বউটা আজকে আমার উপর অনেক অভিমান করে আছে,। অভিমান করে থাকাটাই স্বাভাবিক, কালকে কাজের জন্য অনেক রাত করে বাড়িতে ফিরেছি, উপর থেকে ওজে ফোন করে করেও জানায়নি, আমার ফোনটাও চার্জ না থাকার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল! বেচারি আমাকে ফোনেও পায়নি। আমার ফোন যে বন্ধ। সে খুব টেনশনে ছিল, আমাকে যে বড্ড ভালোবাসে! বাসা ফিরতেই আমাকে ঝারি মেরে ওই যে কাদঁতে কাঁদতে ঘরে ঢুকছে আর বেরোওনি। পাগলি একটা!! আমার আগে সে খায় না, তারমানে কালকে রাত থেকে না খেয়ে আছে। তাই নিজের হাতে ওর জন্য রান্না করে খাবার নিয়ে ঘরে ঢুকলাম —
– আসব???
– (নিশ্চুপ)
-আমি আসবো??
-জানি না!
ও কিছু বললো না তার মানে আসতে বলছে।
ঘরে ঢুকে বললাম –
-আর কতোক্ষণ অভিমান করে থাকবে বলো তো? কালকে রাত থেকে খাওনি! তেোমার জন্য খাবার নিয়ে এসেছি, খেয়ে নেও!
– আমি খাবো না!!
– এতো রাগ করে না সোনা! আসলে কালকে কাজের জন্য খুব বিজি ছিলাম! আর আমার ফোনে চার্জ ও ছিলো না! ফলে বন্ধ হয়ে গেছে! তাই তেমাকে জানাতেও পারিনি!!
– অন্যের ফোন দিয়ে তো জানাতে পারতে????
– অনেক কাজ ছিল ওসব মাথাতেই ছিলো না!!আচ্ছা আমি আর এরকম করবো না!promise! এই কান ধরলাম! এখন খেয়ে নেও!! প্লিজ!! ও আমার দিক থেকে মুখ ঘুরায় নিলো!
– আচ্ছা আমি খাওয়ায় দিচ্ছি! নেও, দেখলাম ওর চোখ থেকে অনাবরত পানি পরছে! আমি আবার বললাম –
– নেও খাও! ও খেলো!
খেতে খেতে বলল :-
– আবার যদি এরিকম করো তাহলে কি করবো??
– কি করবা! আমি তোমাকে একটা লাঠি এনে দিবো! সেটা দিয়ে তুমি আমাকে ইচ্ছেমতো পিটাইও!! ওকে???
– পিটাবো!!তোমার লাগবে না বুজি???
– হু লাগবে তো! কি আর করার দোষ যখন করেছি, তখন তো মার খেতে হবে!!
– উহু……. বজ্জাত একটা!!
– এই নেও!!
– তুমি খাইছো??
– খাইনি, তুমি খাও তারপর পরে খাবনি!
-কি খাওনি!!!! তুমি জানো না তোমার আগে আমি খাই না!! তুমি আমাকে আগে খাওয়ালে!!
– আরে আরে রাগ করছো কেন??! তুমি আগে খাও তারপর না হয় আমি খেয়ে নিবো
! – না তা হবে না!! এই নেও খাও!! বউ আমার সামনে খাবার তুলে ধরলো! কি আর করার বাধ্য ছেলের মতো খেয়ে নিলাম!
– খাবারটা ভালোই হয়েছে!! এক সেকেন্ড!! এগুলো কে রান্না করলো???তুমি??
গলাটাকে পরিষ্কার করে বললাম
– হু!
– বাব বাহ!! আমার বর দেখি রান্নাও করতে জানে!! খুবই ভালো হইছে রান্নাটা!!
আমি মনে মনে ভাবতেছি এই রান্না করতে যেয়ে যে আমার আর রান্নাঘরের কি হাল হয়েছে সেটা আমি ভালোই জানি!! মুচকি একটা হাসি দিলাম!! হঠাৎ করেই আমার বিষম উঠলো!
– আস্তে আস্তে!! পানি আনোনি??? ওয়েট রান্নাঘর থেকে পানি নিয়ে আসি!
( কি রান্নাঘর!! রান্নাঘরের অবস্থা তো খুবই খারাপ! ও দেখলে তো আমি শেষ!!) আমি কোনো মতে কাশি থামিয়ে ওর পিছনে ছুটতে লাগলাম! যেয়ে দেখি ও অবাক বিষ্ময়ে রান্নাঘরের চারদিকে তাকিয়ে আছে! এভাবে তাকিয়ে থাকাটাই স্বাভাবিক!! রান্নাঘরের যা অবস্থা!!!
ও আমার দিকে তাকায় বলল ঃ
– এটা আমার রান্নাঘর????
আমি এখন কি বলবো!!কিছুই বুঝতে পারছিলাম না!!চোখ দুটা বুঁজে নিলাম!!এই বুজি চিল্লায় উঠবে!!! কিন্তু না, হঠাৎ করে হাসার শব্দ শুনতে পেলাম!! চোখ খুলে দেখলাম ও হা..হা..হা. করে হাসছে!!! আমি আর কি করবো আমিও ওর সাথে হেসে উঠলাম………!!!
………… সমাপ্ত…………
(পরিশেষে ভুল ক্রুটি ক্ষমার নজরে দেখবেন) .
..রোদেলা রিদা…..