-এই চলেন
>কোথায়?
-কোথায় অাবার? ছাদে যাবেন।
>ছাদে? বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছে, এই বৃষ্টির মাঝে ছাদে যাবো। মাথা ঠিক অাছে নি?
-অামার মাথা ঠিকেই অাছে, যাবেন কিনা বলেন?
>না যাবোনা, বৃষ্টি পড়ছে, তার মধ্যে অাজ অামাদের বাসর রাত। এই রাতে বৃষ্টিতে ভিজে ছাদে, প্রশ্নই অাসেনা।
-অাপনি যাবেন না তাই তো?
> হুম যাবোনা।
-অামি এখনি চিৎকার করবো না গেলে!
>করো, অামার কোন সমস্যা না।
.
-অামমম্মা
>এই যাবো, (মুখে হাত দিয়ে অাঠকাইলাম) কি মুশকিল এত রাতে বৃষ্টির মধ্যে ছাদে উফ, ডিসকাস্টিং!
-কিছু বললেন?
>না বলিনি, চলো ছাদে।
-হ্যা চলেন!
.
ও,অাপনাদের তো বলাই হয়নি। সুপ্তি অামার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী। অামি ইফাদ একটা মাল্টিনেশনাল
কোম্পানিতে চাকরী করি।বিয়ে করার ইচ্ছে ছিলোনা। তবে অামার অাম্মি জানে ছোট বোনের অসুস্থের
কথা বলে বাড়িতে এনে, অামাকে মেয়ে দেখাতে নিয়ে যায়। উফ মেয়ে দেখতে গিয়ে কি কান্ড, অামাকে সরবতের বদলি, লবন পানি খাওয়ানো হলো। তাও অাবার অামার হবু বউয়ের কাজ। হবু বউ বলছি কারণ
সুপ্তিকে ছবিতে দেখেই পছন্দ হয়ে যায়। তাই অামিও অার না করতে পারেনি।
বউ রানী,থুক্কু হবু বউটা যখন অামার সামনে এসে বসলো, ইয়া বড় ঘুমটা মুখে। মনে মনে ভাবলাম, অামার বউটা কি লক্ষী অার লাজুক। এরকম কয়েকটা বউ থাকলে ভালো হতো। কিন্তু কে জানতো বউ অামারে বাসর রাতে ছাদে বিজাবে। তাহলে এরকম বউ বিয়া’ই করতাম না।
-এই অাপনি বিরবির করে কি বলছেন। অার দাঁড়িয়ে রইলেন কেনো।অাসবেন নাকি, ঘুসি মেরে নাক ভাঙ্গতে হবে?
>ওরে বউ অামার কয় কি।এইটা বউ না ডাকাত।
-কিছু বলছেন?
>না বলিনি।
-হুম,এবার অাসোন!
.
-কি করবো বউয়ের পেছন পেছন গেলাম। বউ অামার একটু অাগেই গেলো। অামি ছাদে গিয়ে দেখি বউ অামার মনের অানন্দে বৃষ্টিতে ভিজছে। অার এদিক দিয়ে অামি বৃষ্টির ঠান্ডা পানিতে কাপছি। হঠাৎ করে যেন একটা পরী দেখতে পেলাম।এটা অামার বউ না,পরী। দুটু হাত ছেড়ে দিয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে। চুল গুলো ভিজে একপাশে পড়ে অাছে। শাড়ীর অাচলটা কমড়ে বাঁধা। কাজল ধুয়া লেপ্টে গেছে। অপরূপ সুন্দর লাগছে সুপ্তিকে। অাচ্ছা পরি দেখতে মনে হয় এমনি হয়। না মনকে অার মানাতে পারছি না। কি করবো বউ ভিজছে অামার কি দাঁড়িয়ে থাকলে চলে? অামিও ভিজতে শুরু করলাম। অাস্তে অাস্তে পরীটার কাছে গেলাম। কাছ থেকে অারও সুন্দর লাগছে। বিধাতা মনে হয় সব রূপ তাকে দিয়ে দিয়েছে। সুপ্তিকে কোলে তুলে নিলাম। সুপ্তি বললো
– কি করছেন?
>তুমি এত সুন্দর কেনো সুপ্তি?
-হইছে অার পাম দিতে হবেনা সুপ্তির এই কথা শোনে তার মুখটাকে একটু দুষ্টুমিতে বন্ধ করে দিলাম। অার বলতে লাগলাম। সত্যিই তুমি এত সুন্দর কেনো। তোমার ছবিতে যেমনটা দেখেছি, তার চেয়েও অারও বেশি সুন্দর। তোমার রূপে পাগল হয়ে যাবো। খুব ভালোবাসবো তোমায়, প্লিজ কখনোই ছেড়ে যেওনা।
.
-হইছে এত রোমান্টিক হতে হবেনা। অাগে কই ছিলো রোমান্টিক। অাপনার বউ অাপনারি থাকবে,
কোথাও যাবেনা। অামিও অাপনাকে এমনি করে ভালোবেসে যাবো।কিন্তু অামার এসব ছোট ছোট পাগলামী গুলা সহ্য করতে না পারলে খবর অাছে।
>তোমার সব খবরি অামি রাখবো,তবে তোমার ভালোবাসা পেলে।
-হুম ভালোবাসবো, তবে অামাকে এমনি করে বৃষ্টির রাতে ভেজাতে হবে,সাথে অাপনাকেও ভিজতো হবে।
যদি কোন রাতে বলি ফুসকা খাবো। তবে রাতে অামাকে নিয়ে ফুসকা খাওয়াতে হবে। যদি বলি বিকেলে
নদীর ধারে অামাকে নিয়েও হাঁটতে হবে হাতে হাত রেখে, তবে তাই করতে হবে,শত অফিস থাকলেও।
অার কথা বলতে দিলাম না সুপ্তিকে। দুষ্টুমিতে মুখটা অাবারও বন্ধ করে দিলাম। অার বললাম, অাপনার বলা না বলা সব অাপদার রাখবো ম্যাডাম,তবে অাপনি অামার এই ছোট ছোট দুষ্টুমির অাবদার গুলো রাইখেন।সুপ্তি অার কিছুই বলতে পারলো না।লজ্জায় মুখ লোকালো অামার বুকে।