আম্মুর ডাকা ডাকিতে আমার সাধের ঘুমটা হারাম হয়ে গেল, কতো কষ্ট করে রাত ৩ টা বাজে ঘুমাইছি, আম্মু যাওতো ডইকো না আমারে ঘুমাইতে দেও
আম্মু: ওই তুই সারারাত কি করোছ রে চুরি না ডাকাতি করোছ, এখোনো ঘুমাইতে হইবো, ভার্সিটি কি তোর বাবায় যাইবো।
আমি: মা যাও তো বাবারে ভার্সিটি পাঠাইয়া দেও আমার যাওয়া লাগবে নাহ।
আম্মু: হারামজাদা তুই উঠবি না তোর বাবারে পাঠাইতে ছি।
আরে কই আমি তো উঠছি তো, এখানে আবার বাবারে কেন আমার মতো ভদ্র পোলারে কেলানি খাওয়াইতে পারবা। যাও নাস্তা রেডি করো আমি ফ্রেশ হয়ে আসতে ছি বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। আর আপনাদের আমার পরিচয় দিয়ে নেই। আমি রাফসান ইসলাম সাইদুল। বাবা মায়ের একমাত্র আদরের বাদর ছেলে। এবার অনার্স ২ বর্ষের ছাত্র, ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে ভার্সটির উদ্যেশ্যে রওনা হলাম ভার্সিটি পৌছে শুনি, আমাদের প্রথম ক্লাস হবে না তাই বন্ধু রা একসাথে আড্ডা দিতে চলে যাই। রিফাত বলে উঠে আমাদের সবার ই জি এফ আছে সুধু আমার ই নাই ওরা সবাই শুধু বলে প্রেম করতে।
আমি: দোস্ত আমার জীবনে প্রেম নামক ভাইরাস এ আক্রমণ করবে নাহ, আমি একাই ভালো আছি, আমি বিয়ার পর বউর লগে প্রেম করমু।
রিফাত: আচ্ছা মনে রাখিস কিন্তু,
তখোনি আমার নজোর গেট দিয়ে ঢোকা একটা মেয়ের উপর নজর টা আটকে যায় এইটা মেয়ে না পরি। চোখ সরাতে পারছি না পুরো একটা নিল পরি আকাশ থেকে নেমে আসছে।
রিফাত দোস্ত একটু আগে যে কথা বলছি সেই ডা ভুইলা যা। তোগো ভদ্র দোস্ত প্রেমে পইরা গেছে।
রিফাত: কছ কি মামা মাইয়া ডা কেডা??
আমি: ওই যে গেট দিয়া আসতেছে নিল পরি ডা,
রিফাত: কি নিলিমা দুনিয়াতে আর কোনো মাইয়া পাইলি নাহ, নিলিমারে ই তোর পছোন্দ হইতে হইলো। মাইয়া ভালো কিন্তু একটু গুন্ডা টাইপের যে পোলা তারে প্রপোজ করছে তারাই ১৫ দিন হাসপাতালে কাটাতে হইছে। তুই ওরে ভুইলা যা মামা তুই ওরে পাবি নাহ।
আমি: জীবনে প্রথম কাউরে ভালো লাগছে ওরেই আমি ভালোবাসমু আর ওরেই বিয়া করমু দেইখা নিশ,
রিফাত: মামা তুইতো ক্রাশ খাইছোছ এবার আমাগো হক টা পুরন কর আজকেই ট্রিট দিতে হইবো, আজ আর ক্লাস করা হইলো নাহ ওদের খাওয়াইয়া বাসায় চলে আসি আর আম্মুকে নিলি মার সব কথা বলে দেই আর আম্মু তো আমার কথা সুইনা নাচতেছে। এর ও একটা কারন আছে আম্মুর বাসায় একা একা লাগে তাই ১ বছর আগেই আমার বিয়ের কথা বলে তখোন আমি না করে দেই, আম্মু আমি আগে নিলিমার লগে প্রেম করমু তার পর বিয়া করমু আম্মুও রাজি হয়ে যায়,
আমিও লেগে পরি নিলিমারে পটানোর কাজে ১৫ দিন টুকি টাকি কিছু কথা বলি তার পরে ওকে প্রপোজ করি আর নিলিমা আমার দুই গালে ৪ টা ঠাসসস দিলো।
আমি তো শেষ এই টা কি চড় দিলো নাকি কেউ আমারে অমৃত দিলো। তার পরও নিলিমার পিছু পিছু ঘুরতাম, প্রতিদিন কিছু না কিছু বাহানায় ওর সাথে কথা বলতাম, একটা মুহুর্ত দেখার জন্য ওর কচিনের সামনে দাড়িয়ে থাকতাম। কখোন যে নিলিমাকে নিজের চাইতেও বেশি ভালোবেসে ফেলেছি বলতে পারি নাহ। আমার বাসা থেকে নিলিমার বাসা প্রায় ১০ কি.মি. দুরে তার পরও প্রতিদিন বিকেলে ওর এলাকায় যেতাম একটু দেখা পাওয়ার জন্য, এভাবেই কেটে যায় দুইটা বছর নিলিমার একটু পরিবর্তন হয় নি। এই দুই বছরের মধ্যে অনেক বার ই প্রপোজ করি প্রতি বারি দুইটা করে চড় ফ্রি পাইতাম।
আমার একটা বন্ধু আমাকে কিছু কথা বলে। নিলিমাকে অনেক মাথায় তুইলা লাইছো এখোন কয়েক দিন ওকে এড়িয়ে চল দেখবি ও কিভাবে রিয়েক্ট করে। যেই বলা সেই কাজ প্রায় ১০ দিন হয়ে গেলো আমি ভার্সিটি যাই না, নিলিমার বাসার সামনে, কচিনের সামনে একেবার যাওয়া বন্ধ করে দিছি,
আমার অনেক কষ্ট হয় তার পরও কিছু পাইতে হইলে কিছু কষ্ট সয্য করতে হয়। হঠাৎ দেখি আমার মোবাইল এ কার যেন ফোন আসছে।
ফোন টা হতে নিয়া আমি মনে হয় সপ্ন দেখতে ছি। নিজের হাতে নিজেই একটা চিমটি মারি নাহ এইটা সত্যি দেখি নিলিমা ফোন দিছে ওহ তাহলে প্লান কাজে দিছে, নিলিমার ফোনটা রিসিভ করলাম নাহ ফোনটা বন্ধ করে দিলাম। আরও ৭ দিন পরে ভার্সিটি গেলাম আমি তো অবাক ভার্সিটির সবাই আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আমি মনে হয় কোনো চিড়িয়াখানার প্রানি নতুন এসেছি, তখন দেখি নিলিমা আমার দিকে আসতেছে, আমি ওকে দেখেও না দেখার ভান করে ওখান থেকে চলে যেতে লাগলাম তখনই নিলিমা আমার হাত টা ধরে ফেলে, 💜
নিলিমা: তোমার এমন পরিবর্তন এর কারন কি? যখোন আমি তোমাকে ভালোবাসি নি তখোন আমার পিছু পিছু ঘুরছো আর এখোন আমি যেই তোমাকে ভালোবাসতে শুরু করি এখোন তুমি এই রকম করতে ছো। যানো তুমি যেদিন আমাকে প্রথম প্রপোজ করার পর আবার প্রপোজ করেছিলে তখনই তোমাকে হ্যা বলে দিবো কইরা। আর যদি রাজি হয়ে যেতাম তোমার পাগলামি গুলা দেখতে পারতা নাহ।
আমি: যে কয় বার প্রপোজ করছি প্রতিটা বার যে আমার গাল দুইটা লাল কইরা ফালাইছো তা কি?
নিলিমা: তোমাকে মারার কোনো ইচ্ছাই আমার ছিলো নাহ, তার পরো তোমাকে মারতাম এই সুজোগে তোমাকে একটু ছুয়ে দিতে পারতাম এই জন্যই তোমায় মারতাম, একটু কাছে পাওয়ার জন্য।
আমি ওখান থেকে নিলিমাকে ফিরিয়ে দিয়ে চলে আসি ও বুজুক কাউকে ভালোবাসলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার কতোটুকু কষ্ট হয়।
বাসায় এসে লুজ্ঞি ডেন্স দিতে ছি। আর দেরি করা যাইবো নাহ তাই আম্মুকে বলি নিমিমার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে। আমার আর দেরি সইতে ছে না যাকে ভালোবাসি তার থেকে দুরে থাকতে। নিলিমার বাবা মাও রাজি হয়ে যায় আম্মু আমাদের বিয়ে ৭ দিনের মধ্যেই দিয়ে দিতে চায় তাই আমি মানও করি নাই। এই সাতটা দিন কি ভাবে কেটে গেল বুজতেও পারলাম নাহ।
আজ আমাদের ইয়ের রাত তাই বন্ধুদের তারাতারি বিদায় দিয়ে আমার রুমের মানে বাসর ঘরের দিকে যাইতে ছি। সবাই নাকি আজ বিলাই মারে দেখি আমিও মারতে পারি কি নাহ। বাসর ঘরে ঢুকতেই কারো কান্নারর শব্দ পেলাম। নিলিমা কান্না করতে ছে তাই একটু কাশি দিলাম, তখন ই নিলিমা কথা বলা শুরু করলো আমি আপনাকে সামি হিসাবে মেনে নিতে পারবো নাহ। শুধু মা বাবার জন্য এই বিয়েতে রাজি হয়েছি। আমার কছে আসার চেস্টা ও করবেন না। আমি একজন কে ভালোবাসি।
আমি তো মনে মনে হাসতে ছি, আচ্ছা আমি তোমার ধারে কাছেও যাবো নাহ একটা কথা বলো তুমি কি আমাকে দেখেছো।
:-নাহ আপনাকে দেখে আমি কি করবো
:-ওহ আমার একটা ইচ্ছা আছে তোমার ঘোমটা টা একটু উঠাবা তোমাকে একটি বারের জন্য দেখবো এইটুকু তো করতেই পারো। ঘোমটা উঠিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হতাশ হয়ে গেছে কি বলবে কিছুই বুজে উঠতে পারছে নাহ, চোখ দুটো কপালে উঠে গেছে এই অবস্তায় দেখতে আমার মজাই লাগছে। মনে হয় আমার ঘরে একটা পরি বসে আছে। আমার কল্পনা বাস্তবে ফিরে দেখি নিলিমা আমার সার্টের কলার ধরে আছে।
এই কি করতেছো বাসর রাতে সামি কে কেউ এই রকম করে?
নিলিমা: তুমি আমার সাথে এই রকম করলে কেন? তুমি যান আমার কতোটা কষ্ট হইছে, তুমি যেদিন আমাকে একা রেখে চলে আসছিলে সেই দিন রাতে সুইসাইড করতে গেছিলাম এক বন্ধুর জন্য হইলো নাহ। তার পর থেকে প্রতিটা রাতেই কান্না করে কাটছে। এই বিয়ে আমি করতাম না শুধু আব্বু আমাকে তার মরা মুখ দেখার কথা না বলতো। তুমি আমাকে কষ্ট দিয়া কি পাইছো বলো.।
আমি: আমারে তো দুইটা বছর কস্টে রাখছো আর তুমি মাত্র এই কয়টা দিন সয্য করতে পারলে নাহ। আর দুইটা বছর তো গাল দুইটা লাল করে দিছো, এখোন কি বলার আগেই আমার মুখ আটকে গেছে। আর কিছু বলমু নাহ সবাই বিলাই মারে আমিও মারমু বাই।
………………………………………….(সমাপ্ত)………………………………………….