এই তোর কাছে দুইটাকার নোট আছে?’
চোখ পাকিয়ে বলল মারিয়া।ভার্সিটিতে ঢুকতে যাব এমন সময় মারিয়া ভার্সিটির গেটে রিকশা থেকে নেমে কথাটা বলল। এই খুব সাধারন কথাটা চোখ পাকিয়ে বলার কী প্রয়োজন হতে পারে ঠিক বুঝতে পারলাম না।একবার মারিয়াকে দেখে নিয়ে মানিব্যাগ বের করলাম। বেশ কিছুক্ষন খোঁজাখুঁজি করে একটা পাঁচটাকার নোট বাড়িয়ে দিলাম ওরদিকে।
‘এটা কী?’ ‘পাঁচটাকার নোট।’
‘যতদূর মনে পড়ে, আমি তোর কাছে দুইটাকার নোট চেয়েছিলাম।’
‘দুইটাকার নোট নাই।’
‘তাহলে এটা দিচ্ছিস কেন?’
‘রিকশা ভাড়া দিয়ে দে।’
মারিয়ার মুখ লাল হয়ে গেল।অল্পতেই হয়। প্রখররোদে নামলে হয়, সামান্য লজ্জাপেলে হয়, প্রচন্ড রাগেও হয়। এখন কেনহল? সম্ভবত রাগেই।
‘তোর কি ধারনা, আমার কাছে ভাড়ানাই?’ ‘তো থাকলে দিয়ে দে।’
সাধারন লাল থেকে টকটকে লাল হয়ে গেলমারিয়ার চেহারা।
‘ত..তারমানে তুই আসলেই ভাবছিস আমার কাছে টাকা নাই?আমি ফকিরনী?’
রাগে কথা আটকে আটকে গেল মেয়েটার। হতাশায় মাথা নাড়লাম।
‘আমি আবার কখন বললাম এইকথা?’ ‘এইমাত্র বলেছিস।’
আমি আবারও মাথা নাড়লাম। মারিয়া বলেই যেতে লাগল,‘তুই যদি ভেবে থাকিস আমার কাছে ভাড়া নাই বলে তোর কাছে টাকাচেয়েছি, তো তুই ঠিক ভাবিস নাই।রিকশা ভাড়া বারোটাকা এইজন্য তোর কাছে দুইটাকা চেয়েছি।পাঁচটাকার নোট আমার কাছেও আছে।’
‘শুনে খুশি হলাম।কিন্তু তোকে এমন অদ্ভুতভাড়া ঠিক করতে বলেছে কে?’
‘অদ্ভুত ভাড়া মানে?’
‘এই যে বারোটাকা। হয় পনেরো টাকা দিবি নয়ত দশটাকা।বারো টাকা আবার কি রকম ভাড়া?’ ‘তোর কাছে দুইটাকার নোট চেয়েছি,জ্ঞান চাই নাই। ’ উফ! এই মেয়ে এত কথা প্যাঁচায় কেন?সমস্যা কী? ‘আফা,ভাড়াডা দেন,যামুগা।’রিকশাওয়ালা বিরস মুখে বলল।
এই ধরনের অর্থহীন কথা শোনার চাইতেও জরুরি কাজ পড়ে আছে তার।মারিয়া বিমর্ষমুখে পনেরো টাকা রিকশাওয়ালার দিকে বাড়িয়ে ধরল।খপ করে টাকাটা পকেটস্থ করেই রিকশায় চড়ে বসল লোকটা। প্যাডেলেচাপ দেয়ার আগে আমার দিকে তাকিয়ে ভূবন ভোলানো একটা হাসিদিল। সেটা অবশ্যই আমার সুবাদে প্রাপ্ত বাড়তি তিনটাকার চাইতে দামী। আমি ম্যানিব্যাগ পকেটে রাখতে যাচ্ছি, এমন সময় চিল চিৎকার ছাড়ল মারিয়া। আমি হকচকিয়ে গেলাম। ‘ওয়েট ওয়েট, তোর মানিব্যাগ বের করতো।’
‘কেন?’
‘বের করতে বলেছি বের কর।’
আমি কথানা বলে মানিব্যাগটা বের করলাম।আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই মারিয়া হাত থেকে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল মানিব্যাগটা। ব্যাগ খুলে সিআইডির এসিপি প্রদিউমান যেভাবে এভিডেন্স ধরে ঠিক তেমন ভঙ্গিতেএকটা চকচকে কাগুজে নোট দু আঙ্গুলে ধরে বের করে আনল।
‘এটা কী?’
আবারো চোখ পাকালো মারিয়া।
‘দুই টাকার নোট।’ আমি নির্বিকার ভঙ্গিতে বললাম। ‘সেটা তো আমিও দেখছি।’
‘তো?’
‘তো মানে? তুই মিথ্যা বললি কেন যেতোর কাছে দুই টাকার নোট নাই?’
গলা উত্তেজনায় চড়ে গেল মারিয়ার।
‘এটা খরচ করা যাবে না।’
আমি মারিয়াকে আর কিছু বলার সুযোগ নাদিয়ে টাকা আর মানিব্যাগটা হাতিয়ে নিয়ে পকেটে ঢুকিয়ে হাঁটা ধরলাম। একবার পেছন ফিরে তাকালে হয়ত মারিয়ার কাজল দেয়াচোখে এক পৃথিবী বিস্ময় দেখতে পেতাম।
দুই পড়ন্ত বিকেলে এক তরুণের হাত ধরে প্রায় টানতে টানতে এক তরুনীর হেঁটে যাবার দৃশ্যটা যে কতটা অদ্ভুত তা হয়ত মারিয়া নামের ওই তরুনীর জানা নেই।ক্লাস শেষ বের হয়েছি এমন সময় হুট করে আমার হাত ধরল মারিয়া। আমি প্রতিবাদ করে কিছু বলার আগেই দেখলাম, আমি রেস্টুরেন্টে বসে আছি!
রেস্টুরেন্টটা ভার্সিটির পাশেই।প্রতিদিন ক্লাস শেষে এখানে ভীড় বাড়তে থাকে স্বপ্নবোনা জুটিদের।আমি এদের নাম দিয়েছি স্বপ্ন-তাঁতী।আমার স্বপ্ন নেই, স্বপ্ন বোনার ঝামেলাও নেই। তাই কখনো আসাও হয়নি এখানে। আজ প্রথমবার এসে বুকের মধ্যে কেমন যেন একটা হাহাকার তৈরি হল।
‘হুম, এবার কাহিনী শেষ কর।’
মারিয়ার কথায় ফিরে তাকালাম ওর দিকে।
বললাম,‘কিসের কাহিনী শেষ করব?’
‘তখন যেটা শুরু করেছিলি।দুইটাকার নোটের কাহিনী।’ ‘কোনো কাহিনী নাই।’ নিস্পৃহ আমার গলা।
‘না বললে কিন্তু তোর অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে।’ ‘কিসের সমস্যা?’
‘হবে অনেক বড় সমস্যা। এখান থেকেসোজা হাসপাতালে যেতে হবে।’
বাংলা ছবির এক ডাঁকসাইটেভিলেনের মত ভঙ্গিতে আমাকে হুমকি দিল মারিয়া।আমি হেসে ফেললাম। ‘হাসছিস যে বড়?’
‘দুইটাকার নোটের একটা কাহিনী আছে, কিন্তু আমি তোকে সেটা বলব না। তুই পারলে কিছু করে দেখা।’ ‘আমি কী করব সে সম্পর্কে তোর কোনো ধারণাই নাই।’ ‘আসলেই নাই।ধারণা পাবার জন্যই তো বললাম।’
‘আমি কী করব জানিস? এই মুহুর্তে চিৎকার করে বলব তুই আমার সাথে চিটকরেছিস। আমাকে ভালবাসার অভিনয়করে আমাকে প্রেগন্যান্ট বানিয়ে দিয়েছিস!’
আমি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম।এইমেয়ে বলে কী! পরমুহহুর্তেই চিন্তাকরে দেখলাম, যার মাথায় এমন অদ্ভুত চিন্তা আসতে পারে সে সেটা করেও দেখাতে পারে।আর সত্যি সত্যি করে বসলে পরবর্তীতে কী ঘটবে আমার সে সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা নেই। তবে ভাল কিছু যে নয়, সেটা নিশ্চিত।এখানে যারা উপস্থিত, তারা প্রায় সবাই প্রেমিক-প্রেমিকা। ভালবাসায় প্রতারণার ব্যাপার স্বাভাবিক ভাবে নেবার সম্ভবনা কম। আচ্ছা, মারিয়া কি ইচ্ছে করেই এই রেস্টুরেন্ট বেছে নিয়েছে? সেক্ষেত্রে সর্বনাশ!তারমানে ও মিথ্যে বোলচাল দেখাচ্ছে না! আমার গলা শুকিয়ে এল।অজান্তেই একটা ঢোক গিললাম।সেটা বোধহয় দেখে ফেলল মারিয়া।মুখে তৃপ্তির হাসি এনে বলল, ‘এবার বল।’
‘টাকাটা জেরিন দিয়েছিল।’ আমি মুখ কাঁচুমাচু করে বললাম।
‘এই জেরিনটা আবার কে?’ ‘আছে একজন।’
‘তোর প্রেমিকা।’ আমি জবাব দিলামনা। মারিয়া জবাব পেয়ে গেল।
‘তো দুইটাকার ইতিহাসটা কী?
দুইটাকা দিতে গেল কেন?’
‘আমি চেয়েছিলাম। ওর প্রথম টিউশনির বেতন পেলে বলেছিলাম, তোমার জীবনের প্রথম কামাই থেকে আমাকেএকটা দুইটাকার নোট দেবে।
আমি ওটা সবসময় রেখে দেব আমার কাছে।বেশিবড় নোট হলে খরচ হয়ে যেতে পারে।’
‘হুম। রোমিও জুলিয়েট টাইপ কাহিনী।’
সব কিছু বুঝে ফেলার ভঙ্গিতে মাথানাড়ল মারিয়া। ‘তা সেই জুলিয়েট বেগমের কী খবর।’
‘জানি না।’
‘জানিস মানে?’
‘আমি উঠি, বাসায় কাজ…’ মারিয়া চোখ পাকাতেই থেমে গেলাম।
‘পুরো কাহিনী না বলে ওঠা উঠি নাই।’
‘ওর সাথে আমার আর কোনো সম্পর্কনেই।’
‘ওমা!’
প্রায় আর্তনাদের মত করে বলেউঠল মারিয়া।‘আমি তো ভেবেছিলাম এটা অমর প্রেমকাহিনী!’
আমি কিছু বললাম না। মাথা নীচু করেআছি। মারিয়ার রসিকতা তেমন একটাভাল লাগছে না ‘কী হয়েছিল রে?’
আচমকা রসিকতার সুরউধাও হয়ে গেল মারিয়ার গলাথেকে। হঠাৎ করে আমার মনে হতে লাগল কথাগুলো কাউকে জানানো খুব প্রয়োজন।আমি আর একা একা নিতেপারছি না এই কষ্টের ভার।নুয়ে পড়ছি বারবার। হাত ধরে ওঠানোর মত কেউ আমার আশেপাশে নেই। বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে বললাম,‘জেরিন আসলে অন্য একজনকে ভালবাসত।’
‘তাহলে তোর সাথে ভালবাসার মিথ্যে অভিনয় করল কেন?’
‘জানি না। জানলেও বলতে ইচ্ছে করছে না।’ মারিয়া এবার আর জোরাজুরি করল না শোনার জন্য।আমরা দুজনেই চুপ করে আছি। চারদিকের স্বপ্ন তাঁতীদের ফিসফিস আওয়াজের মধ্যে নীরবতা জমাট বেঁধে রইল বেশঅনেকটা সময়।
‘তুই এখনো তাহলে ওই মেয়ের টাকা পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিস কেন?’
‘ও হয়ত আমাকে ভালবাসেনি, কিন্তুআমি তো বেসেছিলাম।’ খানিক বিরতি। ‘এখনো বাসি।’ ‘হুম, ভাল, তা ওর ভালবাসায় আর কী কী প্রতিজ্ঞা করেছিস?’ আবারও দুষ্টুমির ছোঁয়া পেলাম মারিয়ার গলায়। আমি মাথা ঝাঁকালাম।
‘আছে আরেকটা।’
‘হাংকিপাংকি না করে বলে ফেল।’
‘হাসবি না তো?’
‘না না, হাসব কেন?’ মারিয়া চোখমুখশক্ত করে বলল। আমি একবার ভালমত দেখে নিলাম,ব্যাপারটা রসিকতা কিনা। চোখমুখ শক্ত করে থাকায় ঠাহর করা গেল না। ‘মেয়েটা খুব চুইংগাম পছন্দ করত। আমিওকে একদিন বলেছিলাম, তোমার সাথে বিয়ে হবার আগ পর্যন্ত আমি চুইংগাম খাবো না। বিয়ের পর…’
থেমে গেলাম।
‘বিয়ের পর কী?’
‘কিছু মনে করবি না তো।’
‘নাহ।’ এবারও দাঁতমুখ খিঁচে বলল মারিয়া।’ ‘বিয়ের পর ওর মুখ থেকে নিয়ে খাবো।’
“হিক” জাতীয় একটা আওয়াজ করে উঠল মারিয়া।
আমি কিছুটা সময় পর বুঝতে পারলাম ওটা আসলে হাসি ছিল। আমি দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম মারিয়ার দিকে। হাসি থামতে মারিয়া বলল, ‘এরপর থেকে আর খাসনি চুইংগাম?’
‘নাহ।’
হি হি করে আরো এক দফা হেসে নিল মারিয়া। আমি মাথা চুপ করে রইলাম।মারিয়ার মত পাগলী মেয়ে কখনইবুঝতে পারবে না এই ছোট্ট দুটো প্রতিজ্ঞার মধ্যে কতটা ভালবাসা লুকিয়ে আছে। কতটা দুঃখ নিয়ে এতগুলো দিন একটা কাগুজে নোটকে আগলে রাখা যায়। আমি জানি, আমিআর জেরিনকে কখনই ফিরে পাব না,কিন্তু এই মেয়েটাকে যে আমি কতটাভাল বেসেছিলাম, সেটাও তো কেবল আমিই জানি।আমার সামনে বসে নিরন্তর হেসে যাওয়া এই মেয়েটা নয়।এই মানুষগুলো জানে না পর্যন্ত,ভালবাসার উৎসটা কোথায়, বুকের ঠিক কতটা গভীর থেকে উঠে আসে।মারিয়ার হাসি একসময় থামল। এবংআমি অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম, মারিয়ার চোখে পানি! আমার কেন যেন মনে হচ্ছে,এই পানি হাসির প্রাবল্যে নয়।এই জল অশ্রুর! কথাটার সত্যতা প্রমাণের জন্যই যেন মাথা নীচু করে রইল মারিয়া। এরপর ব্যাগ থেকে কাগজ কলমবের করে খসখস করে কী যেন লিখল। বাড়িয়ে দিল আমার দিকে। ‘এই যে তোর প্রেসক্রিপশন।’ ‘কিসের প্রেসক্রিপশন?’
‘পড়ে দেখ, কিসের প্রেসক্রিপশন। আমি গেলাম। কফির বিলটা দিয়ে দিস।’
মারিয়া চলে গেল।আমি কিছুক্ষন স্থাণুর মত বসে থেকে কাগজটা খুললাম।একটা চিঠি।
মারিয়া লিখেছেঃ তুই কি জানিস, আমি তোকে কতটা ভালবাসি? জানিস না তো? জানবি কিভাবে? আমি বলেছি নাকি! আজও বলা হত না।হয়ত কোনো দিনও না। কিন্তু আজ সকালের ঘটনায় আমার মনে হয়েছিল, গোপন কোনো ব্যাথা আছে তোর। এইমাত্র সব শোনার পর আমি বুঝতে পারলাম, জেরিনের জন্য তোর মনে যে ভালবাসা আছে তার ছিটেফোঁটা পাবার যোগ্য আমি কখনই ছিলাম না।ওরকম ভালবাসা খুব বেশি মানুষের কপালে জোটে না। সেজন্য তোকে ভালবাসার কথা বলে তোকে বিব্রত করতে চাই না।জানি, জেরিনকে ভুলেতুই আর কাউকে ভালবাসতে পারবিনা। শুধু জানিয়ে গেলাম, আমি তোকে ভালোবাসি।
পুনশ্চঃ আমি হুট করে চলে গেলাম কেন জানিস? আর কিছুক্ষন এখানে বসেথাকলে আমি তোকে জড়িয়ে ধরেহাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে দিতাম।আমি আস্তে করে চিঠিটা ভাঁজ করে পকেটে রেখে দিলাম। মাথা ঝিমঝিম করছে। কয়েকটা লাইনের চিঠিটা সব কিছু এভাবে উলটপালট করে দিল কেন? পৃথিবীর সব কিছু নিয়ে রসিকতা করতে থাকা এই পাগলী মেয়েটা যে এতটা আবেগী সেটা তো কখনই বুঝতে দেয়নি কাউকে। আচ্ছা এই মেয়েটা ওকি আমারই মত গোপন কোনো দুঃখ বয়েযায় কে জানে? আমিউঠে দাঁড়ালাম।বিলটা রেখে ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম দরজার দিকে। ***
পুরোপুরি সন্ধ্যা নেমে গেছে।একটু রাত। একেবারে ঝপ কর ঝকঝকে নগরীর এই ব্যাস্ত মানুষগুলোরমধ্যে ঠিক কতজন গোপন দুঃখ বয়ে নিয়ে বেড়ায়, আজ খুব জানতে ইচ্ছে করছে।রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে ইতি উতি তাকালাম।ওই তো, দেখা যাচ্ছে।আমি এগিয়ে গেলাম সেদিকে।দোকানটার সামনে পৌঁছে মানিব্যাগ খুলে একমাত্র চকচকে দুইটাকার নোটটা বের করলাম। আমি মারিয়াকে আমার তৃতীয় প্রতিজ্ঞার কথাটা বলিনি।আমি আরেকটা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যদি কোনোদিন জেরিনকে ভুলে অন্য কাউকে ভালবাসতে পারি সেদিন এই দুইটাকার নোটটা দিয়েই একটা চুইংগাম কিনে খাবো। নোটটাবাড়িয়ে দিলাম দোকানির দিকে। ‘একটা চুইংগাম।’
উপসংহার চুইংগামটা এক হাতে শক্তকরে ধরে পথ হাঁটছি আমি। আমার দুইচোখ দিয়ে অঝোর ধারায় পানি পড়ছে।আমি সেই জলে বাঁধ দেবার কোনো চেষ্টাই করছি না। বুঝতে চেষ্টা করছি, এই কান্না জেরিনকে ভুলতে পারার দুঃখে নাকি মারিয়া নামের অসম্ভব আবেগী এক পাগলী মেয়েকে ভালবেসে ফেলার আনন্দে।
