নামহীন অবুঝ ভালবাসা

নামহীন অবুঝ ভালবাসা

বাসায় বসে candy crush খেলছিলাম হটাত ফোনটা বেজে উঠলো। স্ক্রিনে তাকিয়ে দেখি আফসানের কল দিছে।আফসান আমার বেস্ট বান্দর ( বন্ধু) ।
– হ্যা বল।
– কই তুই আর এইদিকে কি হচ্ছে খবর রাখিস কিছু।
– বাসায় আছি… আর কি হয়েছে পেচাল না বকে বল কি হয়েছে বল।
– তোর রিয়া তো গেল
– গেল মানে কই যাচ্ছে
(রিয়ার কথা শুনে বুকের ভিতর কেমন যেন করে উঠলো)
– একটা ছেলের সাথে ক্যাম্পাসে ঘুরছে।
– কিহ…. okk তুই ২০মিনিট wait কর আমি ১০ মিনিটে আসছি।
– হুম আয়।
গেম খেলা রেখে যত দ্রুত সম্ভব রেদি হয়ে বের হয়ে গেলাম। বাইরে গিয়ে রিক্সা না পেয়ে দৌর দেওয়া শুরু করলাম।আমার বাসা থেকে ভার্সিটি ২০মিনিটের রাস্তা। দৌরাতে দৌরাতে আপনাদেরকে আমার আর রিয়ার পরিচয়টা দিয়ে নিই।আর আমি দৌরাচ্ছিটা কেন সেইটাও বলে নিই।
২ বছর আগের কথা …. আমি সুলতান । আমি ভার্সিটির ছাত্র হিসেবে গন্য হয়েছি।তাই মনে একটু বেশিই ফুরতি ছিল।
ভার্সিটির ১ম দিনের কথা……
বাসা থেকে বের হলাম ভার্সিটির জন্য। আমার বাসার সামনে একটাও রিক্সা না পাওয়ায় একটু এগিয়ে গেলাম।কিছুক্ষণ পর একটা রিক্সা পেলাম ।(রিক্সাতে উথতে যাবো তখন ঘটলো আরেকটা কাহিনি)।রিক্সাতে উঠব তখনি একটা মেয়ে রিক্সাতে উঠে বসল
।উফ মেয়েতো না পুরাই পরি।পরির উপরেও যদি কিছু থাকে তাহলে ও সেইটা।( আসলে আমার জানা নেই)
ওকে দেখার পর সব কিছু যেন slow motion এ চলতে শুরু করেছে।আমার কানে আর কোনো শব্দ আসছিল না। পুরাই ফিল্মি মনে হতে পারে কিন্তু এইটাই ঠিক।শুধু মেয়েটার ঠোট দুইটা নারাতে দেখলাম।
কিছুক্ষণ পর মেয়েটা রিক্সা নিয়ে চলে গেল কিন্তু কিছুই বুঝতে পারলাম না।রিক্সা নিয়ে চলে যাওয়ার পর ঘোর থেকে বের হলাম।তারপর আমি আরেকটা রিক্সা নিয়ে ভার্সিটিতে চলে আসলাম।ভার্সিটিতে নতুন তাই কাওকে চিনি না কিন্তু সৌভাগ্য জনক ভাবে আফসান ও আমি same ভার্সিটিতে চান্স পেয়েছি।দুইজন একসাথে স্কুল লাইফ কলেজ লাইফ পার করেছি এখন ভার্সিটিতেও একসাথে। তাই গিয়ে দেখি আফসান আগেঈ এসে বসে আছে।নতুন ক্যাম্পাস তাই ঘুরে দেখছিলাম ।ক্যাম্পাসত দেখানোর কথা মেইনলি তো মেয়ে দেখছিলাম। ভার্সিটি লাইফ এ নতুন গার্লফ্রেন্ড না হলে হয়।
এর মাঝে আফসান বলে উঠলো ….
– দেখ মামা পুরাই পরি….
আমি সেদিকে তাকিয়ে দেখি আর আমার চোখ আবার থমকে যায়।আবার সেই ঘোরের ভিতর হারিয়ে যায়।আফসানের কথায় আবার ঘোর কাটল।
আফসান :দুস্ত ভাবছি একেই তোর ভাবি বানাবো। পরিস্তিতি বুঝতে পেরে ওকে ধমক দিয়ে বলি…..
– ধুর ব্যাটা এই তোর চয়েজ। তোকে আমার ফ্রেন্ড বলতেও আমার লজ্জা করছে। তোকে দেখ আর ঐ মেয়েকে দেখ।তোর চেহারা দেখ আর ঐ মেয়েটাকে দেখ। তোকে দেখ আর ঐ মেয়েটার পাগল করা হাসি দেখ। তোর আর ওর কোনো ভাবে যায়।
– তুই আমার প্রসংসা করছিস নাকি ঐ মেয়েটার করছিস।
– আরে ব্যাটা তোর করছি।
– আরে আমারত জানায় ছিল না যে আমার মাঝে এত গুন রয়েছে।আমার মনে হচ্ছে আমি নিজের গার্ল ফ্রেন্ড চুজ করতে পারছি না।ভাবছি গার্লফ্রেন্ড চুজ করতে একটু কম্প্রোমাইজ করব।sorry মেয়ে তুমি আমার জন্য না আমার লেবেল অন্য কোথাও। আমি মনে মনে একটু হাসলাম আর সস্তি ফিল করলাম। কি পাঠকরা বুঝতে পারেন নাই কেন সস্তি ফিল করলাম হ্যা এইটাই সেই মেয়ে জার সাথে সকালে ভার্সিটি আসার সময় দেখা হয়েছিল।আবার ভার্সিটিতেও দেখা হল। তারপর আর কি ক্রাস খাওয়ার পর যা হয় আর কি। ফলো করতে শুরু করলাম। কিছুদিনের মাঝে অনেকটাই খোজ পেয়েছি।মেয়েটার নাম রিয়া। প্রথম বষ্। খুব ভাল ছাত্রি। সবসময় পরা নিয়ে busy থাকে।প্রেম ভালবাসার জন্য সময় নাই।সে শুধু লেখাপড়া করতে চাই।এর মাঝে অনেকবার কথা বলার চেস্টা করেছি।কিন্তু সে কথা বলার সুযোগ ঈ দেইনি।আফসান ও এর মাঝে খবরটা পেয়ে গেছে তখন সে আর কি করবে তাই সে এখন সুধু help করে। আজ ৭ মাস ধরে পিছন পিছন শুধু ঘুরেই যাচ্ছি।ওকে ফলো করা… কথা বলতে চাওয়া…..ইত্যাদি থেকে ও বিরক্ত হয় ওর মুখ দেখে বুঝা যায়।আবার কখনো মনে হয় যে ও আমাকে পছন্দ করে। তাই দোটানা নিয়ে আর কতদিন থাকা যায় তাই সিদ্ধান্ত নিছি যে ওকে আজ প্রপোজ করবই।আজ যা হয় হবে হয় এসপার না হয় উসপার ।তাই সারা রাত ধরে প্র্যাক্টিস করার পর আবশেসে ভার্সিটিতে আসলাম ওকে প্রপোজ করার জন্য।দেখি ও একাই রয়েছে তাই ওর কাছে গেলাম।ও আমাকে দেখে বসা থেকে দারিয়ে গেল।আর আমি বলা শুরু করলাম……
আমি জানি না ভালবাসা কাকে বলে…
কিভাবে ভালবাসা হয়…
জানিনা ভালবাসার জন্য কি করতে হয়..
জানিনা ভালবাসা কিভাবে ব্যক্ত করতে হয়।
যদি কারও কথা ভেবে হাজার কস্টের মাঝেও মুখে হাসি ফুটে উঠে।যদি সারারাত তার কথা ভেবে সারারাত কাটিয়ে দেওয়া যায়।যদি সুধু তার সাথে দেখা করার জন্য সারাদিন রাত আধির আগ্রহের সাথে আপেক্ষা করার নাম যদি ভালবাসা হয় তাহলে আমি তোমাকে খুব ভালবাসি।তোমার ভুল হলে তোমাকে বকা দিবনা তোমার ভুলগুলি সুধরিয়ে দিব।আমি জানি তোমার অনেক সপ্ন আছে।সেই সপ্ন গুলি পুরন করার দায়িত্ব আমি নিতে চাই।কি দিবে আমাকে তোমার সপ্ন পুরনের দায়িত্ব।দিবে কি আমায় তোমার পাশে থেকে তোমাকে ভালবাসার সুযোগ।
কথা গুলি বলে রিয়ার দিকে তাকালাম দেখি রিয়া আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তারপর সে বলা শুরু করল।
রিয়া : আমি জানি তুমি আমায় অনেক ভালবাস। এইটা আমি অনেক আগেই বুজতে পেরেছি।হ্যা এইকথাটা বলব না যে তোমার জন্য আমার মনে কোনো ফিলংস নেই।কিন্তু আমি তোমাকে ভালবাসতে পারব না।আর তুমি জানযে আমি ছেলেদের সাথে ফ্রেন্ডশিপ করিনা তাই তোমাকে ফ্রেন্ড হতেও বলব না।আমার জিবনে অনেক সপ্ন আছে দায়িত্ব আছে সেইটা।সেইটা ছারা অন্য কিছুতে আমি ফোকাস করতে পারব না।bye take care.
– তুমি কি বলতে চাচ্ছ আমার জন্য তোমার মনে যায়গা আছে কিন্তু ভালবাসতে পারবেনা এইসবের মানে কি
– তোমার সাহস কি করে হয় আমার হাত ধরার।
( আসলে আমি আবেগের বসে ওর হাতটা ধরেছিলাম যাতে ও আমাকে ছেরে না যায়)
আমি আর ও শক্ত করে ওর হাতটা ধরলাম। আর বললাম- আমার প্রশ্নের জবাব দাও আগে।এই কথা বলি আর ও ওর হাতটা ছারানুর জন্য এক প্রকার হস্তা হস্তি শুরু করতে করতে ও আমাকে ঠাস করে চর বসিয়ে দিল।
এইটা দেখে ভার্সিটিতে উপস্তিত সবাই হাসতে শুরু করল।এতে আমার খুব খারাপ লাগল।তাই ভার্সিটি থেকে বাসায় চলে আসলাম।আজ পযন্ত আমার গায়ে কেও হাত তুলেনি তাই অনেক খারাপ লাগছিল।ওখান থেকে চলে আসার সময় রিয়া আমাকে কিছু বলতে চেয়েছিল।কিন্তু না শুনে চলে এসেছি।
রাগে,জিদে,অপমানের কথা মনে করে আর ভার্সিটি যায়নি।আফসান অনেকবার কন্ট্যাক্ট করার চেস্টা করেছিল কিন্তু আমি কারও সাথে কন্ট্যাক্ট রাখিনি।আজ এক মাস পর ভার্সিটিতে আসলাম। আসলে আমার আসার ইচ্ছা ছিল না।আম্মু জোর করে পাঠাল।।
ভার্সিটিতে কেও হাসলেও মনে হচ্ছে আমাকে দেখে হাসছে।কিছুদুর এগিয়ে গিয়ে দেখি আফসান বসে আছে। আমাকে দেখে দৌরে এসে জরিয়ে ধরল।
-এতদিন কই ছিলি।কন্ট্যাক্ট করিসনি কেন।তোকে কতবার কল দিয়েছি জানিস কত দুচিন্তা হচ্ছিল।আর এইদিকে কি হয়েছে তার কোনো খবর আছে।
– কেন কি হয়েছে
– তুই জানিস রিয়া তোর
( ওকে থামিয়ে দিয়ে বললাম)
– বাদ দে এই বেপারে কথা বলতে চাচ্ছি না।চল ক্লাসে যায়।
এই কথা বলে পিছনে তাকিয়ে দেখি রিয়া দারিয়ে আছে।ওর চোখে পানি….. ওর চোখে পানি দেখে বুকের কেমন যেন করে উঠলো। তাও নিজেকে সামলিয়ে নিলাম।
রিয়া বলতে শুরু করল…..

রিয়া: তুমি এতদিন কইছিলা যান আমি তোমাকে কত খুজেছি।(ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাদছে) ঐ দিন আমি ইচ্ছাকরে কিছু করিনি। কি থেকে যে কি হয়ে গেল।
– আমি ওকে আর কিছু বলতে না দিয়ে ওখান থেকে চলে আসলাম। আমি জানি ওখানে থেকে ওর কান্না দেখে আমি আর নিজেকে সামলাতে পারতাম না তাই চলে আসলাম। ওখান থেকে আসার পর আফসানের থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম।এইকয়দিন নাকি রিয়া আমার রেগুলার খোজ নিছে।আর কি কারনে আমাকে সে ভালবাসতে পারবে না তার কারন জানতে পারলাম।রিয়ার তিন ভাইবোন। রিয়া বড়।রিয়ার বাবা অনেক আগেই মারা গেছেন।তখন থেকেই রিয়ার মা রিয়াকে আর ওর ভাইবোনকে অনেক কস্টে মানুষ করেছে। রিয়ার সপ্ন একটাই ও পড়ালেখা শেস করে একটা চাকরি করবে মায়ের কস্ট কম করবে।সংসারের হাধরবে। ভাইবোনের দায়িত্ব নিবে।সেই কারনে রিয়া সেইদিন আমাকে সেই কথাটা বলেছিল। সবকিছু শুনার পর আমর আর ওর উপর কোনো রাগ জিদ কিছুই কাজ করছে না বরং নিজের উপরেঈ রাগ হচ্ছে। মনে হচ্ছে রিয়াকে খুব করে sorry বলি কিন্তু সেইদিন আর ওকে ভার্সিটিতে খুজে পেলাম না।ও বাসাই চলে গেছিল।তাই আমিও চলে আসলাম। বাসায় এসে জরে পরলাম তাই তিনদিন আর ভার্সিটিতে যেতে পারলাম না।আজকে একটু সুস্থ লাগছিল তাই বাসায় কোনো কাজ না থাকায় candy crush খেলছিলাম।তখনি আফসান ফোন উপরের কথাগুলি বলল তাই আমি এখন দৌরাচ্ছি।এইটাই ছিল আমার আর রিয়ার আতিতের কাহিনি।আসেন দেখা যাক বতমানে কি হয়।দৌরাতে দৌরাতে ভার্সিটিতে চলে আসলাম।
এসে দেখি আসলেঈ রিয়া অন্য ছেলের সাথে বসে গল্প করছে।এইটা দেখে আমার কি করা উচিৎ বুঝতে পারছি না।তাই রিয়ার সামনে গিয়ে দারালাম।রিয়া আমাকে দেখে উঠে দারাল সাথে ঐ ছেলেটা দারাল।
হটাত রিয়া বলে উঠলো ….
– এই তোমার পা কাটল কি করে।
( আসলে দৌড়ে আসতে গিয়ে কখন যে পা টা কেটে গেছে বুঝতেই পারিনি। রিয়া বলাতে বুঝতে পারলাম )
এইটা বলে যখন ও আমার পায়ের কাটা স্থনটাই হাত দিতে গেছিল। কিন্তু ওকে না ধরতে দিয়ে পা সরিয়ে নিলাম।ও আমার দিকে তাকাল।আমি বললাম (কান্না ধরা কন্ঠে)

– তুমি আমার পা ধরবে কেন। পাশে তোমার বয়ফ্রেন্ড রয়েছে সে কি ভাব্বে।সেইদিন তোমার কান্না দেখে আর আফসানের কাছে থেকে তোমাকথাগুলি শুনে মনে হয়েছিল যে তুমিও আমাকে ভালবাস।তাই ভেবেছিলাম আগের সব কিছু ভুলে গিয়ে নতুন করে জিবন শুরু করব।কিন্তু না আমারই ভুল ছিল। তুমিতো তোমার জিবন এখানে ভালই সাজিয়ে নিয়েছ।ভাল থেক।এই বলে চলে আসতে যাব ঠিক তখনি রিয়া আমাকে জরিয়ে ধরল।

আমি ওকে ছারিয়ে দিয়ে বললাম
– তোমার বফ দেখছে
– ও আমার বফ না আমার cousin ( কাদতে কাদতে বলল) তুমি আমাকে এই কয়দিন অনেক কাদিয়েছ।
– আমি বুঝি খুব খুসিতে ছিলাম।ঠিক আছে তোমাকে অনেক ভালবাসা দিয়ে সব কস্ট ভুলিয়ে দিব।
(এই বলে ওকে জরিয়ে ধরলাম)
– আমিও পুশিয়ে দিব।
– ভিসন ভালবাসি তোমায়
-আমিও
– আমিও কি
-ভালবাসি খুব ভালবাসি।
– হুম

(এইভাবে শুরু হল ভালবাসার নতুন গল্প)

………………………………………………….. সমাপ্ত………………………………………………….

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

সর্বাধিক পঠিত