দুজনের পরিচয় ফেসবুকে । চ্যাটিং করতে করতে বন্ধুত্ব । অল্প অল্প ফোনে কথা । বেশির ভাগ সময়ই চ্যাটিং করত ওরা । ধীরে ধীরে বন্ধুত্ব থেকে ভাল লাগা । তখনও বন্ধুত্ব !! কিন্তু সেটা ভাল লাগার অন্যরকম একটা পর্যায় । একজন অন্যজনের সাথে কথা না বললে ভাল লাগে না ।
সুযোগ পেলেই দুজন একটু করে কথা বলে । সুনীল (ছদ্মনাম) বন্ধুদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এস এম এস করে । প্রীতিও (ছদ্মনাম) একটু সুযোগ পেলেই বান্ধবীদের বোকা বানিয়ে সুনীলকে এস এম এস করে । বান্ধবীদের কেউ দেখে ফেললেই প্রীতি বলে, “ও কিছুনা” । সুনীলও বন্ধুদের বলে, “ঐ ফেসবুকে একটু কথা হয়” । এভাবেই দুজন ভাল লাগার এক অন্যতম বন্ধনে জড়িয়ে পরে দুজন ।
সুনীল একদিন খুব ব্যস্ত, সামনে এক্সাম । তার হাতে সময় খুবই কম । এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন, কুইজ নিয়ে খুব ব্যস্ত । সবই জানে প্রীতি । কিন্তু কেন যেন তার মন মানতেই চাইছে না । প্রীতি অনেক কষ্ট করে নিজেকে ধরে রেখেছে । সেও জানে সুনীল এখন ভার্সিটিতে । হয়তো ক্লাস করছে ।
অনেক কষ্ট করে কিছু সময় সহ্য করল প্রীতি । কিন্তু তার মন এখন আর মানছেই না ! সে সুনীলকে ফোন দিল । কিন্তু সুনীল তখন ক্লাসে । সে ফোন কেটে দিল । প্রীতির আরও জেদ হল । সে ফোন দেয়া শুরু করল । তখন সুনীল কেটে দিল না । ফোন ধরে বলল, “আমি ক্লাসে, ক্লাস শেষে ফোন দিব” । এই বলে ফোন রেখে দিল ।
প্রীতির কষ্ট তখন আরও বেড়ে গেল । সে তখন কান্না শুরু করল । সে জানে যে সুনীল ঠিকই করেছে । তারপরও তার মন মানতে চাচ্ছে না । একটু কথা না বলে সে থাকতেই পারছে না ।
ক্লাস শেষে সুনীল ফোন দিল । দেখে প্রীতি কাঁদছে । সুনীল অবাক হয়ে বলল, “কাঁদছ কেন ?” প্রীতি বলল, “তুমি যখন ফোন ধরে কেটে দিলে, তখন আমার খুব কষ্ট হয়েছে, আমি থাকতে পারছিলাম না । মনে হচ্ছিল, তুমি মনে হয় অনেক দূরে চলে যাচ্ছ, খুব কষ্ট হচ্ছিল আমার ।” সুনীল বলল, “আমার মত একটা বন্ধু হারিয়ে গেলে তাই কী ?” এটা শুনে প্রীতি আরও জোরে কান্না শুরু করল । সুনীল বলল, “আবার কী হল ??” প্রীতি বলল, “আমি জানিনা” । তখন সুনীল বলল, “আচ্ছা আমার ক্লাস আছে এখন, পরে ফোন দিব ।” এবার আর প্রীতি সহ্য করে থাকতে পারল না ।
সে বলল, “আমি তোমাকে ভালবাসি” । কথাটা শুনে সুনীল কিছুটা চমকে উঠল । তার হাত পা ঠাণ্ডা হতে শুরু করল । সে আবার বলল, “কী” ??
প্রীতি বলল, “যা শুনেছ তাই, আমি তোমাকে ভালবাসি” । সুনীল এবার অনেক খুশি হয়ে বলল, “এটা তো আমি কবে থেকে বলতে চাই কিন্তু সাহস হয় না” ।
প্রীতি বলল, “তুমি যে একটা বুদ্ধ, তাই তো মনের কথাটা আমাকেই বলতে হল” । দুজন এখন প্রাণ খুলে হাসছে । প্রীতি কাঁদতে কাঁদতে হেসে ফেলল । সুনীল এক যায়গাতেই স্থির হয়ে দারিয়ে মিটি মিটি হাসতে লাগল । সুনীল এক যায়গায় দারিয়েই ৩০ মিনিট কথা বলল । প্রীতি বলল, “আচ্ছা এখন ক্লাসে যাও, ক্লাস শেষে কথা বলব” ।
সুনীল বলল, “আজ আর কোন ক্লাসে মনোযোগ আসবে না । আমি এই মিষ্টি হাসিটা দেখতে চাই সারাক্ষণ” ।
প্রীতি মিষ্টি হেসে বলল, “পাগল একটা” !!!
গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক