ফেসবুক এসেই দেখলাম ৫ টা মেসেজ রিকুয়েস্ট সাথে মায়াবতী মায়া নামে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট , প্লিজ একসেপ্ট করবেন ।। মায়া নামটা আমার খুব প্রিয় তাই রিকুয়েস্টটা একসেপ্ট করলাম ।।
তারপর মেসেজ আসলো,
– ধন্যবাদ একসেপ্ট করার জন্য ।।
– ইট’স ওকে ।।
– আপনার লেখা আমার অনেক ভাল লাগে ।। আপনি অনেক সুন্দর লেখেন ।।
– ধন্যবাদ ।। ভাল লেখি কি না জানি না ।। তবে ভাল লেখার চেষ্ট করি ।।
– হুম ।। আপনি অনেক সুন্দর লেখেন ।।
– ধন্যবাদ আপনাকে ।।
– ওয়েলকাম ।। একটা কথা বলবো ??
– হুম বলেন ।।
– আপনার নাম কি ??
– আপনি বললেন আমার লেখা গল্প পড়তে ভাল লাগে ।।। আমার নাম তো ভাল লাগার কথা বলেন নাই ।। তাই যেটা ভাল লাগে সেটাই পড়েন ।।
– প্রিয় লেখকের নাম না জানলে কেমন হয় বলেন ??
– কিছুই হবে না ??
– প্লিজ বলেন ??
– তারপর নামটা বললাম ।।
– ভাল নাম ।।
– ধন্যবাদ ।।
– হুম এইবার কিন্তু গল্পের সাথে নামটাও পছন্দ হয়ে গেছে ।।
– ভাল ।।
এই ভাবেই শুরু হয় মায়া নামের এই মেয়েটার সাথে ।। ফেসবুকে খুব কম মেয়েদের সাথে কথা বলি তবে সবাই চেনা ।। কিন্তু এই মেয়ের সাথে কথা বলার একটাই কারন মেয়েটার নাম মায়া ।।
প্রতিদিনই কথা হতো ফেসবুকে ।। আমি যখন গল্প লেখি তখন কেউ মেসেজ দিলে সিন করতাম না কিন্তু মায়া দিলে রিপ্লে দিতাম ।। কেন দিতাম জানি না তবে জানতাম শুধু মেয়েটার নাম মায়া ।।
কখনও মায়ার ছবি দেখি নাই চা চাইও নাই ।। আর ফেসবুকেও কোনো ছবি দেওয়া ছিলো না ।।
মায়ার বাড়ি ছিলো আমাদের পাশের জেলায় ।। যদিও ২ ঘন্টা সময় লাগে বাসে যেতে ।।
মায়ার সাথে প্রতিদিনই আমার কথা হতো ।। এখন ফেসবুকে ঠুকেই মায়াকে মেসেজ করি ।। এর মাঝে মায়া আর আমি বন্ধু হয়ে যাই ।। তারপর মায়া আমার অন্য রকম একটা কেয়ার নিতে শুরু করে ।। আমার পাশে থাকতো ।। আর আমার সব কিছু মায়াকে শেয়ার করতাম ।।
মায়া জানতো আমি কোনো দিন কারো সাথে প্রেম করি নাই ।। তাই মায়া আমাকে মেয়ে দিকে তাকাতে নিষেধ করে ।। আমি কোথায় যাচ্ছি, কি করছি, ঠিক মত পড়াশুনা করছি কি না সব সময় খবর নিত ।। যদিও আমরা ফোনে কথা বলতাম না ।। ফেসবুকেই চলতো আমাদের কথা ।।
মায়ার এই সব কেয়ার দেখে মায়াকে খুব দেখার ইচ্ছা হয় ।। কিন্তু মায়া পিক দিতো না ।। শুধু বলতো আমি দেখতে ভাল না ।। হয়তো আমার পিক তোর ভাল লাগবে না তখন যদি তুই কথা বলা বাদ দিস, এই সব বলতো আমিও বেশি জোর করতাম না ।।
তবে দেখার খুব ইচ্ছা জাগতো সত্যি বলতে মায়ার প্রতি আমার ভাল লাগা কাজ করতে থাকে ।।
আমাদের মাঝে যখন অভিমান হতো তখন আমি কথা না বলে থাকতে পারতাম না ।। তাই আমি আগে মেসেজ দিয়ে অভিমান ভাঙাতাম ।। এই ভাবে ভালই দিন পার করছিলাম আমরা ।।। দিন যতই যাচ্ছে মায়ার প্রতি আমার ভালবাসা ততই বাড়ছে ।। যদিও মায়া এই সব কিছুই জানে না ।।
হাটাৎ একদিন আমার ফেসবুকে সমস্যা দেখা দেয় তারপর আর ফেসবুকে যেতে পারি না ।। আর মায়ার সাথে কথাও বন্ধ ।। খুব খারাপ লাগছে ।।
খাওয়াদাওয়া করতে পারছি না ।। মনে মনে রাগ হলো কেন যে নাম্বার নিলাম না ।।
রাত তখন ১১ টা বাজে আরেকটা ফেসবুক খুলার চেষ্টা করছি এমন সময় ফোন,
– হ্যালো কে বলছেন ??
– আমাকে চিনতে পারছো না ?? (মেয়ের কন্ঠে)
– মনে তো হয় না কোনো দিন আপনার সাথে কথা হয়েছে ।।
– হয়েছে মনে করে দেখুন ।।
– আমার মনে নেই ।। আপনিকে পরিচয়টা দেন নাইলে ফোন রাখলাম ।
– কেন ফোন রেখে কি মায়ার সাথে কথা বলবেন ।।
আমি অবাক এই মেয়ে মায়ার কথা জানে কি ভাবে ।।
– আপনাকে মায়াকে চেনেন কিভাবে ?? আর কে আপনি ??
– অবাক হয়ে গেলেন নাকি ??
– এত বেশি কথা বলেন কেন ?? রাখলাম ।
– এই না না ।।
– কেন কি হয়ছে ।।
– আমার নামটা শুনবেন না ??
– বলেন ।। কিন্তু তারাতারি
– কেন তারতারি কেন ?
– কাজ আছে ।।
– কি কাজ ??
– ওকে আমি রাখলাম ।
– আমি মায়া ।।
– মানে !!!
– হুম ।। তোমার বন্ধুর কাছ থেকে নাম্বার নিছি ।।
– ওও ।।
– এখন ফোনটা রাখেন ।।
– এই না ।। কথা বলবো ।।
– তখনতো ফোন কাটার জন্য শুরু করছিলে এখন কাটো ।।
– না না তা হবে না ।।
তারপর থেকে ফোনে কথা শুরু হয় আমাদের ।। পরে মায়াকে বললাম আমার ফেসবুক নষ্ট হয়ে গেছে ।। মায়া বলল বুঝতে পারছি ।। সেই জন্য ফোন দিছিলাম ।।
ফোন নাম্বার নেওয়ার পর থেকে মায়ার কেয়ারটা বেড়ে যায় ।। দিনে ২৫/৩০ বার ফোন দিয়ে খবর নিতো ।।
আর এই দিকে আমার অবস্তা আরো খারাপ হতে লাগলো ।। যে ভাবেই হোক মায়াকে ভালবাসার কথাটা বলতে হবে ।। আমি অনেক ভাবে বুঝাতাম মায়াকে কিন্তু মায়া কোনো সাড়া দিত না। তখন আরো খারাপ লাগে ।। কিন্তু আমার বন্ধুরা বলতো মায়া তোকে ভালবাসে কারন তোর ফেসবুক নষ্ট হওয়ার পর কেন আমাদের কাছ থেকে নিজে নাম্বার নিয়ে ফোন দিলো ।। তাছাড়া মেয়েরা ভালবাসার কথা অনেক ভাবে বুঝায় কারন তারা মুখে বলে না ।। এই সব শুনে মনে হয় না আমাকে ভালবাসে ।।
একদিন মায়া আমায় মেসেজ দিলো, তুই যেট বলতে চাস বলতে পারিস ।।
তারপর আমার আর বুঝতে বাকী রইলো না ।।
তারপর মায়াকে বললাম আমরা দেখা করবো মায়া রাজি হলো,
কাল মায়ার সাথে দেখা করতে যাবো শুধু তাই না প্রপোজ ও করবো ।। কিন্তু কিভাবে করব বুঝতে পারছি না ।। মায়া কি ফুল পছন্দ করে আমি তো জানি না ।। তার পর ভাবলাম যাই তো দোকান থেকে যে কোনো একটা ফুল নিয়ে যাবো ।।
তারপর বের হলাম বাসে উঠে ভাবতে লাগলাম মায়া কেমন হবে, কেমন দেখতে হবে ।। সারা জীবন তো এই রকম ভালবাসবে ।। ভাবতে ভাবতেই পেয়ে গেলাম ।। বাস থেকে নামলাম, তারপর ফুলের দোকানে গিয়ে ফুল কিনবো এমন সময় ম্যানি ব্যাগ বের করবো দেখি ম্যানি ব্যাগ নাই ।। বুঝলাম চোর ভাই নিয়ে গেছে ।। কি আর করা হাটা শুরু করলাম পার্কের দিকে ।। ও। বলতে ভুলে গেছি, মায়া পার্কে বসে থাকবে নীল শাড়ী পড়ে ।।
আমি হাটতে হাটতে ভাবছি কি করা যায় এমন সময় দেখলাম পাসে কচুরি পানার ফুল ।। ভাবলাম এই ফু্ল দিয়েই প্রপোজ করবো ।। টাকা তো কাছে নেই ফুল কেনাও হলো না ।।
পার্কে ঢুকেই দেখি নীল শাড়ী পরে বসে আছে আছে, এটা কি মায়া নাকি অন্য কেউ জানার জন্য ফোন দিলাম দেখালাম এটাই মায়া,
তারপর পিছনে গিয়ে হাটু গেরে আই লাভ ইউ মায়া,
মায়া চমকে উঠে পিছনে তাকায়, আরে প্রপোজ কেউ পিছন থেকে করে ।।
হুম আমি করছি । আমার উত্তর দেন।।
আই লাভ ইউ টু ।।
তারপর বলা যাবে না ।।
– আচ্ছা তুই জানলে কিভাবে কচুরি পানার ফুল আমার প্রিয়।
– আমি তো অবাক বলে কি, আমার কাছে টাকা নাই বলে কচুরি পানার ফু্ল দিয়ে কাজ সারলাম এখন দেখি এটা মায়ার প্রিয় ফুল ।।
তারপর মায়াকে সব খুলে বললাম ।। শুনে মায়া খুব হাসলো আর আমি তাকিয়ে আছি এক দৃষ্টিতে ।।
গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক