কল্পনায়

কল্পনায়

দুপুর ৩টার সময়


চুপ করে বসে আছি বাসে, ৩০মিনিট বসে থাকার পরেও বাস ছাড়ার কোনো তাল পাচ্ছি না, বসে থাকতে বিরক্ত লাগছে কিন্তু কিছু
করার নাই, মেয়ে টির সাথে দেখা করতেই
হবে নয় তো খুব রাগ করবে আমার সাথে
রাগ করারি কথা তার কারন
সেই ৪ মাস আগে দেখা করে ছিলাম মেয়েটির সাথে, কত করে বলেছে এক বার দেখা করার জন্য কিন্তু আমি এই ৪মাসের মধ্যে এক বারও দেখা করিনি। মাঝে মাঝে
মেয়েটি ফোন করে খুব কান্না করে। আমি অবাক হয়ে যাই এই অবাক হয়ে যাওয়ার কারন হচ্ছে ফেসবুকে করা প্রেম যে এতো
গোভীর হতে পারে আমার ধারনাই ছিলো না, কিন্তু দেখতে দেখতে আমাদের ফেসবুকে করা প্রেমের বয়স ৪বছর। মেয়েটি আমায় খুব ভালোবাসে যদি আমি
মেয়েটি কে বলি তোমার হার্ট টা আমায় দিয়ে দাও, মেয়েটি জানতেয় চাইবে না কেন
আমি তার হার্ট বুক চিড়ে নিতে চাচ্ছি, মেয়েটি শুধু বলবে তোমার মুখের হাসি মানেই আমার সমগ্র পৃথিবী। মাঝে মাঝে ফোনে কথা বলতে পারি না খুব খারাপ লাগে আমি ও মেয়েটি কে খুব
ভালোবাসি কিন্তু বুঝতে দেই না যদি বুঝতে দেই তাহলে হয়তো হারিয়ে
যাবে অনন্য কোনো পৃথিবীতে, আসলে হারাবে না এইটা আমার মনের
ভয়। বাসে প্রায় অনেক মানুষ উঠে গেছে বাস ছাড়বে ছাড়বে ভাব।
মোবাইলে কল আসছে প্রায় ১২ টার মত কিন্তু মেয়েটি কে নিয়ে ভাব ছিলাম তাই আর কল পিক করা হয়নি। ফোনের স্কিনে তাকিয়ে দেখি
যাকে নিয়ে ভাবছিলাম সে কল দিয়েছে – ইয়া মাবুদ – মেয়েটির সাথে দেখা হলে মনে হয় তার রাগি কন্ঠে বলা কিছু কথা শুনতে হবে। মেয়েটির অভিমানী কন্ঠে বলা কথা শুনতে আমার এক দম ভালো লাগে না কেমন যেনো কান্না কান্না ভাব থাকে মেয়েটির কন্ঠে, মেয়েটির এমন কান্না জরিত কন্ঠ শুনলে আমারি কান্না চলে আসে মন খারাপ হয়ে যায়। মেয়েটি আবার কল করেছে কল পিক করেই মাফ চাইতে শুরু করলাম।
– আমি বাসে এই জন্য তোমার কল পিক করতে পারি নাই sorry ।
– আচ্ছা বুঝলাম সবি তোমার আসতে আর কতক্ষণ লাগবে?
– এইতো বিকেল ৪টার মধ্যে চলে আসবো।
– ও আচ্ছা তুমি সাবধাণে আইসো যা দিন কাল পরছে কখন কি হয় বলা যায় না, আর কল করলে একটু পিক কইরো হু।
– আচ্ছা তুমি চিন্তা করো না, আমি ঠিক ঠিক চলে আসবো।
– আচ্ছা রাখছি তাহলে, আসার পর মাজারের সামনে দাড়াবা মনে থাকবে?
– হু অবশ্যই মনে থাকবে সব ভুলে যাবো কিন্তু তোমার কথা ভুলবো না।
– রাখছি তাহলে bye………..


আস্তে আস্তে বাস চলতে শুরু করেছে,
আমার মনে অনন্য রকম ভালো লাগা কাজ করছে কারন অনেক দিন পর প্রিয় মানুষ টির সাথে দেখা করতে যাচ্ছি ভালো
তো লাগারি কথা, আমার যেনো আর তর শৈছেনা, যদি এমন হতো পলক এর মধ্যে বাস টিকে এক স্থান থেকে অনন্য স্থানে নিয়ে যেতে
পারতাম তবে এতো টা সময় আমি কখনোই ব্যয় করতাম না প্রতিদিন
মেয়েটি কে দেখতাম হ্যা দু’চোখ ভরে দেখতাম । বাস প্রায় কাছা কাছি
চলে আসছে তার জন্য মেয়েটি কে দেখার ইচ্ছে টা আরো বেরে যাচ্ছে
দেখো কাজ এতো সময় না দেখে থাকলাম কিন্তু আর ৭-৮ মিনিটের পথ যেনো আর শেষ হচ্ছে না, এমন অবস্থায় অল্প পথ ও দীর্ঘপথ মনে হয়। রাস্তায় গাড়ীর যেই অবস্থা দেখে মনে হয় না মানুষ গুলো এই ইঞ্জিন বাহি বাস গুলো চালায় তার কারন তো তুমি আমি যানি। প্রিয়াজ্ঞনের সামনে আসার পর দেখি আরাক কান্ডো রাস্তা ঠিক করছে এই জন্য সব যাত্রী কে বাস থেকে নেমে তার পর যেতে হবে, আমি মাজার রোড যাবো প্রিয়াজ্ঞন থেকে মাজার রোড যেতে বেশি সময় লাগে না
৩-৪ মিনিট লাগে তাই তাড়া তাড়ি বাস থেকে নেমে হাটা শুরু করলাম, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ৪টা বাজতে ৩মিনিট
বাকি আছে খুব দ্রুত পা চালাচ্ছি।


মাজার রোডে আসলাম ৪টা ১০ মিনিটে।
আসার সাথে সাথে মেয়েটি কল করেছে, জাক ভালোই হয়েছে আমার সিমে টাকা
নাই সে যদি কল না দিতো তাহলে তার কলের অপেক্ষায় থাকতে হতো। আসলে মনের টান আছে এক জন আর এক জন
এর জন্য।
– কোথায় তুমি?
– হু, আমি চলে আসছি,তুমি কোথায় বাসা
থেকে বের হইছো?
– হু আমি চলে আসছি, ওইযে যেখানে ৪মাস আগে দেখা করছিলাম ওই জায়গায়
আছি এখন, তুমি চলে আসো।
– কোথায় ঠিক মনে নাই। ( আমতা আমতা করে বললাম)
– আরে B-blog এর সামনে।
– রাস্তা ভুলে গেছি , তুমি আসো মাজারের সামনে।
– মরন আমার আসতেছি।……….


আমি মাজারের সামনে অপেক্ষা করছি মেয়েটির জন্য।
প্রায় ১০ মিনিট পর মেয়েটির দেখা পেলাম সুন্দর হয়ে গেছে মেয়েটি
মেয়েটি আমাকে দেখা মাত্র মিষ্টি একটা হাসি উপহার দিলো।
আশে পাশের অবস্থা ভালো না এখানে আর যা কিছুই করা যাক প্রেম করা যাবে না পরিবেশ বলেও কথা আছে।
রাস্তার অপর পাশে একটা ফ্রুড পার্ক দেখলাম সে খানে যেয়ে ভালো ভাবে কথা বলা যাবে। মেয়েটি কে সাথে নিয়ে রাস্তা পাড় হচ্ছি, হাত ধরে রাস্তা পাড় হওয়ার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু ভয় করছে। হাত ধরলে
যদি রেগে যায়। তখন প্রায় বিকেল হয়েগেছে রোদ নেই আকাশে হালকা মেঘ করেছে দক্ষিন পাশ থেকে মৃদু বাতাস বৈছে বর……. মন্দ লাগছে না পরিবেশ টা,
হালকা বাতাসে মেয়েটির চুল উড়ছে সেই
চুলের সুবাস….!!
I wished ask his that
do you use shampoo in your hair?….
cause, i feel smell the shampoo in her
hair………..


পাশা পাশি বসে আছি দুজন, দুজনের মুখে কোনো কথা নেই,এক দম চুপ চাপ।
মেয়েটি আমায় জিজ্ঞেস করলো……
– কেমন আছো তুমি?
খুব নরম গলায় বলল কথা টি, মেয়েটির
কন্ঠে কান্না কান্না ভাব ছিলো।
– ভালো আছি, তুমি কেমন আছো?
– হু, আমি ভালো আছি।
উত্তর দিয়েই কান্না শুরু করেছে, কান্না কেন করছে ফ্রুড পার্কে? কেও দেখলে
ভাববে আমি কিছু করছি নয় তো কান্না করার কথা না। চোখের কাজল লেপটে গেছে দেখতে বাচ্চা বাচ্চা লাগছে ।
আমি আদুরে গলায় বললাম
– কান্না কেন করছো কেও দেখলে কি বললবে আশে পাশের মানুষ জন দেখে
কান্না করো।
– আগে বলো কেন এতো দিন আমার সাথে
দেখা করনি? আমার কত খারাপ লাগছে
তুমি আমাকে দেখে বুঝো না?
– হু, আমি বুঝতে পারছি কিন্তু…….
– কিন্তু কি? আমার সাথেই দেখা করতে বললে তোমার যত অজু হাত দেখাতে হয়।
– আরে, আমার পরিক্ষা ছিলো আবার টাকার ও তো ব্যাপার আছে তাই না। আর
তুমি আমার বিষয় টা না বুঝলে কে বুঝবে
বলো?
– এই চুপ একদম চুপ আর একটা কথাও
বলবানা, দেখা করতে বললে ঝাড়ি দিয়ে কথা বলো আর এখন গ্যাস দেওয়া হচ্ছে, আমি আরো বেশি করে কান্না করবো।
আমি চুপ করে বসে আছি কথা বললেই
আবার ঝাড়ি খেতে হবে।
কিছুক্ষণ পর মেয়েটি নিজে থেকেই কথা বলল, খুব আদুরে গলায় বলল
– অসুস্থ ছিলে আমাকে বলনি কেন?

আমি ভেবাচেকা খেয়ে গেলাম, মেয়েটির কাছে যে কথা এতো দিন আমি গোপন রেখেছি সে কথা কি করে যেনে গেলো।

-কবে কোন সময় অসুস্থ হলাম আমি,
আর তুমি কি করে ভাবলে, আমার অসুস্থতার কথা তোমার কাছে গোপন রাখবো?
– হইছে আর চাপা মারতে হবে না, আমি সব বুঝি। নিজের দিকে তাকিয়ে দেখো
কেমন হইছে চেহারার অবস্থা, দেখতে রোগাটে লাগছে,।
হাবিজাবি কথা বলে মেয়েটি কান্না করার
কথা ভুলে গেছে, ভালোই হয়েছে ভুলে গেছে নয়তো কি যে এক মুশকিলে পরতে হতো। মেয়েটি খুব সুন্দর করে কথা বলে।
আমি তার হাত ধরলাম, ইচ্ছে ছিলো হাত ধরে এক সাথে কোনো এক বিকেলে ফুটপাথ ধরে হেটে যাবো, কিন্তু সে স্বপ্ন শুধুই স্বপ্ন হয়েই রয়ে গেলো। মেয়েটির হাত ধরায় তার কথা থেমে গেলো।
আমি বললাম কি ব্যাপার কথা থামালে কেন? ভালো তো লাগছিলো তোমার মুখে
বাচ্চা বাচ্চা টাইপ কথা।মেয়েটি হাসি দিয়ে
আবার কথা বলা শুরু করলো।
কেন আমি দেখা করিনি, অনন্য মেয়ে দের
সাথে সময় দেই এই জন্য দেখা করতে পারি না এই সব দোষ দেওয়া কথা বলছে
আমাকে, আমি খুব মনো যোগ দিয়ে কথা শুনছি কারন কথার মাঝে মেয়েটি হঠাৎ বলবে ” এই তুমি আমার কথা শুনছো? আমি কি বলছি” আমি তার প্রশ্নের উত্তরে বলবো, হ্যাঁ খুব মনোযোগ দিয়ে তোমার
কথা শুনছি। মেয়েটি আবার কথা বলা শুরু করবে আমি মুগ্ধ হয়ে মেয়েটির কথা
শুনবো। ওয়েটার আসছে, আমি মেয়েটি
জিজ্ঞেস করলান – কি খাবে ফুচকা না অনন্য কিছু?
– না ফুচকা খাবো না,।
-অনন্য কিছু নিবো?
– না কিছুই নিতে হবে না আমি কিছু খাবো না,।
– এখানে বসে কথা বলছি যদি কিছু না নেই তাহলে কেমন দেখায় তুমি বলো?
আমি ওয়েটার কে বললাম “২ প্লেট দই ফুচকা আর পেপসি ২টা ৪০০ মিলির পোটে।
কিন্তু মেয়েটির চেহারা দেখে মনে হচ্ছে না
সে এই ওয়াডার করা খাবার খেতে ইচ্ছুক।
কথা বলতে বলতে খাবার গুলো ওয়েটার দিয়ে গেলো। আমি ফুচকা খেতে খেতে
মেয়েটি কে বললাম।
– একটা কথা বলি যদি কিছু মনে না করো।
– হু বলো।
– তুমি আগের চাইতে আরো বেশি সুন্দর হয়ে গেছো।
(মেয়েটি আমার কথা শুনে মৃদু হাসলো।)
আমি কিছুক্ষন চুপ থেকে আবার বলা শুরু করলাম………..
– কাল থেকে নিয়মিত পাতিলের কালি!
না, না, পাতিলের কালি না কাজল দিবা।
– কেন, সবাই ছেলে রাই সুন্দর মেয়ে খুঁজে, মাঝে মাঝে দেখি অনেক মেয়ে দের bf
তাদের ছ্যাকা দিয়ে যায়, সুধু সুন্দর না বলে, আমাকে অসুন্দর করে ছ্যাকা দেওয়ার চিন্তায় আছো নাকি? ( খুব গোভীর ভাবে বলল কথা টা)
– আসলে তুমি তোমার চেহারায় চুনু দাও,
চুনু দিলে যে কেও সুন্দর হয়ে যায়, আর তুমি যদি সুন্দর হয়ে যাও তাহলে প্রতিদিন
কোনো না কোনো ছেলে তোমাকে প্রেম পত্র দিবে, আমার চাইতেও ভালো ছেলে পেয়ে যেতে পারো তাই না!!! এই জন্য চুনুর বদলে পাতিলের কালি অথবা কাজল দিবা তোমার চেহারায়।
মেয়েটি আমার কথা শুনে হাসলো, কিন্তু আমি তো হাসির কোনো কথা বলিনি
যুক্তি সংগত কথা বলেছি যাতে আমার ফায়দা হয়, কিন্তু মেয়েটি আমার সব কথা এক হাসিতেই শেষ করে দিলো।
২প্লেট ফুচকা নিয়েছি আমি এক প্লেট খুব কষ্ট করে খেলাম কিন্তু মেয়েটি খাচ্ছে না,
আমি জিজ্ঞেস করালাম খাচ্ছো না কেন?
– তোমার ফুচকা তুমি খাও, আমার ভালো লাগে না ফালতু খাবার খেতে।
-আমি তো আর খেতে পারছি না, সন্ধা হয়ে গেছে প্রায় মেয়েটি কে বললাম চলো উঠি তাহলে সন্ধা হয়ে গেছে। মেয়েটি আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো যেনো আমি
মস্ত বড় ভুল করে ফেলেছি। জিজ্ঞাসা সূচক দৃষ্টি তে মেয়েটির দিকে তাকালাম।
– তুমি খেতে পারবে না নিয়েছ কেন টাকা
তো কামাই করা লাগে না, এই জন্য বুঝ না
যে ভাবে ইচ্ছা টাকা নষ্ট করো। ( রাগি তার চাহনি)
– আরে তুমি খেলে খাবার নষ্ট হতো না, আর অল্প টাকাই তো কিছু হবে না। আচ্ছা
যাই হোক next থেকে আর যা কিছুই করি
খাবার নষ্ট করবো না।
– হু, জনাবের মনে থাকে যদি কথা টা, তাহলে
আশা করা যায়, যে আর খাবার তুমি নষ্ট করবে না।
– চলো এখন বাসায় যেতে যেতে রাত হয়ে যাবে।
– এই এতো তাড়া তাড়ি কি যাবে যাবে করছো, আগে আমার কথার উত্তর দিয়ে
তার পর যাবে।
– কি কথা তুমি তো কিছু জিজ্ঞেস করলে না।
– তুমি আমার সাথে ফোনে খারাপ ব্যবহার কেন করছো?
– আবার সেই একই কথা, আমি কখন তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করলাম।
– কি মিথ্যা কথা, তুমি সেই দিন আমার সাথে ঝাড়ি দিয়ে কথা বলোনাই, আমি শুধু বলছি ফেসবুকে কেন মেসেজে উত্তর টা দেরি তে দিছো, আর তুমি কি করলা।
আমি যানি এতে আমার কোনো ভুল নেই
তবুও আমার সাথে ঝগড়া বাধা নোর জন্য
এমন টা করছে।
-এখন ঝগরা করার কোনো প্রয়োজন নাই, ফোনে যখন কথা বলবো
তখন ঝগরা কইরো হু।
– আমি ঝগড়া করছি তোমার সাথে,? সব সময় আমার উপর দোষ
চাপিয়ে দাও কি পাইছো তুমি?
– আরে না তুমি কি ঝগড়া করতে পারো নাকি সব সময় তো ঝগড়া
আমি করি তাই না।
– খোঁচা মারা হচ্ছে আমাকে তাই না, কথাই বলবো না তোমার সাথে,
গেলাম আমি তুমি থাকো।
আমি মেয়েটির হাত ধরেছি শক্ত করে হাত ধরেছি।
– হাত ছাড়ো আমার আমি চলে যাবো তোমার সাথে আর কোনো কথা
নাই আমার।
– না না যাইও না তুমি, আমি কত কষ্ট করে তোমার সাথে দেখা করতে আসলাম আর তুমি চলে যাবে কেমন দেখায়, এই বারের মত মাফ করে দাও।
– এহে, এতো সহজে মাফ করছি না আপনাকে, কান ধরে উঠ বশ করেন ১০বার নয় তো আজ তোমার মাফ নাই।
– কান ধরে উঠ বশ করলেই মাফ করে দিবে?
– হু দিবো তাড়া তাড়ি কাজ টা শেরে ফেলো সন্ধা হয়ে যাচ্ছে বাসায় যেতে হবে।
আমি চুপ করে আছি, এই মেয়ে বলে কি কান ধরে উঠ বশ করতে হবে,
তাও ১বার ২বার না ১০ বার!! ওহো মাওলা কি করমু এখন।
– কি ভাবছো, কান ধরবা না? তাহলে গেলাম।
– এই না না ধরবো ধরবো।
– তাহলে তাড়া তাড়ি উঠ বশ করো যত তাড়া তাড়ি করবে, ততই ভালো তোমার জন্যে।
আমি কান ধরে উঠ বশ করছি, মেয়েটি মিটি মিটি হাসছে,
দেখে মনে হচ্ছে খুব মজা পাচ্ছে সে, রাগে গা পুরে যাচ্ছে আমার
কোন কারনে যে প্রেম করছিলাম ধুর…….
৬ বার কান ধরে উঠ বশ করার পর মেয়েটির মনে দয়া হলো
জাক আল্লাহ তার মনে হেদায়েত দিছে।
– হইছে আর উঠবশ করতে হবে না।
– আচ্ছা একটা কথা বলি যদি রাগ না করো?
– ত্যাড়া কথা হলে আবার কান ধরে উঠবশ করাবো,বলো কি বলবা?
– তুমি একটা থাপ্পড় ও দিতে পারতা আমাকে, কান ধরে উঠবশ কেন
করালে, মান ইজ্জতের ব্যাপার ফ্রুড পার্কের ওয়েটার গুলো কি ভাবে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে দেখছো তুমি?
– এইটা শিক্ষা দিলাম তোমাকে, থাপ্পড় দিলে ভুলে যাইতা
কারন যারা প্রেম করে কম বেশি সবাই তার bf কে আদর করে থাপ্পড় দেয়, কেউ যদি দেখতো তাহলে মনে কত মজা করে থাপ্পড় দিছি
তাই কান ধরে উঠবশ করা লাম তাহলে অন্ততপক্ষে কিছু দিন মনে থাকবে উঠবশ করার কথা।
আর যদি তুমি আমাকে ছ্যাঁক দাও তখন আমি সবাই কে বলতে পারবো তোমাকে আমি কান ধরে উঠবশ করাইছি হু, আর ছবি তো আছেই ছ্যাক দেওয়ার নাম নিলেই খবর আছে।
– ওই তুমি ছবি কখন তুল্লে?
– তোমাকে বলে ছবি উঠাইতে হবে নাকি আর তোমাকে দেখিয়ে ছবি উঠালে তুমি কি ছবি তুলতে দিতা বলো।
আমি গাধার মত তাকিয়ে আছি মেয়েটির দিকে,
মাঝে মাঝে বুঝতে পারি না যে মেয়ে প্রজাতি গুলো এতো
চালু হয় কি করে, এমন চালু হওয়ার জন্য কি কোনো কোচিং এ পড়ে?
মনে হয় পড়ে নয়তো বোকা মেয়ে গুলো এতো চালু হয় কি করে।
কোন সময় কি করতে হবে সব কিছু আগে থেকে ঠিক করে রাখে।
– চলো সন্ধা হয়েগেছে তাড়া তাড়ি বাসায় যেতে হবে, আজ বাসা থেকে বের হওয়ার আগে আম্মু দেখে ফেলছে বেশি দেরি হলে মাইর একটাও মাটিঁ তে পরবে না।
– তোমার আম্মু আসার সময় কিছু বলছে তোমাকে?
– কি বললা তুমি আমার আম্মু? ( বড় বড় চোখে তাকিয়ে)
– হু তোমার আম্মু কেন কি হইছে তোমার আম্মু কে তোমার আম্মু বলবো না?
– ও এই হিসাব বুঝছি সব।
– কি বুঝলা?
– তুমি আমার আম্মু কে আম্মু বললে কি হইতো? আমি তো তোমার আম্মু কে ঠিকি আম্মু বলেই ডাকি কিন্তু আমার সময় খালি ফাকি বাজি হু,
– আরে রাগ করো কেন এতো আমি কি ইচ্ছে করে বলছি ভুল করে বলছি, এখন বলো বাসা থেকে আসার সময় আম্মু কিছু বলছে?
– হু, বলছে ” এতো পরিপাটি হয়ে কোথায় যাওয়া হচ্ছে ” আমি কিছুই বলি নাই।
– ও আচ্ছা তাহলে চলো তাড়া তাড়ি পরে তোমার সমস্যা হবে।


দুজনে পাশা পাশি হাটছি, খারাপ লাগছে খুব কারন আবার অনেক
দিন পর দেখা হবে, ওর মিষ্টি চেহারা, হাসি দিয়ে কথা বলা আবার অনেক দিন পর দেখতে পাবো এই জন্যই খারাপ লাগছে।
আসার সময় মেয়েটির জন্যে কিটকেট চোকলেট নিয়ে আসছিলাম
পোকেট থেকে বের করে মেয়েটির হাতে দিলাম, মেয়েটি খুব নরম গলায় বললো আবার কবে দেখা হবে তোমার সাথে?
– কিছু দিনের মধ্যে আবার দেখা করবো।
– হু, জাই তাহলে।
মেয়েটি চলে যাচ্ছে আমি তার চলে যাওয়া দেখছি।
ইস, মেয়েটি কে ভালোবাসি কথা টি বলতে পারলাম না।
ভালোবাসার মানুষ কে সামনে থেকে ভালোবাসি কথা টি বলার
অনুভুতি টাই অনন্য রকম। মেয়েটি আবার আমার দিকে আসছে।
কিন্তু কেন আসছে প্রেমের কাহিনী তো শেষ এখন চলে যাওয়ার পালা।
মেয়েটি আমার সামনে দারিয়ে বলল।
তোমাকে খুব ভালোবাসি, হোক না মাসে বছরে ১বার দেখে
তাতেউ আমার ভালোবাসা তোমার প্রতি কমে যাবে না,।
ভালোবাসি তোমাকে খুব ভালোবাসি..।
আমি মেয়েটির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি!
তখন অন্ধকার হয়ে গেছে ল্যাম্পপোস্টের আলো তার চেহারায় পড়ছে, আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি মেয়েটির চোখ বেয়ে পানি পরছে।
আমি আমার হাত দিয়ে তার চোখের পানি মুছে দিলাম, আর বললাম আমি ও তোমাকে অনেক ভালোবাসি।

গল্পের বিষয়:
রোমান্টিক
DMCA.com Protection Status
loading...

Share This Post

আরও গল্প

সর্বাধিক পঠিত