কলেজের ক্যাম্পাসে বসে আড্ডা দিচ্ছি আমি আশিক, তানিম, ইমন
শালার আজ নাকি বালুপাশা দিবস হুহুহু
আর আমার কাছে আজ সিঙ্গেল ডে
বসে বসে নিরবতা পালন করতেছি ঠিক তখনই
— অভ্র তোকে একটা কথা বলি? (তানিম)
— না বললে আরো বেশি করে বলবি তাই বলে ফেল (আমি)
— দোস্ত তুই তো ফাজলামি ভালোই করিস আমি একটা মেয়ের সাথে মজা নিতে বলব পারবি কি? (তানিম)
— এই অভ্র পারেনা এমন কিছু আছে নাকি
বলে ফেল (আমি)
— দোস্ত ঐ মেয়েটাকে প্রপোজ করতে পারবি? (তানিম হাতের ইশারায় দেখিয়ে বলল)
মাইয়ারে দেখেই তো আমি একটা ঝাটকা খাইলাম
কি কিউউউট রে 😉 😉
–ব্যাপার না প্রপোজ করতেছি ফুল নিয়ে আয় যা (আমি)
— অভ্রো দোস্ত আমার প্লিইইইজ এই মাইয়ারে প্রপোজ করিস না আর মজা সে তো অনেক দূরের কথা ( ইমন)
— কেন রে এই মেয়ে কি রহিঙ্গা নাকি 😉 😉 ( আমি)
— আরে নারে বাপ
মেয়েটা বেজায় রাগি,,,, থাপ্পরের উপর উচ্চতর ডিগ্রি প্রাপ্ত,,,,,, প্লিইইইইজ দোস্ত (ইমন)
— চুপ থাক হালা
এই তানিম যা ফুল কিনে আন (আমি)
–ওক্কে জানু যাচ্ছি
(পিশাচি একটা হাসি দিয়ে তানিম চলে গেল)
আর আমিও বসে আছি
প্রায় ১৫মিনিট পর তানিম একটা গোলাপ নিয়ে হাজির
–এই নে ধর (তানিম)
আমি ফুলটা নিয়ে ইমনকে বললাম
–তোর মানিব্যাগে তো ব্লেড থাকে আছে কি এখন?
–ব্লেড কি করবি? (ইমন)
–দিতে বলছি থাকলে দে (আমি রেগে)
ইমন তারাতারি ব্লেড বের করে দিল,,,,,, আমি ব্লেডটা দিয়ে গোলাপ ফুলের দুই ইঞ্চি নিচ থেকে ডালটা কেটে নিলাম তারপর কাটা জায়গাটা চেপে ধরে বললাম
— ভন্ডুরা লেটস শো মাই ফাইজলামি 😉 😉 😉
সিনা টানটান করে এগিয়ে চলেছি মাইয়াটার দিকে পিছন থেকে ইমন বলতেছে
–ওগো আজ তুই যাসনে ফাইজলামি করিতে 😉 🙁
মাইয়া দেখি বান্ধপ্পিদের সাথে হাসাহাসি করতেছে
–এইযে মিস কটকটি একটু শুনবেন? (আমি মেয়েটাকে উদ্দেশ্য করে বললাম)
মেয়েটা আমাকে দেখেই এগিয়ে এলো
–এইযে আমার একটা ভালো নাম আছে বুঝলি তো,,,,, সাবা আমার নাম (মেয়েটা)
— সাবা হন আর হাবা হন সেটা বড় কথা না
বড় কথা হচ্ছে *******(আমি)
— কিইইইইই!!!
আমি হাবা না!!! (সাবা রাগে কটমট করতে করতে)
— আরে না না তুমি তো সাবা (আমি একটু পাম আরকি)
— হু ঠিক আছে এবার বল কি বলবি (সাবা)
আমি হাটুগেড়ে বসে
–বালিকা তোমার ঐ মায়াবি মুখটা দেখে আমি পাগল হয়ে গেছি 😉 😉
তোমার ঐ গরুর মত চোখের প্রেমে পড়ে গেছি 😉 😉
তোমার ঐ পাটের আশের মতো চুলের প্রেমে পড়ে গেছি 😉 😉
বালিকা আমি তুমারে কোলবালিশের মতো ভালোবাসি 😉 😉 😉
আই লাবু হাবা থুক্কু সাবা 😉 😉 😉
সাবা আমার হাত থেকে ফুলের ডালটা ধরতেই যারা তাকিয়ে ছিল তারা, ওর ফ্রেন্ডরা
সাথে আমার ফ্রেন্ডরা তো হেসেই গড়াগড়ি খাচ্ছে
খাবে না কেন হাবা থুক্কু সাবা এত সুন্দর করে ফুলটা নিল আর চেয়ে দেখে শুধু ডালটা হাতে আর ফুলটা আমার হাতেই
আমিও হাসি ঠেকাতে পারলামনা
হুহুহু হিহিহি
সাবা তো রাগে কটমট কটমট করছে
নাক কান বুজে দে দৌড়,,,,, ,এক দৌড়ে পেরিয়ে গেলুম মোড়
তারপর সোজা বাড়িতে
অপরদিকে সাবা রাগে ফুসতেছে
এই প্রথম কোন ছেলে ওকে এভাবে অপমান করলো তাই মনে মনে সাবা ভাবছে যে করেই হোক ছেলেটাকে উচিত শিক্ষা দিতেই হবে
রাগে গজগজ করতে করতে সাবা বাসাতে চলে আসে
এদিকে আমি ভয়ে দুইটা দিন কলেজেই যাইনি
হিহিহি
বীরপুরুষ তো আমি তাই ভয়টা একটু বেশিই
😉 🙁
এদিকে সাবা এতটাই রেগে গেছে যে অভ্রকে কলেজে হারিকেন লাগিয়ে খুঁজছে
তিনদিন পর কলেজে এসেছি আমি তবে ভয় ভয় লাগছে বলা তো যায়না যদি মেয়েটা এসে খপ করে ধরে
তো কোন রকমে ক্লাস করে ফ্রেন্ডদের সাথে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি ঠিক তখনই পাশ দিয়ে চলে যাওয়া রিক্সা থেকে একটা লিপস্টিক মোছা টিস্যু এসে গায়ে পড়ল
— ঐ কোন শালারে গায়ে টিস্যু ছুড়ে মারল?
রুক যা,,,,,, মেরি ইজ্জত কি কসম রুক যা
বলতে না বলতেই সামনে রিক্সাটা থেমে গেল
আমি রাগটা একটু বাড়িয়ে রিক্সার কাছে এগিয়ে গেলাম দেখি তিনটা মেয়ে
— ছেলে দেখলেই টিজ করতে মন চায়না বজ্জাত কোথাকার
ওমা 😉 😉 🙁
এ কি গো
হঠাৎই আমার রাগ ভয়ে কনভার্ট হয়ে গেল আর মেয়েগুলারটা রাগে
এইটা তো সেই গুন্ডী মেয়েটা যাকে সেদিন প্রপোজ করেছি 😉
ভাগ অভ্র ভাগ,,,,,,,
তারাতারি সাইকেলে উঠে ভুঁ ভুঁ পিক পিক
ক্যারে যায়না কে? 😉 🙁
যাহ সাইকেল যাহ্
ওরেম্মা পিছু ফিরতেই দেখি গুন্ডীটা আমার ব্যাগ টেনে ধরে রাখসে
–কই যাও বাবু তুমি না আমাকে ভালোবাসো চলো একটু বসি কোথাও (সাবা)
মনে মনে ভাবছি এমন মধুর কথা তার মানে বড় দেখে বাঁশ দেবে
কি করা যায়???
আইডিয়া,,,,,,,,, 😉
–কোথায় যাবা বলো (আমি)
— কোন রেস্টুরেন্টে যাই কি বলো বাবু? (সাবা)
বাঁশ রেডি
আমিও কমনা
–কোন রেস্টুরেন্টে যাবা বলো (আমি)
— আমার সাথে চলোই তো বলেই হাঁটাতে হাঁটাতে বান্ধপ্পি সহ বাংলা হোটেলে নিয়ে আসলো
ঢুকেই মাইয়ারা মনের মত অর্ডার করতেছে যা আমার কিডনি বেঁচলেও টাকায় পোশাবে না
খাবার চলে এসেছে আমিও খুব করে খাচ্ছি
এতো মজাদার খাবার কি না খেয়ে থাকা যায় 😉 😉
তারপর পকেটে থাকা বাটন ফোনটা দিয়ে নিজেই নিজের ফোনে ফোনদিলাম
বাজতেছে,,,,,,,,,,,
— কি হলো বাবু ফোনটা ধরো (সাবা)
— আপু ফোন করেছে যদি শুনে রেস্টুরেন্টে কপালে মাইর আছে (আমি)
— তাইলে বাইরে গিয়ে কথা বলে তারাতারি আসো যাও (সাবা)
–আচ্ছা,,,,,,, বলেই আমি পিশাচি একটা হাসি দিয়ে ম্যানেজারের কাছে এসে বললাম
আঙ্কেল টাকাটা ঐ মেয়েটা দেবে
আমি বলেই বাইরে এসে সাইকেলটা নিয়ে
ভুঁ ভুঁ
চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে উইরা উইরা 😉 😉
সাবা এবার বুঝুক অভ্র একটা কিরাম পুলা 😉 😉
ওদিকে খাওয়া শেষ করে বসে আছে সাবা আর ওর বান্ধবিরা অভ্রর কোন খোজ নেই
— কি রে ছেলেটা কই গেল? (মিম)
— বাইরেই তো গেলো আসছেনা কেন (সাবা)
মিম উঠে গিয়ে বাইরে এদিক সেদিক তাকিয়ে বলে
–ছেলেটা তো কোথাও নাইরে সাবা
–কিইইইইইহ্ 🙁
এত্ত বড় ধোকা!!!
রাগে সাবার চোখমুখ দিয়ে ধোঁয়া উঠছে
তবে কি আর করা ব্যাগ থেকে বকশিস সহ
১৫৫০ টাকা গেল
আর বাড়ি ফিরে এসে সাবার রাগটা প্রচন্ড বেড়ে গেছে আর ভাবছে ছেলেটা বড্ড ফাজিল
ওকে এভাবে এই অপমানের শাস্তি দিতে পারবো না অন্য উপায় খুজতে হবে
অপরদিকে আমি বাড়ি এসেই কোলবালিশ ডান্স দিচ্ছি 😉 😉
তবে ভয় লাগছে তাই কালকে আর কলেজে যাবোনা ভাবছি
রাতে আমি এইসব কথাই ভাবছিলাম
সাবা মেয়েটা রাগি হলেও দেখতে অনেক মায়াবি আর রাগলে ঠোটটা ফুলে যায় ইচ্ছে করে চকাস করে চুমা দিই হিহিহি
ধ্যাত্তেরি কি যে ভাবি এসব ভাবনা থেকে বের হতেই মনোযোগ দিয়ে Subway surfars গেমটা খেললাম তারপর দে ঘুম
পরের দিন কলেজে এসেই সাবা অভ্রকে খুজছে ওর ডিপার্টমেন্টে গিয়ে না পেয়ে রাগে পুকুর পাড়ে বসে আছে
হঠাৎ চোখ পড়ল একটা ছেলের উপর সাবার মনে পড়ে গেল সেদিন ছেলেটা খুব হেসেছিল অভ্রর ফ্রেন্ড হবে হয়ত
তারাতারি কাছে চলে গেল
–এই ছেলে শোন (সাবা)
ইমন সাবাকে দেখেই তো ভয়ে কাঁপছে
— কি রে অভ্র কই বলতে পারবি? (সাবা)
–কিক কি জানি কক কই (ইমন)
— তোমার নাম কি ভাইটু (সাবা)
— জি ইমন
— আসলে ইমন আমিনা তোমার ফ্রেন্ড অভ্রকে ভালোবেসে ফেলছি
কিন্তু ওকে তো বলতেই পারছিনা
কলেজে আসতে বলো প্লিইইইইইজ (সাবা)
— আচ্ছা বলবোনি (ইমন)
সাবা চলে যায়
বিকেলে ইমন অভ্রকে ফোন দেয়
–হ্যা বল (আমি)
— দোস্ত তুই শেষ (ইমন)
— মানে? (আমি)
— মানে তোর ঘাড়ে পেত্নী ভর করছে (ইমন)
— কি যা তা বলছিস গাজা খাইছিস নাকি রে 😉 😉 (আমি)
— না রে
সাবা তো তোকে খুজছে রে (ইমন)
–হিহিহি খুজবেই তো যে বাঁশটা দিছি (আমি)
— কিইইই
তুই বাঁশ দিলি আর ও তোর প্রেমে পরে গেল 😉 😉
(ইমন)
–মানে? (আমি)
— আরে সাবা আমাকে বলল তোকে কলেজে আসতে বলতে
ও তোকে ভালোবেসে ফেলছে (ইমন)
— তুই ফান করছিস তাইনা? (আমি)
— না রে আমি সিরিয়াস (ইমন)
–ফোনটা রাখ (আমি)
ফোনটা কেটেই
ইয়াহু বলে কোলবালিশটা জরাই ধরে লজ্জাতে গুলুগুলু হয়ে যাচ্ছি 😉 😉
আসলে ফাইজলামি করতে করতেই আমিও সাবাকে লাইক করে ফেলছি
নাহ্ কালকেই কলেজে যাবো,,,, যা হয় ভালোই হয়
রাতে সাবাকে নিয়ে কত যে কল্পনা জল্পনা করছি আমিই জানি
ইশশশশ কেমন কেমন যেন লাগছে 😉 😉
পরদিন কলেজে ঢুকেই দেখি পুকুর পাড়ে সাবা বসে আছে
আমাকে দেখেই উঠে কাছে চলে এলো
আমিও ওর কাছেই যেতাম ও না আসলে
–কেমন আছো অভ্র? (সাবা)
— ভালো তুমি? (আমি)
— আমিও ভালো
কালকে কলেজে আসলেনা যে? (সাবা)
— ইয়ে মানে ইয়ে আসলে সাবা ঐ দিনের ফাজলামির জন্য আমি স্যরি আর পরশুদিনের জন্যও (আমি মাথাটা নিচু করে)
–ইটস্ ওকে আমি কিছু মনে করিনি
আমার বাবুটাই তো ফাজলামি করছে তাইনা? (সাবা)
— মানে! (অবাক হয়ে আমি)
–বাহ্ রে সেদিন আমাকে প্রপোজ করলেনা আর এই কয়টা দিনে তোমার উপর জমে থাকা রাগগুলো ভালোবাসা হয়ে গেছে (সাবা)
— আমিও তোমাকে ভালোবেসে ফেলছি সাবা কিভাবে যে হলো তা জানিনা তবে তোমার রাগি চেহারা বাচ্চামীগুলা খুব ভালো লেগে গেছে (আমি)
— হিহিহি পাগল একটা
চলো কোথাও ঘুড়ে আসি (সাবা)
— ঠিক আছে চলো (আমি)
তারপর সাবাকে নিয়ে ঘুড়তে চলে গেলাম
সাবাকে যে এভাবে এতটা সহজে আমার করে পাবো ভাবতেই পারিনি
এদিকসেদিক ঘুড়ার শেষে সাবাকে বিদায় দিয়ে বাসায় চলে আসি
মনটা ভিষন ভিষন ভালো লাগছে সাবাকে আমার করে পেয়ে
আমি তো এমন একটা রাগি মেয়ের অপেক্ষায়ই ছিলাম
এরপর থেকেই সাবা আর আমার ভালোবাসার মুহূর্তগুলো কাটছে
কলেজে বসে আড্ডা দেয়া,, ,,,, ক্লাস না করে ঘুড়তে যাওয়া,,,,,, হালকা দুষ্টামি আর খুনসুটির মাঝেই প্রায় একটা মাস চলে যায়
এর মাঝে আমি সাবাকে খুব বেশিই ভালোবেসে ফেলি কারণ আমার ইচ্ছাই যে এটা,
যাকেই ভালোবাসবো আমার সবটুকু দিয়েই ভালোবাসবো
আর তাকে কখনোই কষ্ট দেয়ার মতো কিছু করবোইনা
সাবাকে নিয়েও অনেক অনেক স্বপ্ন সাজাতে শুরু করেছি আর পাগলিটাও যে আমাকে অনেক অনেক ভালোবাসে
পার্কে বসে আছি আমি আর সাবা আমার কাধে মাথা রেখে চুপচাপ বসে আছে
অনেক্ষণ পর,,,,,,,,,
— বাবু একটা কথা বলি? (সাবা)
— হ্যা বাবুনি বলো
–তুমি তো সেদিন আমাকে ফান করে প্রপোজ করেছিলে ভালোবেসে না
কালকে কলেজে আমাকে প্রপোজ করবে কিন্তু (আবদারের সুরে সাবা)
— হিহিহি ওক্কে পাগলি বাবুনি
কালকে কলেজের সব্বার সামনে আমার বাবুনিটাকে প্রপোজ করবো খুশি তো? (আমি)
— তুমি খুব খুব ভালো বাবু (সাবা)
এরপর অনেক্ষণ বসে থেকে সাবাকে বাসায় রেখে আমিও চলে আসি
মনটা খুব ভালো কালকে সাবাকে প্রপোজ করবো কিন্তু কি বলবো বুঝছি না
অনেক ভাবলাম তবে সব কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে
পরদিন সকাল ৯ টা
আমি সিরাম সাজুগুজু করে তিনটা লাল গোলাপ নিয়ে কলেজে চলে আসছি
এসেই দেখি আমার পাগলিটা আগেই এসে বসে আছে আমাকে দেখেই উঠে কাছে আসলো
–আমার বড় ভাইয়া ও আপুরা আজকে আপনাদেরকে সাক্ষী রেখে একটা কাজ করতে যাচ্ছি (সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললাম)
সবাই দেখি আমার দিকে তাকিয়ে আছে
গোলাপগুলো সাবার দিকে বাড়িয়ে হাটু গেড়ে বসে বললাম
–আমি জানিনা ভালোবাসা কি,,,,,, জানিনা কিভাবে ভালোবাসে
তবে তোমার চোখের দিকে তাকালে আমার হৃদয়ে কাপুনি দিয়ে ওঠে
তোমার মুখের দিকে তাকালে মনটা ভরে ওঠে,,,,,, তোমার ঐ রাগে লাল হয়ে যাওয়া গালটা ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছা করে,,,,,,,,,,, ইচ্ছা করে এভাবেই তোমার সাথে থাকতে পথ চলতে
তুমি কি আমার রাগীপরী হবে?
ভালোবাসবো অতটুকু যতটুকু বাসলে তুমি চোখের জল ঝড়াবে না
i love you saba
সাবা হাসিমুখে ফুলটা হাতে নিল আমিও খুশি হয়ে উঠে দাড়ালাম
— ঠাসসসসসসসস্ (প্রচন্ড জোড়ে সাবা চড় মারল)
আমিতো হতভম্ব হয়ে গেছি
সবাই খুব হাসাহাসি শুরু করে দিলো
–এই বাবুনি সবাই দেখছে তো (আমি)
— হ্যা বাবু দেখছেই তো দেখুক
কেমন লাগে দেখ এখন
সেদিন ঠিক এভাবেই আমাকে সবার সামনে অপমান করেছিলি মনে পড়ে তোর? (চিৎকার করে সাবা)
— বাবুনি সেদিন তো ফান করেছিলাম বাট আজতো আমি*********
–হাহাহা আমি আজকে তোর সাথে ফান করলাম (সাবা)
— মানে
তুমি আমাকে ভালোবাসোনা বাবুনি? (আমি)
— হিহিহি ভালোবাসা! তোকে!
হিহিহি
হাউ ফানি,,,,, আমি তো যাস্ট ফান করছি আমাকে অপমান করার ফল কেমন লাগলো? (সাবা)
— তুমি বলতে পারতে
আমি তোমার পায়ে পরে ক্ষমা চেয়ে নিতাম
তবে আজকের এই কাজটা না করলে কি হতোনা (আমি)
–হিহিহি এটাই তো অপমান ( সাবা)
–দোয়া করি অনেক অনেক ভালো থেকো
বলেই চোখটা মুছতে মুছতে বাড়ি ফিরে আসলাম
খুব কষ্ট লাগছে এটা ভেবে যে আমার ভালোবাসা নিয়ে সাবা এটা করতে পারলো
আমিতো সত্যিই ভালোবেসেছিলাম
সাবা হাজার অপমান করলেও কষ্ট হতোনা,,,,, কষ্ট লাগছে আমার ভালোবাসাকে ফান ভেবে এতোটাদিন মিথ্যে স্বপ্ন দেখানোর জন্য
সারাটা রাত কান্না করেই কাটিয়ে দিলাম,,,, ,ফোনটাও অফ করে রেখেছি,,,
অপরদিকে সাবা অভ্রকে অপমান করতে পেরে দারুণ খুশি
ফ্রেন্ডদের ট্রিট দিছে
পরেরদিন কলেজে এসেই সাবা ইমনকে দেখে বলছে
–ইমন তোমাদের জানের ফ্রেন্ড অভ্র কই?
–কেন ওকে কি দরকার?
এতো অপমান করেও সাধ মিটেনি?
ফোন করে কি আসতে বলবো আরো অপমান করবেন
ও আপনাকে কতটা ভালোবাসে জানেন? (ইমন)
— ওলেবাবা এতো দেখছি বন্ধু পাগল
বলেই সাবা চলে গেল
প্রায় একটা সপ্তাহ পর আজ অভ্র কলেজে এসেছে
যে অভ্রকে দেখছে সেই বলছে এইযে দেখো প্রেমিক এসেছে কলেজে আর হাসাহাসি করছে
চুপচাপ ক্লাস করে অভ্র আবার চুপচাপ চলে যায় কারো সাথে একটাও কথা বলেনা
যে ছেলেটা পুরো ক্যাম্পাসকে খুশি রাখতো আজ সেই ছেলেটা একদম চুপ করে থাকে ব্যাপারটা খুব খারাপ লাগে অভ্রর ফ্রেন্ডদের
–সাবা কাজটা কি তুই ঠিক করেছিস? (মিম)
— কেন আমি কি করলাম (সাবা)
— অভ্রকে এমন করে অপমান না করলেও পারতি ছেলেটা তো সত্যিই ভালোবাসে তোকে
একটা বার খেয়াল করে দেখ
যে ছেলেটার মুখে হাসি লেগেই থাকে সেই ছেলেটা এখন কেমন চুপচাপ থাকে (মিম)
— তাতে আমার কি?
বলেই রেগে বাসায় চলে আসে সাবা
রাতে হঠাৎ করেই অভ্রর জন্য খুব খারাপ লাগে ওকে আসলেই ওভাবে অপমান করাটা ঠিক হয়নি
আবার ভাবে ঠিক করেছি
ইগো কাজ করে খুব
পরেরদিন কলেজে যায় সাবা আর ভাবে অভ্রকে স্যরি বলবে আসলেই ওকে ওভাবে বলটা ঠিক হয়নি
অনেক খোজে অভ্রকে তবে পায়না
সাবা হতাশ হয়ে বাসায় চলে যায় রাতে আবার অভ্রর কথা মনে পড়ে যায়
পায়ে থাকা পায়েলটার দিকে তাকিয়ে থাকে
অভ্র পায়েলটা পড়িয়ে দিয়ে বলেছিলো
–জানোতো বাবুনি এই পায়েলটা কিনেছিলাম অনেক আগে তবে ইচ্ছা ছিল যাকে ভালোবাসবো তাকে পরিয়ে দেব
সারাজীবন আমার করে রাখবো
এইটা আমার এই বাবুনিকে পরিয়ে দিলাম
সাবার বারে বারে অভ্রর কথা মনে পড়তে থাকে ওর সাথে কাটানো সব কথা কুড়ে কুড়ে খায় সাবাকে
নিজেকে বড্ড অপরাধী লাগে সাবার
পরদিন কলেজে গিয়ে সাবা অভ্রকে খোজে অভ্র তখন বাইরে চুপচাপ দাড়িয়ে ছিল
ক্লাসে ইমনকে দেখেই সাবা বলে
–অভ্র আসেনি?
–কেন ওকে এত অপমান করেও সাধ মিটেনি
আবার এসেছেন (ইমন)
— আমি দুঃখিত
ওকে ওভাবে বলাতে (সাবা)
— থাক আর এসব বলতে হবেনা (ইমন)
–বলোনা ইমন অভ্র কই (সাবা কান্না চেপে রেখে)
— কি দরকার ওকে এটাই তো চেয়েছিলেন যেন অভ্র কষ্ট পায়
এখন খুশি তো যে ছেলেটা সবাইকে হাসিখুশি রাখত আজ সে একা একা চুপচাপ থাকে
আর অভ্র কলেজ চেন্জ করেছে ট্রান্সফার করবে আজকেই ওর শেষ কলেজ
এখন খুশি তো আপনি? (ইমন)
–প্লিইইইজ ইমন বলোনা অভ্র কই আমি ওর সাথে দেখা করতে চাই প্লিইইইজ (সাবা কান্না করতে করতে)
— না আমি বলবো না (ইমন)
–তোমার পায়ে পরি বলো (সাবা)
— এই না না বলছি বলছি
ঐযে দেখো নিচে দাড়িয়ে আছে (ইমন জানালা দিয়ে দেখালো)
সাবা অভ্রকে দেখেই এক দৌড়ে তিনতলা থেকে নেমে চলে গেল
আর ইমন শয়তানি হাসি হাসছে
সাবা কান্না করতে করতে অভ্রকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে বলছে
— বাবু আমার ভুল হয়ে গেছে আমি তোমাকে সেদিন অমন করে বলেছি স্যরি বাবু
প্লিইইইইজ তুমি আমাকে ছেড়ে, সবাইকে ছেড়ে এই কলেজ ছেড়ে যেওনা
–আরে না না তুমি তো এটাই চেয়েছিলে আমি চলে যাই তাইনা
তুমি ভালো থেকো (আমি)
— না আমি ভালো থাকবো না
এই বাবুটাকে ছাড়া আমি ভালো থাকবোনা
আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে দেবোনা এই কলেজ ছেড়েও যেতে দেবোনা (সাবা কান্না করতে করতে)
— কে বলেছে আমি কলেজ ছেড়ে যাবো (আমি)
— কেন ইমন না বললো তুমি কলেজ ছেড়ে দিবা
তাইতো আমি কান্না করছি (সাবা আমাকে ছেড়ে দিয়ে)
–আমি তো ইমনকে এমনিই বলতে বলেছিলাম এই মিথ্যাটা
যেন তুমি আবার আমাকে ভালোবাসো হিহিহি 😉 😉
(আমি)
— কিইইইইইইইইই
চিটার বাটপার তোমার খবর আছে
বলেই সাবা আমার দিকে ধেয়ে আসছে
আমিও ভয়ে দৌড়ানি দিছি
সারা ক্যাম্পাসে দৌড়ানি দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে মাঠে শুয়ে পড়েছি ঠিক তখনই বুকে কি যেন অনুভব করলাম
দেখি গুন্ডীটা মানে সাবা আমার বুকে মাথাটা রেখে শুয়ে আছে
–এই পাগলি সবাই দেখছে তো (আমি)
–দেখুক তাতে কি সেদিন অপমান করা দেখছে আজ আমার ভালোবাসাটাও দেখুক হুহ্
বলেই
উমমমমমমমম করে একটা ঠোটে 😉
কি যেন ঘটে গেল
তারপর আর কিছু মনে নাই
হিহিহিহি