– মা ও মা (আমি)
– কি হয়েছে টা কি, এরকম গরুর মতো চিল্লাচ্ছিস কেনো (মা)
– আমার শশুর আসছে!
– পাগল হলি কবে , বিয়ে না করতেই শশুর এলো কোতাথেকে,
– ঐ যে তোমার ভাই,, আসছে আমাদের বারিতে, মানে আমার শশুর!!
– থাপ্পর দিয়ে সব দাঁত ফালায়া দিবো শয়তান কোথাকার, উনি তোমার মামা হন সম্মান দিয়ে কথা বলবি,
– কেন মা মামার মেয়েকে কি বিয়ে করা জায় না,
– তুই এখান থেকে জাবি? , না থাপ্পর খাবি ফাজিল ছেলে!
– হা জাচ্ছি জাচ্ছি, তবে দেখে নিও তোমার ভাইয়ের মেয়েকেই আমি বিয়ে করব হুম,
-আরে ভাইয়া কখন আসলি তুই (মা)
– এইতো সবে মাত্র (মামা)
– ভাইয়া ওই শয়তান টার কথায় কিছু মনে করো না জানো তো ও এইরকমই (মা)
– আরে না ঠিক আছে
– আয় ভিতরে আয়
আরে আপনাদের তো আমার পরিচয়ই দেওয়া হয়নি, । আমি মৃনাল, অনার্স ৩য় ইয়ারে পড়ি। আর কিছুক্ষন আগে জার কথা বলা হলো, তিনি আমার মামা হন, আর তার মেয়ে তিথি আমার হাজার বছরের ক্রাস, কিন্তু সমস্যা হলো মামার মেয়েকে কি বিয়ে করা জায়, যাগগে এসব না ভেবে এখন একটা শান্তির ঘুম দেই।
ঘুম থেকে সন্ধায় উঠলাম,। আর দেখি আমার ক্রাস মানে তিথি আমাদের বাসায় আসছে,, মায়ের সাথে কথা বলছে, আমি গিয়ে বললাম
– এই না হলে তুমি আমার মা, তোমার হবু বউমাকে এতো তারাতারি নিয়ে এসেছো বাড়িতে ( আমি)
– তোকে আজ আমি শেষ করে ফেলব, তোর বিয়ে করার স্বাদ মেটাচ্ছি দাড়া,(মা)
– না না মা কি করবে আমাকে? হাতে ঝাড়ু নিয়েছো কেন? আমি মরলে তিথির কি হবে!, এই বলে দিলাম এক দৌড়।
কিন্তু মনের মাঝে খটকা লাগলো ব্যাপার কি আজ হঠাত আকাশের চাঁদটা মাটিতে নামছে কেনো? আমার কানে টান অনুভব করলাম
– ও মারে, আমার কানটা ছিরে গেল রে, (আমি)
– এখনও তো কিছুই হয়নি, তোর কান কেটে ফেলব দাড়া? (তিথি)
– এই তুমি না আমার বউ, এমন করে না সোনা প্লিজ জানু আমার কানটা ছেড়ে দাও, ব্যাথা লাগছে তো
– তুই তখন কি বললি? এসব, আমি তোর হবু বউ, আমাকে তুই বিয়ে করবি, (তিথি) (একহাতে কান টান দিয়ে ধরছে আর এক হাতে একটা ছুড়ি)
– এই তুমি না অনেক ভালো, হাত থেকে ছুরি টা ফেলে দাও, আর কানটা ছেড়ে দাও প্লিজ,
– আগে বল আমি তোর কে হই??
– আমার হবু বউ, থুক্কু আমার মামাতো বোন!!
– বোনকে সম্মান দিয়ে কথা বলবি, নইলে তোর খবর খারাপ আছে।
– হা হা হা, কানটা তো ছেড়ে দাও
– ওকে দিলাম আর জদি কখনও এমন করিস তাহলে…..(ছুড়ি টা মুখের সামনে ধরে বলল)। কান ছেড়ে দিয়ে চলে গেলো
জাগ বাবা তবে এবার ছেড়ে দিলো কানটা, কি আরাম লাগছে এখন আর একটু হলে তো আমার কানটা গেছিলোই, তখন লোকে কি বলতো ,
কি ব্যাপার রে ভাই আমার কি ভালোবাসার অধিকার নাই, আমি ভালবাসতে পারি না,, মা আমার কথা তো শুনেই না বরং শুধু ঝাড়ি দেয়।
রাতে ঘরে সুয়ে সুয়ে মোবাইল চাপতেছি তখনই মা এসে বলল
– দেখ বাবা তুই তিথির পিছনে লাগিস না? মেয়েটার আর তিন মাস পর পরিক্ষা তাই এই তিন মাস আমাদের বাসা থেকে কোচিং করবে,
ওর পড়ার ডিস্টার্ব করিস না, রেজাল্ট ভালো করার জন্য ও আমাদের বাসায় এসেছে এখান থেকে কোচিং করবে,
এসব বলে মা চলে গেল,
এবার আসল কাহিনি বুঝতে পারলাম, কেন তিথি আমাদের বাসায় আসছে,
– ওই ওঠ তারাতারি ওঠ কোচিং এর দেড়ি হয়ে জাচ্ছে, সকাল নয় টা বাজে এখন ও ঘুমোচ্ছিস (তিথি)
– কানের কাছে চিল্লাইস না তো জা এখান থেকে, (আমি)
– ওকে আন্টকে বলছি দাড়া!
– এই না না না মাকে বলিস না, উঠছি তো
– হুম গুড বয়
তারপর নাস্তা করে তিথি কে কোচিং এ দিয়ে আসলাম, আর ভাবছি এই তিন মাস ওকে কোচিং এ নিয়ে জাওয়া আর নিয়ে আসা করাই আমার কাজ, আর এই সুজোগে ওকে পটিয়ে ফেলতে হবে,
এই বলে এক সপ্তাহ কেটে গেল, ওকে কিছু বলতে পারি না কিছু বল্লেই মাকে এসে বলে দেয়, আর আমার তো ওর কথায় উঠে আর বসে আমার পাশে কেউ নাই, বাবা বাসায় থাকলে হয়তো আমার পক্ষ নিতো, কিন্তু বাবা তো বাইরে আছেন কাজের জন্য।
তারপরের দিন হেটে হেটে কোচিং এ জাচ্ছি , কোচিং বাসা থেকে বেশি দুরে নয় জেতে ১৫_২০ মিনিট লাগে
– আচ্ছা তিথি একটা কথা বলবি?
– কি কথা!
– তুই কি সত্তিই আমায় পছন্দ করিস না আমায় আমায় ভালোবাসিস না?
– না না না,,
– কিন্তু আমি তো তোকে অনেক ভালোবাসি রে
– কবে থেকে??
– তিন বছর আগে থেকে জেদিন তোকে প্রথম দেখি সেদিন থেকেই
– রাখ তোর ভালোবাসা, আমি তোকে ভালোবাসি না,,
তারপর ওকে কোচিং এ দিয়ে ওখানেই বসে ছিলাম, আর শেষ হওয়ার পর নিয়ে বাসায় আসলাম,
এভাবে প্রতিদিন ওকে আমার ভালোবাসার কথা বলি কিন্তু ও কিছুতেই রাজি হয় না,
এভাবে দেখতে দেখতে তিনটা মাস কেটে জায় আর বেশিদিন থাকবে না ও, কিন্তু আমি তো ওকে ভালোবাসি, ওকে ছাড়া থাকতে পারবো, তাই ভাবলাম কালকেই ওকে আবার প্রোপোজ করব, এর আগে ওকে একবার প্রোপোজ করেছিলাম ১ বছর আগে কিন্তু উপহার পেয়েছি একটা থাপ্পর। জা হবার হবে ওকে প্রোপোজ করবই,
– তিথি?
– কি হইছে বলো তারাতারি আমার হাতে সময় নাই
– আই লাভ ইউ তিথি, আমি তোকে সত্তিই ভালোবাসি অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি, তোকে ছাড়া বাঁচব না, প্লিজ তোর কাছ থেকে আমায় দুরে সরিয়ে দিস না,, এই বলে গোলাপ টা ওর দিকে বাড়িয়ে দিলাম ,
– ঠাসসসসসসসস, তোকে আমি ভালোবাসি না ভালোবাসি না ভালোবাসি না,, তুই কি করে ভাবলি তোকে বিয়ে করব আমি,, কখন ও না কোনদিনই না,
এসব শুনে আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি জেনো সরে জাচ্ছে, আমি ওকে জরিয়ে ধরে বলতেছি প্লিজ আমায় এ ভাবে সরিয়ে দিও না,
– মৃনালললললল, ঠাসসসসসসস, ঠাসসসস, শয়তান ছেলে,, তোকে না বলেছি ওকে ডিস্টার্ব করবি না আর তুই ওকে জোর করে জরিয়ে ধরেছিস, ঠাসসসস, তুই আমার চোখের সামনে থেকে সরে জা, তোর মুখ আমি আর দেখতে চাই না, এখুনি আমার বাড়ি থেকে বের হ।
তারপর চোখের পানি মুছতে মুছতে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলাম
পকেটে বেশি টাকাও নেই , না আর বাসায় জাব জেখানে আমায় কেউই ভালোবাসে না সেখানে আর কোনদিন জাব না, দরকার হলে রাস্তায় থাকব তবুও বাসায় জাব না, ফোনটাই সুইচ অফ করে রেখে দিলাম, , তারপর আমার এক বন্ধুর বাসায় গিয়ে উঠলাম,
তিন দিন পর ফোনটা খুললাম আর কিছুক্ষন পরই কল আসলো আমার মায়ের ফোন থেকে, ফোন রিসিভ করতেই
– এখুনি বাসায় চলে আয় ১ ঘন্টার মধ্যে জেন তোরে বাসায় দেখি (মা)
– আচ্ছা!
তারপর বাসায় চলে গেলাম, মায়ের সামনে জেতেই
-ঠাসসসস, শয়তান কোথাই ছিলি তুই তোর ফোন কেন বন্ধ, খুব বিয়ে করার শখ তোর তাই না আজকেই তোর বিয়ে, আমার বান্ধবীর মেয়ের সাথে (মা)
– মা আমি তিথি কে………
– চুপ একদম চুপ আর একবার জদি ওর নাম মুখে নিস তাহলে তোর খবর খারাপ আছে,, এখনি তোর বিয়ে রেডি হয়ে নে
আমি কিছু না বলে ভদ্রছেলের মত বিয়েটা করে নিলাম,, আজ আমার ফুলসজ্জার রাত। ঘরে ঢুকতে ইচ্ছেই করছে না। তাই ছাদে দাড়িয়ে আছি, আর ভাবছি আমার ভালোবাসা কে এভাবে হারালাম, এসব ভাবতে ভাবতে আমার ফোন টা বেজে উঠলো, মায়ের ফোন,
-ওই রাত দুইটা বাজে কোথায় তুই ফাজিল, বউ মা একা একা ঘরে বসে আছে, ৫ মিনিটের মধ্যে ঘরে জাবি।(মা)
আমি আর কিছু না বলে ঘরে চলে আসলাম , আর ঘরে এসে বউ ইয়া বড় ঘোমটা দিয়ে বসে আছে, আমি বললাম!
– আমি তোমাকে কোনোভাবেই আমার বউ হিসেবে মেনে নিতে পারব না, আমি অন্য একজন কে ভালোবাসি, আমার মায়ের কথায় বাধ্য হয়ে তোমায় বিয়ে করেছি (আমি)
– কি বললি শয়তান, তুই আমাকে ছেড়ে আর কাকে ভালোবাসিস, (তিথি)
– তি তি তিথি তুই!!
– কেনো এখানে অন্য কাউকে ভাবছিলে নাকি?
– না মানে তুই তো আমাকে ভালোবাসিস না তাহলে বিয়ে করলি কেন??
– ঠাসসসস, থাপ্পর দিয়ে শাট এর কলার চেপে ধরে বলছে, আমি তোকে অনেক ভালোবাসি। তুই বুঝিস না কেনো। তোকে ছাড়া থাকতে পারব না, তাই তো তোর বাসায় চলে আসছি। আজ থেকে তুই শুধু আমার, আর জদি কোন অন্য মেয়ের দিকে তাকাস তাহলে তোর চোখ উপরে ফেলব!!! (বলেই জরিয়ে ধরলো)
– হ্যা তা তো বুঝলাম। কিন্তু কান্না টা বন্ধ কর আমার নতুন পাঞ্জাবি টা ভিজে জাচ্ছে!
– ……………
– কি হলো আরো জোরে কাদতেছিস কেনো,, আমার ঠান্ডা লাগবে তো।
– লাগুক ঠান্ডা,।
আর কিছু না বলে তিথি কে জরিয়ে ধরে বিছানায় দিলাম ঝাপ,
…………………………………………..সমাপ্ত………………………………………….