ভালবাসি তাই ভালবাসি !!!

ভালবাসি তাই ভালবাসি !!!

– ঐ কেরে কান ছাড়, একবার পিছনে ঘুরতে তে এক ঘুসি দিয়ে সব দাঁত ফেলে দিমু, না না সব দাঁত পড়বে না তো দুই তিনটে দাঁত ফেলে দিমু হুমমমম। – কীইইইই বললি শয়তান, দাঁড়া আরো জোরে দিতেছি।
– আউউউউউউউ লাগতেছে তোছুছু , না না সোহানা।ছাড় না প্লিজ তিনটে ক্যাটবেরি দিমুনে।
– হুমমমম মনে থাকে যেন।
– ঐ সবার মধ্যে থেকে ওমন কান ধরে টেনে আনলি কেন।
– ওই কুত্তা তুই আমার বাসার সমনে গিয়ে ওমন চিল্লাইতেছিলি ক্যান।
– হি হি এমনি, রাতে চাঁদ ওঠে নাই তো তাই চাঁদ দেখতে গেছিলাম।
– কীইইইই, এর মানে কী।
– এর মানে হইল তুই হইলি চাঁদ এর মতো, আর একটা চাঁদ ওঠে নাই তাই
আর একটা চাঁদ দেখতে গেছিলাম সিম্পল, আর তুই তো জানিস আমার রাতে চাঁদ না দেখলে ঘুম আসে না, তাই তোদের বাসার সামনে গিয়ে চিল্লাই তেছিলাম হি হি হি।
সোহানা দিকে তাঁকাই দেখি হেব্বি রেগে আছে, সাহরিয়া পালা না হইলে তোর
রক্ষা  নাই।
যেই বলা সেই দৌড়, পিছনে থেকে সোহানা ডাকতেছে,
– ঐ সাহরিয়া হারামি কুত্তা দাঁড়া।
– না না এখন আর আমারে কে পায়, একটা দিক দিয়া ভাল আমার নামের
কোন উল্টা পাল্টা হয় না হি হি।

ও হ্যা আমাদের পরিচয় দিয়ে ফেলি, আমি সাহরিয়া দেখতে ভালই, উচ্চতা কিউট হি হি হি, আর যে মহিলাটা আমার, না না মহিলা না মেয়েটা আমার
কান ধরছিল সে হল ছুছু মানে, হায় হায় নাম তো মনে নাই, একটু খাঁড়ান উপরে থেকে নাম দেখে আসছি।

ও হ্যা ওর নাম সোহানা, আসলে ছুছু বলে বলে অভ্যাস তো তাই নামটা
মনে থাকে না, আপনারাই বলেন এটা মনে থাকার মতো কোন নাম।
আমি জানি মনে মনে আপনারা ও বলছেন একদম না, হি হি আমি জানি তো এটাই বলছেন।

দূর এই সব কেন বলতেছি, সোহানা আর আমি একই সাথে পড়ি না, কী ভাবছিলেন পড়ি তাই তো।
না মানে আগে পড়তাম এখন পড়ি না, মানে এক সাথে পড়ি না।
এই জামানার মানুষ গুলা হেব্বি খারাপ ভাই,
নিজের মেধার কোন দাম নাই, আমি কারো না দেখে লিখে একটু রেজাল্ট খারাপ  করাই ভালকলেজে চান্স পাই নাই,
কিন্তুু আমার পুরা রেজাল্টাই ছিল পুরা মাখন, কোন ভেজাল নাই।
আমার বাপ সহ কেউ বুঝে নাই, আর কিছু পোলাপান দেইখা দেইখা লিখে, আজ ভাল ভাল কলেজে পড়ে আর আমার মতো পোলারা ঐ একটা কলেজে পড়ে নাম কইতেও সরম লাগে।

না না সোহানা ওমন না ও এমনিতেই হেব্বি ভাল ছাত্রী, দেখতে ও বেশ, পুরাই চাঁদের মতো সুন্দরি, সেই ক্লাস সেভেন এর ভালবাসা, কিন্তুু কইতে পারি নাই, ওরে সব কইতে পারি কিন্তুু এই কথা বলতে গেলি পুরা দুনিয়া যেন ঘুরতে থাকে কান দুইটা গরম হয়ে যায়, সব বাদ দিয়া ক্যান যে কান গরম হয় বুঝি না মনে হয় কান গুলা ও ভয় পায় যাতে থাপ্পড় দেই তাই।

সোহানা আর আমাদের বাবা প্রায় কাছাকাছি এই দুইশ মিটার হবে হয়তো।
প্রতিদিন ও যেই পথ দিয়ে কলেজে যায় সেখানের একটা টং দোকানে বসে বসে ওকে দেখি আর ক্যারাম খেলি। কালকে ওকে দেখার জন্য ওদের বাসার নিচে গিয়ে চিল্লাচিল্লি করছিলাম। তাই আজকে ওমন কান ধরে ছিল।

তাছাড়া প্রতিদিন যাওয়ার সময় একটু আকটু তাকায়।

না এখন বাসাই যাওয়া লাগবে খিদে লাগছে। বাসাই এসে খাচ্ছি হাঠাৎ বাসাই এক
মহিলার চিল্লাচিল্লি মানে আমার বাপে দুই নম্বর যে বিয়েটা করছিল তার।
না যার মনে যে যা করে করুক, তবুও ওমন কথার মধ্যে খাওয়া যায় বলেন।
নিজের মা হলে হয়তে একটু রস থাকত কিন্তুু হেতির দিকে তাঁকাইলেই রাগ লাগে। এর মধ্যে আমার মায়েরে ও টানতেছে, না খেয়ে উঠে আসলাম, আন্য কেউ কী করত জানি না।

আজকে মন খারাপ তাই সোহাদের কলেজের গেটে যাই নাই, কলেজ থেকে একটু দূরে একটা গাছের নিচে বসে আছি। আর চিল্লাই বলতে ইচ্ছে হচ্ছে,
ভাই তোদের বউ এর সাথে ডিভোর্স বা মারা যায় কোন ছেলে বা মেয়ে
রেখে,, তাহলে আর দ্বিতীয় বিয়ে করিস না ভাই পায়ে ধরি, না মানে যদি ছেরে বা মেয়েটার সুখ চাস।

মনটা সালা ক্যান খারাপ হয় বুঝিনা। বসে আছি নিচের দিকে মুখ দিয়ে।
– মনে হল পাশে কেউ বসল, তাঁকালাম না কারণ যে কেউ হতে পারে।
একটু পরে কাঁধে হাত দিল। একটু ঘুরে তাঁকাতেই লাফ দিয়ে উঠলাম।
– সোহানা তুই।
– হুমমমম।
– আচ্ছা বসে থাক।
– আজকে কলেজের গেটে যাস নাই
কেন।
– হি হি মাত্র যেতাম।
– সাহরিয়া এমন কষ্ট নিয়ে হাঁসিস কেমনে।
– দূর আমার আবার কষ্ট কই পাগলি।
– আমি জানি আর সেই ছোট বেলা থেকে দেখছি তোকে, তোর মন খারাপ হলে এমন করে বসে থাকিস।
আবার ঐ মহিলা বকা দিছে তাই না।
– আরে না না এমনি এমনে বসে আছিরে পাগলি।
– হুমমমম হইছে আর বলতে হবে না।
চল এখন।
– কোথায়।
– খেতে আবার কোথায়।
– আরে আমা খেয়ে আসছি সত্যি।
– হুমমমম কেমন খাইছিস সেটা
তো আমি জানি, ছোট থাকতে ও এমন করে থাকলে খেতে বললে খেয়ে নিতি।
– একমাত্র তুই আমাকে বুঝিস বুঝলি ছুছু।
– আবার ছুছু বললি শয়তান।
– হি হি সরি,
জানিস আমি এক মাত্র পোলা,
যার মনকে ভাল হয়ে যেতে বললেই ভাল হয়।
– হুমমমম জানি।
– আচ্ছা তুই কেমনে জানলি আমি তোরে লুকাই লুকাই দেখি।
– তুই যেমন শয়তান সুন্দরী মেয়ে গুলারে দেখতে আসবি না সেটা হয় নাকি।
– হুমমমম সেটা ঠিক।
ওরে যে খালি দেখি সেটা চোখে পড়ে না, অন্য মাইয়ারে দেখি সেটা চোখে পড়ে,
মনে হচ্ছে মাথাই একটা দিই।
– ঐ কী বলছিস।
– হি হি না কিছুই না এমনি গান গাচ্ছিলাম।

– চল ওখানে খেতে বসি।
– হুমমমম।
– কী খাবি।
– তুই যা নিবি।
– মাম্মা সন্দেস দেন।
– হি হি তুই ও সন্দেস খাস।
– হুমমমম।
– ঐ অনেক গুলা খেয়ে ফেলছি তো,
অনেক বিল আসবে, হায় হায় আমার কাছে তো টাকা নাই।
কী হইব এখন, তোরে তো কিছু
বলবে না আমারে হেব্বি মারবে।
– এবার চুপ কর না হলে আমি
মারমু তোরে।
– কেন।
– ঐ হারামি একবার তোরে টাকা দিতে বলছি।
– না তো।
– তাহলে এত কথা বলিস কেন।
– ঠিকআছে চুপ করলাম।
– এখন চল,
মামা বিল কত।
– তিনশো টাকা।
– এই ধরেন টাকা নেন।
– সোহা শোন একটা কথা বলি।
– হুমমমম।
– আমার বাপে আমারে ত্রিশ দিনে ও তিনশো টাকা দেই না জানিস।
– চুপ বাদ দে তো, এখন কই যাবি।
– এখান থেকে সোজা ক্যারাম খেলতে যাব, তার পরে সন্ধাই বাসাই।
কিছু বলতে চেয়ে আটকে গেল।
– ঠিকআছে যা আমি বাসাই
গেলাম।
– হুমমমম ঠিকআছে।
দূর কবে যে ভালবাসার কথাটা বলতে পারমু আল্লাই জানে।
– ক্যারাম খেলতেছি হাঠাৎ সোহার বাবা আর একটা লোক গল্প করতে করতে যাচ্ছে।
– জানের মহাতাব সাহেব মেয়ের জন্য একটা পাত্র পেয়েছি আমেরিকা থাকে দুই মাস বাদে দেশে আসবে, তখনি বিয়ে দিব।
– কথাটা শুনে কেমন যেন ধাক্কা খেলাম, সোহারে আমি খুব ভালবাসি, ওরা ছাড়া বাঁচা অসম্ভব।
এখন যদি ওরে বলি যে ভালবাসি তাহলে কেমন লাগে বলেন শুধু কষ্ট।

তার থেকে কিছু একটা করতে হবে যাতে সবাই সুখি হতে পারি, আমার বিশ্বাস সোহা ও আমারে ভালবাসে, কিন্তুু এটার একটা মূল রাখতে হবে।
কিছু একটা কাজ জোগার করতে হবে।
তার পরে সেদিন থেকে অনেক অফিসে ছুঁটে বেড়াইতেছি।
কিন্তুু সব শেষে শূন্য হাতে আসতে হচ্ছে, অনেক জায়গায় আপ্লাই করে রাখছি।
আর দশদিন বাদে সোহার বিয়ে।
পাগলিটার সাথে ও ভাল করে দেখা হয় না।
সারাদিন একটা কাজের জন্য ছুঁটে চলেছি।

হঠাৎ করে সোহার ফোন।
– সাহরিয়া একটু দেখা করতে পারবি।
– হুমমমম আসতেছি।
– সাহরিয়া আমার বিয়ের কার্ড তুই কিন্তুু অনেক আনেক আগে থেকে থাকবি।
– খুব কষ্ট হচ্ছে, কী বলল আমি বুঝতে পারছি না।
–  কিছু বলবি।
– না না কিছু না।
– ওকে আমি গেলাম তা হলে।

সব আসা শেষ আর কিছু ভাল লাগছে না। এমন করে দশ দিন কেটে গেল আজ
রাতে সোহার বিয়ে। ও অনেক ফোন করে ছিল ধরি নাই। বাসাই শুয়ে আছি, অপরিচিত নাম্বার থেকে একটা ফোন আসছে।
– হ্যালো ।
– আপনি কী সাহরিয়া।
– জ্বী! কে বলছেন।
– আমি একটা পত্রিকা অফিস থেকে বলতেছি, আপনি রাইটার পদে আপ্লাই করেছিলেন।
– হুমমমম তো কী হয়েছে।
– আমাদের একজন রাইটার লাগবে আমি আপনার বায়োডাটা দেখেছি,
আপনি কী কাজটা করবে।
– আচ্ছা বেতন কেমন।
– প্রথমে পনের হাজার।
– ভাইয়া আই লাপ হউ, আমি কালকেই জয়েন করব।
–  ফোনটা রেখে সোজা সোহাদের বাসাই দৌড়।
চোরের মতো ওর রুমে গেলাম।
দেখি পাগলিটা কাঁদছে।
– পগলি আই এ্যাম কামিং।
– ঐ কই ছিলি তুই।
– এত্ত কিছু বলা যাবে না, চাকরি একটা পেয়ে গেছি, প্রথমে পনের হাজার দিবে,
পত্রিকা রাইটার।
তোর চলবে তো।
– হুমমমম।।।
– ঐ হুমমমম মানে, তোর
তো আমার সাথে বিয়ে না।
হঠাৎ মনটা খারাপ করে ফেলল। ঐ পাগলি তোর জন্য এতদিন একটা চাকরি খুঁজছি বুঝলি, প্রেম করলে কী চাকরি পাইতাম, এখন সারাজীবন এর জন্য করে নিমু।
তাই তো দুইমাস আগে আংকেল এর কথা শুনে চাকরি খুঁজছিলাম।
– এখন আর কিচ্ছু করার নাই রে।
– চুপ নাই মানে হুমমমম,
সোহার হাত ধরে বাহিরে নিয়ে গেলাম আংকেল আমি সোহারে ভালবাসি  সোহা ও আমাকে সেই ক্লাস সেভেন থেকে ভালবাসে।
– হুমমমম তো তুই কী করিস যে আমার মেয়ের সাথে বিয়ে দিব।
– জানতাম এটাই বলবেন তাই তো
নিয়েই আসছি চাকরি।
পত্রিকা রাইটার হি হি।
দেন না বিয়ে।
– সোহা ওরে ভালবাসিস।
– মাথা নারালো শুধু।
– ঠিকআছে আমার মেয়ের সুখই সুখ।
পিছন থেকে একটা লোক বলল।
– আপনার সম্মান।
– রাখেন মিয়া সম্মান আগে আমার মেয়ের সুখ, একদিন সম্মান এর জন্য
সারাজীবন তো মেয়েকে কাঁদাতে পারি না।
– ওয়াও এই না হলে আমা  শশুর। তারপরে আর কী আমি আর সোহা
বাসর ঘরে বসে আছি।
– এ কুত্তা আরো আগে কেন বলিস নাই ভালবাসিস।
– আরে পাগলি ভালবাসি তো তাই ভালবাসি তাই বলি নাই।
– হুমমমম হয়েছে শয়তান।
– একটা পাপ্পি দিবা।
– ওকে কাছে এসো।
আহা যা মজা লাগছে না
এখন শুধু পাপ্পি আর পাপ্পি।

চোখ বন্ধ করেন ভাই পাপ্পি দিব
তো হি হি হি হি হি।।।।।

  >>সমাপ্ত<<
>>The End<<

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত