়া করছি এখন লাইট বন্ধ করে রুমের মধ্যে বউর সাথে ফুটবল খেলবো।
-হিমেল আমার মাথা গরম কইরো না তুমি বাসর রাতে কি প্রমিজ করছিলা মনে নাই?
-আচ্ছা রুশি তুমিই বলো বাইরে কত ঠান্ডা এই ঠান্ডার মধ্যে এত রাতে কেউ ছাদে যায়?
-ঐ তুমি যাবা না?
-বউ আজ না হয় থাক কাল ছাদে অনেক সময় থাকবো,আজ একটু রুমেই কাটাই না।
-হিমেল অফিস থেকে ছুটি নিলা সারাদিন রুমে আমাকেও বাইরাতে দেও না সারাদিন খালি দুষ্টমি তোমার লজ্জা করে না?
-ঐ তুমি আমার আপন বউ তোমার সাথে করবো না তো কার সাথে করবো হা আর আমি আর তুমি লজ্জা কিসের
-ঐ আর কথা না তুমি ছাদে গেলে চলো নাইলে আমি একাই যাই…….!
নতুন বিবাহিত দম্পতী হিমেল আর রুশি এই কিছুদিন হলো তাদের বিয়ে হয়েছে।আর বিয়ের জন্য হিমেল অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে সারাখন বউ এর সাথে সময় কাটানোর জন্য।বেচারা হিমেল একটা বউ পাগলা।
সারাদিন রুমের মধ্যে থাকবে বউটাকে একটু বের হতেও দেয় না কত অাত্নীয়রা আশে নতুন বউকে দেখতে আর হিমেল এই কান্ড করে রুশি তো লজ্জায় শেষ।একদম বাচ্চাদের মত একটা বর পাইলো রুশি,হিমেলের এক কথা এতো সুন্দর একটা মাত্র বউ তাকে নিয়ে কই যাবে আর আত্নীয়রা তার বউ কেন দেখবে তারা নিজেরা বিয়ে করে দেখতে পাড়ে না,আরও এমন পাগলা পাগলা অনেক কথাই বলে……..
হিমেল আর রুশির পরিচয়টা একদম অন্য রকম,রুশির একটা অভ্যাস রোজ আঁকাশ দেখা সন্ধ্যা তাঁরাটা রুশির অনেক পছন্দের তাই রোজ রুশি শেষ বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছাদেই সময় কাটাতো,কানে থাকতো হেডফোন একা একা গান শুনতো গান গাইতো আর তাঁরা দেখতো।
হিমেল বিদেশ থেকে লেখাপড়া শেষ করে এখন দেশে ছোটবেলা থেকেই ছাদ,বেলকুনি,এগুলো হিমেলের খুব প্রিয় যায়গা যেহেতু অনেকদিন দেশের বাইরে তাই আড্ডা দেওয়ার মত কোন বন্ধু হিমেলের নেই।তাই দিনের সময় ফোন টিভি বিকালে ছাদে একটু গিটার নিয়ে বসে এভাবেই সময় কাটায়।
একদিন সন্ধ্যায় হিমেল ছাদে একা একা হাটছে অন্য দিনের তুলনায় আজ মোনটা কেন যেন একটু খারাপ হঠাৎ একটা বেসুরো গলায় গানের শব্দ,মেজাজ আরও গরম হয়ে গেল খুব গাড়ির শব্দ তার মধ্যে বেসুরো গলায় গান সব মিলিয়ে একদম বিরক্তিকর একটা পরিবেশ। হিমেল খুব বিরক্ত হয়েই শব্দের উৎস খুজতে শুরু করলো হঠাৎ একটা যায়গায় হিমেলের চোখটা আটকে গেল হিমেলের নাড়াচড়া একদম বন্ধ হয়ে গেল হিমেল পাশের ছাদে খুব সুন্দর কোন দৃশ্য মুগ্ধহয়ে দেখছে কয়েক মিনিটে মনে হয় হিমেলের চোখটায় পলোক পড়ে নাই। হিমেল পাশের ছাদে দেখলো অনেক বেশি সুন্দর একটা মেয়ে গান গাইছে কানে হেডফোন মেয়েটার মাথাটা তালহীন ভাবে নাড়াচ্ছে যদিও মেয়েটার গলায় গানটা বড্ড বাজে লাগছে কিন্তু তার সুন্দর্যের কাছে এই সামান্ন বাজে কিছুই না হিমেলের মোনটা অনেক বেশি ভালো হয়ে গেল।মেয়েটা একটু পড়েই ছাদ ছেড়ে চলে গেল হিমেল তার যাওয়ার পথে তাকিয়ে ছিল বাকিটা সময়,বালিকা চলে গেলেও হিমেলকে যা দিয়ে গেল তা নিয়া আজ সারারাত হিমেল র্নিরঘুম কাটাকে পারবে।
পরের দিন বিকেল হিমেল ছাদে বসে গিটারের তালে গান গাচ্ছে আর ভাবছে মেয়েটার কথা,হঠাৎ একটা মিষ্টি শব্দ;এ যে শুনছেন; হিমেল গানটা থামিয়ে পেছনে তাকিয়ে যা দেখলো তাতে তার নিজের অজান্তেই তার মুখ হা হয়ে গেল কি অদ্ভুত সুন্দর এই মেয়েটা এত মিষ্টি তার কন্ঠ কিন্তু মেয়েটার চোখেচোখ পড়তেই হিমেল কল্পনা থেকে বাস্তবে আসলো কারন চোখটার দিকে তাকাতেই হিমেল দেখলো চোখটা হিমেলকে খেতে চাইছে খুব ক্ষিপ্ত ভঙ্গিমায় ছিল।
অদ্ভুত সুন্দরীঃএই যে মিষ্টার এমনে বোকার মত হা করে তাইয়া আছেন কেন জীবনে মেয়ে দেখেন নাই।
বোকা হিমেলঃজী মানে
অদ্ভুত সুন্দরীঃ জী মানে কী হে?[খুব রাগি কন্ঠে]
বোকা হিমেলঃজীবনে অনেক মেয়ে দেখছি আপনার মত এমন অদ্ভুত সুন্দরী আমার জীবনেও দেখি নাই [খুব অপ্রস্তুত ভাবে বলল একটু অাতঙ্কীতও ছিল]
অদ্ভুত সুন্দরীঃহইছে রাখেন আপনার সুন্দরী!
হিমেলঃকই রাখবো বলেন?
অদ্ভুত সুন্দরীঃ[রাগি]এই যে আপনি ফাজলামি করবেন না,কি পাইছেন কাল লুকিয়ে লুকিয়ে আমার গান শুনে হাসছিলেন কেন?
হিমেলঃও কাল ওটা আপনি ছিলেন?
অদ্ভুত সুন্দরীঃহম আপনি কি ভেবেছিলেন আমি আপনাকে দেখি নাই আমি আপনাকে দেখেই চলে গেছি।
হিমেলঃসিট একটু অাড়ালে গিয়ে দেখলেই তো আরও বেশিখন দেখতে পাড়তাম
অদ্ভুত সুন্দরীঃকি মানি কি আপনি তো মহা পাগোল আমি এখানে ঐ সময় কাউকে কখনও দেখি না তাই নিজের মত করে গান গাইতে ছিলাম আর আপনি লুকিয়ে দেখতে চান?
হিমেলঃআমার জীবনে যত কিছু দেখেছি তার মধ্যে সবথেকে সুন্দর দৃশ্য আমি কাল দেখলাম আর আমার ভুলেই দৃশ্যটা বেশিসময় দেখতে পারলাম না।
অদ্ভুত সুন্দরীঃযত্তোসব মাথাখারাপ মানুষ আপনাকে দেখে নেবো সাবধান। [খুব বেশি রাগি কন্ঠে এগুলো বলে বালিকা চলে গেল আর হিমেল আনেক খন বালিকার গন্তব্যে তাকিয়ে ছিল]
তারপরে রোজ হিমেল ছাদে আসতো গান গাইতো গিটার বাজাতো বালিকার গন্তব্যের দিকে তাকিয়ে আর বালিকা লুকিয়ে হিমেলের পাগলামি দেখতে দেখতে হিমেল পাগলার প্রেমে পরে গেল।
অতঃপর….. একদিন হিমেল গান গাচ্ছে আর বালিকার আগমন.
বালিকাঃএই যে আপনি নিজেকে কি মনে করেন?
হিমেলঃএকটু অবাক হয়ে কেন আমি কি করলাম?
বালিকাঃআপনি কি সুন্দর করে গান গাবেন আর আমার বেসুরো গলায় গান শুনবেন এটা কিন্তু একটুও ঠিক না।
তারপরে বালক আর বালিকার কথোপকথন গুলো ধীরেধীরে ভারি হতে লাগলো দুর থেকে কাছে এই যে থেকে হিমেল এ আপনি থেকে রুশিতে পরিনত হলো। তাদের বিকেলটা অনেক দুষ্টমিষ্ট কথা আর হিমেল পাগলার গাওয়া গান শুনে কেটে যেত। রাত কাটতো তাঁরা দেখতে দেখতে ভালোলাগা থেকে ভালোবাসায় পরিনত হলো।
অতঃপর….. পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে…
কিন্তু এই সবই তো হলো ঐ সন্ধা তাঁরার জন্য তাই বাসররাতে রুশি হিমেলকে বলেছিল তোমার আমার বিয়ে হয়েছে এই তাঁরার জন্য তাই আমি চাই রোজ রাতে তুমি আর আমি একবার তারা দেখবো আর পাগলা হিমেলও কথা দিয়ে দিল।
রুশি ছাদে যাওয়ার জন্য রুম থেকে হনহন করে চলে যাচ্ছে….
দুনিয়ার এই প্রথম অভাগা আমি এত সুন্দর একটা বউ নিয়া কোথায় কম্বলে নিচে থাকমু তানা এই শীতে ছাদে যাওয়া লাগবে কি রাহ বাবা একলা একলা যাবে আমাগো ছাদে আবার রাতে কি কি যেন দেখা যায় পেত্নীরে ভুতে থরলেই বুজবে….
>[রুগি কন্ঠে ]ঐ হিমেইল্লা তুই কি কইলি?
<না মানে আমি কইছিলাম এই শীতে ছাদে যাবো আমার আবার অক্রিজেন এর প্রব্লেম ছাদে যাওয়ার পড়ে কেউ যদি একটু অক্রিজেন দিত?
>রুশি হাসতে হাসতে ভুতে বউ নিয়া গেলে সারাজীবনে আর অক্রিজেন খাওয়া লাগবে না।
<হিমেল বিছানা ছেড়ে দৈড়াচ্ছে আর বলছে [হায়রে সন্ধ্যা তাঁরা তোমার জন্য বউ পেয়েও কম্বলের নিচে বউ ছাড়া] হিমেল ছাদে কাউকেই দেখলো না পুরো ছাদে বউকে খুব করে খুজলো কিন্তু বউয়ের দেখা পেল না বউ মনে হয় লুকাইছে! নাকি সত্যি ভুতে নিয়া গেছে বাচ্চা একটা মেয়ে বলা তো যায় না। অতঃপর হিমেল তার উষ্ঠে গরম কোন চর্মের স্পর্শ পাইলো তার চোখদুটি এখন বন্ধ আমার গল্পের এখানেই অন্ত…….