–ইরা:: অভি, তুমি এখন অফিস এর কাজ করতেছো কেনো, তোমার না আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার কথা।
–অভি:: তুমি তো জানো, আমি অসুস্থ থাকার কারনে অনেক দিন অফিস যেতে পারি নি। তাই অফিস এর অনেক কাজ বাসায় করতে হচ্ছে।
–ইরা:: তাই বলে আজকের দিনটাতে একটু কম কাজ করতে পারো। আজকের দিনটাতে আমাকে একটু সময় দিতে পারো।।
–অভি:: ইরা, তুমি বোঝার চেষ্টা করো। অফিস এর কাজ শেষ করতে না পারলে আমার চাকুরি চলে যেতে পারে।
–ইরা:: এখন তো অফিস এর দোষ দিবা তাই না।। তার থেকে বলো আমাকে তুমি ঘুরতে নিয়ে যাবা না।।
অভি তুমি তো এ রকমটা ছিলা না।। যখন প্রেম করতাম তুমি আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া জন্য কত কিছুই না করতা। একবার মনে আছে, আমি বলেছিলাম তুমি যদি সারা রাত আমাদের বাসার সামনে দাড়িয়ে থাকতে পারো আমি সকালে তুমার সাথে ঘুরতে যাবো। আর তুমি আমার সাথে ঘুরতে যাওয়ার জন্য সারারাত বাড়ির সামনে ছিলা।। তুমি কি আমার সেই অভি।। ইরার চোখে পানি চলে এলো।।।
–অভি:: পিল্জ, একটু বোঝার চেষ্টা করো।। অফিসের কাজ না থাকলে আমি তোমার সাথে যেতাম।
— ইরা:: আমার জম্মদিন আজ, আর তুমি রয়েছো তোমার কাজ নিয়ে।।তার থেকে বলো আমাকে তোমার আর ভাল লাগে না, তোমার অন্য কাউকে চাই। এরকম টা যদি হয় তাহলে বলতে পারো, আমি তোমার সাথে আর সম্পক রাখবো না ( কান্না কান্না সুরে )।
–অভি:: তুমি কি তোমার রেডিও থামাবা। আমাকে এখন একা কাজ করতে দাও।। ইরা কান্না করতে করতে অভির রুম থেকে বেরিয়ে এল।।
এবং নিজের ব্যাগ গুছিয়ে বাবার বাড়ি চলে এল ( বাবার বাড়ি যেতে সময় লাগতো ৩০ মিনিট অভির বাসা থেকে )।
অভির সেই দিকে কোন খেয়ারই নেই। ও ওর মত কাজ করে যাচ্ছে। কারন অভি জানে মেয়েটা অভির উপর রাগ করে বেশি সময় থাকতে পারবে না।
ঝগরাটা হয়েছে বিকাল ৫ টায় আর এখন বাজে ৯ টা।। অভির চিন্তা হতে লাগলো,ইরা তো আমার উপর বেশি সময় রাগ করে থাকতে পারে না (বেশি হলে ৩-৪ ঘন্টা)।
আজ মনে হয় একটু বেশি রাগ করে ফেলেছি। অভি ইরাকে ফোন দিল, ফোন বেজে যাচ্ছে কিন্তু ইরা ধরতেছে না।অনেক বার ফোন দিল কিন্তু বেজে যায় ধরে
না।। এই বার অভি তার ছোট শালিকে ফোন দিল।।।।
–অভি:: তোমার আপু কি তোমাদের বাসায় গিয়েছে?
— রিয়া:: হ্যা, আপু তো আমাদের বাসায়। অভি ভাইয়া, আপুকে দেখলাম অনেক রাগ করেছে, সেই যে রুমেগিয়েছে আর এখনো বের হয় নি। আপনি কি আপুকে রাগ
করেছেন ভাইয়া।।
–অভি:: আরে তেমন কিছু হয় নি। তুমি তোমার আপুকে যেয়ে ডেকে দাও।
— রিয়া:: আচ্ছা ভাইয়া যাচ্ছি। কিছুক্ষন পর,রিয়া ইরা আপুর দরজার সামনে।। এই আপু অভি ভাইয়া ফোন করেছে।
তোর সাথে কথা বলবে।। অনেকক্ষন ধরে ডাকতেছে তবু ও দরজা খুললো না ইরা। কিছুক্ষন পর রিয়া অভি ভাইয়াকে ফোন দিলো।।।
–অভি:: হ্যা, বলো রিয়া।
— রিয়া:: অভি ভাইয়া, আপুকে অনেক সময় ধরে ডেকেছি,কিছু বলে ও না আবার দরজা ও খোলে না।
— অভি:: ঠিক আছে, দাড়াও আমি এখনি আসতেছি। অভি ৩০ মিনিট পরে ইরার বাসার সামনে দাড়িয়ে আছে। অভি রিয়াকে ফোন দিলো, রিয়া দরজা খোল। রিয়া —- অভি:: ইরা, আমি অভি দরজা খোলো। সত্যি বলতেছি আমি আর তোমাকে কষ্ট দিব না। তুমি যা বলবা তাই শুনবো। অনেক সময় ধরে ডাকা-ডাকির পর, ইরা আমার কিন্তু ধর্য্যর সিমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
আমি এক থেকে দশ গুনবো এর ভিতর দরজা না খোললে আমি আর কোন দিন তোমাকে আমার মুখ দেখাবো না।। এক,দুই এই ভাবে দশ পর্যন্ত গুনলো তার পর ও ইরা দরজা খুললো না।। অভি অভিমানে ইরার বাসা থেকে চলে এলো।।
সকাল হলো এবং ইরা ঘুম থেকে উঠে দেখে যে অনেক গুলা মিসকল তার ফোনে,ইরা ভাবতেছে মনে হয় কল দিয়েছে না ধরার কারনে মিসকল দেখাচ্ছে, দেখলো অভি আর রিয়া এর নাম।
ইরা তখনি অভিকে ফোন দিলো কিন্তু অভি অভিমানে ধরে নি। ইরা অনেক বার চেষ্টা করলো কিন্তু অভি ধরে নি। ইরা তখনি অভির বাসার দিক যাএা শুরু করলো। কিন্তু যেয়ে দেখে অভির বাসার সামনে তালা মারা। ইরা অভির আসার জন্য অপেক্ষা করলো দুপুর পর্যন্ত কিন্তু অভি আসে নি। ইরা এর ভিতর অনেক বার অভিকে ফোন করেছে, কিন্তু অভি অভিমানে ফোন ধরে নি। ইরা রাত দশটা পযন্ত অপেক্ষা করলো তা ও অভি আসতেছে না। ইরা যখন চলে যাবে দেখে অভি আসতেছে।
এখন ইরা আর অভি সামনা সামনি।
–ইরা:: তুমি আমার কল ধর নি কেন?
–অভি:: কাল আমি কত বার কল দিয়েছি তুমি ধরেছিলা। তোমার বাসা পর্যন্ত গিয়েছি তবুও তুমি দরজা খোলনি।
— ইরা:: ও, কালকে আমি রাগে,অভিমানে ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম।আর ফোন সাইলেন্ট করে রেখেছিলাম। আর তুমি ত জানো আমি ঘুমালে পাশ দিয়ে
যদি ঝড় বয়ে যায় আমি টের পাবো না।
— অভি:: তাই বলো, আর আমি ভেবেছিলাম তুমি আর আমার সাথে কথাই বলবা না।
–ইরা:: ঠিকই তো ভেবেছো,আমি তোমার সাথে কথা
বলবো না।।ও তো বাবা – মা আমাকে পাঠিয়েছে তাই আসলাম। না হলে, তোমার সাথে কথা বলতে আমার বয়েই গেছে।
— অভি:: ও তাই না, ঠিক আছে আমি এখান থেকে চলে যাচ্ছি আর কোন দিন দেখা হবে না।বাই। অভি কিছুদূরে যাওয়ার পরে।
— ইরা:: অভি, এই অভি, তুমি চলে গেলে, এইবার মনে হয় আমি সত্যি সত্যি মারা যাবো ।