– ধুতি, পান্জাবী, বিয়ের মুকুট নিয়ে আমাকে দিয়ে বল্লেন- নাও এগুলো এক্ষুনি পড়ে রেডি হয়ে নাও..? (বাবা)
:-মানে কি বাবা?এইগুলা আমি কেন পরব ? (আমি)
:-কারন এই বিয়ে এখন তুমি করবে।
:-কি!! না আমি বিয়ে করতে পারব না। আর তাছাড়া আমারত বিয়ের বয়স ই হয়নি।তাছাড়া বিয়ে করে বৌকে খাওয়াব কি??
:-সেইটা তোমাকে ভাবতে হবে না।তোমাকেই এই বিয়ে করতে হবে।আর কোন কথা না বলে এইগুলা পড়ে এস।
. আমি পারব না এই বিয়ে করতে….?
– ঠাসসসসসসসসস__বাবার মুখের উপর কথা বলিস। বলছি তো এই বিয়ে তোকে করতে হবে। ১০ মিনিটের মধ্যে রেডি হয়ে আয়…?
কি ভাই আপনারা অবাক হলেন তাই না। অবাক হওয়ার কিচ্ছু নাই। আমার বড় ভাই আজ তার বিয়ে আর উনি বাড়ি থেকে হাওয়া হয়েছেন।
তার কোন হুদিস পাওয়া যাচ্ছে না। আর আমার বাবা কথা দিয়েছেন তাই এই বিয়ে নাকি আমাকেই করতে হবে ভাবতে অবাক লাগছে এত্ত কম বয়সে বউ…..।
– ভাই তাই আর আমি কিচ্ছুই করতে পারি নাই। বাধ্য হয়ে বিয়েটা করতে হল
– শুভ দৃস্টি, মালা বদল, সাত পাকে বাধা এবং সিঁদুর পরানো একে সব হয়ে গেলো। আজ আমার ফুলসজ্জার রাত।বাড়ির সবাই গুলু গুলু কে নিয়ে ব্যাস্ত।
কি ভাবছেন গুলু আবার কে আসলে ঐ নিউ বৌ। আমার ভালো লাগছে না তাই ছাদে বসে সিগারেটএ টান ধরাচ্ছি সিগারেট আমি কখনই খাইনা।
কিন্তু আজ মেজাজ খারাপ তাই একটু সিগারেট কে পাপ্পি দিচ্ছি আর কি।
সিগারেট খাচ্ছি হঠাত পেছন থেকে পাশের বাসার আর একটা গুন্ডি ডাক দিল কি ভাবছেন গুন্ডি এখন আবার কে..? পাশের বাসার আপু..
:-এই যে মি. বর ।এখানে কি করছিস ?
:- আমার যা ইচ্ছে আমি তাই করব তাতে তোর কি..। ভাবছি ভাইয়ার মত পালামু কেমনে ….
:- থাপ্পর দিব একটা বেয়াদব নতুন বৌরে রাইখা পালানোর চিন্তা ।চল বাসায় চল।সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করতাছে।
– অপেক্ষা করছে তাতে আমার কি?
– চুপ আর একটা কথাও না চল….?
আমি আপুর পিছন পিছন যাচ্ছি।হঠাত আপু বলল-
:-সাবধানে বিড়াল মাইরো ভাই,,
:-তোমার কথা বুঝলাম না আপু ।
:-থাক আর বুঝতে হবে না।
আমি আসলেই বুঝতে পারি নাই, বিড়াল মারাটা কি?
…
সবাই আমাকে জোর করেই ফুলসজ্জার ঘরে ঠুকিয়ে দিল।
আমি ঢুকে বিছানায় না গিয়ে সোফায় এসে বসলাম আর তুয়া এক গ্লাস জুস এনে আমার হাতে দিতে চাচ্ছে?
ও আপনাদের তো বলাই হয় নাই তুয়া আমার বউ এর নাম। আমার থেকে ১ বছরের বড়!
– এটা কি? (আমি)
– দেখতে পাচ্ছেন না কি?
– না ওটা আমি খাব না niye জান গিয়ে?
– চুপ কথা না বলে খেয়ে নিবি নাহলে…?
এ বাবা আমার সাথে এ কারে বিয়া দিলা এমনিতেই বড় আবার তার উপর ফুলসজ্জার রাতে রাগিং শুরু করছে। তাই জুসটুকু খেয়ে নিলাম।
আর অনেক ক্লান্ত থাকায় ঘুমিয়ে পড়লাম সোফায়।হঠাত ঘুম ভেন্ঙে গেল।একি আমি খাটে শুয়ে আছি।তুয়া আমাকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।
আমার কাপর change।ইশশ।বুঝলাম তুয়া change করছে। এ মাবুদ এ কারে বিয়া করলাম।
আমি ওরে সরিয়ে দিয়ে ওঠে যাওয়ার চেস্টা করলাম আমাকে উঠতে না দিয়ে আরো শক্ত করে জারাই ধরে বলছে……
:-ঐ কই যাও??
:-আপনি কে যে আপনাকে বলব। আর আমাকে ছাড়ুন?
:-আমি তোমার বৌ। আর তোমায় জরিয়ে ধরবই। আর আপনি আপনি করতেছ কেন??
:-আপনি আমার থেকে ১ বছরের বড়।
:-তাতে কি আমি এখন তোমার বৌ।তাছাড়া বিয়ে যখন করছ। আমার কাছে থাকতেই হবে।
:-ঐ আমি আপনাকে ইচ্ছা করে বিয়ে করিনি। আমি বাধ্য হইয়া বিয়ে করেছি..!
নাহলে আমার মত কিউট সুইট একটা পোলা তোমারে বিয়া করে…….!
: চুপ আর একটা কথাও না। -শোন।আমি বিয়ের আগে সম্পর্ক করিনি।কারণ আমার সপ্ন ছিল,আমার স্বামী।আমি আমার স্বামী কে ভালবাসব।
যেহেতু তুমি আমার স্বামী।তাই তোমাকে আমি ভালবাসি।তোমাকেও আমাকে ভালবাসতে হবে। চলো এবার ঘুমাই?
:- আমি গুলু গুলু দিতে পারব না।
– গুলু গুলু মানে?
– গুলু গুলু বুঝেন না ঐ টা মানে ভালুবাচা। আর আমি আপনাকে ভালবাসতে পারব না।
:- তোরে…. আমিইইইইই। বিয়ে জখন করেছিস,ভালবাসতেই হবে।বিয়ের আগে যত টান্কি মারছ,সব ভুইল্লা যাও।
এখন যদি কোন মেয়ের দিকে তাকাও না চোখ উঠাইয়া দিমু।
:-আপনি আমার সাথে এভাবে কথা বলতাছেন কেন?? আমার মত একটা ছোট বাচ্চারে এমন ভয় দেখান কেনো…?
:- কিইই কইলি তুই ছোট বাচ্চা ঐ তুই থাকবি না আমি তোর বাপকে ডাকব।
বুঝলাম কিচ্ছু করার নাই এডলফ হিটলার আইন চলছে এখন।
আর এই মেয়ের উপর কোন বিশ্বাস নাই,বাবকে ডাক দিতেই পারে চুপচাপ থাকলাম এই মাইয়া আবার আরো জোরে জরাইয়া ধরছে।
‘হে ঈশ্বর আমারে এই পেত্নীর হাত থেকে বাচাও।’ রাম রাম রক্ষা কর মোরে ।
সকালে একটু দেরি করেই ঘুম থেকে উঠলাম।হঠাত ফোন বেজে উঠল দেখি অচেনা নাম্বার আমি অচেনা কল রিসিভ করি না।
পরপর তিনবার রিং হওয়ার পর কল রিসিভ করলাম-
:- নমস্কার….!! (আমি)
:- বাহহহ চমৎকার… । কোথায় তুমি?(মেয়ে কন্ঠ)
:-কে আপনি?
:-আমি তোর যম ।তারাতারি বাসায় আয়। বাবার বাড়ি যাব
:- আমি এসে কি করব।আপনার বাবার বাড়ি আপনি যাবেন,তাতে আমার কি?
:-তুমি যাবা না ??
:-আমি কোথাও যাব না।
এই বলে ফোন কেটে দিলাম।কিছুখন পর আবার ফোন বেজে উঠল।
:-হ্যালো বাবা
:- ওই শয়তান কই তুই?
:-আমি-তো খেলতে আসছি।
:-খেলা বাদ তারাতারি বাসায় আয় ।
– কিন্তু আজ কে তো ফাইনাল খেলা। খেলতেই হবে।
– আচ্ছা ঠিক আছে তুই ফাইনাল খেল।আর আজ থেকে এই বাড়ির ভাত বন্ধ এটাও ফাইনাল।
:-ওকে বাবা আসতেছি।
তারপর ওর বাপের চলে আসলাম।
রাতে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করেছে।
আমি খাটে বসে আসি। কিছুখন পর তুয়া আসল।এসে দরজা লাগিয়ে দিল।তারপর আমাকে আমাকে খাটের উপর ফেলে আমার উপর এসে বসল।
:-আপনি আমার উপর থেকে সরুন।আর কেন জরাই ধরছেন।
:-আমি ধরতেই পারি কারন আমি তোমার বৌ।আমি সব ধরতে পারি।
এই বলে ও আমাকে কিস করা শুরু করল।
প্রথমবার আমি এইরকম ফিলিংস পেলাম।really আমার কেমন যেন fellings হল।মনে হল আমি কোথাও হারিয়ে যাচ্ছি।
:-দেখুন, আমি বাচ্চা ছেলে।আমার সাথে এরকম অত্যাচার করতে পারেন না?
:-তুমি বাচ্চা ছেলে!! ভালোই রোমাঞ্চ করতে পার।নিজের বৌয়ের সাথে করতে পার না??
:-দেখুন…………
:-কোন দেখা দেখি নাই যা হবার সরাসরি হবে।
হাই ভগবান এই মেয়ের হাত থাইকা আমারে রক্ষে কর! তাই কোন রকমে রাত টা পার করে দিলাম।
আর তারপরের দিনই ওখান থেকে কেটে পরেছি..!
:-এই যে আমি ফুসকা খাব।(তুয়া)
:-ঐ আপনি ফুসকা খেতে চাইলে তাতে আমার কি? যান না খেয়ে আসুন।
:-ঐ তুমি সবসময় এরকম কর কেন?
– আমি আবার কি করলাম?
– হুম…হু…হু…হু….?
:- হাই ভাগবান এই মাইয়া কান্দে ক্যান। ওই কান্না থামান ফুসকা খাওয়াবো..!
– মামা এক প্লেট ফুসকা! ঝাল কড়া করে দিন। (তুয়া)
– এ মামা এত্ত ঝাল দিচ্ছেন কেন? এগুলা ক্যামনে খাবে…? (আমি)
– তুমি চুপ থাকো…?
– আরে আমার কথাটা শুনো এত্ত ঝাল…. (পুরোটা শেষ না করতেই)
– চুপ একদম চুপ…? এখন এই সব ফুসকা আমারে খাওয়াইয়ে দাও..?
– কিইইইইই আমি পারব না। তোমার তো নিজের হাত আছে। নিজেই খাও…?
– ওকে তুই থাক আমার লাগবে না ফুসকা খাওয়া…?
– আচ্ছা চলে জাবেন না আমি খাওয়াই দিচ্ছি। তারপর বাধ্য হয়ে ফুসকা খাওয়াই দিচ্ছি..
– বল্লাম তো এত ঝাল না খেতে এখন কি হচ্ছেটা কি? আমার সাদা শার্ট-টা কি চোখের জলে ভাসিয়ে দিবা নাকি?
– হইছে আর খাওয়া লাগবে না।
– না আমি খাব খাব খাব!
– খাবে তা কান্না আর তার সব রাগ আমার শার্ট এর উপর পরছে।
ভাই কে শুনে কার কথা। আমার কোন কথাই শুনলো না। কেদে কেদে আমার শার্ট-টা ধুর….! তারপর বাসায় চলে আসলাম?
– ওই থাম…? (আমার মা)
– কি হয়েছে মা (আমি)
– বউ মা রে কি করেছিস?
– আমি আবার কি করব?
– সত্যি করে বল কি করেছিস? বউ কাঁদছে সেটা আমি বুঝতে পারছি?
– মা আমি কিচ্ছু করিনি ফুসকা খেয়ে কান্না করেছে?
– চুপ ফুসকা খেয়ে কেউ কান্না করে নাকি? তুই নিশ্চই কিছু একটা করেছিস।
ভাই আমার মারে কে বোঝাবে বলেন?
আমার কোন কথাই তো বিশ্বাস করে না। ধুর এমন হলে কি ভালো লাগে।
কিছুক্ষন পর বন্ধুদের সাথে দেখা করতে গেলাম।
:-কিরে বিয়ে করে বউ পাগলা হয়ে গেলি? (আমার এক বন্ধু)
: কি বলিস এসব বউ পাগলা হব কেন?
:- শালা বিয়ে করেছিস অথচ আমাদের বলিস নাই। তুই আমাদের কিসের বন্ধু।
– দোস্ত বিশ্বাস কর আমি বাধ্য হয়ে বিয়ে করেছি।
– আরে হইছে আর চাপা মারতে হবে না ভালই মজায় আছ।শশুর বাড়ি যাচ্ছ।( আর একটা বলল)
:- আচ্ছা ভাই তুই বউ নিয়া থাক। আমাদের কাছে আর আসবি না?
– আরে আমার কথাটা তো শুন?
– কোন কথা না? যা ভাগ।
আর কিছু না বলে ওখান থেকে চলে আসছি কি রে ভাই জাদের সাথে এতদিনের পরিচয় তারা এমন করল আমার সাথে।
আমার তো ভাবতেও অবাক লাগছে।তাই বাসায় চলে আসলাম আর এসে চুপ করে বসে আছি….
– হিহিহি…? (তুয়া)
– ঐ হাসেন ক্যান? (আমি)
– তোমার বন্ধুরা আজ তোমারে তালাক দিছে তাই না?
– এটা আপনি ক্যামনে জানলেন?
– আমি সব জানি। কারন তোমার বাপে বলছে তোমার বন্ধুদের যেন তোমাকে ওদের দল থেকে ডিভোর্স দেয়…।
– কিইইইইইইইইইই আমার বাবাই এই কথা বলছে….?
– হুম… হইছে এবার খেতে আসুন। খাবার সব রেডি।
– আমি খাব না?
– আচ্ছা বাবা কে বলছি?
– ওই খাবো তো । কখন কইছি খাবো না। কথায় কথায় খালি বাবার ভয় দেখায়।
পরদিন রাস্তা দিয়ে হাটছি। পেছন থেকে একটা গাড়ি এসে আমাকে ধাক্কা দিয়ে চলে গেছে আমি সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে পরে যাই।
আর জ্ঞান ফিরে তাকিয়ে দেখি আমি হাসপাতালে আর আমার পাশে তুয়া বসে আছে।
চোঝ মুখ লাল আর ফুলে গেছে মনে হচ্ছে শুধু কেঁদেছে আর কেঁদেছে।
আমি জানি তুয়া আমাকে অনেক গুলা ভালোবাসে। কিন্তু আমিও ভালোবেসে ফেলেছি ওরে।
তারপর ডাক্তার এসে বলল তেমন কোন সমস্য হয় নাই আপনারা কাল কে বাসায় নিয়ে যেতে পারেন।
তারপর আমাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হলো।
কি ব্যাপার আমার বউ টা আজ আমার কাছে আসতেছেনা ক্যান। আর বিছানা থেকেও তো উঠতে পারছি না।
সারাদিন গত হওয়ার পর রাতে আমার জন্য রুমে খাবার নিয়া আসল।
: এই যে নিন এগুলো খান এখন? (তুয়া)
:- আমি খাব না এগুলো নিয়ে যাও।
– আচ্ছা আমি খাওয়াই দিচ্ছি নাও হা কর?
– বল্লাম তো খাবো না। এক কথা কতবার বলা লাগবে।
– কি ব্যাপার আজ কে হঠাত এতো রেগে আছো যে?
– না কিছু না তুমি কেন আসলে এখন। আমার কাছে কি তোমার যাও বাইরে যাও?
– ওহহহহ এখন বুঝেছি রাগ করার কারন টা কি? আজ কে সারাদিন আসিনি তাই তো….!
– তুমি আসোনি তাতে কি আমি কি বলেছি কখনও যে তোমায় মিস করেছি?
– হইছে হইছে এখন নাও হা কর খাইয়ে দিচ্ছি?
তারপর আর না করতে পারলাম না খেয়ে নিলাম। খাওয়া শেষ তুয়া চলে যাচ্ছে। আমি ওর হাত টা টেনে ধরলাম।
– কই যাও?? আমি
– কই আবার পাশের রুমে গিয়ে ঘুমাবো তুমি তো আমায় মিস কর না তাই কেন তোমার কাছে থাকব।
আমি আর কিছু বলতে না দিয়ে তুয়া কে সোজা বুকে টেনে নিলাম।
– এই কি করছো কি? ছাড়ো কেউ এসে পরবে তো।
– ছাড়ার জন্য কি ধরেছি নাকি।
:-কি ব্যাপার।আজ এত রোমান্টিক।
:-কারণ, আজ আমার সিনিয়র বৌকে ভালবেসে ফেলেছি।
:-তাই বুঝি।এই যে, আমি তোমার সিনিয়র মুখ সামলে কথা বল আরে রাখো তোমার সিনিয়র।
ভাই তারপর কারেন্ট চলে গেছে। তাই অন্ধকারে কিচ্ছু দেখা জায়নি। কারেন্ট আসলে আবার আসিয়েন এখন বাই।…….