একদম কথা বলবা না,চুপচাপ ঘুমাও।
না,একটু গল্প করবো।আর আজ তো কেউ ঘুমাই না,সবার কত কল্পনা থাকে এই দিনটা নিয়ে,আর তুমি আমাকে ঘুমাতে বলছো?
হ্যা।দয়া করে ঘুমান,নাহলে তোমার আম্মুরে ডাক দিয়ে বলে দিব তুমি আমাকে ঘুমাতে দিচ্ছ না।
কি যে বলো না তুমি!একটুও শরম লাগে না?মা রে এই কথা বলতে পারবা?
হুম পারবো।
তোমার হাতটা একটু ধরি?
তোমাকে না বলছি কথা না বলে চুপচাপ ঘুমাও,আর ৭ দিন তুমি আমার সাথে কথা বা আমাকে ধরবাও না।
কেন?
যখন প্রেম করতা তখন খুব কাদাঁইছো আমারে এটা তোমার শাস্তি।
এটা কেমন শাস্তি?
তোমার বুঝা লাগবে না,যা বলছি তাই মানবা।আর নাহলে!
কি বলো?
পরেই বুঝবা।
আচ্ছা মানলাম। তুমি আমার সাথে কথা না বলে ভালো থাকতে যদি পারো আমিও পারবো।(কথাটা বলেই বিছানা থেকে উঠে ছাদে যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম)
আমি সাব্বির,একজন ইঞ্জিনিয়ার।এতখন যার কথা বলছিলাম ও পুতুল,আমার বউ,আজই আমাদের বিয়ে হয়েছে তবে খুব সাধারণভাবে। পুতুল অসাধারণ,কিন্তু বিয়েটা কেন যে জাঁকজমকহীন ভাবে করলো কি জানি,বড়লোকের মেয়ে আমার মতো মিডিল ক্লাস ফ্যামিলিতে খুব কমই বিয়ে করে,যখন প্রেম করতাম তখন ভাবতাম হয়তো বিয়ে করবে না কিন্তু ও আলাদা।অনেক ভালো মেয়ে,আমার মতো একজন মানুষরে কেন যে ভালোবাসতে গিয়ে ছিল আল্লাহই জানে,আমি ওকে অনেক ভালোবাসা দিতে পারবো আর হয়তো দামি গহনা,বিলাশবহূল জীবণ না দিতে পারলেও একটা সুখের সংসার উপহার দিতে পারবো ওকে।(হাতের সিগারেটা ধরাতে যাব আর তখনই পুতুল এসে হাতটা ধরলো)
তোমাকে না বলেছি সিগারেট খাবা না।
তুমি আমার কোন কথা শুনো যে আমি তোমার কথা শুনবো?
শুনতে হবেও না।(এটা বলেই পুতুল চলে যাচ্ছিল)
আমি ওর হাতটা ধরে আমার কাছে টেনে আনলাম,খুব কাছে টেনে এনেছিলাম,ওর নিশ্বাসের শব্দটাও অনূভব করতে পারছি।কোন মেয়ের এতো কাছাকাছি আগে কোণদিনও যায়নি।জড়িয়ে ধরতে না ধরতেই পুতুল খুব জোরে কেঁদে উঠলো,ভয় পেয়ে ওকে জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছে ব্যথা পেয়েছ?আমি তোমাকে ইচ্ছা করে ব্যথা দেয়নি পুতুল,সরি,কিভাবে লেগে গেল বুঝতেই পারছিনা।
কিছু না বলেই পুতুল আমকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদছে।
এই পুতুল,ছাড়ো,দেখি কোথায় লেগেছে!
লাগেনি তো।কি দেখবে?
তাহলে এভাবে কাঁদছ কেন?
এমনি।
(এর আগে কোনদিনও বুঝি নি ও আমাকে এতোটা ভালোবাসেআজ বুঝলাম)
কিছুক্ষণ পর আমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাচ্ছিল,আমি বললাম পুতুল এতো ভালোবাসো কেন আমাকে?
ও বললো জানিনা।
অবাক হয়ে দেখলাম,ভাবতেও পারিনি এত ভালবাসবে কেউ আমারে। পুতুল চলো ছাদের ঐই পাশটাই যায়।
কেন?
চলো একটা জিনিস দেখাবো।
সাব্বির কামিনী ফুলের গাছ তোমার বাসাই আছে আগে বলো নি তো?
বললে কি আর তোমাকে এই সারপ্রাইজ টা দিতে পারতাম।(পুতুল কামিনী ফুল খুব প্রিয়,এই কথাটা যেদিন জেনেছিলাম খুব অবাক হয়েছিলাম এই ফুলটাও কারো পছন্দ হতে পারে আমার জানা ছিলো না,ওর পছন্দের জিনিস গুলা খুব সাধারন ও ডিফারেন্ট)
গাছটির পাশে দাড়িয়ে একটা কবিতা শুনালো,আগে কখনো কোনো কবিতা শুনি নি ওর মুখে।আজ শুনলাম,খুব ভালো লাগছে।
সেদিন পুতুলের সাথে পরিচয় যদি না হতো তাহলে আর এত সুন্দর হতো না লাইফটা পুতুল ক্রিকেট খুব ভালবাসে।ওর সাথে আমার প্রথম দেখা হয় মীরপুর স্টেডিয়ামে।খেলা দেখতে গিয়েছিলাম বাংলাদেশের, পুতুল ভালো পরিবারের মেয়ে কখনো খেলা দেখতে আাসে নি ঔটাই ছিল। প্রথম ভীড়ের মধ্যে একজনের গায়ে পড়ে গিয়েছিল,আমি ওকে তুলে দিয়েছিলাম,সেই থেকেই মনটা লটকে গেছে,সেই থেকেই ওর পিছে ছুটা,একসাথে খেলা দেখতাল,একদিন সাহস করে বলেই দিলাম।
ও হাসি দিয়ে বুঝিয়ে দিল আমাকে ও ভালবাসে।
ওর মা বাবা আমাকে মেনে নিবে না জানতাম খুব ভয় ও পেতাম কিন্তু ওর বাবা মা ও খুব ভালো মানুষ।আমাদের প্রেমটা মেনে নিল অবশেষে এই বিয়েটা হলো পুতুল শুধু আমার, ভাবতেও অবাক লাগছে।।
এই সাব্বির??(পুতুল)
ওর ডাকে কল্পনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসলাম।
বলো?
কি ভাবছো?
ভাবছি আমারর মা যে কবে তার নাতনী কে দেখবে।
ওরে,আমার ফাজিল,থামো তোমার ফাজলামি ওফ করছি।
থাক তোমাকে কিছু করা লাগবে না,আমাকে সারাজীবন ভালোবাসলেই হবে।
তারপর পুতুল বউ আস্তে আস্তে আমার কাছে আসলো
মিষ্টি ঠোটের স্পর্শ ভরিয়ে দিল আমায়। কিছুক্ষণ চুপ করে হায় তাকে থাকলাম। তারপর আমার পুতুল বউ কে কোলে তুলে নিলাম। কাজল কালো চোখের মায়ায় হারিয়ে যাচ্ছিলাম আমি।
অবশেষে কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত আসলো আমাদের জীবনে ।