বড়লোকের পাগলি মেয়েটির ভালোবাসা !!! 

বড়লোকের পাগলি মেয়েটির ভালোবাসা !!! 

 

– এই যে… হ্যালো  ।

– জ্বী আমাকে বলছেন ।

– না তোমাকে নাতো ।

– ওকে সরি  তাহলে আমি গেলাম ।

– ওই পোলা এত্ত ভাব নাও  কেন ।

 – পায়ের নিচে থেকে উপর পর্যন্ত তাকাই দেখলাম ,

আমিতো ৮০ টাকার জুতো , ৩৭০ টাকার প্যান্ট

আর ১৩০ টাকার একটা গেঙ্গি পড়ে আছি ।

৫৮০ টাকার কাপড় পড়ে ও কী ভাব মারা যায়

মেয়েটার জুতোটার দিকে তাকাইলাম ।

আমার সব কিছু কেনার টাকা দিয়ে ওর

একটা জুতো ও হবে না …।

মেয়েটাকে বললাম …

– আসলে আপনি মনে হয় কিছু ভুল করছেন ,

আপনার একটা জুতোর টাকা দিয়ে আমার

অল বডি এর কাপড় কেনা হয়ে যাবে ।

আর এই গুলো দিয়ে আমি কেমনে ভাব মারব ,

আপনি যাকে খুঁজছেন আমি সে না ।

– আচ্ছা মানলাম তুমি সে না , তোমার

নাম তো সাহরিয়া তাই না ।

– সাহরিয়া নাম তো অন্য কারো ও হতে পারে ।

– ওই পোলা একটা চর দিমু , আমাকে

তুমি চেন ।

– না মানে একবার দেখছিলাম আমাদের ক্লাস

এ , আর আপনার জন্য তো সব ছেলেরা পাগল ।

– বাহ অনেক কিছু জানো তো , আচ্ছা বলতো

আমার নাম কী ।

– না মানে আমি আপনার নাম তো জানি না ।

– ওই পোলা আমার নাম জানো না ক্যান ।

– আরে আমি আপনার নাম দিয়ে কী করব

আজব তো ।

– আমার নাম নিধি , এরবার থেকে মনে

রাখবা না হলে …………. ফেলব, মনে থাকে যেন ।

– আচ্ছা আমি গেলাম ।

– ওই গেলাম মানে , কই যাবা ।

– আমার দুইটা  ছাত্র পড়াতে যেতে

হবে ।

– ওকে যাও বাট কালকে কলেজে আসবা ।

– মাথাটা একটু নেরে চলে আসলাম ।

আজব মেয়ে এসে বলে কী না তাঁর নাম

মনে রাখতে হবে ।

দুইটা ছাত্র পড়াই রাত আট টাই বাসাই আসলাম ,

বাসা মানে ।

আমি আর এক বড় ভাই মাঝারি সাইজ

এর এরটা রুম নিয়ে থাকি  ।

আমি গ্রামের একটা সাধারণ ঘরের ছেলে

অনেক কষ্টে পড়াশুনা চালাই যাইতেছি ,

আমি তেমন বড় কোন স্বপ্ন দেখি না

আসলে গরীব দের বড় স্বপ্ন দেখা মানে

আজাইরা সময় নষ্ট ।

কিন্তুু আমি সব সময় অনেক কিছু নিয়ে ভাবি কারণ …

আমি একটা উক্তি পড়েছিলাম ।

হতাশ হয়ে যে ও না ,

তুমি যা ভাবো, তাঁর চাইতে তুমি বেশি জানো ।

কথাটার অর্থ আমি উপলদ্ধি করতে পারি

কিন্তুু সেটা বুঝিয়ে বলতে পাড়ি না ।

যাই হোক আমার মনে হয়

এই কথাটায় আমাকে ভাবতে শিখিয়েছে  ।

পরেরদিন সকালে কলেজে গেলাম ।

– একটা বড় কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে

বসে আছি , অনেকক্ষণ যাবত বসে আছি ।

হঠাৎ পিছনথেকে  …

– ওই সাহরিয়া তোমাকে আমি সেই কখন থেকে

খুঁজতেছি ।

– কেন ।

– ওই কেন মানে কী হুমমমমমম   , আমার খিদে

লাগছে চলো খাবো ।

– হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো ক্যান্টিনে ।

আমাদের খাবার এর সময় ওর আর ও কয়টা খাদক

ফ্রেন্ড এসে জুটল ।

এটা ওটা খেয়ে সবাই বিদাই সাথে নিধি

ও চলে গেল ।

আমি শুধু হা করে আছি , আর ভাবছি পাঁচ

দিন দুপুরে না খেয়ে থাকা লাগবে ।

না এই সব মেয়েদের কাছে থেকে যতই

দূরে থাকা যায় ততই ভালো ।

সব ক্লাস শেষ করে হেঁটে হেঁটে বাসাই যাচ্ছি ।

– সামনে একটা কার এসে দাঁড়ালো ,

আমি আমার নিজ গতিতে যাচ্ছিলাম ।

কারণ আমার জন্য আজ পর্যন্ত কোন

সাইকেল ও দাঁড়াই নাই আবার কার ।

পিছন থেকে মেয়েলি কণ্ঠে কেউ ডাক

দিলো …

– সাহরিয়া ….।

– বুঝতে আর বাঁকি রইল না এটা নিধির গলা ।

তাই দাঁড়াই গেলাম ।

– হুমমমমমম বলেন  কী বলবেন ।

– ওই তুমি আমাকে তুমি করে বলবা ।

– আচ্ছা বলো কি বলবা ।

– সাহরিয়া আমি তোমাকে ভালোবাসি ।

– আচ্ছা আমি গেলাম ।

– ওই আমার উত্তর দিয়ে যাও ।

– আমার কোন উত্তর জানা নাই ,

আমি গেলাম ।

– যদি আর এক পা সামনে দাও না পা

ভেঙ্গে ফেলব ।

– আরে দূর যাও না , আরো অনেক পোলা তো

আছে , তাঁদের গিয়ে বলো আমাকে বলা

ক্যান লাগবে ।

– ওই তোমাকেই তো ভালোবাসি তাইলে

অন্য পোলা কে বলতে যাবো কেনো ।

– হা হা হা ভালবাসো তাও আমাকে , আচ্ছা

কার সাথে কত টাকার বাজি ধরছ , নাকি

 সব্বাইকেই দেখানোর জন্য  যে

দেখো, যেই ছেলে কোন মেয়ের সাথে

কথা বলে না তাঁকে আমার পিছন পিছন

ঘুরাইতেছি ।

আর মজা নেয়া শেষ হইলে ছেলেটাকে

ছেঁড়ে দিবা ।

এই তোমার মতো মেয়ে গুলোকে না আমি

ভালো করে চিনি ।

আচ্ছা যাই হোক আমার মতো একটা গরীব

ছেলের সাথে এমনটা করবে ভেবে একটু ও

খারাপ লাগলো না , যে পরে আমার

কী হতে পারে , আমার জায়গাতে অন্য ছেলে

হলে তো ঠিক পটে যেত ।

আর শেষ অব্দি ছেলেটার লাইফ শেষ ,

এতেই তোমরা মজা পাও তাই না ।

কাউকে ভালবাসলে মন থেকে বাসবা ,

আর না হইলে কোন দরকার নাই ।

– আর হ্যাঁ আমার কথাই রাগ করে থাকলে

সরি , আমি গেলাম ।

চলে আসছি আর ভাবছি কথা গুলো বলার

সময় ।

মেয়েটা কিছু বলেনি শুধু ও দিকে

যখন তাকাইছিলাম তখন দেখলাম ওর চোখ

দিয়ে পানি পড়ছে ,

মনে হয় একটু বেশি বলে ফেলছিলাম ।

আসলে অনেক টেনশন এর মধ্যে ছিলাম ,

তাই মুখে যা আসছে বলে ফেলছি এখন

আর ওই সব ভেবে কোন লাভ নাই ।

বাসাই আসলাম গোসল করে লম্বা একটা

ঘুম ,টাকা নাই তাই দুপরের খাবার অফ ,

৪ টার দিকে দুইটা ছাত্র পড়াইতে যেতে

হবে ,তাঁদের পড়াইতে গেলে চা বিস্কিট দেই ওই

গুলো দিয়ে দুপরের খাবার মেকআপ ।

এই ভাবে ভালোই দিন যাচ্ছিল ,

কলেজে গেলে নিধি ও আর বিরক্ত করে না ।

না মানে ওকে দেখতে পাই নাই কয়দিন

থেকে , মনে হয় আসে নাই ।

ওই সব ভেবে আমার কোন লাভ নাই ,

ওরা অনেক বড়লোক , আর আমি কই একটা

গ্রামের কৃষক এর ছেলে ।

আজকে ও সেই

বড় কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে

বসে আছি  ।

হঠাৎ একটা মেয়ের আগমন ।

– আপনি কী সাহরিয়া ।

– হুমমমমম বলেন ।

– আচ্ছা আপনার এত্ত কীসের ভাব শুনি ।

– দূর আবার সেই প্রশ্ন , আচ্ছা আপনি

আমার কোন দিকটা দেখে ভাব মনে হইল

বলেন ।

– ওই আপনি নিধি কে কী সব আবল তাবোল

বলছেন হুমমমম , ও কে জানেন , এই শহরের

সব থেকে বড়লোক বাবার এক মাত্র মেয়ে ।

ওর পিছনে কত ছেলে ঘুর ঘুর করে  , ও কাউকে

পাত্তা দেই না ,

আপনার মতো এমন একটা ছেলেকে ও কেমনে

যে ভালবাসলো আমি ভাবতে পারছি না ।

আর আপনি কী না তাঁকেই ওইসব কথা

শুনাই দিলেন ছি …

পাগলিটা সেই দিনের পর থেকে

কিচ্ছু খায় নাই জানেন ,

শুধু কেঁদে চলেছে ।

কলেজে যখন আপনাকে প্রথম

দেখেছে তখন থেকে শুধু আপনার

কথাই বলতো ,

জানতাম না যে আপনি এমন হবেন ।

– আচ্ছা আমি এখন গেলাম , আর কালকে নিধিকে

কলেজ এ আসতে বইলেন , ওর সাথে আমার

অনেক কথা আছে ।

– না ও আসবে না ।

– আচ্ছা না আসুক  , আপনার বলার বলবেন ।

আর একটা কথা মানিকে যেমন রতন চেনে ,

তেমনি পাগলিটাই তাঁর পাগলকে চেনে ।

কালকে ১১ টার দিকে আসতে বলবেন ,

আমি গেলাম ।

 

বলে বাসাই চলে আসলাম …।

পরের দিন ১১ টাই সেই

কৃষ্ণচূড়া গাছের কাছে যেতেই দূর থেকে

দেখলাম নিধি  বসে আছে ।

পাগলিটা কেমন শুকাই গেছে , আর চোখের

নিচে কালো দাগ পড়ে গাছে ।

কাছে গিয়ে তাঁর পাশে বসলাম ,

নীল শাড়ী পড়ে এসেছে কেমন পরী দের

মতো লাগছে ।

– নিধি আমাকে মাফ করে দাও ,

আমার ওই ভাবে বলা ঠিক হয় নাই ।

আসলে কী করব বলো আমার নিজের খরচ

পড়াশুনার খরচ আমাকেই চালাতে হয় ।

গ্রামে একটু জমি আছে ওই গুলো দিয়ে সংসার

চলে , আমার মতো ছেলেদের কোন শখ করতে

নেই জানো , আর ভালোবাসা তো দূরে ,

তোমার জন্য আমি কিচ্ছু করতে পারব না ।

 

যেই ছেলের নিজের দুইবেলা ভাত জুটে

না সে তোমাকে কেমনে ভালবাসবে বলো ।

বলতে লজ্জা করছে তোমাদের সেইদিন

ওই খাবার এর বিল দেওয়াতে আমি এখন প্রতি

দুপুরে না খেয়ে থাকা লাগে ।

– ওই কী বলো এই সব ,তার মানে এই কয়দিন দুপরে

তুমি না খেয়ে ছিলে ।

– হুমমমমম ।

– তুমি না একটা পাগল ,তাইতো মুখটা এমন শুকনা

লাগছে (মনে হয় এই কেঁদে দিবে )  ।

– আচ্ছা এত সব শোনার পড়ে কী ভালবাসবা বলো ।

আচ্ছা আমি গেলাম ।

– ওই নিজেকে কী মনে করো হুমমমম , একটা মেয়েকে

কাঁদিয়ে শান্তি পাও তাই না ।

– আর এ বাবা আমি তো গরীব ।

– তাঁতে কী হয়েছে আমি তোমাকেই ভালোবাসব ,

আর তুমি খালি এত্ত বেশি বোঝ কেন হুমমমম , তুমি

গরীব তো কী হয়েছে আমি তো আছি  ।

– আচ্ছা ছেঁড়ে যাবা নাতো ,

বলতেই এসে জরাই ধরল ।

ওই কী করছ সবাই দেখছে তো ।

– তুমি না বললে ছেঁড়ে না যেতে ,

– ওই পাগলি তাই বলে সবার সামনে জরাই

ধরবা ।

– হুমমমমম ধরবো ….. আচ্ছা চলো খাইতে

যাবো ।

– না না থাক একদিন যেয়েই আমাকে দুপরে

না খেয়ে থাকতে হয় , আজকে গেলা সকাল আর রাতে

ও না খেয়ে থাকতে হবে ।

– হি হি হি দূর পাগল চলো তো ।

– তুমি বিল দিবা তো ।

– হুমমমম ।

– আহা কত দিন থেকে পেট ভরে খাই নাই

আজকে তো সব খাবো ।

– পাগল একটা …।

– পাগলি একটা …।

– ওই কী বললা … দাঁড়াও আবার সবার

সামনে জরাই ধরবো ।

কী মেয়েরে বাবা … আপনারা

সবাই চক্ষু দুইটার জানালা বন্ধ কইরা

ফালান … পাগলিটা আমাকে জরাই ধরার

সময় আপনারা দেইখা ফেললে আমারে সরম

লাগবো তো হি হি হি ……………।

 

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত