আমার বুকের মধ্যখানে মন যেখানে হৃদয় সেখানে,,,সেইখানে তোমাকে,,,,,,,,,
গানটা গাইতে গাইতে আড্ডা মারছিলাম চৌরাস্তার মোড়ে। খুব জমে উঠেছিল আড্ডাটা। সবেমাত্র মাগরিবের আযানটা দিল। চারিদিক থেকে কে যেন মনে হচ্ছে আমাদের চাদর দিয়ে ডেকে দিচ্ছে। টং মামা কে বললাম মামা হবে নাকি দু চুমুক চা, সাথে গোল্ডমেরি বিস্কুট।
পাঁচ মিনিটের মধ্যে সবার হাতে চা।
চায়ে চুমুক দিয়ে আঃ কি লাগছে না মামা। অসম। সুপার।
চায়ের আসর শেষে,,,,,,,,,,,
শুরু হল প্রতিদিন কার মত প্রেমের আলাপ। যদিও আমারা সবাই ছেলে। তবুও মেয়েদের নিয়ের আলোচনা বেশিই করি। তো চলুন শুরু করি,,,,
আরে দারান দারান,,,,
আগে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিই,,,,
এ হল নিতিন,
নিতিনঃ হাই,,,,,
এটা অপুর্ব।
অপুর্বঃ হ্যালো,,,,
ও জিসান,,,,,
জিসানঃ হাই।
আর এ হল এ তল্লাটের সব থেকে বড়, বেশি প্রেমখোর, রাহাদ।
রাহাদঃ ওহে,,,,কিছু মনে করবেন না, একটু বেশি বলে ফেলেছে, ওহ!!! পরে কথা বলছি রিনা কল দিছে,,,।
আর এ হল আমাদের সাংবাদিক রিফাত।সাংবাদিক তবে কোনো চ্যালেনের না। এ মহল্লার সব খবর ওর কাছে থাকে। এজন্য আমরা ওকে সাংবাদিক বলে ডাকি।
রিফাতঃ হাই,,,,তিন নাম্বার গলির ৭ নং বাড়ির ২ তলায় নতুন ভাড়াটিয়া আসছে।
দেখলেন তো সাংবাদিকের কি মহিমা।
তো সবার সাথে পরিচিত হলেন তাইতো?
না, না,
গল্পের হিরোকে তো দেখলাম না।
তো চলুন দেখা যাক আমাদের আজকের হিরো কে?
ওই যে ওই কোনাতে ঝিম মেরে বসে আছে যে নাম নিলয়। আদর করে সবাই নিল বলে ডাকে। লেখাপড়ায় খুব ভাল,তেমনি দুষ্টুমিতেও কম না।
তবে একটা জিনিসে ভিশন কাবু, সেটা হল মেয়ে মানুষ। সেসব কথা পরে হবে। চলুন আগে আড্ডা্ মারি।
–
+
একথা সেকথা বলতে বলতে কখন যে রাত ৮ টা বেজে গেছে কারও খেয়াল নেই। সামনে নির্বাচন। এলাকা গরম। সন্ধার পর চারিদিকে পুলিশ ঘোড়িঘুড়ি করে।
এরা সবাই আড্ডায় মেতে আছে। আর এদিকে পুলিশ এদের খারাপ ভেবে ধরে নিয়ে যায়। কিন্তু এরা তেমন খারাপ নয়। তারপরও কপালের লিখন না যায় খন্ডন।
যা হবার তাই হল। ধরবি ধর একটা পুরুষ পুলিষ ধর। তা না একটা মেয়ে পুলিশ ধরলো। তা আবার বেশি বয়স না। বরোজোর ২-৩ বছরের বড়।
সবাই খুব টেনশন করছে একজন ছাড়া। বলুনতো কে সে?
হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, আমাদের হিরো নিলয়।
নিলয়ঃ এক্সকিউজ মি ম্যাম,,,,,
পুলিশঃ ইয়েস,,,,,,
নিলয়ঃ আমাদের ধরেছেন কেন?
পুলিশঃ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ধরা পরেছো। তাই।
নিলয়ঃ কি? আমরা নেশা করি?
পুলিশঃ তা নয়তো কি?
নিলয়ঃ দেখুন ম্যাম,,আমরা সময় কাটানোর জন্য ওখানে বসেছিলাম। নেশাকতে নয়।
এভাবে ১০ মিনিট কথা হল পুলিশের সাথে। কিন্তু ছাড়লো না। অবশেষে সবার বাসায় ফোন করে লোক এসে সবাইকে নিয়ে গেল।
ভেবেছিলাম কাহিনী এখানে শেষ। কিন্তুু না। কাহিনী তো মাত্র শুরু,,,,,,,
যে ছেলে কোনো মেয়ের দিকে তাকায় নি। সে কি না আজ মেয়ে পুলিশের চেহারা ভুলতে পারছে না। যেদিকে তাকায় সেদিকে পুলিশ,,,,,,,
নিলয়ঃ দোস্ত, তোরা আমার জন্য কি করতে পারবি?
জান দিয়ে দেবো, (সবাই একসাথে)
নিলয়ঃ না। থাক অনেক হয়ছে। তোদের আমার চেনা হয়েগেছে।
রাহাদঃ না দোস্ত বল তোর জন্য কি করা লাগবে।
নিলয়ঃ তোরা পারবি না।
রাহাদঃ বলেই দেখ।
নিলয়ঃ I love pulish.
কি????? (সবাই একসাথে)
নিলয়ঃ hmmm.I love her.
রিফাতঃ ওক্কে মাম্মা।। খোজ লাগাই তেছি।
তিনদিনপর,,,,,,,,,
নিলয়ঃ কি রে তোদের কোনো খবর নেই কেন?
রিফাতঃ মেয়ের নাম মিতু।এই থানায় নতুন জয়েন্ট হয়েছে। তবে লাভ নেই।
নিলঃ কেন?
রিফাতঃ প্রেম ভালবাসা দুচোখে দেখতে পারে না। অনেক ছেলেকে লকাপে পুরেছে।
বাবা জেলা কমিশনার। মেয়ের স্বপ্ন পুলিশ হবে। তাই হয়েছে। একে বদ মেজাজ সাথে বাবার পাওয়ার। ধারে কাছে ঘেসতে দেবে না।।
নিলঃ আরে এমন মেয়ে তো আমি খুজতেছিলাম।
রাহাদঃ পাগল হলি নাকি?
নিলঃ দুরররর।কি বলিশ। চল,,,,
রিফাতঃ কোথায়?
নিলঃ তোদের ভাবির কাছে।।।
রাহাদঃ কি?
রিফাতঃ চল।
নিলঃ ম্যাম ম্যাম,,,,,শিগ্গির আসুন,
ম্যামঃ কোথায়?
নিলঃ চোর ধরতে।
ম্যামঃ কি চুরি করেছে?
নিলঃ এখন এত কিছু বলতে গেলে চোর পালিয়ে যাবে।
ম্যামঃ ওকে চলুন।।।
নিলঃ এত সুন্দর কেন আপনি?
ম্যামঃ কি?
নিলঃ কিছুনা।
জীপে করে গেলাম।
কিছুদুর পর,,,,
নিলঃ ডানে,,,
নিলঃ বামে,,,,
নিলঃ ডানে
নিলঃবামে,,,,,
এভাবে অনেকদুর যাওয়ার পর,,,,,,
ম্যামঃ কোথায় চোর?
নিলঃ চোর তো চুরি করে পালিয়েছে।।।
ম্যামঃ তাহলে এখানে নিলে আসলেন কেন?
নিলঃ ভাললেগেছে তাই।
ম্যামঃ কি বির বির করছেন?
নিলঃ না মানে , মানে, চোর তো পালিয়েছে, আপনার নাম্বারটা দিয়ে যান। চোর দেখলেই আপনাকে বলবো।।
ম্যামঃ ওকে, নাও ০১৭০১…….
নিলঃ ধন্যবাদা
ম্যামঃ ওকে।
রাতে,,,,,,,,ফোন করে,,,,,
নিলঃ হ্যালো,,,ম্যাম,,,,
ম্যামঃ কে বলছিলেন?
নিলঃ ওইযে আজ সকালে নাম্বার দিলেন।
ম্যামঃ ওহ। বলেন কিজন্য ফোন দিছেন?
নিলঃ চুরি হয়েছে।
ম্যামঃ কি?
নিলঃ মন।
ম্যামঃ ফালতু কথা বাদ দিয়ে সোজাসুজি বলৃন কি হয়ছে?
নিলঃ ফালতু নয়। আপনাকে দেখার পর থেকে আমার মন হারিয়ে গেছে। আপনার বাকা চোখের চাওনি আমায় প্রাণে মেরেছে। মুক্তঝরা হাসি পাগল করেছে। আর আপনার মেঘ কালো কেশ আমায় ঘায়েল করেছে।
ম্যামঃ বক বক বন্দ করেন। পুলিশের মার খেয়েছেন কখোনো? এক ডান্ডায় ঠান্ডা হয়ে যাবে।
নিলঃ ভালবেসে নাহয় তোমার ডান্ডার বারি খেলাম।
ম্যামঃ ওই আমায় তুমি করে বলছো কেন?
নিলঃ ভালবাসার মানুষ কে আপনি করে বললে ভালবাসা কমে যাই।
ম্যামঃ পাবনায় গিয়ে পাগলের ডাক্তার দেখা যা।
এভাবে দিন যাই আর নিল কথা বলতে থাকে। আর মিতু রাগতে থাকে। অবশেষে মিতুর বাবার কাছে ছেলেটার বিষয় বলে মিতু।
পরের দিন,,,,,,,
কলেজ ক্যাম্পাসে পুলিসের জীপ। ধরে নিয়ে আসে নিলয়কে। আচ্ছা মত ধোলাই করে নিলকে।
অতঃপর,,,,,
মিতুঃ কেমন লাগছে প্রেমের নাগর,,,,,
নিলঃ তোমাকে দেখামাত্র সব ব্যাথা চলে গেল। জান,,,,,
মিতুঃ কনস্টেবেল,,, মারো ওকে,,,
নিলঃ যতকক্ষণ তোমার ওই মায়াবি মুখ আমার সামনে থাকবে,,, ততকক্ষণ হবে আমার কিছু,,,, তোমার নামটা আমার এই খানে(হৃদয়ে) লেখা হয়ে গেছে। শত চেষ্টা করলেও সেখান থেকে মুছতে পারবে না তোমার নাম।
I LOVE YOU MITU
মিতুঃ চুপকর হারামজাদা। (চুলের মুঠি ধরে)
নিলঃ চুম্মা, কপালে চুমু একে দিল।
মিতুঃ রাগে ডান্ডা দিয়ে মাথায় এক আঘাত করলো। নিল অজ্ঞান।
মিতু ভাবলো হয়তো ও মারা গেছে। তাই নিলের দেহ টাকে বাইরে ট্রেন লাইনের ধারে ফেলে আসলো।
পরের দিন,,,,,,,,
কোথাও নিলকে খুজে পাওয়া গেল না।
সারা কলেজ, এবং সকল বন্ধু বান্ধবদের বাসায়ও নেই।
অবশেষে সবাই পুলিশের কাছে গেল। FIR লেখালো।
পরে যখন মিতু জানতে পারলো নিল কে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। সে চিন্তাই পরে গেল। ট্রেন লাইনে গেল। কিন্তু সেখানে রক্ত লেগে আছে, আর পরে আছে নিলের পরনের ছেরা কাপড়।
এটা দেখে মিতু অনেক ঘারে যাই। নিজের অজান্তে নিলের জন্য করুনা হতে লাগল। তার জন্য একটা ছেলে মারা গেল। তার ভিতরের মিতু জেগে উঠেছে। উঠতে বসতে ভাবাছে নিল কে নিয়ে। কিন্তু বড্ড দেরি করে ফেলেছে সে। এখন প্রতিটা মুহুর্ত মনে পরে নিল কে। কেন তা সে জানে না।
তাহলে কি মিতুর মনে জন্ম নিলো ভালবাসার, যার জন্য কোরবানি হল নিল।
এসব ভাবতে ভাবতে মিতু অনেক দুর্বল হয়েছে। সময় মত খাওয়া দাওয়া করতে পারে না। অনেক রোগা হয়ে গেছে। এসব তার বাবা দেখে দেশের ভাল ভাল ডাক্তার দেখাচ্ছে। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না।
এখন মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পরেে মিতু।
তারমানে প্রমাণিত হলো সবার মনে প্রেম আছে।
কিন্তু কি আর করা,,,,,,,
মিতুর বাবা মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে এল ডাক্তারের পরামর্শে।
কিছুদিন কাটানোর পর,,,, এক বিকালে ,,,,,,,
মিতু দেখতে পেল নিলের মত কাওকে।
কিন্তু মিতু না খেতে খেতে এতটাই দুর্বল হয়েছে যে উঠে দারানোর শক্তি নাই।
সেদিন বাবার সাথে হোটেলে গেল মিতু।
অবিস্মরনীয় ভাবে হোটেলে দেখা হল নিল আর মিতুর। কিন্তু কেউ কোন কথা বলতে পারলো না। মিতু অনেক কষ্টে নিল কে জরিয়ে ধরলো।
নিল প্রথমে না চেনার ভান করলো। কিন্তু প্রকৃত ভালবাসার ডাকে কতকক্ষণ সাড়া
না দিয়ে থাকতে পারে।
মিতুর বাবাও চলে এসেছে। মিতুর বাবা নিলকে সব খুলে বলে। এবং নিলের কাছে ক্ষমা চায়। নিল কি আর করবে,,,,,,,
দুটি মন এক করে নিল।।
মানে বিবাহ।
আজ মিতু নিলের বিবাহ।
আপনাদের দাওয়াত রইলো।
আসবেন কিন্তুু।
আর একটা কথা মনে রাখবেন,,,
প্রকৃত ভালবাসা কখনো হার মানে না।
………………………………………………সমাপ্ত……………………………………………..